ইসলামের কথা শুনলেই আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের মাথায় আগুন লেগে যায় অথচ তারা এর ছায়ায় বসবাস করছে।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৩ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৪৮:২৩ সকাল

আমাদের এই উপমহাদেশ বিভিন্ন ধর্মের এক মিলনকেন্দ্র বলা যায়।আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি ব্যবসাবানিজ্য ,চলাপেরায় , উঠা বসায় কোন সমস্যা হয়ে উঠেনি।সামাজিক আচার আচরনে কোন দৃষ্টিকটু দিক ও তেমন লক্ষ্য করিনি।গ্রাম গন্জের ডাক্তারদের সিংহভাগই ছিল হিন্দু।সামান্য অসুখ হলে ছুটে যেতাম।আজকালকার নামধারি মুসলমানের চেয়ে তারা ছিল আচার আচরনে বলিষ্ঠ।স্বাধীনতার পর শুরু হলো তাদের পালানোর মত অবস্হা।অনেকে নামমাত্র দামে যায়গা বিক্রি করে চলে গেছে বাকিরা অস্বস্তিতে জীবন যাপন করছে।অবশ্য হিন্দু সাহিত্যিকদের লেখায় মুসলিমদের একান্ত বরন করে না নেয়ার ব্যাপারও এ অন্তর্দন্দের কারন বটে।উপমহাদেশে একটি মুসলিম সভ্যতা গড়ে উঠুক এটা হিনদুরা চাইতো না যে তার প্রমান তাদের স্বনামধন্য লেখকদের লিখায় স্বাক্ষর রয়েছে। যাই হোক, আমরা মুসলিম জাতি হিসেবে আমাদের কোন ভুল আছে কিনা তা আমাদেরই ক্ষতিয়ে দেখা দরকার। মুসলিম নাম রাখলে বা মুসলমানের ঘরে জন্ম নিলে যে মুসলিম হয় না এটা আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের জানা নেই।মুসলমানের মুসলমানিত্ব ধরে রাখার অস্ত্র হলো দু'টি । একটি আল্লাহ প্রদত্ত কুরআন আর একটি হলো রাসূল সা: এর ছহি হাদিস।মুহাদ্দিসগন আসমানের নিচে ও জমিনের উপরে ছহি বোখারি ও ছহি মুসলিমকে কুরআনের পরে স্হান দিয়েছেন।এ দু'টি জিনিসকে চর্চা করে মুসলিম গন তাদের দুনিয়ার জীবন পরিচালনা করবেন।মুসলিমের জন্য ৫টি মৌলিক বিষয় রয়েছে যা অবশ্য পালনীয়।ঈমান ,নামাজ, যাকাত রমজানের রোজা ও বায়তুল্লাহর হজ্জ।যাকাত ও হজ্জের সাথে আর্থিক সামর্থ জড়িত।বাকি ৩টি বিষয় প্রত্যেকের জন্য ধনী বা গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য অবশ্য করনীয়।যে কোন ধর্ম যারা পালন করে থাকে তা বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করেই পালন করে।কুরআন ও হাদিসে যা বর্নিত হয়েছে তা দুনিয়া ও আখেরাত ভিত্তিক।অর্থাৎ যে দুনিয়াতে এ দুটি বিষয়ের আইন মেনে চলবে সে পর জীবনে শান্তিতে থাকবে।এটা সম্পুর্ন বিশ্বাসের ব্যাপার।যিনি যে ধর্ম পালন করবেন সে ধর্মের প্রচার করা তার ধর্মিয় অধিকার। এ অধিকার খর্ব করার কেউ নেই এ আসমান ও জমিনে।আল্লাহ এখানে মানুষকে স্বাধীন হিসেবে তার কাজ করার ক্ষমতা দিয়েছেন এজন্য আখেরাতে তিনি এ জীবনের কাজের বিচার করবেন।আর আল্লাহ তার রাসূল সা:কে কুরআনে বলে দিয়েছেন, আমি আপনাকে বল প্রয়োগকারি হিসেবে পাঠাইনি।সে জন্য কোন ধর্মের লোক একে অন্যকে বলতে পারবেনা তুমি আমার ধর্ম গ্রহন কর।সংখ্যা গরিষ্ঠ ও সংখ্যা লগিষ্ঠ সবাই সহনশীলতার সাথে যার যার ধর্ম পালন করবে।যদি বসবাসের এই ভিত্তি হয়ে থাকে তাহলে এক ধর্মের লোক অন্য ধর্মের উপর চড়াও হছ্ছে কেন? আজকে অন্য ধর্মের ভাইদের ব্যাপারে আমার কথা নয়।আমার কথা হলো আমরা বাংলাদেশে সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমান। অন্যদের জান মাল হেফাযত করার দায়িত্ব ও আমদের তথা আমাদের সরকারের।কিন্তু সরকার যেমনি ব্যার্থ তেমনি ব্যার্থ আমরা জন গন।এর প্রধান কারন হলো রাজনৈতিক অস্হিতিশীলতা।এ কজগুলো যে রাজনীতির ছত্র ছায়ার লোকজন করছে তা আমাদের জন গনের বুঝতে অসুবিধে হয় না।

আমাদের বুদ্ধিজীবিদের বলছি আল্লাহর ওয়াস্তে ইসলাম সম্পর্কে কথা বলার আগে ইসলামকে জানুন কুরআন হাদিস অধ্যয়ন করে।আপনারা অনেকে অনেক সুন্দর মুসলিম নাম ধারন করে আছেন।মুসলিমের আচার অনুষ্ঠানও মাঝে মাঝে পালন করেন আবার কুরআন ও সূন্নাহের বিরোধিতা ও করেন এটা ঠিক নয়।জামাতে ইসলামকে দিয়ে যারা ইসলামকে মুল্যায়ন করে তাদের ইসলামি মুল্যবোধ সম্পর্কে ধারনা আছে বলে আমি মনে করিনা।আল কুরআনে সূরা আন'আমের ১৫৯ আয়াতে আল্লাহ তার নবীকে বলেছেন,যারা ইসলামকে বিভক্ত করেছে তাদের প্রতি তোমার কোন দায়িত্ব নেই।সেহেতু ইসলামের এ দলগুলো ইসলামের একটি খন্ডিত দল।ইসলামের দল হয়ে থাকলে তার মেনিপেষ্টো তো কোরআন ও হাদিস থেকেই তৈরি হবে এবং এটা একটা স্বাভাবিক কথা।গনতন্ত্র কোন ইসলামের পথ নয়।যারা ইসলামিক মডার্নিজমে বিশ্বাসী তারা এটা ধার করেছে ও গনতন্ত্রের পথে হাঁটছে।এতে ইসলামের কিছু উপকার হলেও অনেক অপকারিতা আছে।রাসূল সা: বলেছেন আমার উম্মত হলো একটি উম্মত।যিনি প্রকৃত মুসলিম হবেন তিনি এক উম্মত বানানোর কাজে মুসলিমকে একত্রিভূত করার জন্যই কাজ করবেন।রাসূল সা: আরো বলেছেন কেউ যদি একজন মানুষকে বাঁচিয়ে দেয় সে পুরো জাতিকে বাঁচিয়ে দিল আর কেউ যদি একজন মানুষকে হত্বা করে সে যেন পুরো জাতিকে হত্বা করে।তাহলে আমাদের দেশে যারা রাজনীতির নামে বা ইসলামের নামে যে মানুষ হত্বা করছে তারা কি রাসূল সা: এর উম্মতের আওতাভুক্ত কিনা ভেবে দেখতে পারেন?

আমি নাম না নিয়ে ঐ সমস্ত বুদ্ধিজীবিদের বলছি,আপনারা যেহেতু ইসলামের আঙিনায়ই নাই সেহেতু ইসলাম সম্পর্কে বিতর্ক না করে ইসলামকে জানুন।বিদাআতিদের কাছ থেকে শুনে শুনে ইসলামের ব্যাখ্যা দিবেন না । এই ব্যাখ্যা আপনাদের একদিন বিরোধিতা করবে। রাসুল সা:বলেছেন , কাফের এবং মুসলিমের পার্থক্য হলো নামাজ। বর্তমান মুসলমানের কত % ৫ ওয়াক্ত নামজ পড়ে তা আমরা প্রত্যেকে পর্যালোচনা করলেই বুঝতে পারি। এই হাদিসের আলোকে যে নামাজ পড়ে না সে তো কাফের হতেই পারে।তবে আমাদের কারোরই উচিত নয় কাউকে কাফের বলা।আমরা যারা দ্বীন সম্পর্কে জানি তারা তো সঠিক দ্বীন পৌঁছাতেই ব্যার্থ। আমি জানিনা হেফাজতে ইসলামের ভিতরের দিক কি।তবে তারা যে কাজটি করছে সেটা ইসলামের কাজ।গোটা মুসলিমকে যদি এক করতে পারে সেটা হলো ইসলামের কাজ।মানব রচিত সংবিধান কোন ইসলামিক সংবিধান নয়।যে সংবিধান আল্লাহর সংবিধান নয় সেখানে শুধু মাত্র বিসমিল্লাহ বা আল্লাহর নাম থেকেই কি লাভ।এটা তো বিসমিল্লাহ পড়ে একটা কুকাজ করার মত অবস্হা। যেমন করে থাকে সিনেমা ডাইরেক্টর রা।সিনেমা ডিসপ্লে করার প্রথমে অনেক সিনেমা্য় লিখে রেখেছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।আল্লাহর সাথে এ কুফরি করার অর্থ কি? আল্লাহ বিরোধী কাজ বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু হতে পারে না।মুসলমানরা গনতান্ত্রিক দেশে নিজেদের ইসলামের মৌলিক কাজগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাবে।তবে সবাই মিলে ইসলামের সরল পথে কোন বিবাদ বিশৃংখলা না করে ইসলামকে অর্জন করার জন্য একসাথে কাজ করবে।সারা দেশের ইসলাম প্রিয় মানুষ যদি রাসূল সা: এর পথে কাজ করে তাহলে মদিনার ইসলাম কায়েম হতে সময় লাগবেনা।সে মানুষ তো দু'চারজন ও খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয় না।সমাজকে স্হিতিশীল রাখার একমাত্র উপায় হলো যতদিন মানুষ তৈরি না হবে ততদিন মানুষ তৈরিতে আমাদের আত্বনীয়োগ করতে হবে।ইসলামের জন্য আমাদের অনেক কাজ করার আছে তা যদি করি তাহলে আমাদের জীবন চলে যাবে শেষ করতে পারবোনা।ইসলামে শাসনক্ষমতা যেভাবে এসেছে সে পথে যেতে হবে।রাসূল সা: কাফের মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করেছেন।আর এখন মুসলিমরা মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করছে শুধু মাত্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য।যখন যে সরকার আসবে তখন তাদের ভাল কাজগুলোকে মেনে নিতে হবে আর খারাপ কাজগুলো তাদের সাথে বসে বা বিবৃতির মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে।আজকে হরতাল , অবরোধ , ভাংচুর করে জন গনের জীবনের গতি যারা প্রতিহত করছে তারা তাদের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্যই করছে।স্বাধীনতার ৪১ বছরে কারো কাছ থেকেই জাতি ভাল কিছু পায় নি।তারা এখানে আসে নিজেদের জীবনকে ফারনিশ করার জন্য।জাতি হিসেবে আমরা অজ্গ বলে বুঝতে পারছিনা।আমাদের সবার জবাবদিহীতা আছে।সুতরাং দুনিয়ার জীবনে জান মালের ক্ষতি করে , সমাজকে অস্হিতিশীল করে ইসলাম কাম্য হতে পারে না।আর যেহেতু ইসলামি দেশ হলেও ফাসেক সরকার তাদের ও ইসলামকে কটাক্ষ করা বা ইসলামের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা অনুচিত।ইসলামের মুল যেহেতু এক সেহেতু জামাতে ইসলামই বলুক বা হেফাজতে ইসলামই বলুক বা অন্য কোন ইসলামিক সংগঠনই বলুক তাদের কথায় অবশ্যই মিল থাকবে।সূরা আরা'ফের ৬৫ আয়াত থকে পর পর কয়েকজন নবী দাওয়াত পেশ করেছিলেন তাদের কথা ছিল এক।তোমরা এক আল্লাহর আনুগত্য কর , আর তার সাথে কাউকে শরিক করো না।মানব রচিত কথার পরিবর্তন হয় কিন্তু আল্লাহর কথার কোন পরিবর্তন নেই এটা আমার সম্মানীয় বুদ্ধিজীবিদের বুঝে নেয়া দরকার।আমরা মানুষ আজ এক কথা বললে কাল আর এক কথা বলি।কিন্তু ইসলামের কোন কথা বললে তা এক হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

এদেশের একজন বয়োজেষ্ঠ নেত্রি ইদানিং জাতির উদ্দ্যেশ্যে বলেছিলেন চার কালিমার কথা । ইসলামে চার বা পাঁচ কালিমা নেই।ইসলামে কালিমা হলো একটি, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা'বুদ নেই এবং হযরত মোহাম্মদ সা: আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ ও রাসূল।ইসলামের সৌন্দর্য দেখতে নবী সা: এর চরিত্রের কাছে যেতে হবে।রাজনীতির জন্য ইসলামকে যারাই ব্যাবহার

করবে তারা হলো বড় কপোট এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন তৈরি করে রাখা হয়েছে।আমাদের কাজ মানুষের কাছে সত্য পৌঁছানো।আমরা যদি দুনিয়ার লোভ লালসা থেকে দূরে থাকতে পারি তাহলেই সুন্দর সমাজ বিনির্মান করতে পারবো।অনর্থক সমালোচনা,অন্যের ক্ষতির চিন্তা নিজেকে যেমন ক্ষতি করবে তেমনি অন্যের জীবনকেও বিষিয়ে তুলবে।আমরা আমাদের দৈন্দিন জীবনে প্রতিহিংসাই দেখতে পাছ্ছি যা সংঘাত বাড়িয়েই তুলছে।এর জন্য আমরা সবাই কমবেশি দায়ি।সুস্হ চিন্তার মাধ্যমে এর অবসান হউক এ কামনাই করছি।

বিষয়: বিবিধ

১৩২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File