কিয়ামত দিবসের পুনরুত্থানের রিহার্সাল
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ২৫ জুন, ২০১৫, ০৪:৪৭:৪২ বিকাল
কোন এক শহরে বনী ইসরাইল সম্প্রদায়ের কিছু লোক বসবাস করত । তাদের সংখ্যা হবে দশ হাজারের মত । একসময় সেখানে মহামারী হিসেবে প্লেগ রোগ দেখা দিল । তাতে শহরের লোকেরা ভয় পেয়ে গেল এবং মৃত্যু ভয়ে শহর থেকে বেরিয়ে গেল । তারা শহরের বাইরে দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী সমতল জায়গায় বসবাস করতে লাগল । মৃত্যু ভয়ে মাতৃভূমি থেকে তাদের পালিয়ে যাওয়াটা আল্লাহর পছন্দ হলনা ।
মৃত্যুতো তখনই আসবে যখন আল্লাহ হুকুম করবেন । শুধুমাত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণের কারণে বা প্ল্যাগ মহামারীর কারণে কারো মৃত্যু হবেনা । তাদের এহেন দৃষ্টাতাপূর্ণ আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ বললেন মরে যাও । তারা মরে গেল । অর্থাৎ তারা মহামারী থেকে পালিয়ে এসেও বাঁচতে পারলনা । মরার পর তারা একসময় মাঠির সাথে মিশে গেল ।
এর আরো বহুবছর পর বনী ইসরাইলের হিযকীল (আঃ) নামক নবী ঐ জায়গা অতিক্রম করে কোথাও যাচ্ছিলেন । এসময় তিনি সেখানে অনেকগুলো হাড়গুড়ের স্তুপ দেখতে পেলেন এবং তা দেখে অতিশয় বিস্মিত হলেন । তখন আল্লাহপাক নবী হিযকীল (আঃ)কে ওহির মাধ্যমে ঐ মৃত লোকগুলোর সমস্ত ঘটনা বলে দিলেন ।
তখন নবী লোকগুলোকে পুনর্জীবিত করে দেয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করলেন ।
অতঃপর আল্লাহর হুকুমে নবী হাড়গুলোকে আদেশ করলেন, বললেন:
ওহে পুরাতন হাড়সমূহ ! আল্লাহ তোমাদিগকে নিজ নিজ স্থানে একত্রিত হতে আদেশ করেছেন। নবীর জবানীতে আল্লাহর আদেশ শুনার সাথে সাথে হাড়গুলো বিক্ষিপ্ত অবস্থা হতে একত্রিত হয়ে পুন:স্থাপিত হল ।
অত:পর আল্লাহ নবীকে আবার বললেন: হাড়গুলোকে বল, ওহে হাড়সমূহ, আল্লাহপাক নির্দেশ দিচ্ছেন
তোমরা মাংস পরিধান কর এবং রগ চামড়া দ্বারা সজ্জিত হও।নবীর জবানীতে আল্লাহর আদেশ শুনার সাথে সাথে হাড়ের প্রতিটি কংকাল এক একটি পরিপূর্ণ লাশ হয়ে গেল।
অত:পর রূহকে আদেশ দেয়া হলে:
ওহে আত্মাসমূহ ! আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে যার যার শরীরে ফিরে আসার নির্দেশ দিচ্ছেন। উক্ত শব্দ উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথে সমস্ত লাশ নবীর সামনে জীবিত হয়ে দাঁড়াল এবং আশ্চর্যান্বিত হয়ে চারিদিকে তাকাতে লাগল আর সবাই বলতে লাগল: তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করি হে আল্লাহ, তুমি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই ।
এই ঘটনাটি দুনিয়ার সমস্ত বুদ্ধিজীবীর সামনে সৃষ্টিবলয় সম্পর্কিত চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সন্ধান দেয় । তদুপরি এটা কেয়ামত ও পুনরুত্থান অস্বীকারকারীদের জন্য একটা অকাট্য প্রমাণ হওয়ার সাথে সাথে এ বাস্তব সত্য উপলদ্ধী করার পক্ষেও বিশেষ সহায়ক হয় যে, মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে থাকা--- তা জিহাদ হোক কিংবা প্লেগ মহামারীই হোক—আল্লাহ এবং তাঁর নির্ধারিত নিয়তির প্রতি যারা বিশ্বাসী তাদের পক্ষে সমীচীন নয় । যার এ বিশ্বাস রয়েছে যে, মৃত্যুর একটা নির্ধারিত সময় রয়েছে, নির্ধারিত সময়ের এক মুহুর্ত পূর্বেও তা হবে না এবং এক মুহুর্ত পরেও তা আসবে না, তাদের পক্ষে এরূপ পলায়ন অর্থহীন এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ ।
এখন ঘটনাটি কোরানের ভাষায় লক্ষ্য করুন:
তুমি কি তাদের অবস্থা সম্পর্কে কিছু চিন্তা করেছো, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বের হয়ে পড়েছিল এবং তারা সংখ্যায়ও ছিল হাজার হাজার? আল্লাহ তাদের বলেছিলেনঃ মরে যাও, তারপর তিনি তাদের পুনর্বার জীবন দান করেছিলেন। আসলে আল্লাহ মানুষের ওপর বড়ই অনুগ্রহকারী কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
সূরা বাকারা, আয়াত-২৪৩
উক্ত আয়াত দ্বারা মূলত আল্লাহ পাক তাদেরকে একটি বার্তা পৌছাতে চেয়েছেন যারা মৃর্ত্যুর ভয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায় । প্লেগ মহামারী বা যুদ্ধক্ষেত্র মৃত্যুর কারণ নয়, মৃত্যু হচ্ছে আল্লাহর হুকুম ।
সূরা বাকারার ২৪৩নং আয়াতের উপরোক্ত ব্যাখাটি মারেফুল কোরআনের ৬৫৫ পৃষ্টায় এসেছে । তাফসীরে ইবনে কাসিরও অনুরূপ ব্যাখ্যাই সমর্থন করেছে, পৃষ্টা:৬৮৩ । তবে তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে তাফহিমূল কোরআনে এটাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে । সেখানে মরে যাওয়া ও বেচে উঠাকে রূপক অর্থে গ্রহন করা হয়েছে ।
[ইহা একটি আসমানী মেসেজ পরিবেশনা]
ইতিপূর্বে প্রকাশিত আরো কয়েকটি আসমানী মেসেজ পরিবেশনা হল:
আল্লাহর কাছে ফোন করুন যে কোন সমস্যার সমাধান চেয়ে
হযরত ঈসা (আঃ) এর দোয়ার বরকতে আল্লাহপাক আসমান থেকে খাবার পাঠালেন
অর্থসহ কোরআন অধ্যায়ন করাটা কতটা জরুরী ..!!!
আমি একটি মেসেজ পেয়েছি
আব্বা, সব বাড়িতে একই সেইম, চাচার বাড়ি কোনডা ?
ফুফুর স্নেহ, আদর, মহব্বত
শান্তনা
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ধন্যবাদ।
এরকম হাজার হাজার মেসেজ ইনবক্সে আনরিড অপশনে পড়ে আছে।
ওখান থেকে বের করে আনতে হবে নির্ঝাসগুলো।
এবারের শিরোনামটি কেমন হয়েছে মাছুম ভাই?
আগের কমেন্টেই অনন্য বলেছি। বাকী ছিল একটু..অসাধারণ এবং প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত শিরোনাম। যা মানুষের দৃষ্টিগোচর হলে মনকে নাড়া দিবেই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন