Don't Tell Anyone কোরআন হাদিসের তাফসীর নির্ভর প্রচলিত কিছু বানোয়াট কাহিনী [১]

লিখেছেন লিখেছেন চাটিগাঁ থেকে বাহার ১৯ জুলাই, ২০১৩, ০৭:২২:০২ সন্ধ্যা

এসবি ব্লগে থাকতে আমি যখন বাংলা অর্থসহ আল-কোরআনের তরজমা খতমের উপর গুরুত্ব দিয়ে আসমানী মেসেজ নাম দিয়ে কিছু কিছু লেখা শেয়ার করে যাচ্ছিলাম তখন আমাকে এক ব্লগার ভাই [ভাইটি কে ছিল এখন সঠিক মনে নেই] একটি বইয়ের অনলাইন কপি গিফট করেছিলেন । বইটির নাম ছিল ‘‘তাফসীর কি মিথ্যা হতে পারে?’’ ।



পরবর্তীতে বইটি পড়ে দেখেছি অনেক উপকারী একটি বই । বইটির লেখক হচ্ছেন... আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ।

বইটিতে লেখকের পরিচয় দেয়া আছে এভাবে…

দাওরা হাদীছ (ডবল), ভারত; কামেল (ডবল) মুহাদ্দিছ, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া, রাজশাহী; সদস্য, দা-রুল ইফতা

হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, কাজলা, রাজশাহী।

বইটির শুরুতে ভূমিকায় লেখক লিখেছেন….

বর্তমানে কোন কোন বক্তার বক্তৃতার অনেক অংশই কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ তারা তদন্ত ছাড়াই শরী‘আতের বিভিন্ন বিষয় প্রচার করেন। আমার জানা মতে, শতকরা ৯৫ জন বক্তা যাচাই-বাছাই ছাড়া বক্তৃতা করেন। এ ধরনের প্রচারে বড় ধরনের দু’টি ক্ষতি রয়েছে।

(১) এতে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের নামে মিথ্যা প্রচার হচ্ছে, যাতে জনগণ সঠিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত হচ্ছে

(২) এমন বক্তার পরকাল বড় ভয়াবহ। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি আমার উপর মিথ্যারোপ করে, তার পরিণাম জাহান্নাম’ (বুখারী, মিশকাত হা/১৮৯)। এ দেশের তাফসীর মাহফিলে যারা তাফসীর করছেন, তাদের শতকরা ৯৮ জনই মুফাসসির নন। কারণ তাফসীর করার জন্য অনেক ধরনের বিদ্যার প্রয়োজন। সাথে সাথে তাহক্বীক্ব করে তাফসীর করা যরূরী। কারণ তাফসীর গ্রন্থগুলি জাল ও যঈফ হাদীছ এবং বানওয়াট কাহিনী দ্বারা পরিপূর্ণ। এ থেকে সকলের সতর্ক থাকা উচিৎ। কেননা এতে যেমন দ্বীনের ক্ষতি হয়, তেমনি বক্তা ও শ্রোতার পরকাল ধ্বংস হয়। তাই বহুদিন থেকে ভাবছিলাম যে, জনগণকে মিথ্যা তাফসীর সম্পর্কে সচেতন করার জন্য একটি বই লিখব। কিন্তু অত্যন্ত ব্যস্ততার দরুণ তা এতদিন সম্ভব হয়ে উঠেনি। অবশেষে মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাবলীগী ইজতেমা ২০০৯-কে সামনে রেখে বইটি প্রকাশিত হল- ফালিল−াহিল হাম্দ। বইটিতে তাফসীর কি মিথ্যা হতে পারে? এই প্রশ্নের মাধ্যমে মূলতঃ মিথ্যা তাফসীর পেশ করা হয়েছে [মিথ্যা তাফসীরসমূহ তুলে ধরা হয়েছে]। এর দ্বারা আমরা জনগণকে মিথ্যা তাফসীর সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। কেননা কুরআনের তাফসীর শুনা ও পড়ার নামে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মিথ্যা তাফসীর শুনে ও পড়ে, যারপরনেই বিভ্রান্ত হচ্ছে। ফলে ইসলামের আসল রূপ তাদের থেকে বিদায় নিচ্ছে। এহেন অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যেই আমাদের এ ক্ষুদ্র্র প্রচেষ্টা।

বইটিতে এমন কিছু মিথ্যা ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয়েছে, যা মুফাসসির ও বক্তাদের মুখে মুখে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এই ধরনের ঘটনা উল্লেখের মাধ্যমে আমরা নামধারী মিথ্যুক মুফাসসির ও বক্তাদের মুখোশ উন্মোচনের চেষ্টা করেছি। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন বইয়ে তাফসীরের নামে যেসব জাল হাদীছ ও ইসরাঈলী বানাওয়াট কাহিনীর বিবরণ দেয়া হয়েছে, তার কোন কোন কথা কুরআন ও ছহীহ হাদীছে পাওয়া যেতে পারে; এতে পাঠক যেন ধোঁকায় না পড়েন। মূলতঃ আমরা এখানে মিথ্যা হাদীছ ও বানাওয়াট কাহিনীগুলি পেশ করতে চেয়েছি। ’’

শুরুতেই মুহতরম লেখক তাফসীরের অর্থ ও মুফাসসিরের গুনাবলীরউপর ও প্রসিদ্ধ মুফাসসিরগণের উপর আলোচনা করেছেন যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । বইটিতে প্রায় ৫০ টির মত মিথ্যা কাহিনীর বর্ণনা এসেছে যা আমাদের সমাজে সত্য হিসেবেই প্রচলিত । আমি ঐ মিথ্যা কাহিনীগুলো একে একে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো যদি আল্লাহ তৌফিক দেন । আমার মনে হয়েছে ঐ সব মিথ্যা কাহিনীগুলো পরস্পরের মাধ্যমে সবার কাছে পৌছে দেয়া দরকার । তাহলে আসুন এমন একটি কাহিনী আজকেই জেনে নিই…..



ইউসুফ (আঃ)-কে বিক্রয় সম্পর্কিত কাহিনী

পবিত্র কুরআনের বর্ণনা :

‌‘আর তারা তাকে বিক্রি করল স্বল্প মূল্যে, মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে, তারা ছিল এতে নির্লোভ’ (ইউসুফ ২০)।

ইউসুফ (আঃ)-কে বিক্রয় সম্পর্কে বানাওয়াট কাহিনী

উপরোক্ত আয়াতের মিথ্যা তাফসীর : বর্ণিত আছে যে, তাঁর ভাইয়েরা যখন তাঁকে বিক্রি করল। তারা ক্রেতাকে বলল, সে একজন চোর সে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে বেড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় এবং একজন কাল গোলামের হাতে তাকে সমর্পণ করা হয়। যখন তাঁর ভাইদের চলে যাওয়ার সময় হল তখন তিনি কাঁদতে লাগলেন। ক্রেতা তাঁকে বলল, তুমি কেন কাঁদছ? তিনি বললেন, যারা আমাকে বিক্রয় করেছে আমি তাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে চাই। আমি তাদের বিদায় দিব এবং তাদের উপর এমন ব্যক্তির সালাম দিব, যে আর কোনদিন তাদের নিকট ফিরে আসবে না। ক্রেতা গোলামকে বলল, তুমি একে তার অভিভাবকদের নিকট নিয়ে যাও। এ যেন তাদের বিদায় দিতে পারে। তারপর তাকে কাফেলার সাথে করে দাও। এরকম কোন গোলাম আমি দেখিনি যে, অভিভাবকের প্রতি এত ভদ্র-নম্র হতে পারে। আর এমন কোন সম্প্রদায় দেখিনি, যে গোলামের উপর এত কঠোর হতে পারে, এ অভিভাবকেরা যত কঠোর ও কঠিন। কাল গোলামটি তাঁকে সাথে নিয়ে তাঁর ভাইদের নিকট গেল। তখন তারা ঘুমিয়েছিল এবং একজন ছাগল পাহারাদার হিসাবে জেগেছিল। যখন ইউসুফ তাদের নিকট পৌঁছে, তখন পায়ে বেড়ী লাগানো ছিল। তিনি বারবার উল্টে পড়ছিলেন এবং কাঁদছিলেন। সে তাকে বলল, তুমি এখানে কেন আসলে? তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে বিদায় দেয়ার জন্য এবং সালাম দেয়ার জন্য এসেছি। জাগ্রত ব্যক্তি ঘুমন্তদের উপর চিৎকার করে উঠল এবং বলল তোমরা ঘুম থেকে উঠো দেখ কে তোমাদেরকে বিদায়ের সালাম দিতে এসেছে, যে আর কখনো তোমাদের সাথে দেখা করার আশা করে না। তোমাদের জন্য এটা ধ্বংসের বিদায়। তারা ঘুম থেকে জাগল, তখন ইউসুফ তাদের প্রত্যেকের নিকটে গিয়ে চুম্বন করলেন ও কাঁধে কাঁধ মিলালেন। আর বলতে লাগলেন, আল্লাহ যেন তোমাদের হেফাযতে রাখেন, যদিও তোমরা আমাকে ধ্বংস করছ। আল্লাহ যেন তোমাদেরকে আশ্রয় দেন যদিও তোমরা আমাকে তাড়িয়ে দিলে। আল্লাহ যেন তোমাদের প্রতি দয়া করেন যদিও তোমরা আমার প্রতি দয়া করনি। কোন একজন বলল, ছাগলগুলি যদি তাদের পেশাব-পায়খানা এ বিদায়ীর উপর নিক্ষেপ করত। তারপর কাল গোলামটি তাঁকে ধরে তাদের কাফেলার নিকট নিয়ে গেল। হঠাৎ তিনি তাঁর মা রাহীলের কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। কবরটি ছিল কেনানের কবরস্থানে। যখন তিনি কবর দেখলেন, নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না, কবরের উপর পড়ে কাঁদতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন, মা! কবর হতে মাথা উঁচু করুন, ডাণ্ডা বেড়ী অবস্থায় আপনার ছেলেকে দেখুন। মা! আমার ভাইয়েরা আমাকে কূপে ফেলেছে। তারা আমাকে আমার পিতা হতে বিচ্ছিন্ন করেছে। খুব অল্প মূল্যে আমাকে বিক্রি করেছে। তারা আমার ছোট অবস্থায় দয়া করেনি। তারা আমার প্রতি নরম হয়নি। আমি আল্লাহর কাছে চাই আল্লাহ যেন আমাকে এবং আমার পিতাকে তাঁর কোন দয়ার স্থানে একত্রিত করে দেন। তিনি বড় দয়াবান। তিনি যে কবরের উপর পড়ে কান্নাকাটি করছিলেন, তা ঐ কাল গোলামটি দেখেনি। সে পিছনে ফিরে দেখল, ইউসুফ কবরের উপর পড়ে আছে। তখন সে বলল, আল্লাহর কসম! তোমার অভিভাবকরা ঠিক বলেছে। তুমি পালিয়ে যাওয়া গোলাম। তারপর সে তাঁকে খুব জোরে থাপ্পড় মারল, যাতে তিনি বেহুঁশ হয়ে গেলেন। তারপর তাঁর জ্ঞান ফিরলে তিনি বললেন, তুমি আমাকে ধর না, এটা আমার মায়ের কবর। আমি তাঁকে সালাম দেয়ার জন্য থেমেছি। এরপর আর কখনো আসব না। তিনি তাঁর দু’চক্ষু আকাশের দিকে উঠালেন, এ অবস্থায় তাঁর গায়ে মাটি লেগেছিল এবং চোখের পানি ঝরে পড়ছিল। তিনি আকাশের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আল্লাহ যদি আমার গুনাহ হয়ে থাকে, আমি তোমার নিকট শরণাপন্ন হচ্ছি। তুমি আমার সম্মানিত পিতা ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকূবের সম্মানে আমাকে মাফ কর, আমার প্রতি দয়া কর হে বড় দয়বান! তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহর নিকট চিৎকার করতে লাগলেন। আল্লাহ বললেন, হে আমার ফেরেশতাগণ! সে হচ্ছে আমার নবী এবং আমার নবীগণের ছেলে। বিনয়ের সাথে আমার দয়া চেয়েছে। আমি তার প্রতি দয়া করলাম। জিবরাঈল তাঁর নিকট যাও। তাঁকে বল, হে আল্লাহর সত্যবাদী বান্দা! আপনার প্রতিপালক আপনাকে সালাম দিয়েছেন। তিনি আপনাকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন। আপনি সাত আকাশের ফেরেশতাকে কাঁদিয়েছেন। আপনি চাইলে আমি আকাশকে মাটির উপর রেখে আপনার ভাইদেরকে মাটিতে মিশিয়ে দিব। ইউসুফ (আঃ) বললেন, আমার প্রতিপালকের সৃষ্টির উপর দয়া করুন। নিশ্চয়ই তিনি বড় ধৈর্য্যশীল, কোন ব্যাপারে তিনি তাড়াহুড়া করেন না। এ সময় জিবরাঈল (আঃ) তাঁর পাখা দ্বারা মাটির উপর আঘাত করলেন, এতে লাল বাতাস প্রবাহিত হল, সূর্যগ্রহণ লাগল, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে অন্ধকার হয়ে গেল। কাফেলার লোকেরা পরস্পরকে দেখতে পেল না। ক্রেতা বলল, তোমরা এক স্থানে অবস্থান কর, তোমরা ধ্বংসের মুখোমুখি। আমি বহু বছর থেকে এ রাস্তায় চলাফেরা করি, আমি কোনদিন আজকের মত পরিস্থিতি দেখিনি। আমাদের মধ্যে কেউ পাপ করে থাকলে, সে যেন তওবা করে। এ বিপদ একমাত্র পাপের কারণেই এসেছে, যা আমাদের স্বীকার করা যরূরী। তখন গোলামটি ইউসুফের সাথে খারাপ আচরণ করার কথা বলল। গোলামটি বলল, জনাব! আমি যখন তাকে মেরেছিলাম, তখন সে আকাশের দিকে মুখ করল এবং তার দু’ঠোট নাড়াল। ক্রেতা বলল, তোমার ধ্বংস হোক, তুমি আমাদেরকে ধ্বংস করেছ। তুমি নিজেকেও ধ্বংস করেছ। ক্রেতা আগে বেড়ে ইউসুফ (আঃ)-কে বলল, নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে মেরে বড় ধরনের অন্যায় করেছি। ইচ্ছা করলে আপনি কিছাছ বা বদলা নিতে পারেন। আমরা আপনার সামনে অনুগত। ইউসুফ (আঃ) বললেন, আমি ঐ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত নই, যারা অন্যায়ের প্রতিশোধ গ্রহণ করে। বরং আমি এমন পরিবারের ছেলে যাদের প্রতি অন্যায় করা হলে, প্রতিশোধ গ্রহণ না করে অত্যাচারীদের ক্ষমা করে দেয় এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চায়। আমি আপনাদের ক্ষমা করে দিলাম এবং আশা করি যে, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন। অন্ধকার দূর হল, বাতাস বন্ধ হল, সূর্য প্রকাশ পেল, সারা পৃথিবী উজ্জ্বল হল। তারপর তারা চলা আরম্ভ করল এবং নিরাপদে শহরে পৌঁছে গেল। যিনি ইউসুফ (আঃ)-কে কূপ থেকে উঠিয়েছিলেন, সেই বাদশাহ যার নাম মালিক ইবনু যোউর’ (এ তাফসীর মিথ্যা, রূহুল মা‘আনী ১২/৩০৯-৩১০)।

Good Luck সোনার বাংলাদেশ ব্লগ Rose Rose

৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳৳

গত ১২ই সেপটেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে আমার অফিসে কয়েকজন ব্লগার আসলেন আমাকে নিতে । যেতে হবে চট্টলারই বীর সন্তান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে।



আগে থেকে সিডিউল নেয়াই ছিল । শুনলাম উনি আমাদের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকরের জন্য আন্তরিকভাবেই সময় দিয়েছেন ।

উনার বাসার সামনেই আমাদের অন্যান্যরা অপেক্ষা করছিল । আমাদেরকে উনার অফিস কক্ষে বসার ব্যবস্থা করে দিলেন । বিশাল হল রুম । ৩টি টেবিলে ৩টি কম্পিউটার দেখলাম ।

একটু পরেই স্যার আসলেন এবং এসেই বললেন যে যারা যারা মাগরিবের নামাজ পড়বেন তারা আগেই ওজু করে বসুন, কারন আজান দিলে তাড়াহুড়া হয়ে যেতে পারে।

আমি ওজু করে এসে দেখি মেজর সাহেবের টেবিলের সামনের চেয়ারগুলো আমাদের লোকেরা দখল করে নিয়েছে, আমি বসার চেয়ার খালি নেই।

স্যার বললেন- আপনি তো ওখানে বসতে পারবেন না।

কেন স্যার ?

কারণ ওরা আপনার চেয়ে অনেক জুনিয়র।

আমি বললাম গত তিন বছর থেকে চট্টগ্রামের এই সব নেটপোকাদের একত্রিত করার সংগ্রামেই আমি ব্রত ছিলাম এবং আজো আছি ।

উনি বললেন সেইজ্যেই তো আপনি ওখানে বসতে পারবেন না, আপনি বসবেন আমার পাশে। এটা বলে উনি উনার পাশে আমি বসার জন্য চেয়ার আনালেন ।



খুবই ভাল লাগল উনার আন্তরিকতা।

এরপর একে একে অনেক বিষয়ের উপর খোলামেলা আলোচনা হল । উনি একে একে সবাইকে বুকে জড়িয়ে নিলেন ।

আমি উনার ফেইসবুকের ফ্যান পেইজে আগেই লাইক দিয়ে রেখেছিলাম । সেখানে উনাকে বিশাল গোফ সহকারে যেভাবে দেখেছি আমি মনে করেছিলাম উনি এখনও সেই আর্মী মেজাজেই আছেন । মনে করেছিলাম উনার গুরুগম্ভীর বজ্রধ্বনীতে আমাদের জবান দিয়ে কথাই বের হবেনা ।

যে লোকটি দুপুরে খালেদা জিয়ার জনসভা মঞ্চে,



বিকালে ড.ইউনুচের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে,



নিশিরাতে একটির পর একটি টিভি পর্দায় টকশোতে ব্যাস্ত থাকেন নাজানি তিনি কতটা অহংকারী আর রাগী হন।



প্রকৃতপক্ষে যা দেখলাম তিনি একজন অত্যন্ত সাদা-সিদা, সদালাপী, তরুন-বান্ধব মাটির মানুষ ।



আমি অবাক বিশ্ময়ে হতবাক হয়ে উনার দিকে থাকিয়ে দেখেছি তিনি এবয়সেও কত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন । তিনি আমাদের সাথে টানা ৫ঘন্টা সময় দিয়েছেন ।

মাঝখানে আমরা মাগরিবের নামাজ আদায় করেছি. তিনি বসে পড়তে হয় বলে ভিতর বাড়িতে পড়ে এসেছেন।

আলোচনার ফাঁকে আমি আমাদের ব্লগার বিষয়ে কিছু বক্তব্য তুলে ধরলাম । ব্লগারদের প্রকাশনা প্যানেল করে আমরা যে ১২১ জন ব্লগারের লেখা নিয়ে ‘স্বপ্ন দিয়ে বোনা’ বই করেছি এটার প্রেক্ষাপট উনার কাছে তুলে ধরলাম এবং বইর একটি উনাকে সৌজন্য কপি দিলাম।



উনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়লেন, বললেন- আমি ব্লগারদের কথা শুনেছি, বাট সরাসরি এই প্রথম দেখলাম।

মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম-বীর প্রতিক আজ পর্যন্ত ১১ টি বই লিখেছেন, তারমধ্যে ৪টি সম্পাদনা করেছেন । উনার লেখা ৩টি বই উনি আমাদের উপহার দিলেন। বইগুলো হচ্ছে:

১. মিশ্র কথন,

২.দ্যা ব্যাটল্স অব ইসলাম,

৩.পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি প্রক্রিয়া ও পরিবেশ পরিস্থিতির মূল্যায়ন।



তিনি আগেই বলে রেখেছেন তোমাদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করা আছে, আলাপ সেরে নাস্তা করে তারপর যাবে ।

তিনি বললেন- আমি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান, তোমরা এটা মনে করোনা যে আমি তোমাদেরকে আমার দলে যোগ দিতে বলবো । আমি শুধু বলবো তোমরা যুব সমাজ, তোমরাই পারবো সমাজটাকে, দেশটাকে পাল্টিয়ে দিতে।

যুবকেরা যখন উনার কাছে দিক নির্দেশনা চাইলেন তখন মেজর সাহেব বললেন আগে দিক ঠিক কর, তারপর নির্দেশনার কথা আসবে ।

তিনি আরো বললেন - তোমরা সব সময় আমাকে সাথে পাবে, সুতরাং সামনে এগিয়ে যাও । যদিও যুদ্ধের মত আমি রাইফেল হয়তো ধরতে পারবো না তবে তোমাদেরকে শক্তি সাহস উৎসাহ আমার পক্ষ থেকে কমতি হবে না।

আমাদের জন্য সুন্দর আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছিলেন । আপ্যায়নের পর উনার সাথে আসা ঢাকা থেকে আগত মেহমানদের পরিচয় করিয়ে দিলেন। উনার পিএসকেও পরিচয় করিয়ে দিলেন।

সব শেষে তিনি আমাদের সাথে ফটোসেশনে দাড়ালেন । প্রত্যেকের সাথে আলাদা আলাদা করে ছবি তুললেন, আমরা গ্রুপ ছবি তুললাম ।



বিষয়: বিবিধ

২১২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File