গভীর সংকটে দেশ! চক্রান্তের বেড়াজালে দেশ!

লিখেছেন লিখেছেন ফেলানি ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৪:২৮:২৩ বিকাল

যে ভাবে শুরু:

মনে রাখা উচিত যে, মাছের যেমন পচন শুরু হয় লেজ থেকে, জাতির জীবনেরও পচন শুরু হয় ব্যক্তি বিশেষের খেয়াল খুশি বা স্বার্থ চিন্তা থেকে। বাংলা অর্থাৎ ভারতের পরাধীনতার মূলেও ছিল ব্যক্তি বিশেষের খেয়াল খুশি এবং স্বার্থজনিত চিন্তা-চেতনার পচন। রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ , উমিচাঁদ ইত্যাদি হিন্দু সামন্ত ও আমত্যগণ নবাব সিরাজ উদ্দৌলার প্রতি বিদ্বেষ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ বশতঃ নানা অপ্রচার দ্বারা জনসাধারণের মধ্যে নবাব বিরোধী ঘৃণা ছড়ানোর পরই মুর্শিদাবাদ আক্রমনের জন্য ইংরেজদের প্রলোভিত করেছিল। ইংরেজদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য স্বার্থান্ধ সেনাধ্যক্ষ অথর্ব মীরজাফর আলী খানকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য নবাবীর টোপ দ্বারা প্ররোচিত করে ছিল। সুতরাং যে অমাত্য আর সামন্তরা নবাবের সহায়ক শক্তি হওয়ার কথা, তাদের মগজে পচন ধরার কারণে বঙ্গদেশকে তথা ভারতকে ইংরেজের পরাধীনতা বরণ করতে হয়েছিল একশত নব্বই বছরের জন্য। এভাবেই শুরু আমাদের শৃঙ্খলিত জীবনের। যা স্বাধীনতার চল্লিশটি বছর পেরিয়ে এসেও আমরা মূলত পরাধীন।

স্বাধীনতা এবং আমরা

৭১ এর ৯ মাস যে মুক্তি যোদ্ধারা জানবাজি রেখে মুক্তি যুদ্ধ করেছিল তারা রাইফেল, গুলি, গ্রেনেডে, কাদা, পানি, ঝোপ-জঙ্গল, নদ-নদী ও নৌকা ছাড়া আর কিছু ভাববার ফুসরত পায়নি, তাদের যুদ্ধ বিপর্যস্ত শরীরের জন্য বারুদের গন্ধ, মাঠের ধূলা, পুকুরের পানি, জঙ্গলের পোকা-মাকড়ের চেয়ে পুষ্টিকর আর কিছূ সহজলভ্য ছিলনা। তাদের মনমানসিকতায় সামনে-পিছনে চিন্তা-চেতনায় শুধু একটিই উদ্দেশ্য ছিল, হানাদার খেদাও, হানাদার খেদিয়ে দেশ স্বাধীন করতে হবে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হয়ে কি করবে, অতসব চিন্তা করার মত সময়, মনমানসিক তাদের ছিলনা। তাদের ধ্যান, জ্ঞান ছিল দেশের স্বাধীনতা।

আর এক ধরনের রিফিউজি মুক্তিযোদ্ধা ছিল যাদের নাকে কোন দিনও গ্রেনেড বা গুলি বারুদের গন্ধ লাগেনি। যারা সারাক্ষণ কাদা-পানি, ঝোপ-জঙ্গলকে ভয় করেছে। এরা রিফিউজি ক্যাম্পে কিম্বা কলকাতা বা আগরতলার আনাচে কানাচে শুয়ে বসে রিলিফ খেয়েছে, মদ খেয়েছে, তাস খেলেছে আর দেশ স্বাধীন হলে পরে কি করবে সেই পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে তাদের মনে কোনো যুক্তির স্থান ছিলনা। রাত্রির অন্ধকার নামতে দেখলে চোর সাধারণত চুরির পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অর্থাৎ যে কোন সুযোগকে কাজে লাগাতে মানুষ তার নিজ নিজ মানসিকতা অনুযায়ী পরিকল্পনা করে থাকে। ওপারের ক্যাম্পবাসী স্বঘোষিত মুক্তিযোদ্ধারাও তেমনি আহার-বিহারে, শয়নে স্বপনে নিজ মন-মানসিকতা অনুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য তাদের করণীয় কর্মপন্থা ঠিক করেছিল।

যুদ্ধাপরাধী ও ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি দু’টি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বিষয়। জাতি যখন একটা কঠিন সময় অতিক্রম করে আলোর মুখ দেখছে ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের নব্য মীরজাফর, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ ও ঘসেটি বেগমরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যারা আজ ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে তাদের দল বিগত নির্বাচন গুলোতে একটিও আসনত পায়নি বরং অনেকেই জামানত হারিয়েছে। সংসদ সদস্য পদ ছিল মহা স্বপ্নের বিষয় সেই স্বপ্ন তাদের পূর্ণ হয় ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের শরীক দল হিসাবে। তাদের নেই জনমত, নেই সামাজিক কোন পরিচয় তারাই আবার ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।

যারা মূলত পূর্ব বাংলা আর পশ্চিম বাংলাকে একই স্রোতে মিলাতে চায় তারাই এই অর্থহীন আব্দার করে আসছে। যে দেশের শতকরা একশত জনের মধ্যে নব্বই জনই মুসলমান সে দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের আবদার আসে কি করে ? আসলে এরাতো দেশের বিরোধীতা করছে, তাদের সকল ভূমিকাই দেশের সকল দেশ প্রেমিক মানুষের বিরুদ্ধে। তারা যে রাষ্ট্রদ্রোহী তাদের বিচার হবে কোন আদালতে?

এরা দেশ নিয়ে ভাবেনা, দেশের মানুষকে তিমিরে রেখে একটা স্বাথান্বেষী মহল তাদের স্বার্থ হাসিলে নানা পরিকল্পনা, নানান ছক তৈরী করে তাদের আখের গুছিয়ে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পরে সংগঠিত হওয়া ভয়াবহ ঘটনা বিডিআর বিদ্রোহ। যার পরিণতিতে গিনিপিগ হিসাবে ব্যবহার করা হলো এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসারদের।

বিডিআর বিদ্রোহ একটি সাজানো নাটক!

বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা অভ্যন্তরীনভাবে কতটা অরক্ষিত হতে পারে বিডিয়ার বিদ্রোহ একটা বড় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পিলখানার বিডিয়ার বিদ্রোহ তাৎক্ষনিকভাবে জওয়ানদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হলেও সময় যত অতিক্রান্ত হয়েছে তাতে এই বিদ্রোহের উদ্দেশ্য, রূপ ও ভয়াবহতা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটি কি শুধুই সাধারণ জওয়ানদের দাবিদাওয়ার বহি:প্রকাশ? নাকি এর পেছনে কাজ করছিল দেশের মেধামবী সেনাকর্মকর্তাদের হত্যা করে বিডিআর ও সেনাবাহিনী দুটোকেই পঙ্গু করে দেয়ার পরিকল্পনা। একটি বিষয় লক্ষনীয়, এই বিদ্রোহের আগের দিন বিডিআর সপ্তাহ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সে সময় জওয়ানরা নিরস্ত্র ছিলেন। তাদের ক্ষোভের মাত্রা যদি এত ব্যাপক থেকে থাকত তাহলে সে দিন তাদের মধ্যে কেউ দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে তাদের অভিযোগ উত্থাপন করলো না কেন? যে ‘সাহসী’ বিডিআর সদস্যরা তাদের কর্মকর্তাদের হত্য করতে পারেন তারা প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে বঞ্চনার কথা বলতে সাহসী হলেন না; এটা অবিশ্বাস্য! লক্ষনীয় দিক হলো বিদ্রোহের সময়টি কেন দরবারের দিন বেছে নেয়া হলো? এই কেন আগে বা পরে হলো না? এ থেকে প্রমাণ হয় এই বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য ছিল সেনাকর্মকর্তাদের হত্য করা। সাধারণ বিডিআর সদস্যরা এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল তা বলা যাবে না। এই বিদ্রোহ আগে বা পরে হলো না কেন ? দরবারের দিন সব সেনা কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন এটা বিডিআর- সংশ্লিষ্টদের অজানা থাকার কথা নয়। “বেঁচে যাওয়া সেনাকর্মতারা বলেছেন, দরবারে এক সাথে উপস্থিত সেনাকর্মকর্তাদের হত্যার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে বা বাসায় থাকা সেনা কর্মকর্তাদের ধরে এনে হত্যা করা হয়েছে। উদ্ধার পাওয়া একজন সেনা কর্মকর্তা বলেছিলেন, তিনি যখন একজন বিডিআর জওয়ানকে বলছেন বিএসএফ’র হাত থেকে তোমাকে কিভাবে রক্ষা করেছিলাম তা ভুলে গেছো? এর পর আর জওয়ানরা তাকে গুলি করেননি।” এসব ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় কর্মকতাদের হত্যার একটি নীলনকশা থেকেই এ বিদ্রোহ হয়েছে। “উদ্ধার পাওয়া একজন সেনা কর্মকার্তা একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছিলেন, এ ঘটনার পিছনে বিদেশী শক্তির হাত রয়েছে। কারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে যা অত্যান্ত পরিকল্পিতভাবে, তাৎক্ষণিক কোন ক্ষোভ থেকে নয়। তবে এ বিদ্রোহ ও হত্যাকন্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেশের মেধাবী সেনাকর্মকার্তদের হত্যার মধ্য দিয়ে শুধু সেনাবাহিনী নয় সামগ্রীক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এর একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছে।

একটি সমিকরণ থেকে প্রতিয়মান হয় যে, বিডিআর বিদ্রোহ একটি সাজানো নাটক মাত্র! বিডিআর হাসপাতালের কাছেই খোঁজ পাওয়া যায় একটি গণককবর এর। সেই কবর থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৮টি লাশ। কবরটির আয়তন ৮ ফুট বাই ১০ ফুট উচ্চতা ৭ ফুটের মতো! প্রশ্ন উঠেছে এ কবরটি ঘটনার পরপরই তৈরি করা হয়েছে, নাকি আগে থেকেই ছিল? বেঁচে যাওয়া এক সেনা কর্মকর্তার বক্তব্য “ বিডিআর জওয়ানরা এত স্বল্প সময়ের মধ্যে তারা কিভাবে এত বড় একটি কবর খনন করল সে প্রশ্নটি তার মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।” এর থেকে প্রতিয়মান হয় কিনা এটা একটি সাজানো ঘটনা।

বাংলাদেশের অভ্যান্তরে ‘র’ এর ভূমিকা

বাংলাদেশের আভ্যন্তরিন এ সকল ঘটনার মূল ভূমিকায় রয়েছে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ অর্থাৎ Research & Analysis Wing। এটি ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থার নাম। ১৯৬৮ সালে তদানিন্তন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এই সংস্থাটি গঠন করেন। মি: রমেশওয়ার নাথ কাও এর প্রথম পরিচালক নিযুক্ত হন। এর বিশেষ অপারেশন শাখা এই প্রতিষ্টানের গোপন এবং গোপন অপারেশন পরিচালনার জন্য নিয়োজিত ছিলো। ২৫০ সদস্য নিয়ে এর প্রথম কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১০ হাজারের উপরে। এর নিজস্ব বিমান এবং হেলিকাপ্টার রয়েছে। সদর দপ্তর ১১ লোদি এষ্টেট, নয়াদিল্লি অবস্থিত। সঞ্জিভ ত্রিপাথি এর বর্তমান মহাপরিচালক।

যে উদ্দেশ্য নিয়ে ইন্দিরা গান্ধী এই সংস্থাটি গঠন করেন, সে উদ্দেশ্য কয়েক বছরের মাথায় সফল হয়েছিল। পাকিস্থান বিভক্তিকরনে তাদের ভূমিকা ছিল গুরত্বপূর্ন। RAW এর সার্বিক সহযোগিতায় ভারত সিকিম দখলে সক্ষম হয়। তাই RAW সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‌‌ The Illustrated weekly of India মন্তব্য করেছে RAW 's major trumps in external intelligence were in Bangladesh & Sikkim এরপর `RAW` আর থেমে থাকেনি। এদের তৎপরতা বাংলাদেশের প্রতিটি স্তরে অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশে RAW Strategically & Technical এই পর্যায়ে গুপ্তচর বৃত্তি পরিচালনা করে আসছে। সেখানে ভারত যতনা তার জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এ কাজে ব্যস্ত তার চেয়ে যাবতীয় উপায়ে বাংলাদেশকে সকল পর্যায়ে হীনবল করে তোলাতেই তারা বেশি তৎপর। তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে সকল পর্যায়ে দুর্বল করে দেওয়া, যাতে বাধ্য হয়ে ভারতীয় আধিপত্যকে স্বীকার করে নেয়। আগ্রাসী এই গুপ্তচর বৃত্তি এতোটাই নীতি-নৈতিকতা বর্জিত যে, , RAW এ দেশের বিরুদ্ধে যেমন শান্তি বাহিনী, বঙ্গভূমি আন্দোলনের মত প্রত্যক্ষ সার্বভৌমত্ব বিরোধী কর্মকান্ডকে উসকে দিয়েছে, তেমনি একজন প্রেসিডেন্ট হত্যাকান্ডেও পালন করেছে ক্যাটালিষ্টের ভূমিকা। বলতে গেলে এ দেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে সামরিক ও ধর্মীয় পর্যায়েও তাদের কালো থাবার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তবে , RAW এর সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে ধরতে হবে দেশের বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিসেবী, রাজনীতিবিদ, দেশের কিছু মিডিয়া ও জনগনের বিরাট অংশকে ভারতীয় মতাদর্শের অনুকুলে প্রভাবিত করতে পারা।

“ভারতের দিল্লীস্থ ইন্সটিটিউশন অব ষ্ট্যাটেজিক ষ্ট্যাডিজের রিসোর্চ ফেলো মি. অশোক এ বিশ্বাস তার নিবন্ধনে শান্তিবাহিনীর সাথে ভারতীয় সংশ্লিষ্টতার কথা অকপটে স্বীকরা করেছেন। গত ৩১.০৮.১৯৮৪ তারিখে The New Nation পত্রিকায় প্রকাশিত `RAW`s Role in furthering India’s Foreign Dilley শিরোনামের এক নিবন্ধনে জনাব বিশ্বাস বলেনRAW is now involved in training rebels of chakma teribes and Shanti Bhaini. Who carry out subversive activities in Bangladesh`` অর্থাৎ ‘র’ এখন চাকমা সম্প্রদায় ও শান্তি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, যারা বাংলাদেশের অভ্যান্তরে বিভিন্ন রকম নাশকতামূলক কাজের সাথে জড়িত।

মজার বিষয় হলো এরা যখন পাহাড়ী বাঙ্গালীদের উপর সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায় তখন দেশ প্রেমিক কোন নাগরীকের কণ্ঠ তাদের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হয় না। উপরন্তু পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের খুসী তথা ভারত প্রেমকে উসকে দিয়ে তাদের পক্ষে সভা-সেমিনার, মানববন্ধনের মত নানা ধরনের প্রচার মূলক প্রোগ্রামে অংশ গ্রহন করে থাকে।

বাংলাদেশের অভ্যান্তরে RAW এর প্রধান কেন্দ্র ভারতীয় ঢাকা হাই কমিশন এবং জেলা চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী উচ্চ কমিশন। বাংলাদেশের কাছাকাছি আর একটি RAW প্রতিষ্ঠান Malibagh, কলকাতার আঞ্চলিক অফিসের সাথে পরিচালনা করে। বাংলাদেশের অভ্যান্তরে তাদের মিশন পরিচালনা করার জন্য প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা বাজেট রয়েছে। তারা অভ্যান্তরে গোয়েন্দাগিরি এবং বিশেষ অভিযান পরিচালনা ও পরিদর্শন করে থাকে। এর তিনটি আঞ্চলিক অফিসের উত্তরে শিলং, মধ্যে দার্জিলিং এবং উত্তর পূর্বে আগরতলা ইষ্টে অবস্থিত। সুতরাং বাংলাদেশে সবদিক দিয়ে খুব ভালভাবে আচ্ছাদিত জঅড এর জালে। বাংলাদেশে নিযুক্ত RAW এজেন্ট তিনটি ভাগে বিভক্ত, এক কূটনীতিক, প্রশিক্ষিত ভারতীয় নাগরিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, ছাত্র, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাহিত্যিক ইত্যাদি, দ্বিতীয়ত: আর্থিক পূরস্কার, ব্যবসায়ীক স্বার্থ, ভাবগত বিবেচনায় (কিছু হিন্দু সহ) বাংলাদেশী নাগরিক, তৃতীয়ত: মাল্টি জাতীয় প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন এনজিও এর কর্মী বাহিনী।

বিনিয়োগ ও আগ্রাসনের প্রস্তুতি:

ভারতের সৌভাগ্য যে, কাশ্মীর দখলে রাখতে ভাত সরকারকে ৭ লাথ সৈন্য ও হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থ ব্যয়ে যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ লড়তে হচ্ছে, বাংলাদেশের মাটিতে তারা সে অধীনতাটি পাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি, মিডিয়া, সংস্কৃতি ও জাতীয় নির্বাচনে মাত্র কয়েক শত কোটি টাকার বিনিয়োগে। ভারতের পক্ষে সে যুদ্ধটি করছে সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী, তাঁবেদার মিডিয়াকর্মী, আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী, বাংলাদেশী র‌্যাব ও পুলিশ। ভারতীয় সেনা ও পুলিশ বাহিনী কাশ্মীরে এত ইসলামী বই বাজেয়াপ্ত করেনি এবং এত ইসলামী নেতাকর্মীদের ডান্ডাবেরী পড়ায়নি যা পড়িয়েছে বাংলাদেশী র‌্যাব ও পুলিশ। এদিক দিয়ে ভারতকে ভাগ্যবান বলতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতীয় বিনিয়োগ যে বিপুল বাম্পার ফলন দিচ্ছে এ হল তার নমুনা। ২০০৮ সালে নির্বাচনের তেমন এক বিনিয়োগের কথাই সম্প্রতি প্রকাশ করেছে লন্ডনের বিখ্যাত ‘ইকোনোমিষ্ট’ পত্রিকা। তাই বাংলাদেশের দেশপ্রেমিকদের জন্য আজ এক ভয়ানক বিপদের দিন। তবে বিপদের আরো কারণ, ভারতের আরোপীত অধীনতাকে তাদের দোসররা সুনিশ্চিত করতে না পারলে ভারত সীমান্তের ওপারে বসে বসে আঙুল চুষবে না। ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট থেকে তারা শিক্ষা নিয়েছে। ভারত এবার তার নিজস্ব বাহিনী নিয়ে ময়দানে নামবে। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত তার অভিপ্রায়ের কথাটি তাজুদ্দীনের সাথে ৭ দফা চুক্তি এবং শেখ মুজিবের সাথে ২৫ দফা চুক্তির মধ্যে দিয়ে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিল। এখন ভারত তেমন একটি আগ্রাসনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে দিবারাত্রি ব্যস্ত। সেটি যেমন রাজনৈতি, সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সামরিক ক্ষেত্রে তেমনি যোগাযোগের ক্ষেত্রেও। বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে তারা করিডোর আদায় করে নিল তো সে লক্ষ্যেই। বাংলাদেশী সীমানা দিয়ে চোরাকারবারীদের লেলিয়ে দিচ্ছে বিএসএফ এর ছত্রছায়ায়। অপরদিকে বাংলাদেশের কৃষক, গরু ব্যবসায়ীদের বিএসএফ পাখির মতো গুলি করে মারছে। ফেলানীকে তারকাটার সাথে ঝুলিয়ে যে ভাবে বিএসএফ লাশে পরিণত করল তা বর্ণনাতীত। আর এ সকল ঘটনার পিছনে রয়েছে RAW এর সাজানো নীল নকশার ছক। ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং তাদের গুপ্তচর সংস্থা RAW সর্বদা তৎপর প্রতিবেশী দেশগুলোতে অনুগত দলকে ক্ষমতায় আনা এবং সেখানে সন্ত্রাসী করাই এসব সংস্থার প্রধানতম কাজ। সে নীতির কারনেই দিন দিন সহিংসতা বেড়েছে পাকিস্থানে এবং মাত্র কিছু দিন আগেও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধাবস্থায় পড়েছিল বাংলাদেশ তার পার্বত্য চট্টগ্রামে ও শ্রীলংকা তার উত্তরের তামিল অধ্যুষিত এলাকাতে। ভারতীয় সাংবাদিক অশোক রায়না তার বই “Inside RAW” তে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার সে ষড়যন্ত্রমূলক আগ্রাসী চিত্রটিই তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ আজ সে আগ্রাসী নীতিরই শিকার, ফলে দেশটি আজ দ্রুতই কাশ্মীর হওয়ার পথে।

