হরতালের সেকাল ও একাল। একালে সহিংসতার বিস্তৃতি সরকারের নির্মম, অগণতান্ত্রিক, হার্ড লাইন এক্টিভিটির ফল।
লিখেছেন লিখেছেন শিশিরবাবু ১০ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:১৫:১৫ রাত
হরতাল কর্মসূচি কি বাংলাদেশে এবারই প্রথম হচ্ছে? নিশ্চয়ই না। আগেকার হরতাল যারা দেখেছেন তারা জানেন হরতালের আগের রাতে মশাল মিছিল সহ নানাবিধ তৎপরতা হরতাল আহবানকারীরা করতেন।হরতালের দিন কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পিকেটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। পুলিশী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ছিল। সহিংসতার রূপ নিলে এক দিকে চলতো ইট পাটকেল নিক্ষেপ, অণ্যপক্ষে লাটি চার্জ, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ।
এখন কি হচ্ছে? সরকার হুমকী দেয় কাউকে রাস্তাতেই দাঁড়াতে দিবে না। আগের কয়েকদিন চলে গণ গ্রেফতার, রিমান্ড, জেল-জুলুম, নির্যাতন। হরতালের দিন পিকেটিং তো দূরের কথা অলিতে গলিতে পর্যন্ত ঢুকে চলে পুলিশ/RAB এর নির্বিচারে টিয়ার শেল নিক্ষেপ, লাটি চার্জ, জলকামা্ন, রাবার বুলেট, গুলি। নেতারা ঘরের বাহির হলেই আটক। সরকারী মিডিয়া জোরে শোরে বলে পুলিশ রাস্তায় দাঁড়াতেই দেয় নি।
পূর্বে হরতাল আহবান হলে বেশীর ভাগ চাকুরীজীবি বাসায় ছুটির মেজাজে কাটাতেন। চাকুরী হারাবার কোন শংকাই ছিল না। এখন সরকার কর্মস্হলে আসার জণ্য চাপ প্রয়োগ করে। বেতন কর্তন সহ চাকুরী খাওয়ার হুমকী সব অস্ত্রই প্রয়োগ করে। বেসরকারী কতৃপক্ষগুলোকে অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেয়। না মানলে সরকারী তোপানলে প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে। অনুরূপ অবস্হায় পড়তে হয় দোকানপাট্,ব্যবসায়ীদেরও।
আগের চেয়ে অনেক হিংস্রতায়্, অনেক বেশী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে হরতাল বানচালের চেষ্টা চালায় সরকার। নিউটনের তৃতীয় সূত্রের বাস্তবতায় সামগ্রিক হরতাল কর্মসূচিই হয়ে পড়ে সহিংস। দলবেধে মোড়ে মোড়ে পিকেটিং, হরতাল পালনের অনুরোধের স্হান দখল করে ককটেলবাজী, অগ্নিসংযোগ।
পর্যাপ্ত জনসমর্থন না থাকলে কোন দলই হরতাল দিয়ে বেশীদূর যেতে পারে না। আর জন সমর্থন থাকলে সরকারী নির্যাতন্, নিষ্ঠুর দমন নীতি প্রয়োগ করে হরতালকে অকার্যকর করা সম্ভব নয়।
বিষয়: বিবিধ
৯৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন