আমি সব পলাশের মাদের পক্ষ থেকে কয়টা প্রশ্ন আপনাকে আজ করব।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৩ অক্টোবর, ২০১৬, ০৮:৩৫:০৫ রাত
সাহেব ডুকেই আশ্চার্যাম্বিত হয়ে বললো, পারভীন শুনছ আরে পলাশের আব্বাকে রেখে পলাশের আম্মা হজ্জে চলে যাচ্ছেন।স্বামী ছাড়া হজ্জে গেলে কি মহিলাদের হজ্জ হবে?
শুনো পলাশের আম্মার হজ্জ হবে ইনশাল্লাহ।কারন ভাবীর সাথে আমার কথা হয়েছে।ছেলেরা বাবা মাকেই একসাথে পাঠাত কিন্তু ভাই রাজি না হওয়াতে ভাইয়ের অনুমতিতে ভাবি উনার ভাই বোনদের সাথে চলে গেল।
আলহামদুলিল্লাহ ।হজ্জ শেষ করে ভাবি গতকাল আসলেন।আজ দেখা করে আসলাম ।আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের নিদর্শনের বর্ননা দিলেন।
আমাকে এক বোন নিয়ে গেলেন।উনি আবার পলাশদের পরিবারের সাথে আত্নীয়ের মত।সেই বোন বলল,পলাশের আম্মা এই সংসারে বোবা চকলেট।ভাই যেমনে চালায় তেমনি চলে।ছেলে মেয়েরা যে যা করে তাতেই ইয়েস ইয়েস করেন।কোন বিষয়ে উনার কোন অভিমতের মুল্যায়ন কেউ দেয় না।স্বামী ওসব ছেলে মেয়ে এয়ারপোর্ট থেকে আনতে জান নাই।তাতে বিন্দু পরিমানওআফসুস নেই।স্বামীর উপর নেই কোন অভিমান। এই ভাবেই বয়স ৫৫ পার করে ফেলল। পলাশের আম্মা,শুনছে আর মুচকি হাসছে।
ঐ বোনের কথার সত্যতা দিতে ছেলের বউরাও এসে শ্বাশুড়ির কথা খুব ভাল খুব ভাল বলে গেলেন।এটাও বলে গেলেন ,আমার শ্বশুর অন্যায় /ন্যায় যাই বলেন আমার শ্বাশুড়ি কিভাবে যে তাই মেনে নেয়।আমার হাস্যুউজ্জোল রসিক মনের শ্বাশুড়ি হঠাৎ এখন স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাবা বাড়িতেও বেড়াতে যায় না।উনার কোন আত্নীয়ের বাসায়ও যায় না। উনার ছেলেকে বলেছি,আমরা উনার মত হতে পারব না।আমরা আধুনিক মেয়ে।
আমি ভাবলাম একজন উচ্চ শিক্ষিতা মহিলা আজ এমন হয়ে গেল কেন?কেন এই ফানসা জীবন কাটাতে হবে মরনের আগ পর্যন্ত।
জীবনের অপরাহ্নে হৃদয়টা চেয়ে গেছে রিক্ততায়,
ভালবাসার মিষ্টি পেয়ালাটা ভরে গেছে তিক্ততায়।
জীবনসুরার ফোঁটাগুলো একে একে চুষে নিল শুস্কতায়,
শীতের কাঁপনে পাতাগুলো ঝরে পড়ে দেহ নিল রুক্ষতায় ।।
ভাবির স্মরনে মনে আসল কয়টি ছন্দ ।
মনে চলছে অভিযোগের সীমাহীন দন্দ।
জানি কোন দিন পাব না বিচারের মানদন্ড,
সংসার সমাজ রাষ্ট্রের অনেকেই শিক্ষিত ভন্ড।
োন/কি নামের সাইক্লোন এসে একজন মহিলাকে (স্ত্রী/মা/শ্বাশুড়ি) সবার উপর থেকে নিজের ভালবাসা দেওয়া নেওয়ার হিসাব থেকে হাত ঘুটিয়ে নিল। সারা জীবন স্বামী সন্তানের গ্লানি টানা কলুর বলদ আর শ্রম দিতে পারছে না বলেই কি তার এই কোরবানী।
আমি সব পলাশের মাদের পক্ষ থেকে কয়টা প্রশ্ন আপনাকে আজ করব।
আপনি যেমন মানুষ।আমিও কন্যা/জায়া/জননী রুপের একজন মানুষ। মানুষ মাত্রই আমার আমিত্ব/ব্যক্তিত্ব কেন আপনি মেনে নিচ্ছেন না? কেন আপনি আমাকে যেমনি নাচাবেন আর আমি তেমনি নাচব ? যা ইসলাম আমাকে হুকুম করে নাই । তাও আপনার মন পাওয়া তো দূরে থাক, থাকবে আমার হাজার দোষ।
পুরুষরা বিয়ে করে কিছুই হারাননা বরং স্ত্রী সন্তান নিয়ে লাভবান হন
একটা মেয়ে বিয়ের পরে জন্মদাতা, গর্ভধারীনি ও রক্তের বাঁধনা ১৪ গোষ্ঠী কে জলাঞ্চলী দিয়ে আপনার মনোকোঠরে এসে আবদ্ধ হয়।সেখানে আপনি আমাকে আপনার ছায়ার মত আপনার মনের অঙ্গভঙ্গিমায় চালাচ্ছেন।আমি আমার যুবতী বয়সে জায়া হয়ে ছায়ার মতো আপনার হুকুমে দৌড়ায়েছি।আপনার আজকের সফলতার মাঝে আমার রক্ত ঝরা ঘাম আছে অনেক। আপনার বাবা মা ভাই বোণ সবার পিছনে আপনার সাথে ছায়ার মত বৌদের শ্রম আছে। আপনারা মেয়েদের বাবা মায়ের জন্য করেন না । কারন আপনার জন্য তা ফরজ না।পুরুষরা বিয়ে করে কিছুই হারাননা বরং স্ত্রী সন্তান নিয়ে লাভবান হন। তাই আপনি স্বার্বিক ভাবে লাভবান হয়েছেন বিয়ে করে। এই বার আসুন ২য় পর্যায়ে।
মাতা হিসাবে ছাতার মত আপনার জন্ম দেওয়া সন্তানের লালন পালন পড়া লেখা সহ রোদ বৃষ্টি ঝড়ে আমি অগ্রনী ভুমিকা রেখেছি। ফলজ বৃক্ষের ন্যায় বার বার সন্তান ামার অস্তিমজ্জা লোহিত কনিকার সমাহারে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ।তাতে আজ পলাশের মাদের প্রোটিনের ঘাটতি জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে যৌবনের শ্রম দিতে পারছেনা।তাই তাকে অভাগিনী ভেবে আপনি অবহেলা অবমুল্যায়ন করে তিলে তিলে শেষ করে আপনি চুলে কলফ দিয়ে চিরসবুজ সিনেমার নায়ক হয়ে থেকে নবরত্ন হয়ে থাকবেন।
আপনার কাছে একজন স্ত্রী কি চায়?
####আপনি তাকে অমুল্যধন ভালবাসাটুকু মন থেকে দিন। নষ্টদের নষ্টামিতে আপনি যেন আক্রান্ত না হন।### মহিলা বলে তাঁকে নিবুদ্ধি ও বোকা মনে করেন।তার মাঝের প্রতিভাকে স্বীকৃতি না দিয়ে সব সময় নিজেকে জাহির করবেন না।
“যে নিজেকে নিজেই সর্বোত্তম মনে করে,সেই নিকৃষ্টতম ব্যক্তি,!!“যে নিজেকে সব চেয়ে বুদ্ধিমান মনে করে, সে হচ্ছে চরম বোকা,!!_[হয়রত আলী রাঃ]""
### আপনি সবার সাথে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় কত সুন্দর ব্যবহার করেন। সেই সুন্দর ব্যবহারের কিছু অংশ আপনার স্ত্রীর জন্য বাধ্যতা মুলক না মনে করলেও সৌজন্যমুলক হিসাবে উপহার দ্বীন।
দেখেন আল্লাহ কি বলেন,
"এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে তিনি তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তাদের সাথে শান্তিতে বসবাস করতে পার এবং তোমাদের মাঝে ভালবাসা ও মেহেরবানী সৃষ্টি করে দিয়েছেন।" সূরা রূমঃ ২১
### আপনার স্ত্রী চান না= আপনি চিৎকার ও কর্কশভাষি না হন, স্ত্রী কে নিয়ে কুধারনা করেন বা স্বামী স্ত্রীর গোপন বিষয় অন্যকে বলে দেন।
দেখেন আল্লাহ কি বলেন,
★কথা বলার সময় সবচেয়ে মার্জিত শব্দ দিয়ে সুন্দর ভাবে কথা বলবে
[বাকার-৮৩]
★চিৎকার করবে না, কর্কশ ভাবে কথা বলবে না, নম্র ভাবে কথা বলবে – [লুকমান-১৯]
★কাউকে নিয়ে উপহাস করবে না, কাউকে কোন বাজে নামে ডাকবে না – [হুজরাত-১১]
★কাউকে দোষারোপ করবেনা– [হুজরাত-১১]
★কারো সম্পর্কে কু ধারনা করবেনা– [হুজরাত-১২]
★কারো গোপনীয় বিষয় (ছিদ্রান্বেষণ) করবেনা– [হুজরাত-১২]
★কারো পিছনে বাজে কথা বলবে না,নিন্দা করবেনা – [হুজরাত-১২]
আসুন আমরা সবাই আল্লাহকে বলি ,
" হে আল্লাহ ; আমি তোমার অসন্তুষ্টি থেকে তোমার সন্তুষ্টির আশ্রয় চাই । তোমার শাস্তি থেকে তোমার ক্ষমার আশ্রয় চাই । আমি তোমার কাছে তোমার আশ্রয় চাই । তোমার প্রশংসা ও গুনগান করার শক্তি আমার নেই । তুমি নিজে তোমার যেরুপ প্রশংসা বর্ণনা করেছ, তুমি ঠিক তদ্রুপ ।"
{ সহীহ মুসলিম-২য় খন্ড,হাদীস নং-৯৮৩ }
বিষয়: বিবিধ
১৬৩০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন