১/১১ এর সমর্থকরা আজ কোথায় ?

লিখেছেন লিখেছেন শিশিরবাবু ১০ মার্চ, ২০১৩, ০৯:৩৪:২১ রাত

২০০৬ সালে বিএনপি – জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদ অবসান কালে আওয়ামী লীগ তার জণ্য সহায়ক হবে এমন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সর্বাত্মক আন্দোলন-তান্ডব শুরু করে। বিএনপির পছন্দের বিচারপতি কে এম হাসান দলনিরপেক্ষ, সৎ সরকার প্রধাণ না হওয়ার কোন বিশ্বাসযোগ্য কারণ ছিল না। তাঁর কর্মজীবনের রেকর্ড তাঁকে অবশ্যই একজন সৎ ও দক্ষ মানুষ হিসাবে পরিচিত করে। আওয়ামী লীগ দেখলো কে এম হাসান কে প্রভাবিত করার সম্ভবনা কম, সুতরাং বিএনপির কাছের লোক এই ঠুনকো অজুহাতে আরম্ভ করলো মানি না, মানবো না আন্দোলন। অথচ ইতিপূর্বে বিচারপতি লতিফর রহমান ও হাবিবুর রহমান ছিলেন আওয়ামী ঘরনার। একই ভাবে সহজ সরল মানুষ কিন্তু কর্মজীবনে সফল বিচারপতি আজিজের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও সর্বশক্তি নিয়োগ করে। আওয়ামী লীগের তৎপরতা কেবলমাত্র রাস্তায় ছিল না। ক্ষমতার কেন্দ্রসমূহ যেমন জনপ্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং আমাদের বাস্তবতায় বিদেশী কূটনৈতিক মহল ইত্যাদিতে অনুপ্রবেশ ও প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল। এদের মধ্যে সরকারের উপর ব্যক্তিগত কারণে যারা অসন্ত্তুষ্ট ছিল তাদের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে পেরেছিল। ক্ষমতার ভেতরে ও রাজপথে সমন্বিত কার্যক্রম চালিয়ে সংবিধান ও গণতন্ত্র বিরোধী মহা তান্ডব চালাতে আওয়ামী লীগ সমর্থ হয়। জাতির দূর্ভাগ্য, কে এম হাসান চাপের মুখে দৃঢ়তা দেখাতে ব্যার্থ হন। ফলশ্রুতি ১/১১ এর সংবিধান বিরোধী সরকার।

তখনও দেখেছি এ'দেশের গরিষ্ঠসংখ্যক মিডিয়া, সুশীল সমাজের একাংশ আওয়ামী তান্ডব এবং ফলশ্রুতিতে উৎপন্ন ফসল ১/১১ কে অভিনন্দিত করছে, সমর্থন করছে। সংবিধান ও গণতন্ত্র বিরোধী এই তৎপরতার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে তারা দূর্ণীতিবাজ রাজনীতিবিদদের শিক্ষা দেওয়ার কথা বলতেন। আমার যুক্তি ছিল সব পেশারই কিছু পেশাগত ঝুকিঁ থাকে, যাকে বলা যায় Professional hazards। তাই বলে কেউ বাধ্য না হলে পেশা ছেড়ে চলে যায় না। আমাদের দেশে লোভী, লুটেরা, সন্ত্রাসীগোষ্টীর যে অপরাজনীতি গড়ে উঠেছে, তাতে জেল-জরিমানার সাময়িক কষ্ট তাদের কাছে Professional hazards বৈ অণ্য কোন অর্থ বহন করে না। আজকে যখন এরা বলে রাজনীতিবিদরা ১/১১ থেকে কোন শিক্ষা নেন নি, তখন তাদের বুদ্ধি, প্রজ্ঞা ও বিবেচনাশক্তির উপর আমার অনাস্হা পাকাপোক্ত হয়।

প্রকৃতপক্ষে রাজনীতিবিদদের শিক্ষা দেওয়ার কথা গণমানুষকে বিভ্রান্ত করার অপকৌশল। বাংলাদেশের স্বাধীন, সার্বভৌম জাতিসত্বা বিরোধী গোষ্টী বিদেশী সহায়তায় ১/১১ নাটক মঞ্চস্হ করেছিল আমাদেরকে নিজ দেশে বন্দী করার জণ্য। আমাদের ক্ষমতালিপ্সু লুটেরা ধনীকশ্রেণী ও তাদের সেবাদাস সুবিধাবাদী দূর্ণীতিবাজ সামরিক-বেসামরিক আমলারা বুঝে, না বুঝে অংশগ্রহণ করেছিল।

আজ আমরা অপরাজনীতির কোন অবসান দেখছি না। বরং যুক্ত হয়েছে নির্মম ফ্যাসিবাদ। স্বাধীন, সার্বভৌম জাতিসত্বা হিসাবে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ আরো কঠিন ও পর্বতসম বাঁধার সম্মুখীন। ১/১১ এর মঈন-ফখরুদ্দিনের উপহার একটি নির্মম ফ্যাসিবাদ , নৈরাজ্য ও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।

১/১১ এর সমর্থকরা আজ কোথায় ?

বিষয়: বিবিধ

১০১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File