শিবিরের নতুন কৌশল
লিখেছেন লিখেছেন আমি চাঁদপুরি ২৬ জুলাই, ২০১৪, ০৪:৫৫:২৯ বিকাল
এ বিষয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার জানান, জামায়াত-শিবির তো শুরু থেকেই এসব অপকর্ম করে আসছে .......... হাসুম না কাদুম, কোরান হাদিস গিফ্ট করছে এটাতেও গুতাগুতি, এমরান হালারে কই কনডম বিলাইনাই তুমি এতো লাফাও ক্যা?
গেল এক বছরের বেশি সময় প্রকাশ্যে সন্ত্রাস ও ধারাবাহিক সহিংসতা ঘটিয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়া শিবির এখন বিকল্প পথে এগোচ্ছে। গ্রহণ করছে নতুন নতুন কৌশল। ভাবমূর্তি উদ্ধারের মাধ্যমে রাজনীতিতে ফেরার লক্ষে তারা সারা দেশেই বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে প্রত্যেক সংবাদ মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ধরণের ইসলামি বইপত্র পাঠিয়ে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে। আবার বিভিন্ন চ্যানেল ও সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের ঈদ বোনাস হিসেবে পাঞ্জাবি ও উপহার সামগ্রীর পাশাপাশি নগদ অর্থও পাঠাচ্ছেন। এমনকি বড় সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে শিবির।
শিবির নেতাদের দাবি, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তারা রমজান মাস ও ঈদকে বিশেষ সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তবে বই পাঠানোর কৌশল এবারই নতুন। সম্প্রতি জামায়াত শিবিরের এমন কর্মকাণ্ড রাইজিংবিডির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জানা যায়, সারা দেশে প্রায় দুইশত ছোট-বড় পত্রিকা হাউসে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দুটি করে হাদীসের বই পাঠিয়েছে শিবির। বইগুলি পাঠানোর সময় কোনো সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়নি । আর পাঠানো প্রতিটি বইয়ের ভেতরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির লেখা একটি লিফলেট পাঠানো হয়েছে। লিফলেটে শিবির তাদের ভিশন মিশনের পাশাপাশি দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বলেছে। বিশ্বে মুসলিম নির্যাতনের কথা বলে প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে।
একটি অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীমের লেখা হাদীস শরীফ-১ (প্রথম খন্ড) তার হাউজে আসে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। সেখানে কোনো সাংবাদিকের নাম লেখা ছিল না। শুধুমাত্র প্যাকেটের উপরে কম্পিউটারে লেখা হাউজের ঠিকানা। বই খুলে দেখা যায় প্রথম পাতার পরেই শিবিরের একটি স্টিকার। যেখানে লেখা আছে, ‘বিশ্বব্যাপী ইসলামের পুনর্জাগরণে আতঙ্কিত হয়ে ইসলামের চিহ্নিত দুশমনেরা মুসলিম নিধনে ঐক্যবদ্ধ ক্রুসেড ঘোষণা করেছে। এর মোকাবিলায় সমগ্র বিশ্বকে ইস্পাত কঠিন মনোবল নিয়ে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’ আর নিচে লেখকের নাম দেওয়া হয়েছে- আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
এর আগে গত ১৫ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করলেও গ্রেফতার এড়ানোর ভয়ে সেদিন অনুষ্ঠানের সভাপতি জামায়াত নেতা নুরুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত হননি। কিন্তু ইফতার অনুষ্ঠান শেষে বেরুনোর সময় প্রত্যেক সাংবাদিকদের হাতে একটি করে প্যাকেট ধরিয়ে দেওয়া হয়। অনেকে আগ্রহভরে প্যাকেট গ্রহণ করেন। বাসায় গিয়ে প্যাকেট খুলে তারা পান তিনটি করে বই। একটি মওদুদীর লেখা তাফহীমুল কোরআন, একটি মতিউর রহমান নিজামীর রাসুলুল্লাহর (সাঃ) মক্কার জীবন ও অন্যটি আবদুর রহীমের ছোট হাদীসের বই। এসব বই শিবির ও জামায়াতের সাংগঠনিক সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত।এরপরই মুলত বিভিন্ন হাউজগুলোতে বই পাঠানো হয়।
এসব কেন করা হচ্ছে- জানতে চাওয়া হয় শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদকের কাছে। তিনি জানান, মাঠের আন্দোলনের চেয়ে কর্মী তৈরির আন্দোলনকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এখন। কর্মীদের মানোন্নয়নের দিকে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মিডিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি এসব পাঠিয়ে তাদের সহানুভুতি অর্জনের কৌশল হিসেবেও এসব করা হচ্ছে। এই শিবির নেতার মতে , মিডিয়ার লোকেরা চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে। সেজন্য তাদের সমর্থন প্রয়োজন। এসব কারণেই মুলত বই উপহার দেওয়া ও বইপত্র পাঠানো হয়েছে। আর পাঞ্জাবি কিংবা নগদ অর্থ সহায়তার কথা তিনি জানেন না বলে মন্তব্য করেন ।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান রাইজিংবিডিকে জানান, এসব বিষয়ে অবগত নয় পুলিশ। জামায়াত-শিবির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে থাকে। এখন তারা নিরব রয়েছে। তারা কর্মী বাহিনী তৈরি করছে। আগামীতে তারা রাজপথে নেমে সহিংসতা ঘটাবে। অরাজকতা সৃষ্টি করবে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানারকম ফঁন্দি আঁটবে। তবে এসব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার জানান, জামায়াত-শিবির তো শুরু থেকেই এসব অপকর্ম করে আসছে কৌশলে। তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বই পাঠানোর নামে সক্রিয় থাকতে চেষ্টা করছে। আর অনেক লোকই এতে আকৃষ্ট হয়ে তাদের মতাদর্শে জীবন-যাপন করার কথা বিবেচনা করতে পারে-এই আশাতেই তারা এসব করছে। এসব বিষয় আমলে নিয়ে পুলিশকে অধিক কৌশলী হয়ে শিবির মোকাবিলার পরামর্শ দেন তিনি।সুত্রঃ এখানের ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক শুকরিয়া ভাইয়া
মন্তব্য করতে লগইন করুন