সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ,অত্যাচার ও অবিচার দূরিকরনে প্রয়োজন সহমর্মিতা,ধৈর্য সবর ও একে অন্যের প্রতি ভালবাসা স্হাপন।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:২৭:১৫ দুপুর
গত বছরের শেষ লগ্ন থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা-ব্যবস্থার যে অবনতি ও সমাজের ওপর একটি বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে তা সবশ্রেনী ও পেশার মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাছ্ছে। অব্যাহত চাপের মুখে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।অনেকের ধারনা আইনশৃংখলা বাহিনীর সবাই অন্যায়কে মেনে চলেন।আসলে তা নয়।প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একটা চেইন ওফ কমান্ড আছে।অনেক সময় ইছ্ছার বিরুদ্ধেও অনেক কিছু মেনে নিতে হয়।আমরা সবাই চাকুরির উপর নির্ভরশীল।একটি পরিবারে যিনি চাকুরি করেন তার এই আয়ের উপর অনেকেই নির্ভরশীল।এটা গরীব দেশগুলোর সামাজিক কাঠামো।সে কারনে অনেকেই এটাকে একটা কমপ্রোমাইজিং দৃষ্টিতে দেখে।আর আমাদের দেশ যেহেতু গনতান্ত্রিক দেশ সেহেতু মানুষ বিছ্ছিন্ন হয়ে আছে দলের লেজুড় হয়ে।প্রত্যকের মতের যদি স্বাধীনতা থাকে আর যদি সহমর্মিতা ও ভালবাসা থাকে তাহলে সংঘর্ষ কেন? সংঘর্ষের প্রশ্ন তখনি আসে যখন সেখানে লোভলালসা থাকে।আমাদের দেশে যে রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের অনেককে কাছে থেকে দেখেছি, তাদের জীবনের একটা অংশ পর্যালোচনা করেছি সেখানে মানবিক যে দুটো জিনিস,সৎ চরি্ত্র ও লোভলালসা তা তাদের সিংহভাগের মধ্যে বর্তমান পেয়েছি।তাহলে কি করে আশা করা যায় জাতি তাদের কাছ থেকে ভাল কিছু পাবে।মুসলমানদের প্রথম যে বিষয়টি লালন করে মুসলিম হয় তা হলো ঈমান বা বিশ্বাস।ঈমানের তিনটি রুপ একটা আপরটির সাথে সংযুক্ত।মুখে বলা , অন্তরে বিশ্বাস স্হাপন ও বাস্তবে পরিনত করা।যদি কোন মুসলিম বলে আমি ঈমান এনেছি তাহলে তার প্রথম কাজই হলো ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে কায়েম করা।এর পর অন্যান্য মুল ভিত্তিগুলো অনুসরন।পরিবার ,সমাজ ও রাষ্ট্রে বাস করার প্রথম সামাজিক নীতি যদি একে অন্যের প্রতি ভালবাসা ও সহানুভূতি না হয় তাহলে সেখানে দ্বন্দ থাকবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
বর্তমান সংকট বহুমাত্রিক এবং এর সমাধানও সহজসাধ্য বলে মনে হয় না।যদিও অনেকে বলেই যাছ্ছে সবাই বসে একটা সমাধানে আসার জন্য।কিন্তু দায়িত্ব যাদের নেয়ার কথা তারা কি সে পথে আসছেন? একে তো মানবরচিত সংবিধান তার উপর যে কোন সরকার এসে ইছ্ছেমত এর পরিবর্তন পরিবর্ধন করেন যার যার সুবিদার্থে।এ অবস্হা বিরাজ করলে তাদের গনতন্ত্র চর্চাই বা হছ্ছে কোথায়? আমরা নীতিগত কারনে একে অন্যের সমালোচনা করতে পারি আবার আমাদের জাতীয় ইস্যুগুলো নিয়ে একসাথে আলোচনাও করতে পারি।কিন্তু আমাদের বুরুক্রেসিতে বিপরীতমুখি আচরন একদিকে ব্যাক্তিকে কলুষিত করছে অন্যদিকে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে।সংসদ যদি জন গনের হয়,সাংসদরা কি জন গনের কথা শুনেন? তাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে মানুষ তথা দেশের কল্যানের জন্য।তারা কতটুকু দায় পরিশোধ করছেন? বরং সমস্যা ও সন্কট দিন দিন বেড়েই চলছে।আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মেনিফেষ্টো ও অতিত ঐতিহ্যকে যে মেনে চলছে না তা তাদের কাজ কর্ম দেখেই বুঝা যায়।আজ ৪১ বছর পর যে মানবতাবিরোধী কাজের প্রসংগ আসছে তা কারা জিয়ে রেখেছিল? প্রথমে দুষ্কৃতিকারিদের মাপ করে দেয়া হলো।আবার তাদের নিয়ে সরকার গঠন করা হলো।যখন তাদের পছন্দ হলো না তখন আবার পুরোনো কাসুন্দির ঘাটার দিকে ফিরে গিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হছ্ছে আর ক্ষতিগ্রস্ত হছ্ছি আমরা খেটে খাওয়া মানুষগুলো।রাজনীতিবিদদের এটা একটা প্রহসন যা জাতি বুঝতে পেরেছে।বিচার যদি করতে হয় তা আন্তর্জাতিক আইন মেনে দলমত নির্বিশেষে অতি দ্রুত সমাপন করাই জাতি রাজনীতিবিদদের কাছে আশা করে।পাকিস্তান , ভারত ও শৃলংকায় জামাত নামক এই সংগঠেনটি তাদের কাজ করছে। সে দেশগুলোতে তাদের কোন সমস্যা নেই কারন তারা মানবতাবিরোধী কোন কাজের সাথে জড়িত নয়।আমাদের দেশে জামাতে ইসলাম ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে সমর্থন করে অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার কারনে তারা যুদ্ধবিরোধি হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।প্রশ্ন যখন শেখ মুজিবুর রাহমান সবাইকে মাপ করে দিলেন তাহলে আওয়ামি লীগ মেনে নিতে পারছেনা কেন? এ ক্ষেত্রে তারা তার রাজনৈতিক প্রজ্গাকে অপমানিত করছে।এর পূর্বে জামাতের সাথে জোট করার অর্থে বুঝা যায় তারা শেখ মুজিবুর রাহমানকে সম্মান করছে।আমরা তাদের রাজনৈতিক অবস্হানকে সুবিধাবাদের অবস্হানেই দেখতে পাছ্ছি।অবশ্যই দেশের স্বার্থে তাদের এ দ্বৈত নীতি পরিহার করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সমর্থক ছাত্রসংগঠন বিভিন্ন যুক্তিতে এ বিচার কার্যক্রম বাতিল করার দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছে। আন্দোলন অনেক ক্ষেত্রেই সহিংস। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল এ বিচার-প্রক্রিয়া পক্ষপাতদুষ্ট ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত নয় অভিযোগ করে এর বিরোধিতা করে চলছে। তাদের নেতৃত্বে ১৮-দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে ওপরে বর্ণিত চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে নতুন নতুন কর্মসূচি দিচ্ছে। অন্যদিকে গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিক থেকে শাহবাগকে কেন্দ্র করে তরুণ প্রজন্ম আলোচ্য অভিযোগের বিচারাধীন সব অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ দণ্ডের দাবি জানিয়ে চলছে। তারা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করাসহ আরও কতিপয় দাবিতে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। অতিসমপ্রতি
তারা বেশ কিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন পরিচালনা করে চলেছে।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম নামে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক আলেম-ওলামাদের ইসলামি দলসমূহের একটি জোট দেশে ইসলাম ও নবী করিম (সা.)-কে অবমাননাকারী ব্লগারদের শাস্তি দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। তারা দাবি করছে, এ ধরনের অবমাননার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের বিধানসংবলিত আইন করতে হবে। তাদের এ ধরনের আরও বেশ কিছু দাবি রয়েছে। তাদের প্রতিরোধের মুখে শাহবাগকেন্দ্রিক আন্দোলনটি চট্টগ্রামে সমাবেশ করতে পারেনি। অন্যদিকে বিভিন্ন সংগঠনের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও হেফাজতে ইসলাম ঢাকায় একটি মহাসমাবেশ করতে সফল হয়েছে। তাদের ১৩ দফা দাবির কিছু কিছু সরকার বিবেচনা করছে এমনটাই প্রধানমন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন। উল্লেখ্য, ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে ইতিমধ্যে কয়েকজন ব্লগারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ধরনের আন্দোলন ও পাল্টা আন্দোলনের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি ঘটে চলছে দেশের সর্বত্র। হরতাল মনে হয় একটি প্রাত্যহিক ঘটনায় রূপ নিয়েছে। শহর, বন্দর, গ্রাম সব স্থান থেকেই দাঙ্গা ও হানাহানির সংবাদ মিডিয়াতে প্রকাশিত হছ্ছে। সর্বশেষ চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে যে নারকীয় কাণ্ড ঘটল, তা অভূতপূর্ব এবং মূল হোতারা সাজা পাওয়ার যোগ্য। এ ধরনের ঘটনার শিকার যে কেউ হতে পারে। তাই এর পুনরাবৃত্তি রোধে সব পক্ষকে সংযত থাকতে হবে। এসব ঘটনায় সামপ্রতিককালে প্রাণ হারিয়েছে দেড় শতাধিক ব্যক্তি। এর মধ্যে জন দশেক রয়েছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্য। সুতরাং সংকটটি বহুমাত্রিক ও এর সমাধান সহজসাধ্য নয়, এটা স্পষ্টভাবে অনুমেয়।
যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, তার কোনটি কীভাবে সমাধান করা হবে, তা সরকারকে ঠিক করতে হবে। তাদের সময়োচিত ও প্রজ্ঞাপ্রসূত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এ ধরনের সমস্যা উতরাতে সহায়তা করতে পারে। তা ছাড়া যারা বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করছে, তাদেরও বাস্তববাদী ও যৌক্তিক পথে দাবি-দাওয়া মীমাংসার পথে যাওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কি না, এটা সরকারের দেখার বিষয়। জানা যায়, দায়িত্ব পালনে শৈথিল্যের জন্য বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আবার এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বিভাগে মতদ্বৈধতাও রয়েছে। তবে মাঠপর্যায়ে প্রশাসন ও পুলিশের যেসব কর্মকর্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন, সরকার তাঁদের কঠোর নজরদারিতে রেখেছে, এমনটা খোলামেলাভাবেই বলা হচ্ছে। কোনো ধরনের শৈথিল্যের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে জানা যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও কৌশল সরকার অতি অবশ্যই পর্যবেক্ষণ করে নেতিবাচক ভূমিকায় কেউ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়াও অযৌক্তিক হবে না। তবে বিরাজমান সংকটে তাঁদের সীমাবদ্ধতা যদি বিবেচনায় না নেওয়া হয়, তবে তাঁদের প্রতি সুবিচার করা হবে না।
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, সংকট খুবই গভীর, বহুমাত্রিক এবং সংযম ও দূরদর্শিতার সঙ্গে এর সমাধান খোঁজার আবশ্যকতা রয়েছে। মহানগর পুলিশের অধিক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার আর এর বাইরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মূলত এ কঠিন দায়িত্বটি পালন করছেন। র্যাব, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ সব বাহিনী মূলত পুলিশের সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করে। এ সংকটকালে বাস্তবতা, তাদের সামর্থ্যসহ সব বিষয় যদি বিবেচনায় না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেকোনো অবনতির ক্ষেত্রে তাদেরই দায়ী করা হয়, তবে তাদের মনোবলে ভাটা পড়তে পারে। বিরাজমান অবস্থায় এর প্রতিক্রিয়াও হবে নেতিবাচক।
মূলত সমস্যাগুলো রাজনৈতিক। এর সমাধানের দায়িত্বও প্রধানত সরকার ও সব কটি রাজনৈতিক দল বা আন্দোলনকারী পক্ষের। মাঠ প্রশাসনের এ সমস্যা সমাধানে কোনো ভূমিকাই রাখার সুযোগ নেই। কেননা, কোনো সমস্যাই স্থানীয় পর্যায়ে উদ্ভূত হয়নি। এর দায়ভারও মাঠপর্যায়ের প্রশাসন ও পুলিশের কোনো কর্মকর্তার ওপর দেওয়া যায় না। অথচ সমস্যার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবিলার দায়িত্ব তাঁদেরই। দেখা যেতে পারে স্থানীয় প্রশাসন এ-জাতীয় পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থাকলে তারা আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়। সম্ভাব্য গোলযোগের স্থানগুলোতে মোতায়েন রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুসারে অন্য সহায়ক বাহিনীও তলব করা হয়। তবে যখন সারা দেশে একসঙ্গে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে, তখন নাশকতামূলক কার্যক্রম মোকাবিলার জন্য তাদের সংখ্যা সর্বক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। ফলে তারা কতিপয় ক্ষেত্রে বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে বেপরোয়াই হয়ে আছে আন্দোলনকারীরা। তাই দুঃখজনকভাবে প্রাণহানি ঘটছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ বহু মানুষের। এ-জাতীয় পরিস্থিতিতে, স্থানীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তা পেলে প্রশাসন অনেক কার্যকর হয়। কিন্তু তা সঠিকভাবে নেওয়া হচ্ছে কি?
জেলায়, উপজেলায় এবং ক্ষেত্রবিশেষে মহানগরে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষা কমিটি রয়েছে। ২০০১ সালে ক্ষমতা বদলের আগ পর্যন্ত এ কমিটিতে প্রায় ক্ষেত্রেই স্থানীয় প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রতিনিধিত্ব করতেন। রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় কর্মসূচি পালনের আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এ-জাতীয় কমিটির সভা হতো। অনেক ক্ষেত্রে শুধু সর্বদলীয় সভা হতো জেলা ও উপজেলায়। এ ধরনের সভার ফলে জাতীয়ভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো কর্মসূচি চলাকালে হিংসাত্মক ও নাশকতামূলক কাজ যাতে না হয় তা পুরোপুরি না হলেও কিছু পরিমাণে নিশ্চিত করা যেত। প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে সব দল-মতের নেতাদের যোগাযোগ থাকার কথা। আবশ্যকতাও রয়েছে। এ জাতীয় পরিস্থিতিতে এ ধরনের যোগাযোগ জনশৃঙ্খলার সপক্ষে কাজে লাগানো যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের সে সংস্কৃতি অনেকটা ভেঙে পড়েছে । এখন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ শুধু ক্ষমতায় থাকা দলটির নেতা-কর্মীর মতো ব্যবহূত হয়। তারাও অনেকটা এ ধরনের আচরণ করেই নিজদের পদ-পদবি পাকাপোক্ত রাখে। ফলে অন্য সব রাজনৈতিক দল ও গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক শক্তির কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। তাদের কাছে সমতার ভিত্তিতে সুবিচার পাওয়া যাবে, এটা আর ক্ষমতার বাইরে থাকা দল বা ব্যক্তি বিশ্বাস করতে পারছে না। আর দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা অনেকটা তাই। প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তারা আজ বিরোধী দলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগ রাখতে ভয় পান। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব চান প্রশাসন ও পুলিশ তাঁদের লাঠিয়ালের মতো ব্যবহৃত হোক। তারা নিজেরাও স্থানীয় পর্যায়ে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একটি সখ্য গড়ে তুলে চলমান আন্দোলনকে অহিংস রাখতে সহায়তা করছে না। জাতীয় পর্যায়ে তো এমন কোনো প্রচেষ্টাই নেই। তবে সামপ্রতিক হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশটি যাতে আইনশৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকারক না হয়, তার জন্য সরকারের সক্রিয় প্রচেষ্টা নজরে এসেছে। তবে সরকারের কিছু মন্ত্রি ও উপদেষ্টা যদি লাগামহীন কথা বলা যদি বন্ধ না করেন তাহলে সহিংসতা বন্ধ হবে কি করে? উস্কানিমূলক কথা বলা বন্ধ করতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে আমরা দেখতে পারছি, সরকারসহ সব পক্ষের রণহুংকার। রণহুংকার, প্রস্তুতি ও মহড়ায় জনগণ শঙ্কিত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ। বিপর্যস্ত জনজীবন। এ সময়ে সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের, উদারতা ও দূরদৃষ্টির অভাব এসব জটিল সমস্যা জটিলতর হয়ে আমাদের অনেক অর্জন বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। সুতরাং সে প্রচেষ্টা নেওয়ার জন্য তাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা ন্যায্য ও সময়োচিত।
তদুপরি স্থানীয় পর্যায়ে গত এক দশক প্রশাসন ও পুলিশকে সরকারি দলের তাঁবেদার রাখার যে প্রয়াস, তা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী হয়েছে এবং হচ্ছে, এটা দেরিতে হলেও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতারা বুঝতে পারবেন। বুঝতে পারছে দেশের সচেতন মানুষগুলো। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকলে তারা এ সংকট মোকাবিলায় আরও কার্যকর অবদান রাখতে পারত। জাতীয় কর্মসূচি চলমান থাকলেও তাদের প্রচেষ্টা ও হস্তক্ষেপে স্থানীয় পর্যায়ে হিংসাত্মক কার্যকলাপ কমিয়ে ফেলা সম্ভব ছিল। প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের মাঠপর্যায়ে যাঁরা আছেন, তাঁদের আজ এটা উপলব্ধি করার সময় এসেছে। এ ধরনের অবস্থানের জন্য তাঁদের মর্যাদা আজ নিম্ন গামি। গ্রহণযোগ্যতা প্রায় শূন্যের কোঠায়। তাঁরা সরকারি নির্দেশ অবশ্যই মেনে চলবেন। তবে বৈধ সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক শক্তির সঙ্গেও স্থানীয় প্রশাসনের যোগাযোগে সরকার কোনো বাধা দিতে পারে না। এতে জাতীয় কর্মসূচি চললেও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হওয়ার কথা। ব্যক্তির জীবনে সময় নির্ধারিত। কিন্তু জাতীয় জীবনে নয়। একটি জাতি যেকোনো সময় নতুনভাবে শুরু করতে পারে তার চাহিদার ভিত্তিতে। সে চাহিদা আজ সৃষ্টি হয়েছে। আর এ চাহিদার মুখে স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসন ও পুলিশ রাষ্ট্রের সেবক, এ মনোভাব নিয়ে সবার প্রতি সম-আচরণ করার কার্যকরী ও দৃশ্যমান ভূমিকায় নেমে আসা উচিত।জনস্বার্থেই সরকার এতে তাদের উৎসাহিত করতে পারে। কেননা এর সুফল মূলত ভোগ করবে সরকারই।
যে কোন সরকারই যদি সহমর্মিতা,ধৈর্য সবর ও একে অন্যের প্রতি ভালবাসা স্হাপন করে তাহলে দেশের সামাজিক অবস্হার উন্নতি অবশ্যম্ভাবি।আর আমাদের সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট আমলা ও সরকারি সব বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা যদি নীরপেক্ষভাবে তাদের দৈন্দিন কাজ করেন ও জন গনকে উত্তম সেবা দেন এবং সমস্ত অন্যায় কাজ থেকে দূরে থাকেন তাহলে সরকার যেমন দেশ এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে অন্যদিকে গোটা জাতি বেঁচে যাবে এ অন্যায় ও অবিচার থেকে।
বিষয়: বিবিধ
১১২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন