আমি কোথায় আছি
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১০ অক্টোবর, ২০১৮, ১০:৪৪:৪৩ সকাল
আমি কোথায় আছি?
অল্প পানির মাছ লাফায় বেশি।অজ্ঞ লোক লেখি বেশি।সত্যি সত্যি আমি আরবের কোন ব্যক্তি নয় যে, আমার মাতৃভাষা আরবি। অথবা আমার কলম কোন সাহসি বীরের হাতের নয় যে,তা চলবে অপরিসীম দক্ষতা নিয়ে।আমার কলমের কালিতে নেই লক্ষ যোদ্ধার জোর।কারন আমি আমার প্রানের চেয়ে প্রিয় ভালবাসার শ্রেষ্ঠ্য পুরুষ আল্লাহর রাসুল সাঃ এর হাতে বাইয়াত গ্রহন করিনি। উনাকে অদ্যবদি একবার দেখার সুযোগও পাইনি।উনার সাথীদেরও দেখার সুভাগ্য অর্জন করতে পারিনি। তবে আমি অদৃশ্য আল্লাহতালার গাইডবুক দৃশ্য মান কোরআন পেয়েছি ।রাসুল সাঃ এর শরিয়তের দলিল হাদিস গ্রন্থ্য গুলো আমার সামনে দিবালোকের স্বর্ণালী সূর্যের ন্যায় জ্বলজ্বল করছে।আলহামদুলিল্লাহ।আলহামদুলিল্লাহ।
দেখতে না দেখতে রহমত মাগফিরাতের দিনগুলো চলে গেল।নাজাতের দিন গুলো কাজে লাগানোর লক্ষে এশা ও তারাবিহের সালাত শেষ করে কোরান অধ্যয়নে বসলাম।প্রথমে চোখ ও মন কাজ শুরু করল একটি আয়াতের দিকে।আমি সাহিত্যে পারদর্শি নই।তাই যত বার বুঝার জন্য বুঝতে চেষ্টা করছি আর অপারগতার অপরাধে নিজে অজান্তেই নিজের অশ্রু জলে নিজেই ভেসে যাচ্ছি।
আয়াতটি হলঃ
“হে লোকেরা ! আমি তোমাদের প্রতি এমন একটি কিতাব অবতীর্ণ করেছি যার মধ্যে তোমাদেরই কথা আছে, তোমরা কি বুঝ না” ?
সুরা আম্বিয়া আয়াত ১০
কোরআন শুধুই আমার/আমাদের কথা বলে
আমি বার বার হৃদয়ের কোমলতা ঢেলে বুঝতে চেষ্টা করছি যে কোরআনে শুধুই আমার/ আমাদেরই কথা আছে। আমি প্রচন্ড অভিভূত হয়ে গেলাম।কারন এখানে আমার মানুষিক,ব্যবহারিক,স্বভাব,প্রকৃতি, গঠনাকৃতি,জন্মসূচনা ,চারিত্রিক বিশিষ্ট ও শেষ পরিণতি সব আলোচনা হয়েছে। তাই আমার কথা গুলো আমি আরো শোনার ও জানার জন্য কোরআনের সাথে হৃদয় ও অশ্রু মিশ্রিত আলোকরশ্মি ধরে এগিয়ে গেলাম।আমার সাথে দেখা হল বিভিন্ন এক্টিভিটির মানুষের সাথে।
প্রথম দলকে পেয়ে আমার অঝরে কান্না আসল ,এই ভেবে যে,আমি কোথায় আছি?
“রাতের বেলা তারা কমই ঘুমাতো৷তারপর তারাই আবার রাতের শেষ গ্রহরগুলোতে ক্ষমা প্রার্থনা করতো৷ তাদের সম্পদে অধিকার ছিল প্রার্থী ও বঞ্চিতদের৷”সুরা জারিয়াত ১৭-১৯
দ্বিতীয় দলের সাথে সামান্য সময়ের মাঝেই পরিচিত হলাম।যাদের পেয়ে অস্তমিত হৃদয় প্রত্যুষের সাক্ষাতে অধির হয়ে উঠল।
“তাদের পিঠ থাকে বিছানা থেকে আলাদা,নিজেদের রবকে ডাকে আশংকা ও আকাঙ্ক্ষা সহকারে এবং যা কিছু রিযিক আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে৷”সুরা আস সাজদাহঃ১৬
তৃতীয় ঃ বেশ কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর সাক্ষাত পেলাম আরেক দল লোকের সাথে। যাতে পথ চলার ক্লান্তি কাটীয়ে আরো ও অগ্রসর হবার উদম্য স্প্রীড লাভ করলাম।
“রহমানের (আসল) বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীর বুকে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মূর্খরা তাদের সাথে কথা বলতে থাকলে বলে দেয়তোমাদের সালাম।তারা নিজেদের রবের সামনে সিজদায় অবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়ে দেয়৷তারা দোয়া করতে থাকেঃ “হে আমাদের রব ! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদের বাঁচাও, তার আযাব তো সর্বনাশা৷” সুরা ফুরকান ৬৩-৬৫
মূর্খ মানে অশিক্ষিত বা লেখাপড়া না জানা লোক নয় বরং এমন লোক যারা জাহেলী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবার উদ্যোগ নিয়েছে এবং কোন ভদ্রলোকের সাথে অশালীন ব্যবহার করতে শুরু করেছে। রহমানের বান্দাদের পদ্ধতি হচ্ছে, তারা গালির জবাবে গালি এবং দোষারোপের জবাবে দোষারোপ করে না। এভাবে প্রত্যেক বেহুদাপনার জবাবে তারাও সমানে বেহুদাপনা করে না। বরং যারাই তাদের সাথে এহেন আচরণ করে তাদের সালাম দিয়ে তারা অগ্রসর হয়ে যায় ।
চতুর্থ আল্লাহর ভালবাসায় সিক্ত আরেক দলের সাথে দেখা হলো ।যাদের সাথে দেখা হয়ে জীবনের বাঁক গুলো পরিবর্তনের পথ খুজে পেলাম।
“যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সব অবস্থায়ই অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ দমন করে ও অন্যের দোষ –ক্রটি মাফ করে দেয়৷ এ ধরনের সৎলোকদের আল্লাহ অত্যন্ত ভালোবাসেন৷”।সুরা আলে ইমরান-১৩৪
পঞ্চমঃ আমি মনের অন্ধকার দূর করার হ্যাজাক লাইট দিয়ে আরো আলোকিত ব্যক্তিদের খুজে ফিরলাম।তখন পেলাম একদল ব্যক্তি।
“যা কিছুই তাদের দেয়া হোক না কেন এরা নিজেদের মনে তার কোন প্রয়োজন পর্যন্ত অনুভব করে না এবং যত অভাবগ্রস্তই হোক না কেন নিজেদের চেয়ে অন্যদের অগ্রাধিকার দান করে৷ ১৮ মূলত যেসব লোককে তারে মনের সংকীর্ণতা থেকে রক্ষা করা হয়েছে তারাই সফলকাম৷” সুরা হাশর ৯
সর্বশেষ আমি যখন আর নিজেকে একে একে সবার মাঝে রিক্ত হস্তে খুজতে খুজতে হাফিয়ে উঠোলাম ।তখন কোরআন আমার মার্বেল পাথরের মত চক্ষুযুগোল এর সামনে শেষ এক দলের পরিচয় তুলে ধরলেন।
“যারা বড় বড় গোনাহ এবং লজ্জাহীনতার কাজ থেকে বিরত থাকে এবং ক্রোধ উৎপত্তি হলে ক্ষমা করে, যারা তাদের রবের নির্দেশ মেনে চলে, নামায কায়েম করে এবং নিজেদের সব কাজ পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে চালায়,আমি তাদের যা রিযিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করে”সুরা আশ শুরাঃ৩৭-৩৮
আমি মনে করি ,সবাই নিজেকে নিজে আরো জন্য কোরআন কে অক্টপাসের মত আঁকড়ায়ে ধরে রাখতে হবে।আল্লাহর কিতাবের সাহায্যে আল্লাহর সাথে কথাবার্তা চালিয়ে যেতে হবে।হে আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই কোরআন নাজিলের মাসে কোরআন এ বর্নিত কদর পাওয়ার মাধমে আমাদের কে খুজে বের তাওফিক দান করুন
বিষয়: বিবিধ
১২০২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন