মা দিবস -- মানি না.. মানি না ..
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ১১ মে, ২০১৪, ০৪:১৯:৩৩ বিকাল
আজকে নাকি মা দিবস ?
কিসের মা দিবস ?
কেন মা দিবস ?
কে সৃষ্টি করেছে এই মা দিবস ?
আমি 'মা দিবস'-- মানি না .... মানি না .... মানি না ...
উপরে আসমান, নীচে জমিন -- মধ্যখানে যা কিছু আছে তার মধ্যে মহান আল্লাহ এবং তাঁর রসূল [স:] এর পর হৃদয়ের অন্ত:স্থলে যার স্থান তিনি হচ্ছেন .মা. ।
জান্নাতের টিকেটের মালিক ।
বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবার দিকে মোহব্বতের দৃষ্টিতে দেখাও সদকার সওয়াব ।
এই মায়ের কি কোন আলাদা দিবস থাকতে পারে ? নাকি থাকা উচিত ?
যে মা নিজের রেহেমে স্থান দেওয়ার পর থেকে মুহুর্তের জন্য ও নিজের স্বরণ থেকে সন্তানকে সরিয়ে দেয়নি সেই মায়ের জন্য দিবস কেন ?
হুজুগে বাঙ্গালী আমরা ....
তাই পশ্চিমা ধাচে অমুসলিমদের চিন্তাভাবনা আমাদের মন মগজকে হাইজ্যাক করে বসে আছে ।
মা তো থাকে সন্তানের শরীরের প্রতিটি জোড়ায় জোড়ায়, হাড়ের অস্থিমজ্জায় । রক্তের প্রতিটি কণিকায় আছে মায়ের অস্থিত্ব । প্রতিটি নি:স্বাস-প্রস্বাসে মায়ের সুগন্ধ ছড়িয়ে থাকে ।
মায়ের আচলের মোহময় গন্ধ কি ভুলার জিনিস ?
এ তো সেই 'মা'- যে সন্তানের কষ্ট হবে বলে গর্ভের অবস্থায় ও নিজের সুবিধা মত আরাম করে শুয়েনি ।
এ তো সেই মা যার প্রসবকালীন ব্যথায় গগণবিদারী চিৎকারে আকাশ বাতাস মাটিতে লুঠিয়ে পড়েছিল । যে নিজের শরীরকে নিজেই কামড়ে ধরেছিল ব্যথার জ্বালা ভূলতে ।
অনাথ, দূর্বল, অসহায় শিশুকে চতুর্মূখী বেষ্টনী দিয়ে ধীরে ধীরে বড় করে তুলেছিল যে জন সেই তো মা ।
নিজের সন্তানকে মানুষ করে গড়ে তুলবে বলে কখনও মুরগী, হাঁস, ছাগল পালন করেছে ।
কখনও পরের বাড়ী কাজ করেছে, কখন ও সেলাই করেছে ।
নিজের পরনে ১১ তালি জোড়া দিয়ে কাপড় পড়েছে কিন্তু সন্তানকে নতুন কাপড় কিনে দিয়েছে ।
সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে শিক্ষিত মানুষ বানাবার জন্য এই মা কি না করেছে ।
কত মানুষের গালি শুনেছে... কত মানুষ থেকে ধার কর্জ্জ করেছে । কত মানুষের কাছে ছোট হয়েছে শুধু মাত্র সন্তানের জন্য । হায়রে অভাগী মা....
আজকে মায়ের দিকে ভাল করে নজর দিয়ে দেখলে বুঝা যাবে এক কালের সুন্দরী মহিলাটি আজ সন্তানদের জন্য কষ্ট করতে করতে মাথার চুল পেকে গেছে । চেহারায় ভাজ পড়ে গেছে । হয়তো মেজাজটাও খিটখিটে হয়ে গেছে । এ ত্যাগ তো শুধু মাত্র সন্তানের জন্য ।
আজকে নিজে সন্তানের জনক হয়ে বুঝতে পারছি মা-বাবা আমাদেরকে বড় করতে গিয়ে কত কষ্ট, কত ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন । আমরা ২/৩ সন্তান নিয়ে তাদের মানুষ করতে গিয়ে হিমশীম খেয়ে যাচ্ছি আর আমাদের মা বাবারা ৭/৮ বা তারও বেশী সন্তান নেয়ার পর ও আমাদেরকে ঠিকই মানুষ করেছেন । নিজে পিতা হওয়ার আগ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি আমাদের মা বাবারা কত কষ্ট আর ত্যগ স্বীকার আমাদের জন্য করেছিল ।
তাদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথাটা শতবার নুয়ে আসে ।
গ্রাম বা মফস্বল থেকে সন্তান শহরের উদ্দেশ্যে বের হলে যতক্ষন শহরে বা গন্তব্যস্থানে পৌছবে না ততক্ষন মা সন্তানের জন্য দোয়া করতেই থাকে । মায়ের সন্তানটি যাতে সহিসালামতে শহরে পৌছে এটাই হয় তখনকার মত মায়ের একমাত্র কামনা ।
বাসা থেকে বের হওয়ার পর যদি বিজলীবাতি সহ বজ্রপাত হয় তাড়াতাড়ী খোজা শুরু করেন নিজের সন্তানকে .....
আরে...... কলমের কালি শেষ হয়ে যাবে ....... নেটের ব্যান্ডউইথ শেষ হয়ে যাবে মায়ের গুনকির্তন কি শেষ হবে ? নাকি শেষ হওয়া উচিত !
সন্তান যদি বিদেশে যাবার জন্য বের হয় তাহলে তো কথাই নেই । মানুষ মৃত আত্বীয়-স্বজনকে কবরে পাঠালে যেভাবে কান্নাকাটি করে মায়ের কান্নাও হয় সেরকম । বিদেশ থেকে ছেলে সংবাদ না পৌছানোর আগ পর্যন্ত অনেক মা জায়নামাজ থেকেই উঠেনা ।
মা আমার মা । পৃথিবীতে তুমি সহস্রবার প্রমান করেছো সন্তানের জন্য তুমি শ্রেষ্ঠ হিতাকাঙ্খী [মহান আল্লাহ ও রাসূল (সঃ) এর পর ]
এই জননী মা কে নিয়ে দিবস করা মানে মায়ের মাতৃত্বকে ছোট করা যা করা উচিত নয় বলেই আমি মনে করি ।
রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানী ছাগিরা.....
রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানী ছাগিরা.....
রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানী ছাগিরা....
[উপরের ছবিটি ফেবু থেকে নেয়া]
আগের একটি পোষ্ট:
সাগর .... একটি লোমহর্ষক সমুদ্র অভিযান
বিষয়: বিবিধ
১৬১৪ বার পঠিত, ৩২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
.
.
.
.
.
.
.
.
এক দিনের ভালবাসা ।
বৃদ্ধানিবাস
মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
ধন্যবাদ, আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, পাঞ্জাবের ফয়সালাবাদ সিটির শাহজাদ শহরের বাসিন্দা সদাফ বিবি। শনিবার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার জের ধরে অভিমান করে তিন শিশু সন্তানকে কীটনাশক খাইয়ে দেন তিনি। পরে তিন সন্তানকে হাসপাতালে নেওয়া হলে একজন মারা যায়। মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি নিজেও একসঙ্গে অনেক ওষুধ খেয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেন।
শিশু সন্তানকে হত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার পর সদাফ বিবিকে আটক করেছে পুলিশ।
নতুন প্রজন্মকে বিরত রাখতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার ।
আপনার কথা ভাল লেগেছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন