শান্তনা . . . . . (গল্প)
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ২৩ মে, ২০১৫, ০১:১৭:১৫ দুপুর
গল্প পড়লে নেকী ফ্রি:
মামুন একটি বই পড়ছিল, মানে কিতাব পড়ছিল। কিতাবটি যদিও দুনিয়ার কোন প্রকাশনী প্রকাশ করেছে তবে এর লেখক কিন্তু দুনিয়ার কেউ নন । এই আকাঁশ জমিনের যিনি মালিক তিনিই এর রচয়িতা । বইটিতে শুধু মেসেজ আর মেসেজ ।দুনিয়ার মানুষের জন্যই এই মেসেজ ।
পড়ার এক পর্যায়ে মামুনের খুব মন খারাপ হল । সে এক জায়গায় পড়ল, যিনি মানব সৃষ্টি করেছেন তিনি কিতাবের এক জায়গায় বলেছেন, ‘মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থির-মনা করে’ ।এটা পড়েই মামুনের কপালে ঘামের অণুকণাসমূহ ঝিক ঝিক করতে থাকে। একটি সৃষ্টির কারিগর যদি সে সৃষ্টির কলাকৌশল এবং বিহেব সম্পর্কে বলে তাহলে এর চেয়ে সত্য আর কি হতে পারে ? মানুষ অস্থির মনা !
মামুন আবার পড়ায় মনোযোগ দিল । সে পরবর্তী লাইনটি পড়ে আরো বিচলিত হয় । সেখানেও মানুষ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘বিপদ তাকে সম্পর্শ করলে সে হয় উৎকণ্ঠিত’ । এবার মামুনের কপালের ঘামের অণুকণাগুলো যেন আরো শক্তি পেল ।
মামুন এতদিন জেনে এসেছে বিপদে ধর্য ধরতে হয়, ইহা মুমিনের লক্ষণ । কিন্তু আল্লাহ নিজেই যদি মানুষকে এমনভাবে সৃষ্টি করেন যে বিপদ স্পর্শ করলে সে উৎকণ্ঠিত হবে তাহলে ধর্য ধরবে কিভাবে । এই কথাগুলো যেহেতু আসমান থেকে এসেছে সুতরাং এখানে মিথ্যার লেশমাত্র নেই । মামুন এটার সত্যতা জানে এবং মানে বলেই সে এত বিচলিত ।
মামুন পাঠরত মেসেজ সমূহের আরো সামনে অগ্রসর হল। পরের লাইনটি মামুনকে আগের চেয়েও বেশী উৎকণ্ঠিত ও অস্থির করে তুলল। কারণ সেখানে মানবকূলের স্রষ্টা মানুষ সম্পর্কে বললেন, ‘কল্যাণ তাকে স্পর্শ করলে সে হয়ে পড়ে অতি কৃপণ’ । মামুনের ঘামের কণাসমূহ এবার বিন্দুতে রূপ নিতে থাকল । সে পাঠে ক্লান্ত দিয়ে রুমের মধ্যে পায়চারী করতে লাগল । সে খুবই সিরিয়াসলী অস্থিরতা অনুভব করতে লাগল নিজের মধ্যে । নিজের অস্থিরতার মাত্রা লক্ষ্য করে সে বেশ উৎকণ্ঠিত ।
মামুন ভাবতে লাগল, সে কল্যাণ প্রাপ্ত হওয়ার পর যদি কৃপণ হয়ে পড়ে তাহলে সে মানবসেবা করবে কিভাবে ? তার অন্তরে লালিত স্বপ্ন সমাজ সেবার কি হবে ? আল্লাহ মানুষকে এই বদগুণ গুলো কেন দিলেন ? এত অসহিষ্ণুতার মাঝে মানুষ আশরাফুল মাকলুকাত বা সৃষ্টির সেরা হয় কেমনে ? মামুন আবার এসে বসে কুরআনের তাফসীর তাইসীরুল কুরআনের সামনে ।
এবার সে যা পড়ে তাতে মামুনের পুরা অস্থিরতা, উৎকণ্ঠা নিমিশেই দুর হয়ে যায়। মামুনের মুখে হাসি ফুটে উঠে, সে বুক ভরে শ্বাস নেয় এবং মহান রবের কাছে কৃতজ্ঞমনে শরমিন্দা হয় । সে লজ্জিত হয় এই জন্য যে সে প্রথমে অস্থিরতার সাথেই উৎকণ্ঠিত হয়েছিল বলে । এখন মামুনের চেহারায় খেলে যায় হেরার দ্যুতি । মামুন মালিকের দরবারে সেজদায় লুঠিয়ে পড়ে বলে হে আল্লাহ, তুমি কত মহান, আমি কত বোকা ও গাফেল, কেমনে করি তোমার নিয়ামতের শোকর গোজার ।
মামুন পরবর্তী যে লাইনটি পড়ে আশার আলো দেখতে পেয়েছে তাতে লেখা আছে, ‘তবে নামাজ আদায়কারীরা এরকম নয়’ । অর্থাৎ উপরে মানবীয় গুণাবলীর যে নেতীবাচক গুণের কথা বলা হয়েছে যা পড়ে মামুন হতাশ হয়েছিল তা ছিল বেনামাযিদের জন্য প্রযোজ্য । মালিকতো পরিস্কার করে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন নামাযিরা এরকম নয় । যারা নামায আদায়ে থাকে দৃঢ় সংকল্প, যারা মনে করে নিজেদের অর্জিত ধন সম্পদের মাঝে একটি অংশের মালিক প্রার্থী ও বঞ্চিতরা ।
মামুনের অশান্ত মনে যেন শান্তির ফোয়ারা বয়ে যায় ।
সে আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে বলে, হে পরওয়ার দিগার তুমি আমাকে নামাযিদের অন্তর্ভূক্ত কর ।
যাদের প্রতি তুমি সফলতার ঘোষণা দিয়েছো । তুমিই তো সূরা মূ’মিনিন এর প্রথম আয়াতে বলেছো:
[সূরা আল-মা’আরিজ, আয়াত:১৯-২৭ অবলম্বনে]
ইহা একটি আসমানী মেসেজ পরিবেশনা
ইতিপূর্বে প্রকাশিত আরো কয়েকটি আসমানী মেসেজ পরিবেশনা হল:
আমি একটি মেসেজ পেয়েছি
আব্বা, সব বাড়িতে একই সেইম, চাচার বাড়ি কোনডা ?
ফুফুর স্নেহ, আদর, মহব্বত
বিষয়: বিবিধ
১৩০৯ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
"এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের"।
[সূরা বাক্বারা:১৫৫]
শূণ্যে ঝুলিয়ে রাখবেন যতক্ষণ তার একজন
ঈমানদার ব্যাক্তিও দুনিয়ায় অবস্থান করবে ।
যখন দুনিয়ায় আল্লাহ ডাকার লোক থাকবেনা
তখন আল্লাহ আসমানের স্ক্রু খুলে নিবেন ।
আসমানের সুনিপুন অবস্থানই বুঝা যাচ্ছে
এখনও
দুনিয়ায় ঈমানদার ব্যক্তির অবস্থান বর্তমান ।
ধন্যবাদ আপনাকে ।
অনেক ধন্যবাদ । আপনাকে
মিথ্যা বলেছি কি কিছু!
ছুটছি সবাই আলেয়ার পিছু।
আল্লাহ আপনাকে সেই তৌফিক দান করুন। আমীন।
http://www.monitorbd.net/blog/blogdetail/detail/2668/rashic/65494
মন্তব্য করতে লগইন করুন