ঝরে পড়া মেধা খুঁজে কলম ধরিয়ে দিন,(স্বাধিনতার ৪৫তম দিবসে আমার প্রেজেন্টেশন)
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৫:৫৩:৩৭ বিকাল
ঝরে পড়া মেধা খুঁজে কলম ধরিয়ে দিন,(স্বাধিনতার ৪৫তম দিবসে আমার প্রেজেন্টেশন)
(আসুন শিক্ষার হারে আনি বৈপ্লবিক পরিবর্তন)
কিছু জনদরদি মানুষের পরিকল্পিত আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামই হতে পারে আলোকিত মানুষের সূতিকাগার। শিক্ষা যদি হয় জাতির মেরুদন্ড তাহলে সেই মেরুদন্ডকে শক্ত মজবুত করতে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। যতদিন বাংলাদেশের মানুষ শতভাগ শিক্ষিত হবেনা ততদিন প্রিয় দেশটি পিছিয়েই থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের সন্তানরা অনেকেই পড়ালেখার পাঠ শেষ না করেই স্কুল মাদ্রাসা থেকে ছিটকে পড়ছে। যুব সমাজের বিশাল একটি অংশ মাঝপথে শিক্ষাঙ্গন থেকে ঝরে পড়ার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে দারিদ্রতা। উদ্বেগ প্রকাশের কারণ হচ্ছে এই ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর একটি অংশ কিন্তু মেধাবী ছাত্রছাত্রী।
ক্লাসে ১ম, ২য়, ৩য় হয় এমন ছাত্রছাত্রীও অর্থাভাবে মাঝপথে পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। ছোট কালে যে ছেলে বা মেয়েটির মেধা ও সৃষ্টিশীল কর্মকান্ড দেখে আত্মীয় পরিজন ও মুরব্বীরা ভবিষ্যৎ বাণী করে ছেলেটি বা মেয়েটি বড় হলে ইঞ্জিনিয়ার হবে, ডাক্তার হবে, বিজ্ঞানী হবে, শিল্পী হবে, আর্টিস্ট হবে, দেশ গড়ার কারিগর হবে। সেই ছেলে বা মেয়েটি অষ্টম শ্রেণির গণ্ডি পেরুতেই পারেনা। অথচ তার মধ্যে পড়ালেখা করার অদম্য স্পৃহা বর্তমান ছিল, আগ্রহও ছিল প্রচুর কিন্তু দারিদ্রের কষাঘাত তাকে বেশীদুর পড়তে দেয়নি। এভাবে শিক্ষাঙ্গন নামের ছুটে চলা ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ছে প্রতিমূহুর্তে শত শত যাত্রী, স্কুল কিংবা মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী।
অনেক ছাত্রছাত্রী অনাহারে অর্ধাহারে জোড়া তালি দিয়ে জামা জুতা পড়ে হলেও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। কিন্তু মাস শেষে ,
- স্কুলের বেতন দিতে না পারার কারণে,
- প্রাইভেট টিচারের টিউশন ফি দিতে না পারার কারণে,
- সময়মত বই কিনতে না পারার কারণে আমার আপনার আত্মীয় পড়শির অনেকেই লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে আমরা যাদের খবর রাখি না ।
এ প্রসঙ্গে আমি একটি জরিপেরদিকে আলোকপাত করতে চাই। ২০১৫ সালে যতজন পরীক্ষার্থী এইচ.এস.সি বা সমমানের পরীক্ষা দিয়েছে তার দুই বছর আগে ঐ পরীক্ষার্থীরাই এস.এস.সি বা সমমানের পরীক্ষা দিয়েছিল। এস.এস.সিতে তখন পরীক্ষার্থী এইচ.এস.সির চেয়ে কত বেশী ছিল? পাশ করেছিল কত জন? আবার তারও দুই বছর আগে জে.ডি.সি বা সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী কত জন ছিল? পাশ করেছিল কত জন? জে.ডি.সি’র তিন বছর আগে ওরাই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছিল, তখন পরীক্ষার্থী কত জন ছিল এবং পাশ করেছিল কতজন? এই জরিপ বের করা গেলে স্তরে স্তরে কি পরিমাণ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে তার চিত্র ফুঁটে উঠবে।
সমাজের বিত্তবানেরা যে অসহায় দরিদ্রদের সাহায্য করেন না তা কিন্তু নয়। বলতে গেলে বাংলাদেশের ধনী, বড় লোকেরা অনেক দানশীল। আমি বলব তাদের দানগুলো পরিকল্পিত না হওয়ার কারণে শিক্ষাখাতে ভূমিকা রাখতে অনেকাংশে ব্যর্থ হচ্ছে।
সঠিক তদন্ত পূর্বক হিসাব করলে দেখা যাবে একটি গ্রামে ধনী লোকেরা বছরে যা দান করেন তার দশ ভাগের এক ভাগ দরিদ্র ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার পিছনে খরচ করলে সে গ্রামের একজন শিক্ষার্থীকেও অর্থাভাবে মাঝপথে পড়ালেখা বন্ধ করতে হবেনা, ঝরে পড়তে হবেনা। বিষয়টি একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে আপনি নিজেই অবাক হবেন।
আপনি বিত্তবান ধনী লোক, আল্লাহ আপনাকে লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা থেকে আপনি দানও করেন সারা বছর । আপনি পরিকল্পনা করে টার্গেট করে আপনার সুবিধামত আপনার এলাকা থেকে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার খরচের দায়িত্ব নেন। একজন শিক্ষার্থীর পিছনে বছরে গড়ে দশ হাজার টাকা বাজেট ধরতে পারেন। টাকার অংকে সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কারণ ধনী লোকেরা যা দান করেন বা জাকাত দেন সেখান থেকেই এই টাকা ব্যয় করা হবে। চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের টার্গেট করুন। যাদেরকে দিয়ে শুরু করবেন তারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়া পর্যন্ত তাদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাবেন। দরিদ্র ঘরের সন্তানদেরকে জাকাত ফাণ্ড থেকে অনায়াসেই করা যায় এই সহযোগিতা। ‘অক্ষর ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’এর মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে এই আন্দোলন আমি ছড়িয়ে দিতে চাই। ‘অক্ষর’ সংগঠনের পক্ষ থেকে ঐ সমস্ত ঝরে পড়া ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকের সাথে নিন্মোক্ত শর্তে মৌখিক চুক্তি করা যেতে পারে : চুক্তিগুলো হচ্ছে,
১. ‘অক্ষর’ সন্তানকে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের দায়িত্ব নিতে হবে তাদের অভিভাবককেই।
২. সংসারে টানাটানির দোহাই দিয়ে মাঝ পথে ‘অক্ষর’ স্টুডেন্ট’এর পড়ালেখা বন্ধ করা যাবে না।
৩.‘অক্ষর’ শিক্ষার্থী যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়বে তখন সে একই এলাকার ৪র্থ/৫ম শ্রেণির ২/৩ জন দরিদ্র পরিবারের সন্তানকে বিনা পয়সায় টিউশন করাবে।
৪. ‘অক্ষর’ স্টুডেন্ট যখন কলেজে পড়বে তখন একই এলাকার ৬ষ্ট/৭ম/৮ম শ্রেণির ৪/৫জন ছাত্রছাত্রীকে বিনা পয়সায় পড়াবে।
৫. অক্ষর’ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সুবিধা ভোগ করা কালীন কোন ছাত্রছাত্রী প্রত্যক্ষ রাজনীতি করতে পারবে না। পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটে এমন কোন আন্দোলন সংগ্রাম বা তৎপরতায় যোগ দিতে পারবে না।
৬. অক্ষর স্টুডেন্ট কর্মজীবনে প্রবেশ করার পর যাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আসবে তারা কমপক্ষে ১০জন করে অক্ষর স্টুডেন্ট(৪র্থ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার খরচের) দায়িত্ব নিবেন (ক্রমান্বয়ে) ।
৭. প্রতি থানার অক্ষর স্টুডেন্টদের নিয়ে বছরে একটি কর্মশালা ও পিকনিকের আয়োজন করা যেতে পারে। এই আয়োজন করবেন ‘অক্ষর হোল্ডারগণ।‘অক্ষর হোল্ডার’ হচ্ছেন: যারা ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার খরচ বহন করবেন তারা।
সারা বাংলাদেশে আঞ্চলিক ভাবে ‘অক্ষর ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ এর ইউনিট করে নিজ নিজ উদ্যোগে এই কার্যক্রম চালানো যেতে পারে।
কিছু কিছু ভদ্রলোক এমন আছেন যাদের বিলাসিতা করার অভ্যাস আছে। তারা এমনসব অপচয় সমূহ করেন যা দিয়ে কয়েকজন অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীর সারা বছরের পড়ালেখার খরচ চলে যেতে পারে। একটু সচেতন হলেই আমরা আরো দায়িত্বশীলের পরিচয় দিতে পারি । এলাকার একজন ধনীলোক নিজের সুবিধা মত বিভিন্ন ক্লাসের ৪/৫ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন। পরের বছর তাঁর বাজেট থাকলে নতুন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন অথবা আগের ছাত্রই বহাল রাখলেন। নিজের গ্রামে দরিদ্র মেধাবী ছাত্রছাত্রী পাওয়া না গেলে পাশের গ্রামকে অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। অথবা সরাসরি ‘অক্ষর ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’কেও দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। এভাবে ‘অক্ষর হোল্ডার’ উনার দায়িত্বে অধ্যয়নরত ‘অক্ষর স্টুডেন্ট’ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পর তিনি আবার নতুন করে ছাত্র বা ছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন। এখানে দায়িত্ব বলতে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর পড়ালেখা সংক্রান্ত যাবতীয় খরছের কথা বলা হচ্ছে । বই, খাতা, কলম, পেন্সিল, স্কুলের বেতন, গাইড, কোচিং বা প্রাইভেটসহ সব কিছু । অভিভাবক শুধু অন্ন বস্ত্র বাসস্থান এর ব্যবস্থা করবেন। আবার যেসব অভিভাবক দারিদ্রতার কারণে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও করতে পারবেন না বা যারা এতিম তাদের দায়িত্বও ‘অক্ষর হোল্ডার’গণ বা ‘অক্ষর ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ’ নিতে পারে।
এলাকার একজন ‘অক্ষর হোল্ডার’ যদি ৩/৪ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব নেন তখন দেখা যাবে উনার দেখাদেখি অন্যান্য বড় লোকেরাও প্রত্যেকেই ৩/৪ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব নিচ্ছেন । এভাবে একটি গ্রামে ১০জন ধনী লোকের পরিকল্পিত প্রচেষ্টার ফলে ৮ বছর পর এমন ১০ জন(কমপক্ষে) ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করবে যারা ৬/৭ ক্লাস পর্যন্তও পড়ার সম্ভাবনা ছিল না। একটি গ্রামে ১০ জন হলে ৬৮ হাজার গ্রামে হয় ৬,৮০,০০০ (ছয় লক্ষ আশি হাজার)জন।যেসব ‘অক্ষর স্টুডেন্ট’ ইন্টারমিডিয়েট লেবেল অতিক্রম করবে তাদের মাঝে যদি বাস্তবিকই পড়ালেখার আগ্রহ থাকে তাহলে তারা নিজ দায়িত্বে উচ্চ শিক্ষার পথ খুঁজে নিতে পারবে। তাছাড়া অক্ষর হোল্ডারগণ যখন স্কুল পর্যায়ে দায়িত্ব নেয়ার মত ছাত্রছাত্রী পাবেন না তখন অক্ষর স্টুডেন্টদের উচ্চ শিক্ষার দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন । একজন কোটিপতি বড় লোকের কি ইচ্ছে হয় না ২/১ একজন দরিদ্র মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার বানাতে ? বিসিএস ক্যাডার বানাতে ? আসলে আমরা সেভাবে চিন্তা করিনা বলেই কাজ হয়না। শত শত ছাত্রছাত্রী আছে যাদের ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার হবার মত মেধা আছে, আগ্রহ আছে, পর্যাপ্ত পয়েন্টও আছে কিন্তু সামর্থ নেই। আসুন না তাদের দিকে আর্থিক হাতটি বাড়াই- তাদের জন্য, আমাদের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য। প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নতির লক্ষ্যে আমরা যেমন গাছ লাগাই তেমনি দেশের আর্থসামাজিক পরিবেশের উন্নতির জন্য সুপ্ত মেধা বিকাশের জন্যও আমরা ভূমিকা রাখতে পারি।
সবগুলো অক্ষর স্টুডেন্ট ঝরে পড়া থেকে কুঁড়ীয়ে নিতে হবে এমন নয়। স্কুল মাদ্রাসায় পড়াকালীন অবস্থা থেকেও যাচাই বাচাই করে নেয়া যেতে পারে। তবে অক্ষর হোল্ডারগণ যার যার অক্ষর স্টুডেন্টদের সাথে ও তাদের অভিভাবকদের সাথে ২/৩ মাস পর পর কাউন্সিলিং করবেন। মোবাইল করে খোঁজ খবর নিবেন। এলাকার মসজিদের ইমাম বা জনপ্রতিনিধির মাধ্যমেও তাদের উপর নজরদারী করা যেতে পারে।‘অক্ষর ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ’ অথবা আপনার এলাকারই যে কোন আস্থাশীল সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে এর তদারকি করতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে যে আপনার দায়িত্বে বেড়ে উঠা অক্ষর স্টুডেন্টটি যেন পড়ালেখার পাশাপাশি কিছু নৈতিক শিক্ষাও পায়। কর্মজীবনে গিয়ে যেন সে অনুভূতিহীন রোবটে পরিণত না হয়। নীতিহীন অর্তলোভী ঘুষখোর দূর্নীতিবাজ যদি সে হয় তাহলে আপনার সব আশা আকাংখা ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। অক্ষর ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হচ্ছে সুশিক্ষিত জনশক্তি তৈরী করা- যারা হবে সৎ, নীতিবান, দেশ প্রেমিক এবং নির্লোভ। যারা বিলাসীতার জীবন বর্জন করে অল্পে তুষ্ট থাকার মানসিকতা অর্জন করবে।
ধনীর দৌলতে দরিদ্রের অধিকার আছে, হক্ক আছে। আল্লাহ সেটাকে ফরজ করে দিয়েছেন। আপনার ফরজটা আপনি এমন ভাবে আদায় করুন যার ফলে সমাজের জন্য, দেশের জন্য আলোক বর্তিকা হয়ে কাজ করে। এটা বাস্তবায়ন করতে দরকার আপনার আন্তরিকতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আপনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আপনার এলাকার আস্থাশীল যে কোন সামাজিক সংগঠনের উপর দায়িত্ব দিতে পারেন। চাই সুশিক্ষায় শিক্ষিত একঝাঁক তরুণ যারা দূর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
ডুবুরী যেভাবে সাগরের তলা থেকে মুক্তা খুঁজে আনে আমাদেরও সেভাবে সারা বাংলাদেশ থেকে ঝরে পড়া মেধাগুলোকে খুঁজে খুঁজে তাদের হাতে কলম ধরিয়ে দিতে হবে। শিক্ষাঙ্গন থেকে ছিটকে পড়ে হয়তো তাদের কেউ-
- ভ্যান গাড়িতে তরকারী বিক্রি করছে, অথবা
- চা দোকানে মেসিয়ারী করছে,
- হয়তো কোন দোকানের ষ্টাফদের জন্য রান্নাবান্না করছে কিংবা দোকানের সেলসম্যান।
- কেউ কেউ গ্রামে বেকার ঘুরে ঘুরে সঙ্গ দোষে অপথে কুপথে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেককেই পাওয়া যাবে, যারা আবার নতুন করে পড়ালেখার সুযোগ পেলে আনন্দের সাথে লুফে নিবে। ঠিক তাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে।
কারো দিকে থাকিয়ে না থেকে প্রাণপ্রিয় এই দেশটির জন্য আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। ৪৫ বছরের স্বাধীন দেশে আমরা অনেকটা শুধু দিবস পালন করে কাটিয়েছি। নেই নেই করেছি, করতে হবে, গড়তে হবে করেছি। কারো উপর দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত মনে করি। আসুন নিজেরাই শুরু করি। অন্তত একজন অক্ষর স্টুডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার জন্য আপনাকে কোটিপতি হতে হবেনা। কর্জমুক্ত স্বচ্ছল জীবন যাপন করলে আপনিও একজন অক্ষর ষ্টুডেন্ট’র দায়িত্ব নিয়ে হতে পারেন ‘অক্ষার হোল্ডার’। তাছাড়া অনেক কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আছেন যারা টিউশনী, কোচিং করে হাজার হাজার টাকা রোজগার করেন। তারাও ইচ্ছে করলে কিছু কিছু দায়িত্ব পালন করতে পারেন। ইচ্ছেটাই হল আসল। মাসে ৫/৭শত টাকা বা ১ হাজার টাকাই গ্রামের একজন ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার খরচের জন্য যথেষ্ট যা অনেক দরিদ্র অভিভাবক বহন করতে পারেনা।
শুরু করতে হবে আপনার গ্রাম থেকেই, আমার পাড়া মহল্লা থেকেই। শুরু করার জন্য আপনার সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। এই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে ‘অক্ষর ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের সামাজিক সংগঠনগুলো নিজ নিজ এলাকায় এই দায়িত্ব পালন করতে পারে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভাল কাজে আগবাড়িয়ে সহযোগিতা করার তৌফিক দিন, আমিন।
#
লেখক ও পরিকল্পক: এ.আর.বাহাদুর.বাহার- সমাজ ও সাংস্কৃতিককর্মী, লেখক ও শিক্ষানুরাগী ।
মেইল: ,
ফেসবুক:www.facebook.com/ahmedrashid.bahar
[বি:দ্র: বাংলাদেশের যে কোন মিডিয়ায় এই লেখাটি জনস্বার্থে প্রকাশ, প্রচার বা ছাপানোর অনুমতি দেয়া গেল।আপনার ফেসবুকের আইডি, পেজ, গ্রুপসহ সবখানে কপি পেষ্ট করে ছড়িয়ে দিন। ]
লেখাটির ব্লগসাইড:
http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/2668/rashic/72617
########
(লেখাটি কয়েকদিন আগে একবার প্রকাশ করা হলেও আরো কিছু সংযুক্তিসহকারে আবার প্রকাশিত হল ।)
দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকা
এছাড়া লোহাগাড়া থেকে প্রকাশিত সাহিত্য পত্রিকা আলো এবং অনলাইন পত্রিকা সিটিজি টাইমস এ ও লেখাটি প্রকাশিত হয়।
বিষয়: বিবিধ
২৮৮৬ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
আপনার হৃদয়ের রক্তক্ষরন বুঝতে পারছি।
১।“মানুষ বাঁচে তাঁর কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়।”
২। “কীর্তিমানের মৃত্যু নেই।”
৩। “স্বার্থমগ্ন যেজন বিমুখ, বৃহৎ জগৎ হতে কেউ শিখেনি বাচিঁতে।”
৪। “জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।”
৫। স্বদেশের উপকারে নেই যার মন, কে বলে মানুষ তারে পশু সেইজন?”
৬। “জীবে দয়া কর।”
৭। যে মানুষকে ভালবাসে না, আল্লাহও তাঁেক ভালবাসে না।” (আল্ হাদীস-বুখারী ও মুসলিম)
৮। “জমীনে যারা বসবাস করে, তাদের উপর দয়া কর, আসমানে যিনি আছেন তিনিও তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।”
(আল্ হাদীস-আবু দাউদ ও তিরমিযী)
৯। “সর্বোৎকৃষ্ট মানুষ সে, যে মানুষের কল্যাণের চেষ্টা করে।” (আল হাদীস)
--ধন্যবাদ। আপনার কাজের সাফল্য লাভের জন্য দোয়া রইল।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ।
সাথে থাকার ইচ্ছে পোষণ করেছেন । নিশ্চয় আপনার নিয়তের জন্য আল্লাহ বরকত দিবেন । আপনাদেরকে নিয়েই তো আমি । আমাদের সকল ভাল কাজ তো আপনাদের সহযোগিতা নিয়েই হয়ে থাকে ।
ধন্যবাদ মামুন ভাই ।
আপনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য আল্লাহ তৌফিক দিন।
নিজের সীমিত পরিসরে আমি কাজটি চালায়।
কেউ যদি আগ বাড়িয়ে এগিয়ে আসে তাহলে ওয়েলকাম।
আপনাকে আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন