মানবসেবার যত খাত আছে, শিক্ষাখাত হোক সবার আগে
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:৩৯:০৭ বিকাল
অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা-সামগ্রী বিতরন’১৪ইং
এবারের আয়োজন হবে আমারই এলাকায় । সাতকানিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে, আগামী ৭ই অক্টোবর’১৪ইং ।
আমি সর্বপ্রথম যখন অসহায় দুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করতে চাইলাম তখন ব্লগে একটি পোষ্ট দিয়ে ব্লগার বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করেছিলাম বন্ধুদের কাছে একটি পরামর্শ চাই....
উক্ত পোষ্টে আমাকে অনেকেই উৎসাহিত করেন ও সুন্দর সুন্দর গঠনমূলক পরামর্শ দেন ।
অত:পর আমরা ব্যবসায়ী মহল যখন কক্সবাজার ভ্রমনে গেলাম সেখানে কিছু মানবতার পক্ষে কাজ করতে চেষ্টা করলাম ।
সৈকত ভ্রমন.... হোক বিনোদনের সাথে মানবতা
অত:পর শেষপর্যন্ত চুড়ান্ত দিনে আমরা সফল করলাম আমাদের মনের স্বপ্ন ।
স্বপ্ন পুরনের দিন
এরপর চিন্তা করলাম নিজের গ্রামের জন্য কিছু করি । চিন্তাটি মাথায় ঢুকে গত রমজানে:
এ লক্ষ্যে গত জুলাই’র ১৪তারিখ ফেবুতে একটি ষ্ট্যাটাস দিই:
ফেবুর ষ্ট্যাটাস দেখুন
এরপর এলাকাবাসীর কাছ থেকে টুকটাক সাড়া পাই । সিদ্ধান্ত নিলাম বেশী কেউ এগিয়ে না আসলেও প্রোগ্রাম সফল করেই ছাড়ব ইনশাআল্লাহ ।
এলাকা নিয়ে যখন ভাবি......
অনেক বছর থেকে দেখে আসতেছি সামিয়ার পাড়া সহ বিভিন্ন পাড়ায় প্রতি বছর বিভিন্ন সমিতির উদ্যোগে ওয়াজ মাহফিল হয় । তাতে হাজার হাজার টাকা এমন কি লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরছ করা হয় । আবার মেলা বা মেজবান করেও লক্ষ লক্ষ টাকা খরছ করা হয় ।
কিন্তু এলাকায়
►অল্প টাকা পরীক্ষার ফিস দিতে না পারার কারনে
► স্কুলের বেতন দিতে না পারার কারনে
►দু’টি বই কিনতে না পারার কারনে
►প্রাইভেট পড়তে না পারার কারনে
►স্কুল ড্রেস না থাকার কারনে
►স্কুলের জুতা না থাকার কারনে
► বাবার সাথে কামলা খাটার কারনে
►পরীক্ষায় ফিল করার কারনে
প্রতিবছর অনেক ছেলে মেয়ে নিজেদের পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে । ফলে এলাকায় শিক্ষিত লোক তৈরী হয়নি । তৈরী হয়নি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার । তৈরী হয়নি প্রশাসনিক ব্যক্তি ।
তখন থেকে যদি ওয়াজ মাহফিল বা মেলা/মেজবান খাওয়ানোর পাশা পাশি এলাকার অ-সচ্ছল পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের কে পড়ালেখায় উৎসাহিত করতেন । তাদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করতেন তাহলে আজকে সামিয়ার পাড়াসহ ২নং ওয়ার্ডের চিত্র অন্যরকম হতে পারত ।
আল্লাহপাক সকলকে বুঝার তৌফিক দিন ।
এই কথাগুলো আমার এলাকার জন্য যেমন প্রযোজ্য তেমনি সকল এলাকায় একই চিত্র ।
একজন লোক গত বিশ বছর থেকে জাকাত দিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা । অতচ তিনি গর্ব করে বলতে পারবেন না যে আমি পার্শ্ববর্তী ৫টি অসচ্ছল পরিবারের ছেলেকে প্রাইমারী থেকে মাষ্টার ডিগ্রী পর্যন্ত পড়ার খরছ যুগিয়েছি । অতচ জাকাতের ঐ টাকাগুলো দেশের জন্য অনেক কল্যান বয়ে আনত । আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আরো বদলানো উচিত মনে করি ।
আগামী ৭ই অক্টোবর আমাদের এলাকায় উক্ত শিক্ষা-সামগ্রী সমূহ বিতরন করা হবে । এলাকায় আবেদনের জন্য ফরম দেয়া হয়েছে । ইতিমধ্যে ৩৪৭টি ফরম জমা পড়েছে । আরো ১০০ এর মত আবেদন আসতে পারে । সবাইকে দিতে গেলে ২লক্ষ টাকার ফান্ড দরকার হবে । জানিনা আল্লাহ কত জনকে দেয়ার সুযোগ দেন ।
এই আয়োজন যদি আল্লাহ সফল করায় তাহলে আগামী বছর থেকে আমাদের গঠনকৃত ফান্ড থেকে......
পিএসসি পরীক্ষার্থীদের গাইড বিতরন
জেএসসি পরীক্ষার্থীদের গাইড বিতরন
এসএসসি পরীক্ষার্থীতের টেষ্টবুক বিতরনসহ শিক্ষাখাতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদিগ্রহন ।
পরীক্ষার্থীদের ইংরেজী ও গণিতের উপর বিশেষ কোচিং সহ অন্যান্য প্রোগ্রামসমূহ গ্রহন করা হবে ।
এবারের আয়োজনে আমার সবচেয়ে ভাল লাগছে আমি প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে একটি করে ডিকশনারী পৌছে দিচ্ছি ।
আমার এই প্রোগ্রাম দেখে ইতিমধ্যে আমিরাবাদ এলাকায় একটি সংগঠন উদ্যোগ নিয়েছেন । আমার ফটিকছড়ির জামালভাইদের এলাকায় ও একই ফর্মূলা ব্যবহার করবেন বলে আমার কাছ থেকে আবেদন ফরমসহ বিভিন্ন নমুনা নিয়েছেন । আমি চাই পুরো দেশ জুড়ে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ুন । কারো ছেলে-মেয়ে যেন খরছের অভাবে ৫/৬ক্লাস পড়ালেখা করে মাঝপথে পড়ালেখা বন্ধ করে না দেয়, এটাই হোক সচেতন সকলের ব্রত ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৪১ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অবশ্যই ভাল উদ্যোগ। এখন একশ্রেণী আছে যারা লোক দেখানোর জন্য করে তারা এরকম উদ্যোগকে বিভিন্ন ভাবে নিরুৎসাহিত করে। এরকম কাজের জন্য চাই পেছনে না তাকিয়ে এগিয়ে চলা।
এখানে আমার কোন কমেন্টই করার দরকার নেই
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর,ইতিহাসবিদ ডঃ আবদুল করিম এর আত্মজিবনি তে পড়েছি ত্রিশ এর দশকে শহরের বাসিন্দা প্রায় সকল পরিবারে অন্তত একটি স্কুল পড়ুয়া ছেলে কে জায়গির বা লজিং রাখত। তিনি নিজেও চট্টগ্রাম ও ঢাকায় জায়গির থেকে পড়াশুনা করেছেন। সে সময় অনেক ধনি ব্যাক্তিই একাধিক ভাল ছাত্রের পড়াশুনার খরচ যোগাতেন। এটা তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্রেফ সওয়াব এর নিয়তে করতেন। ইংরেজপুর্ব সময়ে এই দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পুর্ন বিনামুল্যে পরিচালিত হতো সরকারি ও ওয়াকফ এর টাকায়। এই ওয়াকফ গুলি ইংরেজ আমলে সরকারের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়া হয়। পরবর্তিতেও চট্টগ্রামের অনেক ধনি ব্যবসায়ি তাদের সম্পদ এর একটি অংশ ওয়াকফ করে গিয়েছেন। সেই অর্থ দিয়ে এখনও অনেক স্কুল কলেজ পরিচালিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনকার সচ্ছল ব্যাক্তিরা অপ্রোয়জনিয় বিদেশি ডিগ্রির জন্য তাদের সন্তানদের বিদেশে প্রেরন করেন কিন্তু কোন অসহায় ছাত্র-ছাত্রি কে সহায়তা করেন না।
আপনার লক্ষ্য পূরণে সাফল্য কামনা করি।
যার যার প্রতিবেশী, আত্বীয়দের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত বলে মনে করি । আমি আপনি জানিনা শুধুমাত্র পরীক্ষার ফিস দিতে না পারার কারনে পড়ালেখা বন্ধ করে দিচ্ছে আমাদেরই নিকটজন ।
ধন্যবাদ আপনাকে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন