শুরু করতে হবে গোড়া থেকেই...
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৪:৪৫:৫০ বিকাল
শুরু করতে হবে গোড়া থেকেই
যখন যুবক ছিলাম তখন পাড়ায় একটি সমিতি করেছিলাম । আমি ছিলাম প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি । আমার মনে আছে দপ্তর সম্পাদক থাকলেও সকালে আমিই অফিস খুলে তা ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করে সকালের পত্রিকা টেবিলের উপর গুছিয়ে রাখতাম।
ঐ সমিতির মাধ্যমে তখন এলাকার অনেক খেদমত করেছিলাম। কার পুকুরে কচুরীপানায় ভরে গেছে তা পরিস্কার করা, কার বাড়িতে মেয়ের বিয়ে হচ্ছে তাদের কাছে গিয়ে বরযাত্রীকে আপ্যায়ন করানো সহ আমরা বেশকিছু সামাজিক কাজে জড়িত ছিলাম । বছর বছর ওয়াজ মাহফিল দিয়ে বড় বড় মাওলানাদের দাওয়াত দিয়ে ওয়াজ শুনতাম ও এলাকাবাসীকে শুনাতাম।
মনে পড়ে এমন একটি ওয়াজ মাহফিলে হুজুরের ওয়াজ । খুব সম্ভব ওয়াজিন ছিলেন বাঁশখালীর মাওয়ানা ইছহাক ফারুকী । খুব ভাল ওয়াজ করতেন। সেদিন তিনি বলছিলেন এরকম -
‘শহরের বাসায় পানির টেব থেকে আসা পানি থেকে কিসের যেন পঁচা দূর্গন্ধ বের হচ্ছে । সবাই বলাবলি করছে এই পানিতো পান করা যাবেনা, ব্যবহার করা যাবেনা, সুতরাং টাংকির সব পানি ফেলে দেওয়া হল। আবার যখন টাংকি পানি ভর্তি করা হল তখনও দেখাগেল একই দূর্গন্ধ। পাশের বাসায় শুধু নয় সমস্ত শহরের সকল বাসার পানিতেই একই দূর্গন্ধ। এখন কি হবে !
সবাই একমত হল ওয়াসার সাপ্লাই হচ্ছে যেখানে সেখানের টাংকিতে নিশ্চয় কোন গন্ডগোল আছে । তাহলে কি করতে হবে ?
ওয়াসার বিশাল রিজার্ভ টাংকি চেক করতে হবে ।
হুজুর বললেন যেতে হবে বহদ্দার হাট ওয়াসার টাংকি চেক করতে । কিন্তু যাবে কিভাবে ? সেখানে তো ওয়াসার সীমানা আর্মি পাহাড়া দিয়ে রেখেছে ।
সিদ্ধান্ত হল সবাই মিছিল সহকারে যাবে ওয়াসার টাংকি চেক করতে ।
কথামত সবাই মিছিল সহকারে ওয়াসার রিজার্ভেশনের দিকে যখন গেল তখন আর্মি মিছিল লক্ষ্য করে গুলি করা শুরু করল।
শুলির আওয়াজ শুনেই মিছিলের অর্ধেক লোক দিল ভোঁ দোঁড়……
তখন হুজুর সুর করে মেছাল দিয়ে বলতে লাগলেন-
টা টা ঠা ঠা যেখানে, আমি নেই সেখানে
টা টা ঠা ঠা যেখানে, আমি নেই সেখানে
যারা ভীতু তারা পালিয়ে গেলেও সাহসী কিছু যুবক শেষ মেষ ওয়াসার টাংকি দখল করে যখন টাংকির ঢাকনা খুললেন, দেখা গেল যে টাংকির মধ্যে কখন একটি শিয়াল পড়ে মরে-পঁচে একাকার হয়ে আছে । সেই পঁচা শিয়ালের দূর্গন্ধ পুরো শহরের বাসায় বাসায় সাপ্লাই দেয়া সমস্ত পানিকে নাপাক করে দিয়েছে।
যতদুর মনে পড়ে মাওলানা ইছহাক ফারুকী সাহেব বুঝাতে চেয়েছিলেন যে সুদ নাপাক এবং এই সুদী লেনদেন বন্ধ করতে হলে গোড়াতে গিয়ে একটি আইন পাশ করলেই যথেষ্ট।
অর্থাৎ সংসদে গিয়ে একটি আইন পাশ করলেই মূহুর্তের মধ্যে ইসলামের জন্য হারাম, নাপাক সুদ বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ যেখানে সেখানে লাফালাফি না করে গোড়াতে পৌছে কাজ করতে হবে এবং সেখানে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
উল্লেখ্য যে সে সময় অনেক ইসলামী দলই ইসলামে রাজনীতি নেই নেই বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিল।
শুধু তাই নয় যতদুর মনে পড়ে মাইক পন্থী ও মাইক ছাড়া পন্থীদের মধ্যে মাঝে মাঝে দাওয়া পাল্টা ধাওয়া পর্যন্ত হত চট্টগ্রামে।
আমি জানিনা ঐ হুজুর এখনও বেঁচে আছেন কিনা ।
আমার আগের দুটিপোষ্ট:
বন্ধুদের কাছে একটি পরামর্শ চাই
কালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ভ্রমন
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৬ বার পঠিত, ৪৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বরাবরের মতো সুন্দর .........
আইন পাশ করে ইসলামী শাসন চালু করা যাবে কিনা তাতে অনেকের দ্বিমত আছে। আইন মানার জন্য আগে মানুষ তৈরি করতে হবে। আর তা নাহলে যে দেইন আইন বানানো হবে তারপর দিনই মিছিল হবে ইসলাম মানি না মানি না, তখন একটু করে যা ঈমান আছে তাও যাবে। কারণ ইসলাম মানি না বলে মিছিল করলেই ঈমান চলে যায়।
এক দিকে আইন বানানোর চেষ্টা করতে হবে অন্য দিকে মানুষ বানানোর চেষ্টা করতে হবে। তা অনেকটা হচ্ছেও। যেমন তাবলীগেরা মানুষ বানাচ্ছে আর ইসলামী দলগুলো আইন বানাতে চাষ্টা করছে। সবাই দাওয়াতের কাজ করছে। ধন্যবাদ বাহার ভাই।
নিধেন পক্ষে তারা তো কিছু সংখ্যক নামাজী ও ইসলামের বিধি বিধান মানা লোক তৈরী করছে।
যখন বিজয় আসবে তখন দেখবেন দলে দলে মানুষ যোগ দিচ্ছে । (সুরা নসর)
ইসলামী শাসন জারী হলে তারা ঠিক হয়ে যাবে বললেন। জারী না হলে? কোথায় যাবে তারা? আমি জান্নাতে গেলে আপনার কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি আছে? অন্য কেউ জাহান্নামে গেলে আমার কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি আছে? কিন্তু আমার কথায় যদি কেউ সংশোধন হয় তবে তাতে আমার এবং তার দুজনেরই উপকার। ধন্যবাদ্
অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে ধন্যবাদ ওহিদ ভাই ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন