অসাংবিধানিক অবৈধ এক এগারোর মঈন-ফখরুদ্দিন সরকারের দান আওয়ামী মহাজোট সরকারও কেন অসাংবিধানিক নয় ?

লিখেছেন লিখেছেন শিশিরবাবু ০৫ মে, ২০১৩, ১১:১৭:৫৯ রাত

১/১১- এর ক্ষমতা দখলকারীদের রাজত্বকাল যে সংবিধান সম্মত ছিল না তার স্বীকৃতি আদালতও দিয়েছে। কিছুসংখ্যক অর্বাচীন নাগরিকের উৎসাহে ও আওয়ামী ফাঁদে পড়ে যে অবৈধ সরকারের যাত্রা, তাদের খামখেয়ালী ও অদূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে দেশ সংকটে পড়ে। ১/১১ এর কুশলীবরা জনসমর্থন হারায়। মঈন-ফখরুদ্দিনের সরকার ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিরাপদ প্রস্থানের পথ আবিষ্কারে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের পরিকল্পিত নির্বাচন। অসাংবিধানিক সরকারের দান বর্তমান সংসদ ও মহাজোট সরকার। শুরুতে যেমন প্রস্থানেও তাদের সঙ্গী হয় আওয়ামী মহাজোট। কিন্তু মঈন-ফখরুদ্দিনের প্রস্থান ও বর্তমান সরকারের ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গণতন্ত্র ও সংবিধানের স্বার্থে প্রয়োজন ছিল একটি ব্যাপক ভিত্তিক সংলাপ এবং যতদ্রুত সম্ভব নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধানে আরেকটি জাতীয় নির্বাচনের। আওয়ামী মহাজোট তাদের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যের কারণেই সেই পথে অগ্রসর হয় নি। এদের প্রথম লক্ষ্য ক্ষমতা, শেষ লক্ষ্যও ক্ষমতা। ক্ষমতার জন্য যখন প্রয়োজন এরা সংবিধান ভেঙ্গে ফেলে আবার যখন দরকার সংবিধানের দোহাই দেয়। যখন প্রয়োজন জামায়াতের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে আবার প্রয়োজন ফুরলে জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রাণসংহারী রক্তাক্ত দমননীতির আশ্রয় নেয়। সাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপের কোন সাংবিধানিক বা আইনি এখতিয়ার আদালতের ছিল না। দলীয় লেজুড়বৃত্তির এক নিকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হল। প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ হারাল তাদের রাজত্ব ও অধিকার। আওয়ামী তাণ্ডবের ফসল এক এগারোর অসাংবাধিনিক অবৈধ সরকার, আবার তাদের নিরাপদ প্রস্থানের স্বার্থে আওয়ামী সংসদ ও সরকার। ফলাফল রাষ্ট্রের উপর জনগণের মালিকানা ছিনতাই। আরম্ভ হল আওয়ামী ফ্যাসিবাদের। শুরু থেকেই ক্ষমতা চর্চায় উগ্রতার প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই । আওয়ামী বৈশিষ্ট্যে উগ্রতা একটি সাধারণ ব্যাপার। দ্বিতীয় উগ্রতা দেখা যায় দুর্নীতির ব্যবসায়। সকল সরকারী অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ভাগ বসানো, টেন্ডার/কোটেশনে একচেটিয়া দখলদারিত্ব ইত্যাদি বিভিন্ন দুর্নীতিতে উগ্রতা এমন উচ্চতায় পৌঁছে যে পদ্মা সেতুর মত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পও রেহাই পায় নি। বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে। উগ্রতার আরেকটি জাগরণ দেখা যায় কথিত রাজাকারের বিচারের নামে। ১৯৭১ এর নৃশংসতার বলী সাধারণ জনগণের ক্ষোভ ও বেদনাকে পূঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে উন্মত্ত হয়ে উঠে একটি মহল। যুদ্ধাপরাধ বা মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়বদ্ধতার সংজ্ঞা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রভৃতি আইনগত প্রেক্ষিত বা ন্যায়বিচারের দাবী কোন কিছুকেই তোয়াক্কা না করে টার্গেটেড রাজনীতিকদের ফাঁসি প্রদানে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সমাজের সর্বস্তরে সংক্রমিত হয় উগ্রতা ও সন্ত্রাসবাদের। জঙ্গি ফ্যাসিবাদ কখনই নিজ থেকে ক্ষমতা ছাড়ে না। তাদের শক্তি প্রয়োগে বিতাড়িত করতে হয়। আগামী দিনের বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের আলোয় উদ্ভাসিত করতে হলে উগ্র ফ্যাসিবাদের অন্ধকারের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ রক্তাক্ত লড়াই ভিন্ন বিকল্প কিছু নেই।

বিষয়: বিবিধ

১০৪৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File