কথিত বঙ্গ সেনাদের ভূমিকা এবং RAW:

বাংলাদেশের যশোর, খুলনা ও কুষ্টিয়া এই তিনটি জেলা নিয়ে গড়ে উঠেছে তথাকথিত বঙ্গ সেনাদের বঙ্গভূমি আন্দোলন। এ আন্দোলনের নামে বাংলাদেশ থেকে এই তিনটি জেলাকে বিচ্ছিন্ন করে একটি হিন্দু প্রজাতন্ত্র southwestern করাই তাদের মূখ্য ভূমিকা। ২০০১ সালে Chittaranjan Sutar ÔBangabhumi’ আন্দোলন সম্পর্কে বিবিসির সাখে সাক্ষাতকারের সময় এ ধরনের সংগঠন এর অস্তিত্ব অস্বীকার করে। আন্দোলন আবার সক্রিয় হয় ২০০৩ সালে এবং হিন্দু প্রজাতন্ত্র এর স্বাধীনতা অথবা ‘‘হিন্দু প্রজাতন্ত্র Bangabhumi বীর Banga এর’’ সাতক্ষীরা ও এর চট্টগ্রাম পাহাড়ী এলাকায় এর শক্তি ঘোষনা করে।

ইতপূর্বে বাংলাদেশ সরকার অন্তত পাঁচটি দলের কার্যক্রম স্থগিতের জন্য ভারত সরকারের নিকট অনুরোধ জানায়, Banga sena কালিদাশ বৈদ্যের নেতৃত্বে, বীর বঙ্গ হিন্দু প্রজাতন্ত্র Sakti Sen,বাংলাদেশ উদবাস্তু উন্নয়ন Bimol Majumdar নেতৃত্বে এবং বাংলাদেশ উদবাস্তু মঞ্চ Upen Biswas দ্বারা পরিচালিত।

রসক্রিয়ভাবে তার এজেন্ডা বাংলাদেশ ভাঙ্গার নীল নকশা তৈরী করেছে। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে হিন্দুরা যারা ভারতে মাইগ্রেট হয়ে গেছ তাদের সমন্বয়ে ইষ্ট বেঙ্গল থেকে একটি স্বদেশ প্রস্তাবিত নাম দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন গড়ে উঠে। Bangabhumiআন্দোলন এর মূলে এক থেকে দেড় কোটি হিন্দু পদ্মা, মেঘনা ও মধুমতির অববাহিকায় বসবাসরত যারা অর্থনৈতিক বঞ্চনা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নামে দেশ ত্যাগ করে পর্যায়ক্রমে ভারতে মাইগ্রেট হয়েছিল । তাদের দাবী অনুযায়ী বৃহত্তর খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, বরিশাল এবং পটুয়াখালী জেলা এই আন্দোলনের কেন্দ্র বিন্দু বা পরবর্তী তাদের Bangabhumi এর জন্য পরিকল্পিত এলাকা। ১৯৮২ সালের ২৫ মার্চ মি: শ্রী পার্থ সামন্তা প্রেসিডেন্ট এবং মি: কালিদাশ বৈদ্যের সাধারন সম্পাদক হিসাবে সপথ এর মধ্যে দিয়ে নিজেদের স্টাইলে Bangabhumi(সমস্ত নাগরিকবৃন্দের অর্গানাইজেশন) হিসাবে আত্বপ্রকাশ করে। দক্ষিণ কোলকাতার রামলাল বাজার এর প্রধান অফিস অবস্থিত। ২০ হাজার বর্গমাইল Bangabhumi আয়তন যা মোট বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ। এর সীমানা উত্তরে পদ্মা বরাবর, পূর্বে মেঘনা নদীর বরাবর, পশ্চিমে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর এবং দক্ষিনে চট্টগ্রাম বরাবর এই রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত। Bangabhumi রাজ্যের পতাকা এক তৃতীয়াংশ সবুজ রং এবং দুই তৃতীয়াংশ জাফরান রং নিয়ে গঠিত, জাফরান রং এর মাঝে সাদা সূর্য। জাতীয় সংগীত কবি Dijendra Lal Roy এর বিখ্যাত গান Dhana Dhanye Pushpe Bhara, Arnader Ei Basundhara' প্রস্তাবিত রেডিও ষ্টেশনের নাম 'bvg 'Bangasena এবং এর স্লোগান ‘জয় ভারতের’ সাথে মিলিয়ে ‘জয় বঙ্গ’। এর একটি সশস্ত্র বাহিনী গঠন করা হয় এর নাম 'Bangasena এবং এর কমান্ডার Bangasena এর সংগঠক এবং শিক্ষক হলো অরুণ ঘোষ। Dhana Dhanye Pushpe Bhara, Arnader Ei angasena' এর তালিকা ভূক্তির এক মাত্র শর্ত হলো ইষ্ট বেঙ্গলে জন্ম হতে হবে।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি:

এদেশের রাজনীতি এখন দুটি সমীকরনে বিভক্ত। এক ডান পন্থী অপরটি বামপন্থী। সম্প্রতি গবেষক ও কলামিষ্ট জনাব বদরুদ্দীন উমর লিখেছেন, দেশে উন্মাদের শাসন চলছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে যারা শাসন ক্ষমতায়, তারা উন্মাদ নয়, মটিভহীনও নয়। তারা সজ্ঞান। তাদের প্রতিটি কর্মের পিছনে রয়েছে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক বিশ্বাস। রয়েছে সুনির্দিষ্ট মটিভ, রয়েছে দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি। দেশে আজা তাদের অপরাধই বাড়ছেনা, বাড়ছে অপরাধীদের সীমাহীন আধিপত্য ও দৌরাত্মও। দেশ আজ তাদের হাতে অধিকৃত। প্রকৃত শাসন চলছে তাদেরই। দেশের আইন-আদালত, পুলিশ, প্রশাসন, মিডিয়া নেমেছে তাদের প্রতি সহায়ক ভূমিকায়। যেমনটি ছিল ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনামলে তাদের ভূমিকা। নিরীহ জনগন এখানে যেমন শক্তিহীন, তেমনি প্রতিরক্ষাহীন। দেশে মশামাছি যখন বাড়ে তখন রোগভোগও বাড়ে, মশামাছি কখনই একাকী আসেনা, সাথে রোগভোগও আনে। তেমনি অপরাধীরা যখন ক্ষমতায় পায় তখন বাড়ে অপরাধ। দুর্গন্ধের ন্যায় তাদের দুষ্কর্মও পরিবেশকে বিষিয়ে তোলে। দুর্গন্ধময় আবর্জনার উপস্থিতি অন্ধব্যক্তিও টের পায়। তেমনি দেশ অপরাধ কর্মে ভরে গেলে সেটি বুঝতে কি বাঁকি থাকে দেশ কাদের দখলে? ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ জোচের ক্ষমতায় আসার পর গত তিন বছর ধরে দেশে অপরাধকর্মের যেন সুনামী শুরু হয়েছে। দৈনিক “আমার দেশ” পত্রিকা গত ২৬ ডিসেম্বর (২০১১ সাল) সংখ্যায় সরকারের বিগত তিন বছরের অপরাধ কর্মের একটি রিপোর্ট ছেপেছে। লিখেছে, এ সময়ে খুন হয়েছে ১২ হাজার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে ৩৫৯টি এবং গুম হয়েছে ১০০ জন। সাংবাদিক নিহত হয়েছে ৪ জন এবং গ্রেফতার হয়েছেন ৩ জন। বিভিন্ন স্থান থেকে সাদা পোশাকধারীদের হাতে আটক প্রায় ১শ জনের খোঁজ মেলেনি, তারা চিরতরে হারিয়ে গেছে এদেশের বুক থেকে। ভয়ানক দুশ্চিন্তার কারণ হলো, অপরাধকর্ম দ্রুত বাড়লেও অদী, হাওরপরাধীরা সে তুলনায় গ্রেফতার হয়নি, তাদের বিচারও হয়নি। বরং সরকার মুক্তি দিয়েছে ২২ জন ফঁসির আসামীকে। অর্থাৎ সরকার অবস্থান নিয়েছে অপরাধীদের পক্ষে। রাজধানীর ঢাকাতেই চলতি বছর গুম হয়েছেন ৩০ জন। এ পয়ন্ত ১৬ জনের লাশ নদী, হাওর ও জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কমিশনার পর্যন্ত আছে। বিপদের আরো কারণ, জনগণ শুধু খুনি, সন্ত্রাসী ও পেশাদার দুর্বৃত্তদের হামলার শিকরাই নয়, অপরাধ দমনের নামে যাদেরকে ময়দানে নামানো হয়েছে তাদের বন্দুকের নলও এখন জনগনের দিকে। আপনজন হারা পরিবারগুলোর অভিযোগ র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন তথা র‌্যাবের বিরুদ্ধে। র‌্যাব হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে ক্রসফায়ারের নামে। মিথ্যা অভিযোগের শিকার হচ্ছে অনেকে, যেমন ঝালকাঠীর লিমন, আজ পঙ্গুত্তের বোঝা মাথায় নিয়ে চলছে। র‌্যাবের দেয়া তাদের নিজস্ব পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১০ সালের মাত্র এক বছরেই র‌্যাবের ৭৫৬ জন সদস্যের বিরুতেদ্ধ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এটি এক বিশাল সংখ্যা। এদের মধ্যে ৩১৪ সদস্যকে গুরুদন্ড, ৩১০ জন লঘুদন্ড এবং ১৩২ জনকে স্ব-স্ব বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ যে শরিষা ভূত ছাড়াবে, সেই শরিষার মধ্যে ভূতের বাসা।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্যানুযায়ী ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালের নভেম্বর পয়ন্ত তিন বছরে (৩৫ মাসে) ৩৫৯ জন ব্যক্তি বিচারবাহির্ভূত হত্যাকান্ডে নিহত হন। এর মধ্যে রয়েছেন ২০০৯ সালে ১৫৪ জন, ২০১০ সালে ১২৭ জনও ২০১১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ৭৮ জন। আন্তর্জাতিক মানবিকার সংগঠন অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৪ সালে র‌্যাবের যাত্রা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত র‌্যাবের বিরুদ্ধে ৭০০ লোকের হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ বিস্তর। হরতাল চলাকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের উপর পুলিশের নির্মম নির্যাতন করে। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে আটক হয়ে প্রাণ হারান বিশিষ্ট আইনজীবী এম.ইউ. আহমেদ। বিএনপি নেতা ও ডিসিসির সদ্য বিদায়ী মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে পুলিশের সামনে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত, দৈনিক আমার দেশে সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রেখে নির্মম নির্যাতন ও বস্ত্রহীন করা-এগুলো হলো অতি ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

সভা-সমাবেশ মিছিল, হরতাল হলো মানুষের গনতান্ত্রিক উপায়ে ভাষা প্রকাশের মাধ্যম। সেই মিছিলে পুলিশের হামলা, গুলির ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে আন্দোলনকারীদের। মানুষ খুন হচ্ছে দিনেদুপুরে এবং প্রকাশ্যে রাজপথে। সরকারি বাহিনীর হাতে কেউ খুন হলে কি সে খুনের বিচার হয়? র‌্যাব বা পুলিশের বিরুদ্ধে কেস করতে থানায় যাবে সে সাহস ক’জনের? যেন জঙ্গলের অরাজকতা। জঙ্গলে হিংস পশুর হাতে কেউ নিহত হলে সে পশুর বিরুদ্ধে কোন পুলিশই তদন্তে নামেনা। আদালতও সমন জারি করে না, ফলে তা নিয়ে কোন বিচারও বসে না। বাংলাদেশের সে শিকারী জন্তুটির স্থানটি নিয়েছে পুলিশ, র‌্যাব ও সরকারী দলের বিশেষ বাহিনী। এভাবে চলতে থাকলে গনতন্ত্র পদদলিত, নিষ্পেশিত হবে। আজ ভাষা প্রকাশের সকল পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। জাতির বিবেক জাগিয়ে কবে জাতীয় জীবন ধ্বংস স্তুপ থেকে বেরিয়ে আসবে। কে আলোর পথ দেখাবে এই পথ হারা জাতিকে? কে হাত ধরে নিয়ে যাবে সেই কাঙ্খিত আলোর মিছিলে? কে রক্ষা করবে মস্তিস্কের পচন থেকে এই জাতিকে? এই প্রশ্ন সমগ্র জাতির কাছে।





বিষয়: বিবিধ

১৭২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File