তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী ও নাস্তিকদের তালিকা প্রকাশ করতে বলেছেন। কেন? সরকারের দপ্তরেই তো তালিকা আছে।

লিখেছেন লিখেছেন সত্যবাক ১৯ মার্চ, ২০১৩, ০৪:১৮:১৬ বিকাল

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী ও নাস্তিকদের তালিকা প্রকাশ করতে বলেছেন। কেন? সরকারের দপ্তরেই তো তালিকা আছে।

১) ১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যের তালিকা সরকারের দপ্তরেই আছে। এদের মধ্যে যারা এখনো জীবিত আছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনুন।

২) শেখ মুজিব সরকার ৩৭০০০(সাইত্রিশ হাজার) রাজাকার সনাক্ত করে দালাল আইনে তাদের বিচার শুরু করেছিল। এদের মধ্যে কারো কারো(যেমন চিকন আলী) ফাঁসি হয়েছিল, বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মেয়াদের জেল হয়েছিল। পরে এদের মধ্যে ২৬০০০(ছাব্বিস হাজার) জনকে তৎকালিন সরকার সাধারণ খমা ঘোষণা করেন। বাকী ১১০০০(এগার হাজার) জনকে মা করা হয়নি। ৭১ সালের পরপরই করা এই ১১০০০(এগার হাজার) জনের তাজা তালিকাটা তো সরকারের দপ্তরেই আছে। এখান থেকে যারা জীতিব আছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনুন। আরেকটা করতে পারেন, সেটা হলো তৎকালীন সরকারের সাধারণ খমা বাতিল করে যারা খমা করেছিলেন তাদেরকে বা খমা করার সিদ্ধান্তের সাথে যারা যারা জড়িত ছিলেন তাদেরকেসহ ৩৭০০০ রাজাকারের মধ্যে এখনো জীবিত আছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনুন।

৩) আরও যাদেরকে কথা শোনা যাচেছ তাদের ব্যাপারে নিরপে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনুন। যেমন-

-শাহরিয়ার কবির পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী মুরগী সরবরাহ করেছেন

-অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এর বড় ভাই হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম নেজামে ইসলামি পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ছিলেন। তার নেতৃত্বেই ঢাকায় প্রথম শান্তি কমিটি গঠন হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার রাজাকার ভাইয়ের মালিকাধীন প্রিন্টিং প্রেসে তিনি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন।কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি মু্ক্িতযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে সার্বিক সহযোগিতা করেন। তার ব্যাপারে 'মুক্তিযুদ্ধে ইসলামী দল' শীর্ষক বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।

-লে.কর্ণেল (অব) ফারুক খান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পে দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানী সেনাবাহীনীর পে প্রথম অপারেশন চালান এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সুত্র: “দিনাজপুরের মক্তিযুদ্ধ” বই।

-শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন।“ দৃশ্যপট একাত্তর: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” বইয়ের ৪৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তার পিতা নুরুল ইসলাম নুরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন।

-আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে গত বছরের ৪ এপ্রিল ট্রাইবুনাল ওয়ার ক্রাইম ফাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহবায়ক ডা. এম এ হাসানের দেয়া যুদ্ধাপরাধের তালিকায় (ক্রমিক নং-৭৩) উল্লেখ করা হয়েছে। যা গত ২২ এপ্রিল দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

-আওয়ামী লীগের সেকেন্ড ইন কমান্ড সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর কাছে একজন আস্থাভাজন নেত্রী ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী এবং সংরতি মহিলা আসনে নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে ৮৮ জনকে পাকিস্তানের সামরিক সরকার আস্থাভাজন এন এন এ মেম্বার অব ন্যাশনাল এজেন্সী হিসেবে ঘোষণা করে।১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে তার নাম ছিল ৮৪ নম্বরে।

-আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরঊল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পে ছিলেন। জাফর উল্লাহ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পূর্ণ সমর্থন দেন। “মুক্তিযুদ্ধের প্রোপটে ব্যক্তির অবস্থান ” বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।

-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২১ এপ্রিল মুসা বিন শমসেরকে ফরিদপুরের রাজাকার বলে আখ্যয়িত করেছেন। এ খবর ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইডিং কমিটির আহবায়ক ডা: এম এ হাসান যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ৩০৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। সেখানে ফরিদপুর জেলায় গণহত্যাকারী হিসেবে মুসা বিন শমসের নাম রয়েছে।

-মির্জা গোলাম কাশেম যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকার দলীয় হুইপ মির্জা গোলাম আযমের বাবা। ১৯৭১ সালে রাজাকার, আল-বদরদের গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। তার বিরুদ্ধে নারী ধর্ষণ ও লুটপাটের একাধিক অভিযোগ আছে। যা “জামালপুরের মুক্তিযুদ্ধ ( “১৯৮১ সালের সংস্বকরণ” বইয়ে উল্লেখ আছে।

-এইচ এন আশিকুর রহমান: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এইচ এন আশিকুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তার সরকারের অধীনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে টাঙ্গাইলে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি পাকিস্তান সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেন।

- মহিউদ্দিন খান আলমগীর: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ময়মনসিংহে অতিরিক্তি জেলা প্রশারক পদে কর্মরত ছিলেন।তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে।

-মাওলানা নুরুল ইসলাম: সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে জামালপুর সরিষা বাড়ী এলাকার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজাকাররা ঐ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। “ দৃশ্যপট এক্ত্তার: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” গ্রন্থের ৪৫ পৃষ্ঠায় এর বিবরণ দেয়া আছে।

এভাবে তালিকা করলে শেষ করা যাবেনা।এরা সবাই ছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর একনিষ্ট আস্থাভাজন ব্যক্তি। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে বিচারের আওতায় আনুন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File