۩۩শাহ্ পরীর দ্বীপ !! বাংলাদেশের প্রান্ত সীমানায় শেষ কদম ۩۩
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ০৬ মার্চ, ২০১৪, ০৩:১৯:০৫ দুপুর
একটি ভ্রমন কাহিনী
শাহ পরীর দ্বীপ হচ্ছে বাংলাদেশের স্থল পথের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের টেকনাফ উপজেলার শেষ সীমানা।
এর পর ও সীমানা আছে তাবে তা মধ্য সাগরে । দ্বীপ জ্বিনজিরা । এপারে পরীর দেশ আর মাঝ সাগরে জ্বীনের দেশ । সূদুর অতীতে এখানে জ্বীন আর পরীরা বাস করতো বলেই এলাকার লোকদের কাছে প্রচলিত আছে ।
শাহ পরীর দ্বীপের বাম পাশে নাফ নদী। নদীর ঐ পারে বার্মা বা মায়ানমার সীমান্ত ।
সীমান্তে নাসাকার সীমান্ত ফাঁড়ি, বর্তমানে সমস্ত বর্ডার কাটা তাঁরের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে।
এপারে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের ক্যাম্প আছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন দেখতে বা বেড়াতে যান তারা ইচ্ছে করলে এই শাহপরীর দ্বীপও দেখে আসতে পারেন ।
ইচ্ছে শক্তির জোরে যারা শাহ্ পরীর দ্বীপ হয়ে যাবেন তাদের কিন্তু সময় এবং টাকা দুটোই সাশ্রয়ও হতে পারে ।
যারা কক্সবাজার রাত্রী যাপন করে সেন্ট মার্টিন যেতে চান তারা ভোরে উঠে টেকনাফ বন্দরে চলে যেতে হবে । সেখান থেকে সকাল নটার দিকে কেয়ারী সিন্দবাদ সহ চারটি বড় বড় জাহাজ প্রায় একই সময়ে ছাড়া হয় যেগুলো সকাল-সন্ধ্যা আসা যাওয়া করে । অনেকে আগের দিনে বিকালে টেকনাফে এসে রাত্রী যাপন করেন । তবে টেকনাফে ভাল মানের খুব বেশী হোটেল নেই।
যাই হোক যারা জাহাজে না গিয়ে শাহ পরীর দ্বীপ টা দেখেই সেন্ট মার্টিন যেতে চান তারা সকালেই টেকনাফ ঈদগাঁহ মাঠের পাশে চলে যাবেন ।
ঐতিহাসিক ঈদগাঁহ মাঠে একটি সুন্দর শিশুগাছ বা ফুল গাছ দেখতে পাবেন।
সেখান থেকে সিএনজি টেক্সীতে জনপ্রতি ৩০ টাকা করে শাহ্ পরীর দ্বীপ পৌছে দিবে । যাবার সময় পথে সারি সারি সুপারি বাগান লক্ষ্য করা যায় ।
টেকনাফ থেকে ১৩ কিলোমিটার দক্ষিন দিকে শাহ পরীর দ্বীপ । এটা মূল টেকনাফ থেকে দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার খোলা জমিন পেরিয়েই যেতে হয় । জমিনের মাঝখান দিয়ে আকাঁ বাকাঁ রাস্তা দিয়ে যাবার সময় ভালই লাগে ।
এলাকাটির ভৌগোলিক অবস্থান দেখে মনে হয় এই বিশাল খোলা জমিন গুলো একসময় সাগরের অংশ ছিল । না হয় শাহ্ পরীর দ্বীপ বলা হচ্ছে কেন ? নিশ্চয় এটা কোন একসময় দ্বীপ ছিল । তবে বর্তমানে টেকনাফের মূল ভূখন্ডের সাথে লাগোয়া । রাস্তার উভয় পাশে বিশাল এরিয়া জুড়ে লবন চাষের জন্য নির্ধারিত জায়গা।
সেখানে লঞ্চ বা বোটে উঠার জন্য নাফ নদীর প্রায় মাঝ বরাবর অনেক লম্বা যে নয়নাভিরাম ব্রীজটি আছে সেটি অবশ্যই দেখার মত জিনিস ।
সকাল সকাল যারা ওখান পর্যন্ত পৌছতে পারবেন তারা টেকনাফ বন্দর থেকে জাহাজ আসার আগেই সেন্ট মার্টিনের দিকে রওয়ানা দিতে পারবেন।
তবে খেয়াল রাখতে হবে এখানে লঞ্চ বা বোটে ভাড়ার টাকা দরাদরী করে উঠতে হয় । লঞ্চে যেতে পারলে মাত্র বিশ মিনিটেই আপনি সেন্টমার্টিন বা নারিকেল জ্বিনজিরা পৌছে যাবেন, ফিসিং বোট বা ট্রলারে ও যাওয়া যায় এবং তাতে ভাড়াও কম। তবে তাতে সময় একটু বেশী লাগবে । লঞ্চ বা বোটের মাঝিদের সাথে দর না করলে ওরা পর্যটকদের সুযোগ পেলেই ঠকাই ।
সেন্ট মার্টিন নিয়ে আরেকদিন লিখবো ইনশআল্লাহ ।
ভ্রমনটি অবশ্য কয়েক বছর আগের ।
বিষয়: বিবিধ
২৮৮১ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর ভ্রমন পোষ্ট উপভোগ করলাম । জাজাকাল্লাহু খায়রান।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।
শাহপরির দ্বিপ আসলে দ্বিপ ই ছিল। পাকিস্তান আমলে অগভির শাহপড়ি চ্যানেল এর মধ্যে বেরিবাধ তৈরি করে পলি আটকানো হয় যার ফলে এখন এটি মূল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত হয়েগেছে। তবে ভরা জোয়ারের সময় রাস্তাটা ছাড়া বেশিরভাগ এলাকা এখনও পানির নিচে চলে যায়। যার কারনে এই এলাকায় কোন বসতি নাই কিন্তু লবন উৎপাদনে এই এলাকা এক নম্বর। সেন্ট মার্টিন এর দেশিয় নাম নারিকেল জিনজিরা কোন জ্বিন পরি থেকে হয়নি। বরং আরবী জাজীরা বা দ্বিপ শব্দ এর বাংলা রুপ।
পুরা পোষ্ট এর সব চেয়ে ভাল লাগল মাথায় পট্টি বাধা ছবিটা!!
একে বারে "পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান" এর ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যরো।
একে বারে "পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান" এর ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যরো...
জ্যাক স্প্যারো হচ্ছে জলদস্যুদের সর্দার। তাইলে কি..........?: :
বেশ সুন্দর ভাইয়া আপনাকে বুদ্ধি দেই।
একটা এডভ্যাঞ্চার এর জন্য সেন্টমার্টিন স্পীড বোটে যাবেন।
আমি সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ , ডেগিলার বিল। ঐ স্থানে ভালোই ঘুড়েছি আলহামদুলিল্লাহ ।
সবচেয়ে ভালো লেগেছে রাতের সমুদ্র।
হিংসা হচ্ছে আমার ।
এডভ্যাঞ্চার পেতে চাইলে পড়তে আমার আমার লেখা ‘সাগর’ ।
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/2668/rashic/13604
ইনশাআল্লাহ আমার মিষ্টি ভাইয়ের সাথে ঘুরে আসব।
মুগ্ধতা ছড়ানো একটি পোস্ট! খুব ভাল লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার আইডি দিলাম:
https://www.facebook.com/ahmedrashid.bahar
মন্তব্য করতে লগইন করুন