শেয শুনতে হল, আমার স্বামী আজেবাজে কাজ করা এক মহিলাকে নিয়ে দিনরাত ফুর্তি করে।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ৩০ মে, ২০১৬, ০৬:৪৫:৩৭ সকাল
আপনি কি জানেন, আপনার স্বামী আজে বাজে কাজ করা এক মহিলাকে নিয়ে দিন রাত ফুর্তি করে?
টেলিফোন সালাম দিয়েই রিচিভ করলাম।
পুরুষের গলার আওয়াজ শুনেই সাথে বললাম,একটু শক্ত গলায়, কে বলছেন?কাকে চাচ্ছেন?
উত্তর আসল,আপনি কি মিসেস মীঠু বলছেন?
জী আমি মিসেস মীঠু বলছি।
আপনি কি জানেন, আপনার স্বামী আজে বাজে কাজ করা এক মহিলাকে নিয়ে দিন রাত ফুর্তি করে?
“কি বলছেন এই সব মিথ্যা কথা।মুখ সামলায়ে কথা বলেন।আপনি কেন আকাশের ফেরেস্তা এসে বললেও আমি তা বিশ্বাস করব না।আমি সব সহ্য করতে পারি কিন্তু আমার সন্মানিত স্বামীর নামে কেউ মিথ্যা অসন্মানিত কথা বললে আমি তা সহ্য করব না।আমি ফোন লাইন কেটে দেব আর একটি কথা আমার স্বামীকে নিয়ে মন্তব্য করলে।কেন ফোন করেছেন তা উনাকে বলেন”।
প্লিজ লাইন কাটবেন না।আমার কাছে প্রমান আছে,সে মহিলা কেমন স্বভাবের?আপনার স্বামীর মুখে শুনা।আমাকে ৩টা মিনিট সময় দিয়ে শুনেন।
মাথায় রক্তের প্রচন্ড চাপ নিয়েও ধৈর্যের বাঁধন শক্ত করে বেঁধে মেজাজ ১০০ডিগ্রী ফারেনহাইটথেকে কিছুটা নামায়ে বললাম বলেন,আল্লাহকে স্বাক্ষী রেখে সত্য করে বলবেন।না হলে আল্লাহ মিথ্যা অপবাদ ও সংসারের অশান্তির জন্য শাস্তি দিবেন আপনাকে।
তা হলে শুনেন,”মহিলা তার চৌদ্দ গুষ্টির থেকেও মীঠু ভাইকে প্রানের চেয়ে বেশি ভালবাসে।উনার সুখে দুঃখে এক পায়ে দাঁড়ানো।তবে সে এক বাসার বাঁধা বুয়া, ক্লিনার,রাধুনি,বাচ্ছাদের সেবিকা,হাটবাজার সহ যত আজে বাজে কাজ সব করেও আপনার স্বামীর সাথে সে মহিলা দৈহিক সম্পর্কের কাজেও জড়িত”।
জোরেই বলে উঠলাম ,আপনি থামবেন।ছি ছি কি সব নোংরা মিথ্যা কথা বলছে এই লোকটা।আপনি জীবন কোরবানী দিয়ে বললেও আমি এই সব বিশ্বাস করলাম না।কারন আমার স্বামী এই রকম বাজে আর নিন্মস্তরের মেয়েদের সাথে কথা বলার রুচিও রাখে না।আপনি আমার স্বামীর শত্রু।আপনার কাছে উনি এই গুলো বলতেই পারেন না।আমি এই বলেই লাইন কেটে দিলাম মনের ক্ষোপে।
ভদ্রলোক আবার ফোন দিলেন,ছেলে বললেন,আম্মু একজন আংকেল আপনার সাথে এক মিনিট কথা বলে রেখে দিবেন।একটু ধরতে বলছেন।
আমি শরীল রাগে কাপছে।তাও ধরলাম,এইবার বলছেন,”ভাবী আমি এতোক্ষন যেই মহিলার কথা বলেছি তিনি হলেন আপনি।আপনি আপনার স্বামীর জন্য যা যা করছেন তা আপনার স্বামীর মুখে গল্প শুনেই আপনাকে পরীক্ষা করলাম।আসলে আপনি মীঠু ভাইকে কত টুকু ভালবাসেন।এই বার চিন্তা করে দেখেন আমার কথা মিথ্যা কিনা”?
একটা কোলবালিশ খাটে আনতে দেই না।না জানি দুই জনের মাঝে এই বালিশ কোন দুরুত্ব সৃষ্টি করে।যেখানে তাঁকে সহ রাতে থাকতে দেবে না সেখানে বেড়াইতে যাবে না ।আর এই সব কথা শুনলে কোন মহিলার মাথা ঠিক থাকে?তাও আল্লাহ অগাধ ভালবাসার উপর বিশ্বাস থাকাতে চিন্তাই এই সব আনি না।আলহামদুলিল্লাহ।
পরে ভেবে দেখলাম।আমরা মহিলারা এই স্বামীকে ভালবেসে তার সংসারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিনা করি।আমরা বাবা মা ভাই বোন চৌদ্দ গুষ্টির থেকেও স্বামী কে প্রানের চেয়ে বেশি ভালবাসছি।তাদের সুখে দুঃখে এক পায়ে দাঁড়ানো থাকি নিজের জানের মায়া ত্যাগ করেও।সত্যি তো আমরা তো স্বামীর বাসার বেতন ছাড়া বাঁধা বুয়া, ক্লিনার,রাধুনি,বাচ্ছাদের ধাইমা সেবিকা,হাটবাজার সহ যত আজে বাজে কাজ সব করে যাচ্ছি।সেই স্বামীর চিত্তবিনোদনের জন্য নিজের রোগ শোক ব্যাথা বেদনা সব ভুলে তাঁদের দৈহিক ডাকেও সারা দিচ্ছি।আলহামদুলিল্লাহ।
এরপরেও কত গুলো কমন কথা প্রায় পুরুষেরা প্রায় বোনদের শুনাতে থাকে ভাঙ্গা টেপরেকডারের মত ।প্রথমে তোমার মত খারাপ মহিলা আমার কপালে আসল।উমুকের বউ কত এক্সপার্ট।সারাদিন ঘরে কি করে খাও।শুয়ে বসে শুধু ফুর্তি কর আর খাও।সংসারের চাকাটা কেমনে ঘুরাই আর কোন খালের পানি কোন পুকুরে সেচে টাকা কামাই তা তো জানো না।ছেলে মেয়ের রেজাল্ট অন্য মায়েরা কত ভাল করায় আর আমার গুলো যত সব।কোন দুঃখে যে বিয়ে করে আজ এই মরা মরতেছি কলুর বলদের মত সংসারের ঘানি টেনে।ার কত কি..................।
এই ভাবে মহিলাদের হেয় করা ঠিক না।সংসারে সবার অবদানের মুল্যায়ন করা উচিত। বিশেষ করে ইসলামিক মননশীল পুরুষরা তাদের স্ত্রীকে খুবই ভালবাসে । তার কারণ, দীর্ঘ ১৮-২২ বছর অপেক্ষা করার পর বউ তাদের কাছে হয়ে উঠে সোনার হরিণের ন্যায়। ইসলামিক পুরুষরা তাদের স্ত্রীদের যেভাবে ভালবাসা দেয়।বিয়ের আগে লবন দেখারা সেইভাবে ভালবাসতে পারে না ।ইসলাম মানা দাম্পত্যজীবন আল্লাহ'র নিকট পছন্দনীয় । তারাই হেদায়াত প্রাপ্ত । আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকটা বুঝার তৌফিক দান করুন ।
বিষয়: বিবিধ
২৬২০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আজকাল পুরুষরা এ নীতি (ছবিতে) মেনে চলেন।
বিয়ের কথা শুনলে ছেলেরা আৎকে ওঠে কারণ সমাজ এটাকে এতটাই বাড়াবাড়ির পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। আমার খালাতো বোনটার কথাও আমার মনে আছে। গায়ের রং শ্যামলা বলে তাকে রীতিমত আপন মানুষগুলোর কাছ থেকে ছোটকাল থেকেই কত বাজে কথা, আর মানুষের নীচু দৃষ্টি সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু তার আস্হা ছিল আল্লাহর প্রতি আর আল্লাহ তাকে উত্তম জীবনসঙ্গী মিলিয়েও দিয়েছেন।
আরেকটা কথা আপু একজন স্ত্রীকে পার্মানেন্ট বুয়া, যৌনভোগের বস্তু এসব নোংরা ভাষায় বিশেষায়িত করা মোটেও উচিত নয়। শুনলেই কেমন মেজাজটা খিটখিটে হয়ে যায়। আপনি আমার বয়সে হয়ত দ্বিগুণ, তিনগুণ বড় হতে পারেন তবুও সন্মান রেখেই বলছি, যখন উমার (রাঃ) রাতের অন্ধকারে মদিনায় পায়চারি করতেন নাগরিকদের ভাল মন্দের অভিযোগ দেখভাল করার জন্য তখন এক রাতে তিনি এক নারীর কথা শুনতে পেলেন। সে বলছিল, হে বিছানা যদি আমার মনে আল্লাহর ভয় না থাকত তবে আমার পাশে এখন আমার স্বামী ব্যতীত অন্য পুরুষ অবশ্যই থাকত আমি আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিনা। তখন উমার (রাঃ) তার ঘরের সামনে গিয়ে তাকে ডাকলেন, এবং এমন কথা বলার কারণ জানতে চাইলেন। সেই নারী বলল, আমার স্বামী দীর্ঘদিন যাবত জিহাদে অবস্হান করছে, স্বামীহীন অবস্হা আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহর ভয় না থাকলে সত্যিই আমি অবৈধ কাজে বাধ্য হতাম। তখন উমার (রাঃ) এই বিষয়ে হাদিস ও মাসআলা বা সমাধান জানার জন্য রাসূল (সাঃ) এর স্ত্রী উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রাঃ) এর নিকট গেলেন এবং প্রশ্ন করলেন, শরীয়তের মতে একজন নারী কতদিন পর্যন্ত নিজের যৌন চাহিদা দমন করে রাখতে পারে? হাফসা (রাঃ) উত্তর দিলেন, ৪ মাস পর্যন্ত।
উমার (রাঃ) এরপর সিদ্ধান্ত দিলেন, কোন বিবাহিত পুরুষ জিহাদে গমন করলে তাকে যেন ৪ মাসের মাঝেই ফেরৎ পাঠানো হয়। জিহাদে গমন করলে নিজ স্ত্রীসহ অনেকেই গমন করা শুরু করলেন। এবং কারো মৃত্যু হলে ইসলামী খিলাফত বিধবাদের দ্রুত বিয়ে দেয়ার ব্যাপারে জোড় দিত।
আপু রাগ করবেন না এই ঘটনাটা এজন্যই উল্লেখ করলাম, আমাদের মেয়েরা কেন জানি এটা বলতে ভালবাসে যে, আসলে মূলত হাজবেন্ডের শারিরিক চাহিদা পুরণ করতেই তারা সাড়া দেন, তাদের যেন এতে কোন অংশ নেই, নিজেদের কোন চাহিদা নেই। অনেকটা এভাবেই তারা ভাব প্রকাশ করেন। এটা নিজেদেরকেই ধোঁকা দেয়া। আল্লাহ নারী পুরুষ সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি নারী পুরুষ উভয়কেই শারিরিক চাহিদা দিয়েছেন এবং বৈধ পন্হাও দেখিয়ে দিয়েছেন। তাই জাস্ট স্বামীর সন্তুটির জন্যই আমরা করি কিন্তু নিজেদের কোন ফায়দা নেই এটা একটা বাজে কথা।
আমাদের মেয়েরা প্রগতিবাদী হবার চেষ্টা করে স্বামীর ঘরে সার্ভিস দেয়াকে অপমানজনক মনে করে তবুও তো তাকে কর্পোরেট হাউসগুলোতে, বিমানবালা হয়ে অন্যের সার্ভিস দিতে হচ্ছে সেটাও তো দাসীত্ব। তাই এই স্বামী গৃহের সার্ভিসকে দাসীত্ব হিসাবে না দেখে দায়িত্ব ভাবাটাই আমাদের নারীর জন্য বেটার। তাতে সহযোগীতার সম্পর্ক তৈরী হয়, প্রতিযোগীতার নয়। উমার (রাঃ) এর নিকট এক লোক নিজের স্ত্রীর ব্যাপারে বিচার দিতে এসেছিল কারণ তার স্ত্রী তার সাথে চিল্লাচিল্লি করত, বকাঝকা করত। যখন সে উমার (রাঃ) এর গৃহের সামনে আসল তখন সে শুনতে পেলো উমার (রাঃ) এর স্ত্রী তার সাথে কিছু ব্যাপার নিয়ে রাগারাগি করছে কিন্তু উমার (রাঃ) চুপ করে শুনছেন কোন প্রতিউত্তর করছেননা। সেই লোক ফীরে যাচ্ছিল তখন উমার(রাঃ) তাকে ডেকে আগমনের কারণ জানতে চাইলে, সে বলল, আমি যেই কারণে এসছিলাম সেই সমস্যায় তো আপনিও পতিত। আমি আমার স্ত্রীর ব্যাপারে বিচার দিতে এসেছিলাম। উমার (রাঃ) জবাব দিয়েছিলেন, দেখ, সে আমার ঘর সংসার দেখেশুনা করে, আমার জন্য রান্না করে, আমার কাপড় ধুয়ে দেয়, আমার সন্তানদের দেখভাল করে-ইসলাম কিন্তু এসবের সব দায়িত্ব তার উপর চাপায়নি তবুও সে করছে আমার উপর এহসান করছে আর তার এত অবদানের পরেও তার সামান্য কিছু কথা আমি সহ্য করতে পারবোনা? আমি যদি চুপ থাকি সে তো একাই বকবক করতে করতে চুপ হয়ে যাবে। সেই লোক নিজের ভুল বুঝতে পারলো ও ফীরে গেল। সম্ভবত ইমাম শাফেয়ী (রাঃ) এরও এমন একটা ঘটনা আছে। যখন তার স্ত্রী মারা গেল, তিনি বললেন, আল্লাহ আমার স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট হন, সে ছিল এমন নারী যার সাথে আমার কোনদিনই ঝগড়া হয়নি। সবাই অবাক হয়ে বলল, এ কিভাবে সম্ভব? তিনি বললেন, যখন সে রেগে গিয়ে কথা বলা শুরু করত আমি তখন কোন প্রতিউত্তর করতাম না, চুপ থাকতাম ফলাফলে সে একাই থেকে যেত। আবার আমি যখন রেগে গিয়ে কথা বলতে থাকতাম, সে চুপ থাকত কোন প্রতিউত্তর করত না ফলাফলে আমি থেমে যেতাম। তাই আমাদের মাঝে কোনদিন ঝগড়া বিবাদ হয়নি।
কি বলতে গিয়ে কত কথা বলে ফেললাম। দুঃখিত আমি! জাঝাক আল্লাহ।
০ স্বামীর অনুগত হওয়াটাকে বর্তমানে স্ত্রীরা ইগোর পরিপন্থী বলে মনে করে (কারণ সে পড়ালেখা করেছে , ক্যারিয়ারিস্ট বা চাকরিজীবী - সে কেন স্বামীর সংসারের হেফাজত করবে আয়া বুয়াদের মত) , অথচ আমাদের শরিয়ত বলে স্ত্রীরা থাকবে স্বামীর অনুগত ।
এরা ঠিকই শরিয়ত মোতাবেক সব কিছু পেয়ে যায় কিন্তু দেবার বেলায় নারী স্বাধীনতা , পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার ধোঁয়া তুলে শরিয়তের কর্তব্য এড়িয়ে চলতে চায় । শরিয়তের বিপরীতে এরা মনুষ্য আইন খোঁজে এবং এনজয় করে ।
গাছেরও খাবে আবার তলারও কুড়াবে এই নীতিতে চলে নারীরা
মন্তব্য করতে লগইন করুন