নেতা বা নেতৃত্ব নির্বাচন
লিখেছেন লিখেছেন ওরিয়ন ১ ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:৪০:৪১ রাত
নেতা বা নেতৃত্ব নির্বাচন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারন একজন নেতা একটি দেশ, একটি দল কিংবা একটি সমাজকে সামনে বা পিছনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য শতকরা ৮০ ভাগ দায়ভার বহন করে। আর সেটা যদি হয় ইসলামী রাস্ট্র বা ইসলামী সংঘঠনের নেতা বা নেতৃত্ব নির্বাচন তবে সেটার গুরুত্ব আরো বহুলাংশে বেড়ে যায় বৈকি। কারন একজন অপরিপক্ক কিংবা অনেক বেশী মানবিক দূর্বলতা সম্পন্ন কেউ নেতা বা নেতৃত্ব দানের জন্য নির্বাচিত হলে সেটা রাস্ট্র কিংবা দলকে পিছনে টেনে নেওয়ার সাথে সাথে আপাময় জানসাধারনের কাছে ইসলামকে প্রশ্নাতীত করে তুলে।
দুঃখজনক হলে ও সত্য যে, অনেক সময় ইসলামী দলের এই নেত্বত্ব নির্বাচনে কর্মীরা দায়সারা কিংবা খামখেয়ালী আচরন করে থাকে, যথেস্ট বুদ্বিমওা ও চুলচেরা বিশ্লষন করে না। যেমনটি করে থাকে নিজের চাকুরী, ব্যাবসা কিংবা দুনিয়াবী অন্যান্য কাজে। এতে করে কর্মী তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারনে ব্যাক্তিগত ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সাথে সাথে দল কিংবা সমাজকে যোগ্য নেত্বত্ব নির্বাচনে সহযোগিতা না করায় দল কিংবা সমাজ ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।
আসুন, কুরান-হাদীসের আলোকে জেনে নেই, নেতৃত্ব নির্বাচনে সর্বাধিক যোগ্য ব্যক্তিকেই বাছাই করা র কিছু বৈশিস্ট:
আল্লাহ্ তায়ালা সূরা ইমরানের ১৫৯ আয়াতে নেতার গুণাবলী বর্ণনা করেছেন
“আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহর উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন”।
নেতৃত্বের জন্য একজন নেতার প্রয়োজনীয় গুনাবলী:
১। কোমল হৃদয় সম্পন্ন
২। অনুসারীদের ত্রুটিকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা।
৩। পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
৪। দৃঢ় সংকল্প
৫। আল্লাহ্র উপর ভরসা রাখা।
নেতার গুণাবলী সম্পর্কে আরো বলেছেন আরো বলেছেন, লুকমান ২৩, তাওবা ১২৮, আশ শোয়ারা ২১৫, আহকাফ ৩৫।
নেতৃত্বের পরই নেতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কর্তৃত্ব প্রদান। মানে যোগ্য ব্যক্তিদের কে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান। এই ব্যাপারে রাসূল সঃ বলেন, যে সেনাবাহিনীতে এমন ব্যক্তিকে নেতা নির্ধারণ করলো, যার চাইতে সেনাবাহিনীতে আরো যোগ্যতর ব্যক্তি রয়েছে, সে আল্লাহ্ ও তার রাসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। বিশ্বাসঘাতকতা করলো মুসলিমদের সাথে। (আল হাকিম)
এখানে স্বজনপ্রীতি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।
ওমর ফারুক রাঃ বলেন, যে মুসলিমদের কোন ব্যাপারে (নির্বাহী) দায়িত্ব পেয়ে এমন ব্যক্তিকে কর্মকর্তা নিযুক্ত করে, যার সঙ্গে তার স্নেহের সম্পর্ক আছে। কিংবা সে তার স্বজন। তবে সে আল্লাহ্ ও তার রাসূল এবং মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। (শরিয়তী রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ ইবনে তাইমিয়া) কর্তৃত্ব বা নেতৃত্ব চাওয়ার বিষয় নয়। আর যে তা চাইবে সে সবচেয়ে বেশী অযোগ্য।
একদা রাসূল সঃ দরবারে কিছু লোক উপস্থিত হয়ে তাঁর পক্ষ হতে শাসন কতৃত্ব প্রাপ্তির অনুরোধ জানালো। জবাবে রাসূল সঃ বললেন, যারা স্বেচ্ছায় কর্তৃত্ব চায়, আমরা এমন লোককে কোন কিছুরই কর্তৃত্ব দেই না। (বুখারী ও মুসলিম)
সূরা মায়েদায় ১০৫ নং আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, হে মুমিন গণ! তোমরা নিজেদের দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন থাকো। তোমরা সঠিক পথে থাকলে গোমরাহ ব্যক্তিরা তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।
কর্তা ব্যাক্তিরা হবে আমানতদার, বিশ্বস্ত, তাকওয়ার গুনে আলোকিত। তারা পার্থিব সামান্য চাহিদার বিনিময়ে হক্কুল্লাহকে কখনোই বিসর্জন দেবে না
বিষয়: বিবিধ
২০৩৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন