চট্টলার বীর সন্তান বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম (বীর প্রতিক)’র সাথে ঘরোয়া পরিবেশে আলাপন
লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১০:৩৬:৫৭ রাত
গত ১২ই সেপটেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে আমার অফিসে কয়েকজন ব্লগার আসলেন আমাকে নিতে । যেতে হবে চট্টলারই বীর সন্তান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম-বীর প্রতিক link’ র সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে।
আগে থেকে সিডিউল নেয়াই ছিল । শুনলাম উনি আমাদের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকরের জন্য আন্তরিকভাবেই সময় দিয়েছেন ।
উনার বাসার সামনেই আমাদের অন্যান্যরা অপেক্ষা করছিল । আমাদেরকে উনার অফিস কক্ষে বসার ব্যবস্থা করে দিলেন । বিশাল হল রুম । ৩টি টেবিলে ৩টি কম্পিউটার দেখলাম ।
একটু পরেই স্যার আসলেন এবং এসেই বললেন যে যারা যারা মাগরিবের নামাজ পড়বেন তারা আগেই ওজু করে বসুন, কারন আজান দিলে তাড়াহুড়া হয়ে যেতে পারে।
আমি ওজু করে এসে দেখি মেজর সাহেবের টেবিলের সামনের চেয়ারগুলো আমাদের লোকেরা দখল করে নিয়েছে, আমি বসার চেয়ার খালি নেই।
স্যার বললেন- আপনি তো ওখানে বসতে পারবেন না।
কেন স্যার ?
কারণ ওরা আপনার চেয়ে অনেক জুনিয়র।
আমি বললাম গত তিন বছর থেকে চট্টগ্রামের এই সব নেটপোকাদের একত্রিত করার সংগ্রামেই আমি ব্রত ছিলাম এবং আজো আছি ।
উনি বললেন সেইজ্যেই তো আপনি ওখানে বসতে পারবেন না, আপনি বসবেন আমার পাশে। এটা বলে উনি উনার পাশে আমি বসার জন্য চেয়ার আনালেন ।
খুবই ভাল লাগল উনার আন্তরিকতা।
এরপর একে একে অনেক বিষয়ের উপর খোলামেলা আলোচনা হল । উনি একে একে সবাইকে আপন করে কাছে টেনে নিলেন ।
আমি উনার ফেইসবুকের ফ্যান পেইজে আগেই লাইক দিয়ে রেখেছিলাম । সেখানে উনাকে বিশাল গোফ সহকারে যেভাবে দেখেছি আমি মনে করেছিলাম উনি এখনও সেই আর্মী মেজাজেই আছেন । মনে করেছিলাম উনার গুরুগম্ভীর বজ্রধ্বনীতে আমাদের জবান দিয়ে কথাই বের হবেনা ।
যে লোকটি দুপুরে খালেদা জিয়ার জনসভা মঞ্চে,
বিকালে ড.ইউনুচের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে,
নিশিরাতে একটির পর একটি টিভি পর্দায় টকশোতে ব্যাস্ত থাকেন নাজানি তিনি কতটা অহংকারী আর রাগী হন।
তিনি অনলাইন নিউজ মিডিয়াকেও সাক্ষাৎকার দিয়ে যাচ্ছেন:
প্রকৃতপক্ষে যা দেখলাম তিনি একজন অত্যন্ত সাদা-সিদা, সদালাপী, তারুন্য-বান্ধব মাটির মানুষ ।
আমি অবাক বিশ্ময়ে হতবাক হয়ে উনার দিকে থাকিয়ে থাকিয়ে দেখেছি তিনি এ বয়সেও কত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন । তিনি আমাদের সাথে টানা ৫ঘন্টা সময় দিয়েছেন । শুনেছি তিনি গত দেড় দুই বছর থেকে নিজ এলাকা হাটহাজারীতে সময় দিয়ে যাচ্ছেন। উনার মত মানুষ জনপ্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব পেলে দেশটা অনেক আগেই আরো বেশী উর্বর হত বলে আমার বিশ্বাস ।
মাঝখানে আমরা উনার বাসাতেই মাগরিবের নামাজ আদায় করেছি. তিনি বসে পড়তে হয় বলে ভিতর বাড়িতে পড়ে এসেছেন।
আলোচনার ফাঁকে আমি আমাদের ব্লগার বিষয়ে কিছু বক্তব্য তুলে ধরলাম । ব্লগারদের প্রকাশনা প্যানেল করে আমরা যে ১২১ জন ব্লগারের লেখা নিয়ে ‘স্বপ্ন দিয়ে বোনা’ বই করেছি এটার প্রেক্ষাপট উনার কাছে তুলে ধরলাম এবং বইর একটি উনাকে সৌজন্য কপি দিলাম।
উনি আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়লেন, বললেন- আমি ব্লগারদের কথা শুনেছি, বাট সরাসরি এই প্রথম সাক্ষাৎ করলাম ।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম-বীর প্রতিক আজ পর্যন্ত ১১ টি বই লিখেছেন, তারমধ্যে ৪টি সম্পাদনা করেছেন । উনার লেখা ৩টি বই উনি আমাদের উপহার দিলেন। বইগুলো হচ্ছে:
১. মিশ্র কথন,
২.দ্যা ব্যাটল্স অব ইসলাম,
৩.পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি প্রক্রিয়া ও পরিবেশ পরিস্থিতির মূল্যায়ন।
তিনি আগেই বলে রেখেছেন তোমাদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করা আছে, আলাপ সেরে নাস্তা করে তারপর যাবে ।
তিনি বললেন- আমি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান, তোমরা এটা মনে করোনা যে আমি তোমাদেরকে আমার দলে যোগ দিতে বলবো । আমি শুধু বলবো তোমরা যুব সমাজ, তোমরাই পারবো সমাজটাকে, দেশটাকে পাল্টিয়ে দিতে। একটি সুখী-সমৃদ্ধী দেশ গড়ে তুলতে।
যুবকেরা যখন উনার কাছে দিক নির্দেশনা চাইলেন তখন মেজর সাহেব বললেন আগে দিক ঠিক কর, তারপর নির্দেশনার কথা আসবে ।
তিনি আরো বললেন - তোমরা সব সময় আমাকে সাথে পাবে, সুতরাং সামনে এগিয়ে যাও । যদিও যুদ্ধের মত আমি রাইফেল হয়তো ধরতে পারবো না তবে তোমাদেরকে শক্তি সাহস উৎসাহ আমার পক্ষ থেকে কমতি হবে না।
তিনি আমাদের জন্য সুন্দর আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছিলেন ।
আপ্যায়নের পর উনার সাথে আসা ঢাকা থেকে আগত মেহমানদের পরিচয় করিয়ে দিলেন। উনার পিএসকেও পরিচয় করিয়ে দিলেন।
সব শেষে তিনি আমাদের সাথে ফটো-সেশনে দাঁড়ালেন । প্রত্যেকের সাথে আলাদা আলাদা করে ছবি তুললেন, আমরা গ্রুপ ছবি তুললাম ।
আমার সাথে ঘনিষ্ট মুহুর্তে বীর প্রতিক-
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম-বীর প্রতিক’র হাতে আমার লেখা আসমানী মেসেজ ।
আমাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে অংশ নেয়া তরুন কলামিষ্ট তারেকুল ইসলাম লিখেছেন- ‘‘বিদায় লগ্নে আমার এবং আমাদের মনে একটি প্রশ্ন ঘুরঘুর করছিল; “তিনি তো তারুণ্যবান্ধব নিঃসন্দেহে, আমরাও ইবরাহিমবান্ধব হবো ইনশাআল্লাহ”। তিনি আমাদেরকে দোয়া করেছেন, আমরাও তাঁর জন্য দোয়া করলাম।’’
আমি আমার মত করে লিখলাম, আমরা যারা সেখানে গিয়েছিলাম আমরা সবাই লেখালেখির সাথে জড়িত । সুতরাং প্রত্যেকে যার যার মত করে অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য অনুরোধ থাকবে । স্যারের ইচ্ছাও সেরকমই ছিল ।
আমি মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম-বীর প্রতিক’র সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি ।
ফেইসবুকে উনার ফ্যান পেইজ :
Major General (Retd.) Syed Muhammad Ibrahim, Bir Protik
ফেইসবুকে উনার আইডি:
Syed Muhammad Ibrahim
বিষয়: বিবিধ
২১৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন