মুসলিম জীবনে শহীদ মিনার কেন্দ্রিক আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে কতিপয় ভাবনাঃ ====================================
লিখেছেন লিখেছেন ওরিয়ন ১ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৩৭:৫৮ সকাল
শহীদ মিনারের বেদীঃ
হিন্দু দেবদেবীর প্রতিমাকে যে উঁচু স্থানে স্থাপন করা হয় সে স্থানকে বলা হয় বেদী, শহীদ মিনারের পদমূলকেও বলা হয় বেদী। বেদী শব্দটির অর্থ ‘হিন্দুদের যজ্ঞ বা পূজার জন্য প্রস্ত্তত উচ্চভূমি।’ (সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমী)
বেদীমূলকে পবিত্র মনে করাঃ
হিন্দু দেবদেবীর প্রতিমা বা মূর্তির বেদীমূলকে পবিত্র মনে করা হয়, তাই সেখানে যেতে হয় নগ্নপদে। শহীদ মিনারের বেদীমূলকেও পবিত্র মনে করা হয়। সে কারণেই শহীদ মিনারের বেদীমূলে ফুল দেয়ার জন্য নগ্নপদে যেতে হয়।
বেদীমূলে আলপনা অঙ্কনঃ
লক্ষ্মীপূজার সময় আলপনা আঁকা হয়। শহীদ মিনারের পদমূলে যাবার পথেও আলপনা আঁকা হয়। আলপনা অর্থ ‘মেঝে, দেয়াল, সিঁড়ি প্রভৃতিতে অঙ্কিত হিন্দুদের মঙ্গলসূচক চিত্রবিশেষ’। (সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমী)
পূজার সাথে সাদৃশ্যঃ
হিন্দু দেবদেবীর পূজার সময় কয়েকটি বিষয় অপরিহার্য। এগুলো হল : লগ্ন, অর্ঘ্য বা নৈবেদ্য, স্তব বা স্ত্ততি, পুরোহিত, দেবতা ও অর্চনা। এসবের সাথেও একুশে ফেব্রুয়ারির আচার-আচরণের সাদৃশ্য আছে। যেমন- লগ্নঃ অনুষ্ঠান জিরো আওয়ারে শুরু করা,
পুরোহিত বা আচার্য্যঃ
অনুষ্ঠান পরিচালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য, স্তব/স্ত্ততিঃ নির্দিষ্টভাবে আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো ’ গান, মুর্তির প্রতীকঃ শহীদ মিনার এবং অর্চনাঃ নীরবে শ্রদ্ধা নিবেদন।
মিনারের সংখ্যাঃ
দূর্গাপূজার সময় দেখা যায়, দূর্গার মূর্তির পাশে রয়েছে আরো চারটি (দূর্গার পুত্র গণেষ ও কার্তিক এবং কন্যা সরস্বতী ও লক্ষ্মীর) মূর্তি। এভাবে সব মিলে মূর্তির সংখ্যা হয়েছে পাঁচ। শহীদ মিনারেও মিনারগুলোর সংখ্যা পাঁচ। মিনারের সংখ্যা পাঁচ হওয়ার কারণ কী? ভাষা শহীদদের সংখ্যা কি পাঁচ ছিল? আবার মধ্যবর্তী মিনারটির আকার অন্যদের তুলনায় বড় কেন?
ভাস্কর্যের সামনে সম্মান প্রদর্শনঃ
হিন্দুরা প্রতিমা-পূজার পক্ষে এ যুক্তি পেশ করেন যে, দেবতা পূজারীদের নাগালের ভেতর নেই, তাই তার প্রতিমার মাধ্যমে তাঁকে পূজা দেওয়া হয়। শহীদ মিনারের বেলায়ও এ বিশ্বাস করা হয় যে, শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে সম্মান দেখানোর মাধ্যমে ভাষা যুদ্ধে নিহত শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়।
শহীদ মিনারকেন্দ্রিক আচার-অনুষ্ঠানকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করে দেখার দরকার আছে। মুসলিম শহীদদের জন্য কিভাবে হিন্দুদের মুর্তি-পুজার ন্যায় আচার-অনুষ্ঠান জাতীয় পর্যায়ে বাধ্যতামূলক ভাবে গ্রহণ করা হল এর জবাব পাওয়া দরকার। দল-মত নির্বিশেষে আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে বিষয়গুলো ভেবে দেখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।ইসলামী মতে, মৃত মুসলমানের জন্য দুয়া করতে হয়। কিন্তু ভাষা যুদ্ধে নিহতদের জন্য যা করা হয় তার সাথে ইসলামের মিল নেই। ভাষা যুদ্ধে সবাই ছিলেন মুসলমান। কাজেই তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আমরা এমন কিছু করতে পারি না যা ইসলামী চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। তাছাড়া কোনো মুসলমানই তাওহীদ-বিরোধী কোনো কাজ করতে পারে না। ( সংগৃহিত )
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৭ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মিথ্যাকে মিথ্যা না বলার অভ্যাস হতে থাকলে একদিন মিথ্যা আর মিথ্যা থাকে না মানুষের কাছে। তেমনিভাবে সত্যিটাও লুকিয়ে যায় একসময় যদি তার চর্চা না থাকে। ধন্যবাদ।
আশা করি ক্লিয়ারলি বলতে পেরেছি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন