বন্ধুত্ব আর ভালবাসা

লিখেছেন লিখেছেন ওরিয়ন ১ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৩:৫২:৪২ রাত



বন্ধুত্ব আর ভালবাসার মধ্যে যথন দুনিয়াবী কোন চাওয়া-পাওয়া, নাফসের কোন কামনা-বাসনা আর জৈবিক কোন লালসার লেশমাত্র থাকে না বরং কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের জন্যই নিবেদিত হয়- তখন সে বন্ধুত্ব আর ভালবাসার মাধ্যমে মানব জীবনের চুড়ান্ত লক্ষ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।

হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন : আল্লাহ তা’য়ালার বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে, যারা নবীও নয় আর শহীদও নয়। কিন্তু বিচার দিবসে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের উপর রিশক করবেন। জিজ্ঞেস করা হল- হে আল্লাহর রসূল! তারা কারা?

উত্তরে তিনি বললেন: তারা হচ্ছে সেই সব লোক, যারা শুধু আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করেছে। তাদের মধ্যে নেই কোন রক্তের সম্পর্ক নেই কোন বংশের সম্পর্ক। তাদের মুখমন্ডল হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা নুরের মিম্বরের উপর অবস্থান করবে। কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় মানুষ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে তখন তারা ভীত হবে না আর মানুষ যখন দুঃখে থাকবে তখন তাদের কোন দুঃখ থাকবে না।

অতঃপর তিনি পাঠ করলেন- জেনে রাখ! যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের কোন ভয় নাই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।

-(আবু দাউদ : ৩০৬০, সহীহ্)

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : একমাত্র আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর মহব্বতকারীগণ এত উঁচু মর্যাদা সম্পন্ন জান্নাত লাভ করবে যে, অন্যান্য জান্নাতবাসীগণ তাদেরকে এভাবে দেখবে যেভাবে পূর্ব বা পশ্চিমে উদিত নত্রসমূহকে দেখা যায়। তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, এরা কারা? উত্তরে বলা হবে, এরা হল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর মহব্বতকারীগণ। - (মুসনাদে আহমাদ : ১১৬১৮)

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা’য়ালা বলেন : যারা আমার সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টির কামনায় পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালবাসার জন্যই নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদেরকে ভালবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। -(মুয়াত্তা)

পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও ভালবাসা মুমীনদের জীবনের অপরিহার্য পরিচ্ছদ। হযরত আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : তোমাদের মধ্যে কেউই মুমিন হতে পারে না, যতক্ষন না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে। -( বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আবু মূসা আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : এক মুমিন অন্য মুমিনের জন্য প্রাচীর স্বরূপ যার এক অংশ অন্য অংশকে শক্তি যোগায়। তিনি তার এক হাতের আঙুল অন্য হাতের আঙুলের ফাঁকে ঢুকিয়ে দেখান। -(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত নুমান ইবনে বশীর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : পারস্পরিক ভালবাবাসা, দয়া-অনুগ্রহ ও মায়া-মমতার দৃষ্টিকোন থেকে মুমিনগণ একটি দেহের সমতুল্য যার কোন অংশ অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্যান্য অংগ-প্রত্যংগ তা অনুভব করে, সেটা জাগ্রত অবস্থায়ই হোক কিংবা জ্বরের অবস্থায় (অর্থাৎ সর্বাবস্থায়)।

-(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। যেসব পাপী আল্লাহর সাথে শরীক করেনি তাদেরকে ক্ষমা করা হয়। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ত্যাগকারী ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়- এদেরকে ফিরিয়ে দাও যতক্ষণ না এরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে।

-(সহীহ মুসলিম)

বন্ধুত্ব আর ভালবাসার মধ্যে যথন দুনিয়াবী কোন চাওয়া-পাওয়া, নাফসের কোন কামনা-বাসনা আর জৈবিক কোন লালসার লেশমাত্র থাকে না বরং কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের জন্যই নিবেদিত হয়- তখন সে বন্ধুত্ব আর ভালবাসার মাধ্যমে মানব জীবনের চুড়ান্ত লক্ষ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।

হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন : আল্লাহ তা’য়ালার বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে, যারা নবীও নয় আর শহীদও নয়। কিন্তু বিচার দিবসে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের উপর রিশক করবেন। জিজ্ঞেস করা হল- হে আল্লাহর রসূল! তারা কারা?

উত্তরে তিনি বললেন: তারা হচ্ছে সেই সব লোক, যারা শুধু আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করেছে। তাদের মধ্যে নেই কোন রক্তের সম্পর্ক নেই কোন বংশের সম্পর্ক। তাদের মুখমন্ডল হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা নুরের মিম্বরের উপর অবস্থান করবে। কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় মানুষ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে তখন তারা ভীত হবে না আর মানুষ যখন দুঃখে থাকবে তখন তাদের কোন দুঃখ থাকবে না।

অতঃপর তিনি পাঠ করলেন- জেনে রাখ! যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের কোন ভয় নাই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।

-(আবু দাউদ : ৩০৬০, সহীহ্)

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : একমাত্র আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর মহব্বতকারীগণ এত উঁচু মর্যাদা সম্পন্ন জান্নাত লাভ করবে যে, অন্যান্য জান্নাতবাসীগণ তাদেরকে এভাবে দেখবে যেভাবে পূর্ব বা পশ্চিমে উদিত নত্রসমূহকে দেখা যায়। তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, এরা কারা? উত্তরে বলা হবে, এরা হল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর মহব্বতকারীগণ। - (মুসনাদে আহমাদ : ১১৬১৮)

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা’য়ালা বলেন : যারা আমার সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টির কামনায় পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালবাসার জন্যই নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদেরকে ভালবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। -(মুয়াত্তা)

পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও ভালবাসা মুমীনদের জীবনের অপরিহার্য পরিচ্ছদ। হযরত আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : তোমাদের মধ্যে কেউই মুমিন হতে পারে না, যতক্ষন না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে। -( বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আবু মূসা আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : এক মুমিন অন্য মুমিনের জন্য প্রাচীর স্বরূপ যার এক অংশ অন্য অংশকে শক্তি যোগায়। তিনি তার এক হাতের আঙুল অন্য হাতের আঙুলের ফাঁকে ঢুকিয়ে দেখান। -(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত নুমান ইবনে বশীর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : পারস্পরিক ভালবাবাসা, দয়া-অনুগ্রহ ও মায়া-মমতার দৃষ্টিকোন থেকে মুমিনগণ একটি দেহের সমতুল্য যার কোন অংশ অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্যান্য অংগ-প্রত্যংগ তা অনুভব করে, সেটা জাগ্রত অবস্থায়ই হোক কিংবা জ্বরের অবস্থায় (অর্থাৎ সর্বাবস্থায়)।

-(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। যেসব পাপী আল্লাহর সাথে শরীক করেনি তাদেরকে ক্ষমা করা হয়। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ত্যাগকারী ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়- এদেরকে ফিরিয়ে দাও যতক্ষণ না এরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে।

-(সহীহ মুসলিম)

বিষয়: বিবিধ

১১৮৪ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

176052
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:০৯
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:৫২
129306
ওরিয়ন ১ লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে জান্নাত বাসী করুক, আমীন।
176119
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৬:২৭
আইমান হামিদ লিখেছেন : ইনশাল্লাহ মনে থাকবে
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:৩২
129335
ওরিয়ন ১ লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে জান্নাত বাসী করুক, আমীন।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:০১
129381
আইমান হামিদ লিখেছেন : আমীন

আল্লাহ আপনাকেও জান্নাত বাসী করুক, আমীন।
176136
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:১৪
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। যাজাকাল্লাহু খাইরান Praying
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:৩২
129336
ওরিয়ন ১ লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে জান্নাত বাসী করুক, আমীন।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:৩৫
129337
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : আমীনPraying

মহান আল্লাহ আপনাকেও জান্নাতবাসী করুন, আমীনPraying
176208
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:১১
রাইয়ান লিখেছেন : সুন্দর লিখেছেন , ভাইয়া ! অসংখ্য শুভেচ্ছা ।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৬
129691
ওরিয়ন ১ লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে জান্নাত বাসী করুক, আমীন
176300
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:২০
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন :
The Prophet Sallallahu ‘Alayhi Wa sallam, on the last pilgrimage, informed his Companions and the nations of Muslims to come, that there is no favour or no special place of the Arab over the non-Arab; nor is there any favour or special position of White over Black, but that favour in the sight of Allah, is with those who fear Him, those who have taqwah. After bearing witness to that, he said that “Taqwah is in the heart.”
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৬
129692
ওরিয়ন ১ লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে জান্নাত বাসী করুক, আমীন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File