বাংলাদেশের সাগর কন্যা সেন্ট মার্টিন বা নারিকেল জ্বিনজিরা ভ্রমন
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ০১ জুন, ২০১৪, ০৭:০২:২৪ সন্ধ্যা
কোরবানের পরদিন মঙ্গলবার ভোরেই বাসা থেকে বের হয়ে হযরত শাহ আমানত [র:] ব্রীজ এলাকায় বাসের কাউন্টারে চলে গেলাম ।
যাবার গন্তব্যস্থান হচ্ছে কক্সবাজারের উকিয়া । বেশ কয়েক বছর থেকেই মায়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মানবেতর জীবন যাত্রা সরাসরি দেখার ইচ্ছে ছিল । তাই কোরবানের ঈদের বন্ধের সুযোগে একাকি বের হয়ে পড়লাম । এস আলম চেয়ার কোচে কক্সবাজার লিংক রোড়ে নেমে পড়লাম। যাবার পথে গাড়ীতে কয়েক জন পর্যটকের সেন্ট মার্টিন নিয়ে গল্প করায় আমি ও উৎসাহিত হলাম সেন্ট মার্টিন দেখার জন্য । কারন আমার ভ্রমনের ভান্ডারে চট্টগ্রাম বিভাগের অদেখা কয়েকটা দর্শনীয় স্থানের মধ্যে সেন্ট মার্টিন একটা । এছাড়া হাতিয়া, সোনাদিয়া, নিঝুম দ্বীপ, ভোলা ও যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও এখনও যাওয়া বাকী আছে ।
যাই হোক উকিয়া গিয়ে একজন বিশেষ শুভাকাঙ্খির সহযোগিতায় বিকালে কুতুপালং রোহিঙ্গা রিফিউজি ক্যাম্প দেখে সন্ধ্যায় টেকনাফ চলে গেলাম । রোহিঙ্গাদের জীবন যাত্রা নিয়ে অন্য দিন লিখব । চট্টগ্রাম থেকে আসার সময় চকরিয়া ও উকিয়ায় রাস্তার উভয় পাশে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে চলাচলের রাস্তার পাশে লেখা সাইনবোর্ডে লেখা দেখলাম " হাতি চলাচলের রাস্তা" ।
লেখাটি পড়ে বেশ রোমাঞ্চিত হলাম।
প্রায় ২২ বছর পর টেকনাফ এসেছি । টেকনাফে সাজ্জাদ নামের এক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমাকে বেশ সহযোগিতা করেছিল । উনার সহযোগিতায় সেদিন রাত্রে একজায়গায় গিয়ে এসবিতে ব্লগিং ও করেছিলাম ।
সাজ্জাদ ভাই পরামর্শ দিলেন সকালে জাহাজে সেন্ট মার্টিন না গিয়ে যদি শাহ্ পরীর দ্বীপ হয়ে যাওয়া যায় তাহলে জাহাজের অনেক আগেই পৌছা যাবে। এছাড়া সময় ও টাকা দুটিই কম লাগতে পারে । সেই সাথে শাহ্ পরীর দ্বীপটা ও দেখা হয়ে যাবে।
টেকনাফে আল আব্বাস নামের হোটেলে রাত কাটিয়ে সকালে ঈদগাঁহ মাঠ থেকে সিএনজিতে করে ১৩ কিলোমিটার দুরে সোজা শাহ্ পরীর দ্বীপ চলে গেলাম ।
۩ শাহ্ পরীর দ্বীপ !! বাংলাদেশের প্রান্ত সীমানায় শেষ কদম ۩
যাবার সময় প্রথমে সারি সারি সুপারি বাগান সমূহ দেখলাম, এরপর দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত খোলা জমিনের দুই পাশে লবন মাঠের জন্য নির্ধারিত লেখা অনেক গুলো সাইন বোর্ড দেখলাম ।
ঈদের সময় বলে টেকনাফে হোটেল খোলা না থাকায় মনে করছিলাম শাহ্ পরীর দ্বীপে গিয়ে নাস্তা করবো । কিন্তু সেখানেও হোটেল গুলো বন্ধ থাকায় দুই প্যাকেট বিস্কুট আর একটা ড্রিংকস নিয়ে নাস্তার কাজ সারতে হলো।
খুবই সুন্দর আকর্ষনীয় নাফ নদীর গভীরতার দিকে প্রায় ২ হাজার ফুটের মত লম্বা লঞ্চ ঘাটের ব্রীজ বা পল্টুনটি পুরো দ্বীপটির সৌন্দর্য় হাজার গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। শাহ্ পরীর দ্বীপের বাম পাশে বিশাল নাফনদী আর নাফ নদীর অপর পারে বার্মা বা মায়ানমার সীমান্ত । নাসাকার সীমান্ত ফাঁড়ি ও বিস্তৃর্ন এলাকা জুড়ে কাঁটা তারের বেড়া স্পষ্ট দেখা যায়।
আমি যখন শাহ্ পরীর দ্বীপ পৌছি তখনও সকাল সাড়ে সাতটা ।
চারিদিকে নিঝুম, মানুষ জন খুবই কম । আবছা কোয়াশার মধ্যে নাফ নদীর দিকে তাকালে ভয় ভয় লাগে, শরীর মন শিহরীত হয়ে উঠে। নাফ নদীর তীর দিয়ে সামান্য ডান দিকে বা দক্ষিন দিকে গেলেই বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের ক্যাম্প। সেখানে সামনে প্রবেশ মুখের পাশে বাঙ্কে অতন্ত্রপ্রহরীর মত ডিউটি দিচ্ছেন নাটোর এলাকার একজন বিবিজির সদস্য । উনার সাথে কথা বলে বেশ ভাল লাগল ।
জেটি ব্রীজের শেষ মাথায় বেশ কয়েকটি স্পীড বোট বাধা থাকলে ও কোন চালক বা লোক নেই । খোজ নিয়ে জানলাম আরো পরে আসবে । পরে লোক আসল বটে কিন্তু ভাড়া চাই বেশী, এক বোট আড়াই হাজার টাকা অথবা ৮ জন গেলে প্রতি জন ৩০০ টাকা । কিন্তু এত সকালে অত লোক ও নেই যে যাওয়া যাবে।
অনেক্ষন পর একজন পাওয়া গেল । ২৫/২৬ বছরের একটি ছেলে, বাড়ী সেন্ট মার্টিন । শাহ্পরীর দ্বীপে এসেছে কাকড়ার জন্য । দেখলাম একটা বস্তায় অনেক গুলো কাকড়া । ওগুলো সেন্ট মার্টিনে হোটেলে বিক্রি করা হবে । ছেলেটির নাম এখন মনে পড়ছে না। সে সেন্ট মার্টিন ও শাহ্ পরীর দ্বীপের ইতিহাস বলতে চাইল এরকম । শত শত বছর আগে জ্বীন জাতি সমগ্র পৃথিবী ঘুরে এ দ্বীপে এসে জিরাতো মানে রেষ্ট নিতো - এজন্য এ দ্বীপের নাম হয় জ্বীনজিরা । আর সে দ্বীপে নারিকেল বেশী হতো বলে পরবর্তীতে তা নাকিকেল জ্বিনজিরায় পরিনত হল। কিন্তু এই নারিকেল জ্বিনজিরা অনেকটা দ্বীপবাসীর অজান্তেই সেন্ট মার্টিন হিসেবে আত্বপ্রকাশ করল । সে আরেক কাহিনী । ক্যাপ্টেন সেন্টমার্টিন জরিপ কাজ শেষ করার পর যখন উহা 'সেন্ট মার্টিন' নামে পরিচিত হচ্ছিল তখন স্থানীয় অশিক্ষিত লোকেরা মনে করেছিল 'শেষ মাটি' বলা হচ্ছে । এবং ওরা নিজেরা যুক্তি দিয়ে নিজেদের কে বুঝ দিয়েছিল শেষ মাটিই তো । যেহেতু বাংলাদেশের সর্বশেষে এর অবস্থান তাই 'শেষ মাটি' বলাটা অযুক্তিক নয় । কিন্তু ওদের 'শেষ মাটি' দেখা গেল ধীরে ধীরে 'সেন্ট মার্টিন' হয়ে গেল । এই ছিল সেদিন কাকড়া নিয়ে যাওয়া স্থানীয় ছেলেটির ব্যাখ্যা । সে শাহ্ পরীর দ্বীপের বেলায় ও বলেছিল ওখানে নাকি পরীরা থাকতো । বা: কি সুন্দর সমন্বয়, জ্বিনজ্বিরা দ্বীপ জ্বীনদের বিশ্রাম স্থল আর শাহ্ পরীর দ্বীপ পরীদের মিলনকেন্দ্র । দুই দ্বীপের মাঝে ১০/১২ কিলোমিটার পর্যন্ত সাগর । এযেন রাজা মহারাজাদের রাজদরবার ও অন্দর মহল । যেহেতু নাম গুলো ছাড়া আর কোন স্বাক্ষী নেই সুতরাং ততৈবচ ।
তবে এ সংক্রান্ত আরো গুছালো তথ্য পাওয়া যায় আমার প্রিয় ও সিনিয়র ব্লগার নজরুল ইসলাম টিপু ভাইয়ের শিক্ষা সফর মূলক ভ্রমন কাহিনীতে । শিক্ষা ভ্রমণ: শাহপরী থেকে সেন্টমার্টিন, সিকি শতাব্দী আগে (এটা ছিল এসবির পোষ্ট)
যাই হোক, ঘাটে এখন ও পর্যাপ্ত ভ্রমর গুঞ্ছন না করায় এখন মনে হচ্ছে এ পথে আসাটা ঠিক হয়নাই । টেকনাফ বন্দর থেকে জাহাজে গেলে কোন টেনশন ছাড়াই চলে যেতে পারতাম বলেই মনে হল ।
আস্তে আস্তে স্থানীয় লোকেরা সংশ্লিষ্ট পেশায় জড়িত লোকেরা আসতে শুরু করল । আরো কিছুক্ষন পর স্থানীয় ৫ জন কলেজ পড়ূয়া ছাত্র আসল, ওরা ও সেন্ট মার্টিন যাবে । কিন্তু লঞ্চের ভাড়া শুনে ওদের জেলে পাড়ায় মোবাইল করে নিজস্ব ফিসিং বোট নিয়ে আসল এবং আমরা যারা আছি আমাদেরকে ও ওদের সাথে নিল, তবে তেলের দাম হিসেবে আমাদের কাছ থেকে প্রায় ১০০ টাকা করে ভাড়া নিয়েছে । এভাবে আমরা ওখানে ১৫/১৬ জন যাত্রী হয়ে গেলাম।
আমাদের বোট যখন শাহ্পরীর জেটিঘাট ত্যাগ করল তখন ঐ দুরে পেছনে নাফ নদীর উপর দিকে দেখা গেল কেয়ারী সিন্দবাদ সহ আরো তিনটি জাহাজ সাগরের মোহনার দিকে এগিয়ে আসছে ।
যাক, জাহাজ অন্তত আমার আগে সেন্ট মার্টিন পৌছবেনা । সেক্ষেত্রে আমার শাহপরী হয়ে আসা সার্থক মনে হল ।কিছুদুর গিয়েই সাগরের বিশাল মোহনা ।
এই অপরূপ দৃশ্য দেখে মন-প্রান জুড়িয়ে যায় । ডানে পেছনে শাহ্পরীর দ্বীপের চর, বামে অনেক দুরে মায়ানমারের কাটা তারের বেড়া সমৃদ্ধ সীমানা আর সামনে সুবিশাল বঙ্গোপসাগর । দুরে অনেক দুরে হালকা রেখার মত দেখা যায়, বোট চালক বলল ওটাই সেন্ট মার্টিন ।
কিছুক্ষনের মধ্যেই সাগরে ঢেউ শুরু হল । বোটের মাঝি বললেন শক্ত করে বসতে, এবার লাফিয়ে লাফিয়ে বোট চলতে লাগলো । আমি ফিসিং বোটের উপরে ছাউনির উপর দাড়িয়ে চারিদিকে নয়ন ভরে দেখে যাচ্ছিলাম।
বোটের পেছন অংশে ওয়াশরুম । পিছনে দুরে ঐ চারটি জাহাজ সারিবদ্ধ ভাবে দুরত্ব বজায় রেখে এগিয়ে আসতে লাগলো । আমি বোটের ছাউনির উপরে দাড়িয়ে নির্মল বাতাসে নিজের ফুসফুসটা ওয়াশ করে নিচ্ছিলাম । প্রায় সোয়া ঘন্টার সাগর পাড়ি দিয়ে আমরা দ্বীপ জ্বিনজিরায় পৌছে গেলাম । পৌছে পিছনের জাহাজগুলোর জন্য অপেক্ষা করলাম দেখার জন্য । কিছুক্ষনের মধ্যেই একে একে চারটি জাহাজই জেটিতে ভিড়ল ।
অনেক মানুষ, কয়েক হাজার হবে । এবার ধীরে ধীরে দ্বীপটা দেখার জন্য অগ্রসর হলাম । প্রথমেই ডাবের পশরা নিয়ে বসে আছে দ্বীপের ডাব ব্যবসায়ীরা । নারিকেল জ্বিনজিরায় এসে কি ডাব না খেলে চলে ? ২০ টাকা দিয়ে একটা বিশাল ডাব নিলাম ।
এতপানি ? পেটটা ডিগডিগে হয়ে গেল ।
প্রথমেই শুটকির বাজার, বেড়ার দোকানে শুটকির পশরা নিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা ।
ওখানে বেশ কয়েকটি বড় বড় হোটেল দেখলাম । তরতাজা মাছ ভাজার জন্য মসলা মিশিয়ে সামনে সাজিয়ে রেখেছে । যে যেটার অর্ডার দিবে সেটাই ভেজে দিবে । তবে দাম কিন্তু প্রচুর ।
ওখানে অনেকগুলো রিকসা ভ্যান দেখলাম যেখানে যাত্রী ডাকছে মূল বীচ, নারিকেল বাগান সহ পুরো দ্বীপটি ঘুরিয়ে দেখার জন্য
। প্রতিজন ১০ টাকা ২০ টাকা যার কাছে যা পাই তানিয়ে লোকেল সার্ভিস ও যাচ্ছে । আমি ও কয়েক জনের সাথে শেয়ারে একটিতে চড়ে বসলাম । দ্বীপের মাঝখান দিয়ে যাবার সময় বুঝার উপায় নেই যে চারিদিকে অল্প দুরেই সাগর ঘিরে আছে দ্বীপটির ।
যাবার সময় কয়েকটি রাতে থাকার হোটেল ও খাবার হোটেল দেখলাম । আমরা সেন্ট মার্টিনে যে পাশে প্রবেশ করেছি মূল বীচটি তার ঠিক বিপরীত দিকে । আমরা যদি পূর্ব পাশ দিয়ে ঢুকি তাহলে পশ্চিম পাশে হচ্ছে মূল বীচ যেখানে প্রবাল পাথর আছে । অবশেষে মূল বীচে পৌছলাম ।তখন বেলা দেড়টার মত হবে । বীচে নেমেই মনটা হতাশ হয়ে গেল । কারন এতসাদা মাটা বীচ !!
এটা দেখার জনই কি এত কষ্ট করে এতদুর আসা । চরের মধ্যে সারি সারি ছাতার নীচে বসার ব্যবস্থা , এরপর পাথর অত:পর সাগর । তীরের দিকে ঝাকড়া ঘন কেয়া গাছের ঝোপ । কক্সবাজার আছে ঝাউগাছ আর এখানে আছে কেয়া গাছ ও নারিকেল গাছ । যাই হোক আমি এগিয়ে গেলাম সাগরের দিকে । বালি পার হয়ে পাথরে গিয়েই আমি চমকে উঠলাম । একি দেখছি আমি ভোমরের বাসার মতই সব পাথর । পাথর গুলোকে কেউ খামচি দিছে নাকি ?
খামচি দেওয়ার অভ্যাস তো আমাদের মুক্তির, কিন্তু সেতো এখানে জীবনে আসেনি আর আসবে ও না ।
কাছ থেকে খেয়াল করে দেখলাম পাথর গুলোর গায়ে অসংখ্যা ছোট ছোট মরা শামুকের খোলস । দেখলে নরম মনে হলেও অসম্ভব শক্ত।
এই অতি আশ্চর্য পাথর গুলো পর্যবেক্ষন করতেই আমার প্রায় দেড় ঘন্টা চলে গেল ।
প্রবাল পাথর গুলোর সৃষ্টি রহস্য উৎঘাঠন করতে গিয়ে আমার মনে হল আমি মহান আল্লাহর অস্থিত্ব অনুভব করতে পারছি । এক পর্যায়ে ঐসব পাথরের উপর দিয়ে পা মাড়িয়ে হাটতে আমার সংকোচ বা লজ্জা হচ্ছিল। কিভাবে কাদার সাথে মাখামাখি করে শামুকগুলো এই পাথরসৃষ্টি করে যাচ্ছে তা এক বিরাট রহস্য বটে ।
পাথরের ফাকে ফাকে অল্প অল্প পানি যেখানে জমে আছে সেখানে এ্যাকুরিয়াম ফিস খেলা করছিল । জেব্রার মত ডোরা কাটা এবং লালনীল মাছগুলো খুবই আকর্ষণীয় । ধরতে চাইলেই পাথরের ফাকের ভিতর লুকিয়ে যায় ।
প্রবাল পাথর দেখতে দেখতে আমার আর সাগরের পানি পর্যন্ত যাওয়াই হয়নি । প্রচুর ছবি কালেকশান করলাম পাথর সমূহের। এবার ফিরার পালা । ঠিক সময়ে টেকনাফ পৌছতে পারলে আজকেই চট্টগ্রাম শহরে চলে যাবো । তবে সেন্ট মার্টিনে ও ঢাকা-চট্টগ্রামের চেয়ারকোচ সমূহের কাউন্টার দেখলাম। অর্থ্যাৎ এথান থেকেই সঠিক সময়ে ঢাকা ফেরার গ্যারান্টেড নিশ্চয়তা । পৃথিবী কত ছোট হয়ে এসেছে । ঢাকা থেকে একজন পর্যটক বৃহস্পতিবারে অফিস করার পর কক্সবাজার , টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপ, সেন্টমার্টিন দেখে আবার ঢাকা ফিরে রবিবারে অফিস করতে পারবেন । কক্সবাজার না ঢুকলে শনিবারে সকালেই ঢাকা পৌছতে পারবেন । আমি ফেরার পথে জাহাজ কেয়ারী সিনবাদ হয়ে আসলাম ।
অনেক পর্যটক রাত কাটাবার জন্য সেন্টমার্টিন থেকে যাওয়াই জাহাজে তেমন ঠাসাঠাসি নেই । জাহাজে সাগর ভ্রমনের মজাটাই আলাদা। বিশাল দানব আকৃতির জাহাজটি সাগরকে দলিত-মথিত করে হুংকার দিয়ে দিয়ে এগিয়ে যাওয়ায় সাগরের পানিও যেন রাগে ফুসতে থাকে।
মায়ানমারের সীমান্ত, কাটা তারের বেড়া এবং নাসাকা বাহিনীর সীমান্ত ফাঁড়ি খুব কাছ থেকেই দেখা যাচেছ। আসার সময় পড়ন্ত বিকালে মনোরম পরিবেশে অপূর্ব দৃশ্যাবলীর ভিতর অদৃশ্য হয়ে কখন যে নাফ নদী হয়ে টেকনাফ বন্দর চলে এসেছি বুঝতেই পারিনি । জাহাজ থেকে নেমেই কক্সবাজারের জন্য অনেক ভাল ভাল গাড়ী মওজুদ দেখতে পেলাম । সুতরাং উল্টো ফিরতি পথে টেকনাফ না ঢুকে সোজা কক্সবাজার লিংক রোড এবং রাত এগারটার মধ্যেই চট্টগ্রাম শহরে বাসায় হাজির হলাম ।
[এই ভ্রমনটি ২০১১ সালের কোরবানের পরদিন ছিল]
আরো কয়েকটি ভ্রমনকাহিনী
চট্টগ্রাম থেকে নদী পথে সাগর পাড়ি দিয়ে কুতুবদিয়া , মহেশখালী, এবং কক্সবাজার ভ্রমন
সাগর.... একটি লোমহর্ষক সমুদ্র অভিযান
বিষয়: বিবিধ
২৮১৭ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সেন্ট মার্টিন আমি ২০০২ ও ২০০৮ সালে গিয়েছি। প্রথমবার কোন জাহাজ ছিলনা। সেসময় দ্বিপে এত হোটেল ও ছিলনা। স্রেফ পাঁচটাকায় তিন চারটা ডাব খেয়েছিলাম। এখন বানিজ্যিক কারনে সব কিছুর দাম বেড়ে গিয়েছে। পরিবেশ ও নষ্ট হচ্ছে। স্থানিয় মানুষেরা কিন্তু কোন হোটেল বা রেষ্টুরেন্ট এর মালিক নয় এবং তারা সেখানে কাজও পায়না। এই বিষয়টিতে নজর দেয়া উচিত। যেন সেন্ট মার্টিন বা নারকেল জিন্জিরা দ্বিপের পরিবেশ এবং মানুষের সাথেই সেখানে পর্যটন চলতে থাকে।
...........................।
আপনার এই মন্তব্য বুঝিনি সবুজ ভাই ।: :
এখানে গিয়েছিলেন ?
েখানে আসলে আমার মনে হয় কমপক্ষে দুইরাত থাকার চিন্তা করে আসা উচিত । না হলে অনেক কিছুই শান্তিমত দেখা যায় না ।
ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন