ঝরে পড়া মেধা খুঁজে কলম ধরিয়ে দিন
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১২:৪৬:৩৩ দুপুর
ঝরে পড়া মেধা খুঁজে কলম ধরিয়ে দিন
(শিক্ষার হারে আনুন বৈপ্লবিক পরিবর্তন)
কিছু জনদরদি মানুষের পরিকল্পিত আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামই হতে পারে আলোকিত মানুষের সূতিকাগার । শিক্ষা যদি হয় জাতির মেরুদন্ড তাহলে সেই মেরুদন্ডকে শক্ত মজবুত করতে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই । যতদিন বাংলাদেশের মানুষ শতভাগ শিক্ষিত হবেনা ততদিন প্রিয় দেশটি পিছিয়েই থাকবে ।
যুব সমাজের বিশাল একটি অংশ মাঝপথে শিক্ষাঙ্গন থেকে ঝরে পড়ার কারণ হচ্ছে দারিদ্রতা । উদ্বেগ প্রকাশের কারণ হচ্ছে এই ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর একটি অংশ কিন্তু মেধারী ছাত্রছাত্রী ।
ক্লাসে ১ম, ২য়, ৩য় হয় এমন ছাত্রছাত্রীও অর্থাভাবে মাঝপথে লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় । ছোট কালে যে ছেলে বা মেয়েটির মেধা ও সৃষ্টিশীল কর্মকান্ড দেখে আত্মীয় পরিজন ও মুরব্বীরা ভবিষ্যৎ বাণী করে ছেলেটি বা মেয়েটি বড় হলে ইঞ্জিনিয়ার হবে, ডাক্তার হবে, বিজ্ঞানী হবে, শিল্পী হবে, আর্টিস্ট হবে, দেশ গড়ার কারিগর হবে । সেই ছেলে বা মেয়েটি অষ্টম শ্রেণির গণ্ডি পেরুতেই পারেনা । অতচ তার মধ্যে পড়ালেখা করার অদম্য স্প্রীহা বর্তমান ছিল, আগ্রহও ছিল প্রচুর কিন্তু দারিদ্রের কষাঘাত তাকে বেশী দুর পড়তে দেয়নি । এভাবে শিক্ষাঙ্গন নামের ছুটে চলা ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ছে প্রতিমূহুর্তে শত শত যাত্রী, স্কুল মাদ্রাসার ছাত্র কিংবা ছাত্রী ।
অনেক ছাত্রছাত্রী অনাহারে অর্ধাহারে তালি জুড়া দিয়ে জামা জুতা পড়ে হলেও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করে । কিন্তু মাস শেষে
# স্কুলের বেতন দিতে না পারার কারণে,
# প্রাইভেট টিচারের টিউশন ফি দিতে না পারার কারণে,
# সময়মত বই কিনতে না পারার কারণে আমার আপনার আত্মীয় পড়শির অনেকেই লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে আমরা যাদের খবর রাখিনা ।
সমাজের বিত্তবানেরা যে অসহায় দরিদ্রদের সাহায্য করেননা তা কিন্তু নয় । বলতে গেলে বাংলাদেশের ধনী বড় লোকেরা অনেক দানশীল । আমি বলব তাদের দানগুলো পরিকল্পিত না হওয়ার কারণে শিক্ষাখাতে ভূমিকা রাখতে অনেকাংশে ব্যর্থ হচ্ছে ।
মনোযোগের সহিত সঠিক তদন্ত পূর্বক হিসাব করলে দেখা যাবে একটি গ্রামে ধনী লোকেরা বছরে যা দান করে তার দশ ভাগের এক ভাগ দরিদ্র ছাত্রছাত্রীর পিছনে খরছ করলে সে গ্রামের একজন শিক্ষার্থীকেও অর্থাভাবে মাঝপথে পড়ালেখা বন্ধ করতে হবেনা, ঝরে পড়তে হবেনা । বিষয়টি একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে আপনি নিজেই অবাক হবেন ।
আপনি বিত্তবান ধনী লোক, আল্লাহ আপনাকে লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন । সেই টাকা থেকে আপনি দানও করেন সারা বছর । আপনি পরিকল্পনা করে টার্গেট করে আপনার সুবিধামত আপনার এলাকা থেকে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার খরছের দায়িত্ব নেন । একজন শিক্ষার্থীর পিছনে বছরে গড়ে দশ হাজার টাকা বাজেট ধরতে পারেন । টাকার অংকে কিন্তু সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কারণ ধনী লোকেরা যা দান করেন বা জাকাত দেন সেখান থেকেই এই টাকা ব্যয় করা হবে । চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের টার্গেট করুন ।যাদেরকে দিয়ে শুরু করবেন তারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়া পর্যন্ত তাদের লেখাপড়ার খরছ চালিয়ে যাবেন । দরিদ্র ঘরের সন্তানদেরকে জাকাত ফাণ্ড থেকে অনায়াসেই করা যায় এই সহযোগিতা ।‘অক্ষর’ নামের ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে এই আন্দোলন আমি ছড়িয়ে দিতে চাই । ‘অক্ষর’ সংগঠনের পক্ষ থেকে ঐ সমস্ত ঝড়ে পড়া ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকের সাথে নিন্মোক্ত শর্তে মুখিক চুক্তি করা যেতে পারে : চুক্তি হচ্ছে,
১. ‘অক্ষর’ সন্তানকে অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের দায়িত্ব নিতে হবে তাদের অভিভাবককেই ।
২. সংসারে টানাটানির দোহাই দিয়ে মাঝ পথে ‘অক্ষর’ স্টুডেন্ট’র পড়ালেখা বন্ধ করা যাবে না ।
৩.‘অক্ষর’ শিক্ষার্থী যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়বে তখন সে একই এলাকার ৪র্থ/৫ম শ্রেণির ২/৩ জন দরিদ্র পরিবারের সন্তানকে বিনে পয়সায় টিউশনি করাবে ।
৪. ‘অক্ষর’ স্টুডেন্ট যখন কলেজে পড়বে তখন একই এলাকার ৬ষ্ট/৭ম/৮ম শ্রেণির ৪/৫জন ছাত্রছাত্রীকে বিনে পয়সায় পড়াবে ।
৫. অক্ষর’ ফাইন্ডেশনের আর্থিক সুবিধা ভোগ করা কালীন কোন ছাত্রছাত্রী প্রত্যেক্ষ রাজনীতি করতে পারবে না । পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটে এমন কোন আন্দোলন সংগ্রাম বা তৎপরতায় যোগ দিতে পারবে না ।
৬. অক্ষর স্টুডেন্ট কর্মজীবনে প্রবেশ করার পর যাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আসবে তারা কমপক্ষে ১০জন করে অক্ষর স্টুডেন্ট(৪র্থ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার খরছের) দায়িত্ব নিবেন ।
৭. প্রতি থানার অক্ষর স্টুডেন্টদের নিয়ে বছরে একটি কর্মশালা ও পিকনিকের আয়োজন করা যেতে পারে । এই আয়োজন করবেন ‘অক্ষর হোল্ডারগণ’ । ‘অক্ষর হোল্ডার’ হচ্ছেন: যারা ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার খরছের দায়িত্ব নিবেন তারা ।
সারা বাংলাদেশ আঞ্চলিক ভাবে ‘অক্ষর ফাউন্ডেশন’ এর ইউনিট করে নিজ নিজ উদ্যোগে এই কার্যক্রম চালানো যেতে পারে ।
কিছু কিছু ভদ্রলোক এমন আছেন যাদের বিলাসিতার বাতিক আছে । তারা এমনসব অপচয় সমূহ করেন যা দিয়ে কয়েকজন অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীর সারা বছরের পড়ালেখার খরছ চলে যাবে । একটু সচেতন হলেই আরো দায়িত্বশীলের পরিচয় আমরা দিতে পারি । এলাকার একজন ধনীলোক নিজের সুবিধা মত বিভিন্ন ক্লাসের ৪/৫ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন । পরের বছর তাঁর বাজেট থাকলে নতুন ছাত্র নিলেন অথবা আগের ছাত্রই বহাল রাখলেন । এভাবে উনার দায়িত্বে অক্ষরস্টুডেন্ট উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পর তিনি আবার নতুন করে ছাত্র বা ছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন । এখানে দায়িত্ব বলতে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর পড়ালেখা সংক্রান্ত যাবতীয় খরছের কথা বলা হচ্ছে । বই, খাতা, কলম, পেন্সিল, স্কুলের বেতন, গাইড, কোচিং বা প্রাইভেটসহ সব কিছু । অভিভাবক শুধু অন্ন বস্ত্র বাসস্থান এর ব্যবস্থা করবেন ।
এলাকার একজন ‘অক্ষর হোল্ডার’ যদি ৩/৪ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব নেন তখন দেখা যাবে উনার দেখাদেখি অন্যান্য বড় লোকেরাও প্রত্যেকেই ৩/৪ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব নিচ্ছেন । এভাবে একটি গ্রামে ১০জন ধনী লোকের পরিকল্পিত প্রচেষ্টার ফলে ৮ বছর পর এমন ১০(কমপক্ষে) জন ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করবে যারা ৭/৮ ক্লাস পর্যন্তও পড়ার সম্ভাবনা ছিল না । একটি গ্রামে ১০ জন হলে ৬৮ হাজার গ্রামে হয় ৬,৮০,০০০(ছয় লক্ষ আশি হাজার)জন । এই পরিমান যেসব ছাত্রছাত্রী ইন্টারমিডিয়েট অতিক্রম করবে তাদের মাঝে যদি বাস্তবিকই পড়ালেখার আগ্রহ থাকে তাহলে তারা নিজ দায়িত্বে উচ্চ শিক্ষার পথ খুঁজে নিতে পারবে ।তাছাড়া অক্ষর হোল্ডারগণ যখন স্কুল পর্যায়ে দায়িত্ব নেয়ার মত ছাত্রছাত্রী পাবেন না তখন উচ্চ শিক্ষার দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন । একজন কোটিপতি বড় লোকের কি ইচ্ছে হয় না ২/১ একজন দরিদ্র মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার বানাতে ? বিসিএস ক্যাডার বানাতে ? আসলে আমরা সেভাবে চিন্তা করিনা বলেই কাজ হয়না ।
সবগুলো অক্ষর স্টুডেন্ট ঝরে পড়া থেকে কুঁড়িয়ে নিতে হবে এমন নয়, স্কুল মাদ্রাসা থেকেও যাচাই বাচাই করেও নেয়া যেতে পারে।
ধনীর দৌলতে দরিদ্রের অধিকার আছে, হক্ক আছে । আল্লাহ সেটাকে ফরজ করে দিয়েছেন । আপনার ফরজটা আপনি এমন ভাবে আদায় করুন যা সমাজের জন্য দেশের জন্য আলোক বর্তিকা হয়ে কাজ করে । এটা বাস্তবায়ন করতে দরকার আপনার আন্তরিকতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত । আপনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ‘প্রচেষ্টা’র মত যে কোন সামাজিক সংগঠনের উপর দায়িত্ব দিতে পারেন । চাই সুশিক্ষায় শিক্ষিত একঝাক তরুণ যারা দূর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে কার্যকর ভূমিকা রাখবে ।
ডুবুরী যেভাবে সাগরের তলা থেকে মুক্তা খুঁজে আনে আমাদের সেভাবে সারা বাংলাদেশ থেকে ঝরে পড়া মেধাগুলোকে খুঁজে খুঁজে তাদের হাতে কলম ধরিয়ে দিতে হবে । শিক্ষাঙ্গন থেকে ছিটকে পড়ে হয়তো তাদের কেউ
# ভ্যান গাড়িতে তরকারী বিক্রি করছে, অথবা
# চা দোকানে মেসিয়ারী করছে,
# হয়তো কোন দোকানের ষ্টাফদের জন্য রান্নাবান্না করছে
# কেউ কেউ গ্রামে বেকার ঘুরে ঘুরে সঙ্গ দোষে অপথে কুপথে যাচ্ছে । তাদের মধ্যে অনেককেই পাওয়া যাবে যারা আবার নতুন করে পড়ালেখার সুযোগ পেলে আনন্দের সাথে লুপে নিবে ।
ঠিক তাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে ।
প্রাণপ্রিয় এই দেশটির জন্য আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে কারো দিকে থাকিয়ে না থেকে । ৪৫ বছরের স্বাধীন দেশে আমরা শুধু দিবস পালন করে কাটিয়েছি । নেই নেই করেছি, করতে হবে, গড়তে হবে করেছি । কারো উপর দোষারূপের সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত মনে করি । আসুন নিজেরাই শুরু করি ।
শুরু করতে হবে আপনার গ্রাম থেকেই, আমার পাড়া মহল্লা থেকেই । শুরু করার জন্য আপনার সিদ্ধান্তই যথেষ্ট । বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের সামাজিক সংগঠনগুলো এই দায়িত্ব পালন করতে পারে । মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভাল কাজে সহযোগিতা করার তৌফিক দিন, আমিন।
লেখক ও পরিকল্পক: এ.আর.বাহাদুর.বাহার- সমাজ ও সংস্কৃতিকর্মী, লেখক ও শিক্ষানুরাগী ।
মেইল:
[বি:দ্র: বাংলাদেশের যে কোন মিডিয়ায় এই লেখাটি জনস্বার্থে প্রকাশ, প্রচার বা ছাপানোর অনুমতি দেয়া গেল ।]
বিষয়: বিবিধ
২০১৮ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার যুক্তি ও পদ্ধতি দারুন। এটা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রচারযোগ্য একটি দারুন আইডিয়া। আপনার সাথে ১০০% সহমত।
পোষ্টটি স্টিকি করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া।
আগ্রহ থাকলেই সম্ভব ।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
আল্লাহ উপর ভরসা করে শুরু করে দিন। আপনার মত সৎ ইসলামপন্তি মানুষদের সামাজিক ভাল কাজে এগিয়ে আসার সিদ্ধান্তে অনুপ্রানিত হলাম। সাথে থাকব ইনশাল্লাহ!
বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের ছড়িয়ে যাক আপনার এই স্বপ্ন। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভাল কাজে সহযোগিতা করার তৌফিক দিন,আল্লাহ্!
জাজাকাল্লহ খায়ের
আপনাকে সুন্দর উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ।
তাহলে কুলি , মজুরের, মুদির দোকানদার , রিকশাওয়ালা - এসব কাজ কে করবে ?
চাকরির বাজার এক্সপান্ড না করে , উচ্চ মাধ্যমিকে কলেজ না বাড়িয়ে , স্নাতক / স্নাতকোত্তর সিট না বাড়িয়ে শুধু মাধ্যমিক পর্যায়ে আলোড়ন ঘটালে সেটা হিতে বিপরীত হবে ।
কারণ অশিক্ষিত সন্ত্রাসীর চেয়ে শিক্ষিত সন্ত্রাসী বেশী ভয়ংকর ।
আমি এখানে মেধার কথা বলেছি । যারা
ইচ্ছা থাকা সত্বেও অর্থাভাবে পড়তে পারছে না অতচ তারাই পড়ছে যাদের মেধা নেই । যারা সমাজকে, দেশকে কিছু দিতে পারবে না তারা হয়তো পড়তে পারছে। আমি ঢালাও ভাবে মিন করছি না ।
শুধু চাকরীই করতে হবে কেন ? মেধার কল্যাণে অনেকে কর্ম সৃষ্টি করবে, নিত্যনতুন জিনিস আবিস্কার করবে । উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত যখন ছাত্রছাত্রী বাড়বে তখন প্রয়োজনের তাগিদেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বৃদ্ধি পাবে । আগো সিট নয়, আগে পাশ করতে হবে । শুধু শিক্ষিত হলেই হবেনা, সুশিক্ষিত হতে হবে । আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
আর শিক্ষার মূল লক্ষ্যই তো হচ্ছে চাকুরী করা , আয় রোজগারে নেমে পড়া ।
গবেষনা করে আবিষ্কার করার পরিবেশ বাংলাদেশে নেই । কারণ, নির্বিঘ্নে গবেষনার কাজ চালয়ে যাবার জন্য গবেষককে যে ধরনের আর্থিক , ব্যক্তিগত ,পারিবারিক , সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুবিধাদি দিতে হয় যাতে গবেষক কোন প্রকার টেনশন ছাড়াই তার কাজে মন দিতে পারবে - এটা বাংলাদেশে সম্ভব না ।
আফসোসের বিষয় হচ্ছে আমরা আমাদের ধর্মের মুল নীতি সম্পর্কেই ওয়াকিবহাল নই। যদি আমরা একজন ন্যুনতম মুসলমান হিসেবেও নিজেকে গড়তে পারতাম তবে আমরা শিক্ষা-দীক্ষায় যেমন পিছিয়ে থাকতাম না তেমনি দারিদ্রের মতো একটি অভিষপ্ত জিল্লতির ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়েও রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্ব দরবারে বেহায়ার মতো হাত পেতে থাকার নিকৃষ্টতর অনুভূতি বুঝে নিজেকে শরমিন্দা মনে করতাম।
যাই হোক আজকের আপনার প্রাসঙ্গিক বিষয়েই আলোচানায় আসি-
আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মাঝ পথে ঝড়ে পড়া অনেক মেধাবী ছেলে মেয়ে আমরা দেখতে পাই। মাঝ পথে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র দারিদ্রতার কারণেই যে ঝড়ে পড়ছে তা কিন্তু নয়। আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সামাজিক অবস্থাও অনেকাংশে দায়ী। এর সাথে যুক্ত হয়েছে কথিত অতি রাজনীতিকী করণ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেখানে কোমলমতি শিশু কিশোরদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা পাঠদান পদ্ধতি আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করে উপস্থান করার কথা সেখানে শিক্ষাকে উপস্থাপন করা হয় ভিতিকর বস্তু হিসেবে। এমনকি অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদেরকে শারিরিক প্রহার পর্যন্ত করা হয় “শিক্ষাকে তাদের মাথায় ঢুকানোর জন্য”। আমি নিজেও বাল্যকালে খেয়াল করেছি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদেরকে মারধোর করার কারণে অনেকেই স্কুল-মাদ্রাসা বিমুখী হয়েছে। এখনো পর্যন্ত অনেক মাদ্রাসা আছে যেখানে ছাত্রদেরকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য অথবা তাদের মাথায় দ্বীনি শিক্ষা ঢুকিয়ে দেয়ার জন্য তাদের পায়ে ডান্ডাবেড়ী পরিয়ে রাখা হয়। দ্বীনি শিক্ষা থেকে কোমলমতি ছাত্ররা যেন বঞ্চিত না সে জন্যই তাদেরকে ডান্ডাবেড়ী পরিয়ে রাখা হয়। লিখতে গেলে অনেক লিখতে হবে। সংক্ষিপ্তাকারে সবকিছু প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
আপনার সাথে একমত পোষণ করে শুধু এতোটুকুই বলবো আমাদের প্রথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভিতিকর বস্তু হিসেবে উপস্থান না বরঞ্চ উপভোগের বস্তু হিসেবে উপস্থানের উদ্যেগ নিতে হবে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
সুন্দর চিন্তা-ভাবনার পোস্ট স্টীকি করে রাখার মতো একটি একটি লেখা। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করতে দেখতে পারেন।
যার যার অবস্থান থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চেষ্টা একদিন অবশ্যই সুফল বয়ে আনবে।
৫০ এর দাঙ্গায় আমাদের বাড়ি জমিজমা সবই হিন্দুরা দখল করে নেয় (ভারতে)আমরা উদ্বাস্তু হয়ে অন্য মুসলীম গ্রামে আশ্রয় নিই৷ আমার আব্বা দিন মজুরী ও কিছু বর্গা চাষ করে সংসার চালাতেন৷ আমার বড়ভাই স্কুলের সেরা মেধাবী ছাত্র হিসেবে মুহসীন ফাণ্ড থেকে বৃত্তি পেত৷ প্রাইমারী (ফোর) পাশ করার পরে লেখা পড়া শেষ হল৷ কারণ স্কুল ছিল অনেক দূরে৷ বেতন বই খাতার সাথে একটা সাইকেল প্রয়োন ছিল যা আব্বার জন্য সম্ভব ছিলনা৷ হেড স্যার বাড়ি এসে প্রস্তাব দিলেন, 'গনি মিয়া তোমার ছেলেটাকে শুধু আমাদের হাতে ছেড়ে দাও৷ আমরা ওর স্কুলের যাবতীয় দায়িত্ব নেব৷ওকে হাই স্কুলে ভরতি করে দিয়ে আসি'৷ আমার অসহায় আব্বা বললেন,'ও বড় হয়েছে, এখন ওকে আমার সংসারে প্রয়োজন,আমি ছাড়তে পারবোনা৷' এমনও অবস্থার মানুষ আছে৷ আমার জীবনে এমন ফ্যামিলী আমিও পেয়েছি৷ধন্যবাদ৷
আমাদের দেশটি হয়তো কোনদিন সিঙ্গাপুর হতে পারবে না কিন্তু মালয়েশিয়া হওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
আল্লাহ ভরসা।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পরামর্শের জন্য।
শিক্ষা ব্যবস্থা সুন্দর হোক
শিক্ষিত মানুষ বাড়ুক।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
প্লিজ, কারো দিকে আর তাকিয়ে থাকা নয়, কেউ আসুক অথবা নাই আসুক, আপনি আসছেন, লিখছেন, ভালো কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করছেন, এটাই নিশ্চিত করুন!
অনেক প্রতিবন্ধকতার মাঝেও ব্লগ কর্তৃপক্ষ ব্লগটি টিকিয়ে রেখেছেন এটার জন্য ধন্যবাদ না দিয়ে বরঞ্চ আমরা ব্লগের দোষত্রুটির দোহাই দিয়ে ব্লগ বর্জন করি।
মাঝ সমুদ্রে জাহাজের ডকে ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে যখন পা ব্যথা হয়ে যায় তখন একটুখানি বসার জন্য মনটা কেমন আকুতি করে।
আমরা যে ব্লগে আমাদের কথাগুলো লিখতে পারছি এটাইবা কম কিসে। ব্লগে লিখি বলেই আমরা ব্লগার, ব্লগেই যদি না লিখি তাহলে নিজেকে ব্লগার পরিচয় দিয়ে লাভ কি!
তবুও মাঝে মাঝে মডারেশানের কিছু খামখেয়ালীপনার জন্য খারাপ লাগে।
আমি আছি থাকব ইনশাআল্লাহ। অফলাইনে তরুন লেখকদের সংগঠিত করার জন্য, তাদেরকে লেখালেখিতে উৎসাহিত করার জন্য কিছু সময় দিতে হয়।
কয়েকজন নতুন লেখককে ফেসবুক থেকে ধরে এনে ব্লগে রেজঃ করিয়েছি কিন্তু কারো কারো ২/৩ মাস হয়ে গেলেও কোন এক্সেস দিচ্ছেনা মডারেশান টিম।
মাঝে মাঝে আমারও হতাশ লাগে। একটানা অনেকদিন কোন স্টিকি পোষ্ট নেই, সর্বোচ্চ মন্তব্যকারীর আপডেট নেই এসব দেখে।
যাই হোক আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন এবং আবার আসবেন আমার ব্লগ কুটিরে।
ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন