ঈমান বৃদ্ধির জন্য সুরা কাহাফের শিক্ষা !!
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:৫৩:৫৪ সকাল
সবার জন্য শেয়ার করুন ও নিজের জন্য আমিন বলে ফেলুন ।
নবুয়তের ৫ম-১০ বর্ষে মুক্কার কুরাইশ কাফিররা ইসলাম সম্পর্কে মুসলামদের সাথে হাসি-ঠান্ডা,প্রশ্ন আপত্তি,দোষারোপ,ভয় দেখানো,লোভ দেখানো ও বিরুপ প্রচার প্রোপাগান্ডা, অপবাদের মাধ্যমেই বিরোধিতা করে আসছিল।তা ছাড়া মুসলমা্নদের উপর পূর্ন শক্তিতে মার-পিট,যুলুম নির্যাতন,দেশ ত্যাগে বাদ্য,সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারী সহ অতাচারের নাত্রা তীব্র করা হয়। তাই আল্লাহ মুসলমানদের সাহস হিম্মত বাড়ানোর মাধ্যমে ঈমান দৃঢ় করার শিক্ষা দেন এই সুরায়।
১।প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে কাফের ও মুসলমানদের শিক্ষাঃ
রাসুল সাঃ এর নবুওতের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ইয়াহুদী ও খ্রীস্টানদের ইতিহাসের সাথে যুক্ত তিনটি প্রশ্ন করে মক্কার কাফিররা।আর আল্লাহ এই প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শুধু নবুওতের প্রমান নয় তার সাথে অতীতের কাফের, তৎকালীন মক্কার কাফের, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ইসলাম বিরোধী কাফেরদের মুসলমানদের সাথে আচরনের সামঞ্জস্য দেখিয়ে দিয়েছেন।
২।তাওহীদ রেসালাত ও আখিরাতের বিশ্বাসীদের ঈমানী চেতনা দানঃ
আসহাবে কাহাফের মতো বর্তমান মুসলমানরাও ঈমানীদাবী অনুসারে প্রয়োজনে দুনিয়াবী সর্বস্ব ত্যাগ করবে তাও বাতিলশক্তির কাছে মাথা নত করবে না।
৩।আখিরাতের অবিশ্বাসী মুশরিকদের শিক্ষা দিলেন যে, এই দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবন শেষ হওয়ার পরে আল্লাহ দীর্ঘায়ু ঘুমন্ত কাহাফের মত আবার পুনর্জীবিত করা মহান আল্লাহর জন্য কোন ব্যাপার নয়।
৪।খিজির ও মুসা আঃ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন,আমাদের বাহ্যিক দৃষ্টির অন্তরালে আল্লাহর এই সৃষ্টি জগতে আমাদের কল্যানমুলক ব্যাবস্থাপনা চলছে।আমরা যাকে মন্দ অকল্যান বলে আফসুস করে বলছি , "যদি এই ভাবে না হয়ে অন্যভাবে হত তা হলে অনেক কল্যান হত"।কিন্তু আমাদের চোখের পর্দা সরে গেলে দেখা যায় যে,আল্লাহ প্রত্যেক অকল্যানেও কল্যান রেখেছেন।
৫।যুলকারনাইনের কাহিনী থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে,দুনিয়ার সামান্য ক্ষমতা কর্তৃত্ব লাভ করেই এটাকে স্থায়ী ও অক্ষয় মনে করে ইসলামের বিরূদ্ধোচারন শুরু করি।কিন্তু যুলকারনাইন এতো বড় শাসক ও দিগ্বিজয়ী হয়েও নিজের অবস্থ্যা ও আল্লাহর অকৃতজ্ঞ হননি। বরং প্রতি কাজে আল্লাহর বিধানের কাছে নতিস্বীকার ও ভরসা করেছেন।তাই ইয়াজুজ মাজুজের অত্যাচার থেকে প্রাচীর নয় আল্লাহর হুকুমের উপর তাদের বিশ্বাস স্থাপন করতে বলেছেন।
৬। কোন কার্য্যসম্পাদান করার পূর্বে আল্লাহর সাহায্য ও রহমতের প্রত্যাশী হতে হবে।ঈমানী চেতনায় আল্লাহর বিধান সকল বাধাবিপত্তির মাঝেও মেনে চলতে পারলে আল্লাহ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা দান করবেন।
রবিবগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনান ওয়ালিল মুমিনীনা ওয়াল মুমিনা-তে ওয়ালা তাযিদিযয-লিমীনা ইল্লা তাবা-রা।
অর্থ : ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে ক্ষমা করুন, আর যে ব্যক্তি আমার বাড়ীতে মুমিন অবস্থায় প্রবেশ করবে তাকে ক্ষমা করুন এবং সকল মুমিন নর-নারীকে ক্ষমা করুন। আর যালিমদের ধ্বংস বৃদ্ধি করুন’ (নূহ ২৮)।
রববানা তাক্বাববাল মিন্না ইন্নাকা আন্তাস সামীঊল আলীম, রাববানা ওয়াজ‘আলনা মুসলিমাইনে লাকা ওয়া মিন জুর্রিয়যাতিনা উম্মাতাম মুসলিমাতাল লাকা ওয়া আরিনা মানাসিকানা ওয়াতুব আলাইনা ইন্নাকা আনতাত তাউওয়া-বুর রাহীম।
অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের প্রার্থনা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ। হে আমাদের রব! আপনি আমাদের দুইজনকে আপনার অনুগত মুসলিম বানিয়ে নিন এবং আমাদের বংশধর থেকে একটি অনুগত দল তৈরী করে দিন। নিশ্চয়ই আপনি তওবা কবুলকারী ও পরম দয়ালু’ (বাক্বারাহ ১২৭-১২৮)।
বিষয়: বিবিধ
১২৩১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পবিত্র সুরা কাহাফের অন্তর্নিহিত চমৎকার শিক্ষা অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় আমাদের জন্যে তুলে ধরায় 'জাযাকিল্লাহু খাইরান ফিদ্ দারাইন' মুহতারামা আপুজ্বী!
জীবনের প্রতিটি ক্ষণে এই অমুল্য শিক্ষা স্মরণে রেখে তদানুযায়ী জীবন পরিচালনার তাওফিকের দুয়া চাই!
অনেক ধন্যবাদ।
আমি সময় পেলেই আমার প্রিয় ওস্তাদ নোমান আলী খানের ভিডিও গুলো দেখি। যেখানে সূরা কাহাফের বর্ণনা খুবই চমৎকাররূপে বর্ণিত হয়েছে। মাসাআল্লাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন