ন্যায় বিচারের নমুনা ও আমরা
লিখেছেন লিখেছেন ওরিয়ন ১ ০২ আগস্ট, ২০১৬, ১০:২৩:০৪ সকাল
কুরআন- সুন্নাহর আলোকে ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বির্নিমানের জন্য দেশে দেশে ইসলামিক মুভমেন্ট গুলো কাজ করে যাচ্ছে। আর তাই ঐ দল বা গোস্টীর কাছে সমাজের সাধারন মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই ন্যায় বিচার/ইনসাফ আশা করে। আর দলের আভ্যন্তরীন কর্মীদের মাঝে ন্যায়/ইনসাফ কায়েম হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আদলে কি তাই হচ্ছে!হচ্ছে না যে তা কিন্তু নয়, তবে না হবার লিস্ট ও কিন্তু ছোট নয়।
রোকন মিয়া যখন অন্যায় কিংবা অপরাধ করে বসে তখন সেটা ধামাচাপা দেবার একটা অপচেস্টা করা হয়, যাতে করে করিম মিয়ারা রোকন মিয়াদের ব্যাপারটা জানতে না পারে, তাহলে যে রোকন মিয়াদের মান-সম্মান থাকে না। আবার অনেক সময় অনেকটা জোর করে ইনসাফ প্রার্থীকে ক্ষমা করতে বলা হয়, আর এক্ষেতে ইনসাফ প্রার্থী ক্ষমা করতে উদ্যত না হলে উনি হয়ে যান, রুঢ বা শক্ত মানুষ। ভাইজান, আপনি অন্যায় করে ও হয়ে গেলেন সমাজে ভালো মানুষ, আর আমি শুধুমাএ অন্যায়ের বিচার চেয়ে ও হয়ে গেলাম অবিবেচক। প্রাষান্ড। কি সেলুকাস!
আচ্ছা বলতে পারেন, কেন ধর্ষনকারীকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মেরে হত্যা করতে বলা হলো? কেন গহীন জংগলে কিংবা ঘরের কোনে হত্যা করতে বলা হলো না, কারন একটাই, যাতে করে ভবিষ্যৎ এ কেউ এই কাজ করের দুসাহস না পায়। আপনি এই আইনটিকে বর্বর বলছেন, অথচ এই আইনের মাধ্যমে আল্লাহর রাসূল সমাজে ইনসাফ কায়েম করতে বলেছেন।
আপনি দুভাইয়ের মধ্যে অন্যায় কিংবা জুলুম হয়ে গেলে সেটাকে মিলমিশ করে দিচ্ছেন. এতে করে আপনি মজলুমকে আবারো জুলুম করছেন, আর জালিমদের উস্কে দিচ্ছেন, পরবর্তী অন্য কোন টার্গেটে। আচ্ছা, এই হাদীসটার তাৎপর্ষ কি!
রাসূলুল্লাহ্ (স) এর বাণীতে তিনি বলেন, ‘মনে রেখো তোমাদের পূর্বে যত জাতি অতিবাহিত হয়েছে তাদের অবস্থা ছিল এমন যে, তাদের মধ্যকার কোনো অভিজাত বা ভদ্রলোক চুরি করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হতো। আর দুর্বল ব্যক্তি চুরি করলে তার ওপর আইনের দণ্ড কার্যকর হত। আল্লাহ্র শপথ! আমার মেয়ে ফাতিমাও যদি চুরি করত অবশ্যই আমি তার হাত কেটে ফেলার আদেশ দিতাম। (বুখারী)
অনেক ভালো লাগতো, যদি মুরব্বীরা যা ওয়াজ করে আমাদের, সেটা যদি নিজেরা ও করে দেখাতো। আফসোস! মুরব্বীদের ভূল ধরতে নেই বোধহয়।
যখনি আনুগত্যের প্রশ্ন আসে, আমরা কুরান সুন্নাহ থেকে কোড করি, করিম মিয়ারা তখন মুখ বুঝে শুনে যায়, মেনে যায়, আবার যখন কোন ইনসাফের প্রশ্ন আসে, বিচারের প্রশ্ন আসে তখন আমরা কুরান হাদীস এক পার্শ্বে রেখে নিজেদের বিবেক বুদ্বি খাটাই, সংঘঠনের আস্তিত্ব নিয়া ভাবি, আহা!
কুরান হাদীসের আলোকে সংঘঠন না সংঘঠনের আলোকে কুরান হাদীস, আমার বুঝে আসে না, মাথার উপ্রে দিয়া যায়।
তূর্কীরা শরীয়া আইন চালু করলে, একে পার্টির সবাই বেহেস্তে যাবে কিন আমার জানা নেই, আবার আমরিকার মুসলমান বলে বেহেস্তে যেতে মানা তেমনটি তো নয়। " সংঘঠন কে ভালোবাসতে গিয়ে যদি আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা কমে যায়, তাহলে বিজয় কিভাবে কামনা করব?" কৌশলের নামে মিথ্যার আশ্রয় সেতো সত্য বিমুখতার প্রথম ধাপ, কিছু কৌশল মানুষকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে, কিন্তু তাতে কি প্রকৃত বিজয় তথা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা কি সম্ভব? আমরা আজকাল সংখ্যা গুনি, ১০০০ জন। কিন্তু ৩১৩ জনের অদম্য ঈমান আমাদের আকৃস্ট করে না।
পরিশেষে বলি, আসুন ইনসাফ করি, ন্যায্য বিচার করি আগে নিজের ঘরে, তারপর না হয় সমাজ বির্নিমানের কথা ভাবা যাবে। আমার আল্লাহ বলেন,
মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের সূরা নিসার ১৩৫ নং আয়াতে আল্লাহ্ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা সর্বদাই ইনসাফের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থেকো এবং নিজেকে আল্লাহ তায়ালার জন্য সত্যের সাক্ষি হিসেবে পেশ করো যদি এই কাজটি তোমার নিজের পিতা-মাতার কিংবা নিজের আত্মীয়-স্বজনের উপরেও আসে। সে ব্যক্তি ধনি হোক বা গরিব হোক এটা কখনও দেখবে না। কেননা তাদের উভয়ের চাইতে আল্লাহ্র অধিকার অনেক বেশি। অতএব তুমি কখনও ন্যায় বিচার করতে খেয়াল খুশি অনুসরণ করো না।’ এ সম্বন্ধে আল্লাহ্ তা‘আলা আরও বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্য নিষ্ঠাবানদের সাথে থাক’ (সূরা আত্-তাওবাহ: আয়াত -১১৯)। অন্যত্র আল্লাহ্ তাআলা বলেন, ‘সত্যনিষ্ঠ পুরুষ ও নারীরা.. তাদের জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা ক্ষমা ও বিরাট পুরস্কার তৈরি করে রেখেছেন।’ (সূরা আল-আহ্যাব: আয়াত-৩৫) তিনি আরও বলেন, ‘তারা যদি আল্লাহ্র কাছে প্রতিজ্ঞায় সত্যতার প্রমাণ দিত, তাহলে নিশ্চয়ই তা তাদের জন্য উত্তম হতো’ (সূরা মুহাম্মদ : আয়াত-২১)।
বিষয়: বিবিধ
১৪২৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সামাজিক নিরাপত্তা ও শান্তির মূলসূত্র সূরা আন-নাহলের ৯০নং আয়াতটি- যা জুমআর ২য় খুৎবায় প্রায়শঃই বলা হয়!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন