আলোচ্য বিষয় কোরআনে নারীর মর্যাদা, আমারটাই না হয় বলি।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩৮:০৫ রাত
আলোচ্য বিষয় কোরআনে নারীর মর্যাদা,
আমারটাই না হয় বলি।
নামাজে ফোন বাজা চাইই চাই।না আজ আসরের অজুতেই শুরু ।ধরতেই
পারভীন আপা,পরার কাপড় যা পরায় আছে তা নিয়েই চলে আসেন।আমি গাড়ি পাঠালাম চলে আসেন সেমিনারে। কোন কথা শুনব না আজ। আপনার আলোচ্য বিষয় কোরআনে নারীর মর্যাদা।
আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ল।শিরিন আপা, প্লিজ মাফ চাই দোয়া চাই ।
আমি আজ না যেতো চাই।আমার কিছু জানা নাই ।হাতে কোন নোট নাই।গাড়ি এসে হাজির।আল্লাহর সাহায্য চাচ্ছি আর যাচ্ছি।প্রভু!আমাকে দিয়ে কি বলাবে ?আর বিজ্ঞ আইনজীবি শ্রোতাদেরকে কি শুনাবে আমি তার কিছুই জানিনা।তুমি সর্বশক্তিমান, অন্তরযামী ও হেদায়াত দানকারী।
আইনজীবি স্বামী হাইকোর্টে অডিটরিয়াম রুমে ডুকার আগেই সামনে দাড়ায়ে লম্বা সালাম দিয়ে বাঁধ সাজলেন ।শিরিন আপা,প্লিজ ওকে স্টেজে নিবেন না ।আপনি জানেন না সে খুব অসুস্থ্য।পারবে না কিছু বলতে।শিরিন আপা বললেন,ভাই আমাদের মহিলা বক্তা নাই।যা পারে তাই হবে।
আমি পরে বললাম ,তুমি ভয় পেও না ইসলাম আমাকে যা দিয়েছে মর্যাদা। আমারটাই না হয় বলি। আল্লাহ আমার সাথে আছেন নিশ্চয়ই ।
আমি আল্লাহর লাখো শুকরিয়া জানাই ,আলহামদুলিল্লাহ। তিনি আমাকে মাইক হাতে নেবার তাওফিক দান করেছেন।আমার অনেক কিছু কোরানে নারীর মর্যাদার উপর বলার ছিল কিন্তু সময় ছিল সল্প।তাও বলে বলেছি অল্প।আমি শুনি দিবানিশি নারীদের অনেক জীবন গল্প।তাদের জীবনে অনেকেই পায়নি ইসলামের আলোকে সুখ কল্প ।
কোরানের পূর্বের যুগ আইয়্যামে জঘিলিয়াত হলে আমাকে জীবন্ত কবর দিত।আর বর্তমানে লাভ ক্ষতির অংকের প্যাচে পড়ে কন্যা বলে আধুনিক যুগের বিজ্ঞানের উন্নত যন্ত্রপাতি আমাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে ডাস্টবিনে ফেলে দিত।আলহামদুলিল্লাহ । আমি বেচে আছি।
জন্মের সাথে সেই ঘরের জন্য রহমত আনে আর যুবতী সুকন্যা নিয়ে আসে জান্নাতের ঠিকানা,স্বামীর জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ট্য সম্পদ ও জান্নাতের সনদ আর সন্তানের জন্য ৮ টা জান্নাত পায়ে নিচে রাখে। কোরান সুরা নিসায় মেয়েদের জন্য বাবার / ভাইয়ের কাছে দুই ভাগের এক ভাগ সম্পদ , স্বামীর কাছে মোহরানা ও সমস্ত সম্পদের আট ভাগের এক ভাগ সম্পদ ও ছেলের কাছে পাপ্য সম্পদের । আমরা কি নারীরা তা পাচ্ছি ?
বাবা / ভাই বলেন এটা তোমার স্বামীর বাড়ি না বিয়ে না বসে পায়ের উপর পা তুলে খাবা।স্বামী পান থেকে চুন ঘষলে বলে এটা বাবার বাড়ি না যেমনে খুশি তেমনে চলবা। বাবা ও স্বামী থেকে বঞ্চিত নারী কে কোণ ছেলে / বউ সন্মান দিয়ে কথা বলে না।সেটাও ছেলের বাড়ি তাই বউ নাতি নাতনীর সেবা করেও দু মুঠো খাবার খায়।
তা হলে কোরান আমাকে যা দিয়েছে এই মুসলিম সমাজ নারীকে বঞ্চিত অবহেলিত করছে।নারী ও পুরুষের মৌলিকভাবে সমান অধিকার ও মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে:
নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে, যেমন আছে তাদের উপর পুরুষদের। তবে তাদের উপর পুরুষদের এক পর্যায়ের প্রাধান্য রয়েছে। আল্লাহ পরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা বাকারা : ২২৮)
পবিত্র হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে: إনারীরা হলো পুরুষের সমতুল্য। (সুনানে আবু দাউদ ১/৩১)
দ্বীন ও ধর্মের যাবতীয় কর্মে নারী ও পুরুষের সমমর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে"আর যে কোন পুরুষ বা নারী নেক আমল করবে, আর সে মুমিন হবে, তাহলে তারা জান্নাতে দাখেল হবে এবং সেখানে তাদেরকে বেলা হিসাব রিযিক দান করা হবে। (সূরা মুমিন : ৪০) পবিত্র কোরআনে আরো এরশাদ হয়েছে: অনন্তর তাদের প্রতিপালক তাদের দু‘আ কবুল করলেন (আর বললেন) যে, আমি তোমাদের কোন আমলকারীর আমল নষ্ট করবো না, সে পুরুষ হোক, বা নারী। তোমরা তো পরস্পরের অংশবিশেষ। (সূরা আলইমরান : ১৯৫)
নারীকে শুধু সমমর্যাদা নয়, বরং অগ্রমর্যাদা দান করেছে মা হিসাবে।ইসলাম ও তার নবীর কাছে মায়ের যে মর্যাদা তা পৃথিবীর কোন ধর্ম ও সভ্যতা এমনকি আধুনিক সভ্যতাও কল্পনা করতে পারেনি। কোরআনে এরশাদ হয়েছে: ‘আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচারের আদেশ করেছি। (কারণ) তার মা তাকে কষ্টের সঙ্গে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টের সঙ্গে প্রসব করেছে।’ (সূরা আহকাফ : ১৫)
, ‘জান্নাত হলো মায়েদের পায়ের নীচে।’ (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৩৩০)
স্ত্রী হিসেবে নারীর অধিকার: পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহ তা‘আলা আদেশ করে বলেন: আর তোমরা স্ত্রীলোকদের সঙ্গে বসবাস করো সদাচারের সাথে। আর যদি (কোন কারণে) তোমরা তাদেরকে অপছন্দ করো তাহলে হতে পারে যে, তোমরা এমন কোন কিছুকে অপছন্দ করলে, আর আল্লাহ তাতে প্রচুর কল্যাণ রেখে দিলেন। (সূরা নিসা : ১৯)
নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বলেছেন, ‘কোন মুমিন পুরুষ কোন মুমিন নারীকে যেন সম্পূর্ণ অপছন্দ না করে। কারণ তার একটি স্বভাব অপছন্দ হলে, আরেকটি স্বভাব অবশ্যই পছন্দনীয় হবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৪৬৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৯৭৯)
নারীদের এতো নীচুস্তরের ভাববেন না।নারী প্রথম ইসলাম কবুলকারী , রাসুল সাঃ নবুয়তের প্রথম পরামর্শ ও শান্তনাদাতা, প্রথম শহিদ নারী , রাসুল সাঃ মেরাজে গেছেন একজন নারীর ঘর থেকে , কোরানের বহু আয়াত ও একটি সুরা নারীদের নিয়ে , জান্নাতের সর্দারনী নারী। এই ভাবে ক্ষেত্রে ইসলামে নারীর অবদান আল্লাহ যুগে যুগে রেখেছনে।
বিষয়: বিবিধ
১৬০৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন