স্ত্রী হয়ে স্বামীর শিক্ষক হওয়ার মজা আর ভালবাসাই আলাদা
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:৩২:৪৩ রাত
আপনার মনে যদি খারাপ চিন্তা না থাকে তাহলে আপনি কেন দাম্পত্যজীবনে অপর জনের জন্য আই ল্যান্ড হয়ে থাকবেন।আপনার আল্লাহর উপর ও আপনার ভালবাসার বিশ্বাস রাখুন,দেখবেন ইনশাল্লাহ সুপারগ্লু মার্কা লাভবার্ড জুটি কেউ টেনে ছুটাতে পারবেনা।
সাহেবের জন্য প্রবাসী ছেলে নামীদামী সেলফিসেট পাঠাল। আজ কয়দিনে তাকে স্কিনটার্চ অন অফ সেইভ ছোট খাটো গুলো শিখালাম ছোট প্রাইমারীর বাচ্ছার মত করে। আজ নেটজগতে তার প্রথম প্রবেশ করালাম।ফেইজবুক, ভাইবার, ও্যার্টসাপ ,ইমু সব খুলে দিলাম। তার বহু প্রিয় বন্ধুরা তাকে অনেক দিন থেকে খুজে আজ পেয়ে সে কি মহাখুশি ।
ফেইজবুকে সবাইকে দেখে সে কি যে খুশি।তার খুশি দেখে আমারও অসুস্থ্য শরীলও অনেক সুস্থ্যতা অনুভব করল।আমাকে শিক্ষকের মত বার বার ডেকে কাছে নিয়ে কত আদর আর সন্মান করে কাছে বসে বাধ্য ছাত্রের মত শিখছে।ছেলেরা দুষ্টামি করে আমাকে ক্ষেপাচ্ছে ।আমি নাকি খাল কেটে কুমির আনছি। আমি বললাম ,আমি না শিখালে অন্যরা হলেওে তাকে শিখাবে।তার ছেয়ে স্ত্রী হয়ে স্বামীর শিক্ষক হলাম আর নেটজগতে হাতেখড়ি দিতে পারলাম ।এর মজা আর ভালবাসাই আলাদা।
আমার কাছে এই মানুষ টা কে খুব আদর লাগে । এই টেকনিক্যাল জিনিস গুলো শিখার জন্য কি মধুর করে আদুরে ডাক দিয়ে কাছে এনে ক্লাসের ফাস্ট বয়ের মত মনোযোগ দিয়ে সব শুনে। আমি তো প্রথম বার থিউরী পরের বার তাকে দিয়েই প্র্যাক্টিক্যাল করানো শুরু করি । মজা ব্যাপার হলো, ছোট বাচ্ছার মত ৪/৫ ঘন্টা পরে আবার তাল গোল পাকায়ে আবার ডাকাডাকি শুরু করেন।
আমার খুব শখ ছিল আমার স্বামী স্বপ্নার স্বামীর আমাকে ঢাকা ভার্সিটিতে আনা নেওয়া করুক।তা হলে মনে হয় অন্য ছেলেরা ভয়ে থাকবে।সে তাতে রাজি না।আমি একদিন অভিমান করেই বললাম,অন্যরা বলবে,গিয়াস ভাই আপনার বউ ইউনিভার্সিটিতে ফির্লিং মারে।তখন কি উত্তর দিবা?
সে আমাকে সাথে সাথে উত্তর দিল," আমার বিশ্বাস আমার ভালবাসা স্ত্রীর প্রতি সত্যিকারের হলে তা হবে না।আর যদি তা আমার স্ত্রী করে তা হলে আমি আরো খুশি হব যে আমি যেই সুখ দিতে পারি নাই ।আমার ভালবাসার বউ সেই সুখ খুজে পেয়েছে।তাই আমার ভালবাসার সুখে আমিও তাতে সুখি।"
তার এই বিশ্বাস ধরে রাখার জন্য বান্ধবীরা কত ভালবেসে বলত চলনা মধুর ক্যান্টিন,ডাস, টি এস সি তে গিয়ে আড্ডা দিয়ে আসি।আমি বাচ্ছাদের গিয়ে পাহারা দিতাম ।তাও ৭ বছরে তো দূরে থাক আজো এই গুলো দেখা হয় নাই । কারন আমার মনে হত আমার মনে যদি শয়তানের শয়তানি কাজ করে তা আল্লাহ দেখবেন। আর একই শয়তান তার ভিতরেও একই শয়তানি শুরু করাবেন।তাই আমার সকল ভালবাসা আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য ।শত্রুতাও আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য ।আমিন।
আমি যখন বোনদের গভীর কর্নারে লুকিয়ে রাখা দুঃখ কষ্ট ক্ষোপ গুলি শুনি তখন খুব আল্লাহর কাছে কান্না করি। স্ত্রীকে রাখে নীচ ডালে আর স্বামী থাকে মগ ডালে।কেন দুইটি মন দুইটি পাখির মত এক ডালে এক নীড়ে থাকাতে বাধা কোথায়।আবার স্ত্রীকে স্বামী এমন সন্দেহ করে স্ত্রীর গতিবিদি নজরদারীর জন্য লুকায়ে বর্ডিগার্ড রাখেন।একই অবস্থ্যা স্বামীর জন্য অনেক স্ত্রী শুরু করেন। আরে ভাই/ বোণ তুমি তোমার ভালবাসার ঘুড়িটা স্বামীর মন পাবনে উড়ায়ে দাও আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে। বিশ্বাসের নাটাই যত শক্ত করে ধরে রাখবেন ততই মজবুত হয়ে্ ঘুড়ি কারো মনের সাথে প্যাচ খাবার ভয় থাকবে না। মনের পিঞ্জর খুলে রাখুন ।ভালবাসার স্বামী/স্ত্রী বাকবাকুম বাকুম করে সারা আসমান ঘুরে আবার আপনার মনের খাচায় ফিরে আসবে ইনশাল্লাহ।
আমার কাছে পারিবারিক কলহ শুনলে মনে হয় দুনিয়াতেই জাহান্নাম বাধায়ে দিল । এটার তাপদাহে / দাবানলে ব্যাক্তি পরিবার সমাজ রাষ্ট্র সব পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।আল্লাহ প্রবাসীর স্ত্রী হিসাবেও ৫ বছর রেখেছেন।তাই আমি আমার অভিজ্ঞতা গুলো আপনাদের সাথে গল্পের মত বলে যাই । যেন এই শিক্ষা থেকে আপনাদের দাম্পত্য জীবনে একটা দিন জান্নাতী সুখের অনাবিল শান্তি বয়ে যায় ।
আল্লাহ আমাদের স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদের নয়নশীতলকারী মুত্তাকিনদের ঈমাম বানিয়ে দিক।
বিষয়: বিবিধ
৩০০২ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার মিসেস আবার অল্পশিক্ষিত তাকে অনেক চেষ্টা করেছিলাম সে আর পড়তেই রাজি না । এখন ছেলে মেয়ে বড় হয়েছে এবারও অনেক অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু রাজি না বলেনতো কি করি
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
পবিত্র ক্বুরআনে বলা আছে যে স্ত্রীদের স্বামীর অনুগত থাকতে কারণ স্বামীরা তাদের জন্য ব্যয় করে ।
বর্তমান জামানায় মেয়েরা শিক্ষিত তথা আধুনিক তথা সভ্য তথা মুক্তমনা ও স্বাধীনচেতা বিধায় তারা কখনই স্বামীর অনুগত হয়ে চলে না , হোক সে পর্দানশীন বা আধুনিকা ।
ফলে সংসারে শান্তি আনবার জন্য স্বামীকে বাধ্য হয়েই নত হতে হয় , বউয়ের অনুগত হয়ে চলতে হয় - যেটা শরিয়তের পরিপন্থী ।
আমরা আমাদের চারপাশে যে মুসলমান পরিবার দেখি তাদের মধ্যে যারা সুখী আছে তারা শরিয়ত পরিপন্থীভাবে চলে , কারণ সেখানে বউয়ের অনুগত হয়ে চলতে হয় ।
আর স্বামীর অনুগত হয়ে (যেটা শরিয়তেই বলা আছে) চলা কোন মেয়ে সহ্য করতে পারে না । ফলে সে সংসারে অশান্তির আগুন জালিয়ে রাখে ।
সুখী মুসলিম পরিবার মানেই বেশরিয়তে ভাবে চলা আর অসুখী মুসলিম পরিবার মানে সেখানে শরিয়ত মোতাবেক চলার ব্যর্থ চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন