টিক্কা খাঁর তথ্য অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ৮৮ জন এমএনএ স্বাধীনতা বিরোধী ছিল !!!
লিখেছেন লিখেছেন অনামিকা ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:১৪:৫৬ সন্ধ্যা
টিক্কা খাঁর তথ্য অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ৮৮ জন এমএনএ (মেম্বার অব ন্যাশনাল এ্যসেম্বলী) স্বাধীনতা বিরোধী ছিলঃ-
বর্তমান সরকারের আইনমন্ত্রীর সংসদে দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯৭০ সালে নির্বাচিত ১৬৭ জন এমএনএ থেকে ৪৩ জনই ছিল ঘাতক-দালাল-যুদ্ধাপরাধী। আবার তৎকালীন টিক্কা খাঁ সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ৮৮ জন এমএনএ টিক্কা খাঁর আনুগত্য স্বীকার করে সরাসরি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তার মধ্যে সাজেদা চৌধুরীও ছিল। এই ৮৮জনের আসন ছাড়া বাকী গুলো শূণ্য ঘোষণা করে উপ-নির্বাচন করা হয়েছিল।
অর্থাৎ বর্তমান আইনমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ৪৩ জন এমএনএ প্রমাণিত ঘাতক-দালাল-যুদ্ধাপরাধী। আবার টিক্কা খাঁর দলিল অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ৮৮ জন এমএনএ ছিল ঘাতক-দালাল-যুদ্ধাপরাধী।
প্রাদেশিক আসনের আওয়ামী লীগের অনেক এমপিএ স্বাধীনতা বিরোধী ছিলঃ-
শুধু এমএনএ মাঝে স্বাধীনতা বিরোধী ছিল তা নয়, আওয়ামী লীগের অনেক এমপিএ স্বাধীনতা বিরোধী-ঘাতক-দালাল ছিল। যেমন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম), মুজিবুর রহমান তালুকদার (পটুয়াখালী, তিনি বর্তমানেও আওয়ামী লীগের সাংসদ), মো. মঈনুদ্দীন মিয়াজী (যশোর), হাবিবুর রহমান খান (খুলনা), মো. হাবিবুর রহমান (বগুড়া), জহির উদ্দিন (ঢাকা), লে. কর্নেল একেএম মাহবুবুল ইসলাম (পাবনা), সৈয়দ হোসেইন মনসুর (পাবনা), মো. আবদুল গাফফার (খুলনা), মো. সাঈদ (খুলনা), মোশাররফ হোসেন শাহজাহান, একে ফায়জুল হক (বরিশাল), এবিএম নুরুল ইসলাম (ফরিদপুর), আমজাদ হোসেন খান (ফরিদপুর), মো. নুরুল ইসলাম (ঢাকা), আখতারুজ্জামান (ময়মনসিংহ), সৈয়দ বদরুজ্জামান ওরফে এসবি জামান (ময়মনসিংহ), ডা. আবুল হাসেম (সিলেট)।
দৈনিক পাকিস্তান ও আজাদ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় উপরোক্ত নেতাদের স্বাধীনতা বিরোধী বিবৃতি প্রকাশ হয়। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় কেবল বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নেননি, পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতাও করেছিল।
বর্তমান আ্ওয়ামী লীগ নেতা অনেকের আত্মীয়স্বজন স্বাধীনতা বিরোধী ছিলঃ-
আওয়ামী লীগের আত্মীয়স্বজনের মাঝেও যুদ্ধাপরাধীর সংখ্যা কম নয়। যেমন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিমের বেয়াই মুসা-বিন শমসের, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মীর্জা আজমের বাবা মীর্জা কাশেম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের শ্বশুর বর্তমান সরকারের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও উনার পিতা ফরিদপুরে রাজাকারদের তালিকায় ১৪ নম্বরে থাকা খন্দকার নুরুল হোসেন নুরু মিয়া। আরো অনেকের নাম পরে আসবে।
আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভায় রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধী ছিল ও আছেঃ--
১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম জামালপুরের সরিষাবাড়ির রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তিনি দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আরেক মন্ত্রী এ কে ফায়জুল হক দালাল আইনে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
মালেক মন্ত্রী সভায় আওয়ামী লীগ যোগ দিয়েছিলঃ-
১৯৭০ সালের নির্বাচনে নোয়াখালী থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের ‘এমএনএ’ (জাতীয় পরিষদ) মো. ওবায়দুল্লাহ মজুমদার ও চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত ‘এমপিএ’ (প্রাদেশিক পরিষদ) অধ্যাপক শামসুল হক দু’জনই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর তৈরি মালেক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
বর্তমান আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সংসদে বলেছেন ১৯৭০ সালে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের ৪৩ জন এমএনএ স্বাধীনতা বিরোধী ছিলঃ-
গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১০ ইং তারিখে আওয়ামী লীগ সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল তারকা চিহ্নিত (১১৫ নং) প্রশ্নের মাধ্যমে জিজ্ঞেস করেন, “এটা সত্য কিনা যে, ১৯৭০ সালে তৎকালীন জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত পরিষদ সদস্যদের মধ্যে ৭১ এ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য কতিপয় সদস্যদের সদস্য পদ স্বাধীন বাংলাদেশে গণপরিষদ গঠনকালে বাতিল করা হয়েছিল। উত্তর হাঁ হলে বাতিলকৃত সদস্যদের নাম ও নির্বাচনী এলাকার নাম কি?”
জবাবে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, “হ্যাঁ, ময়নমনসিংহ থেকে নুরুল আমিন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে মেজর রাজা ত্রিবিদ রায় তদানীন্তন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হলেও বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ ১৯৭২-এর ৪ অনুচ্ছেদ কার্যকরি হওয়ার ফলে তারা বাংলাদেশ গণপরিষদের সদস্য নন। তারা ১৯৭১ সালের ২৪ ডিসেম্বর তারিখে একটি বিদেশী রাষ্ট্র অর্থাৎ পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। তাই তারা কখনই বাংলাদেশ গণপরিষদের সদস্য ছিলেন না।
এছাড়া গণপরিষদ সদস্যদের মধ্য হতে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হতে মোট ৪৩ জনকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতরা হচ্ছে- মোঃ হাবিবুর রহমান, সৈয়দ হোসেন মনসুর, মোঃ আব্দুল গফ্ফার, আবুল কালাম ফয়জুল হক, এবিএম নুরুল ইসলাম, আজমাদ হোসেন খান, মোঃ নুরুল ইসলাম, জহির উদ্দিন, মোঃ ওবায়দুল্লাহ মজুমদার, একেএম মাহাবুবুল ইসলাম, মোঃ সাঈদ, মোশাররফ হোসেন, আক্তারুজ্জামান, সৈয়দ বদরুজ্জামান, ডাঃ আবুল হাশেম, অধ্যাপক শামসুল হক, মোঃ আবদুল বারেক, ডাঃ আজহার উদ্দিন আহমেদ, গোলাম আহাদ চৌধুরী, এ হাদী তালুকদার, আদিল উদ্দিন আহমেদ এডভোকেট, মুজিবুর রহমান তালুকদার, শামসুদ্দিন আহমেদ, খন্দকার আব্দুল মালেক, ডাঃ আবু সোলায়মান মন্ডল, ডাঃ জাহিদুর রহমান, তাহেরুল ইসলাম খান, রিয়াজ উদ্দিন আহম্মদ, মোঃ আব্দুস সালাম, কেবিএম আবু হেনা, জহুরুল হক, মোশাররফ হোসেন, হাবিবুর রহমান খান, কাজী হেদায়েত হোসেন, আব্দুল হাকিম মাস্টার, মোঃ সাজেদ আলী মিয়া, মাসুদ আহমেদ চৌধুরী, ডাঃ কাজী সিরাজউদ্দিন আহমেদ, গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ হাশেম, এম. সাখাওয়াতুল্লাহ এডভোকেট, মীর্জা আবু মনসুর এবং আখতারুজ্জামান চৌধুরী।”
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন