সৎ রমনী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদঃ
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০১:৪১:২৯ রাত
সৎ রমনী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদঃ
দশম পর্ব
আল্লাহ স্বামী স্ত্রীর মাঝে প্রশান্তি ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করে দিয়েছেঃ
""আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই জাতি থেকে সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীগণং যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করো এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।অবশ্যই এর মধ্যে বহু নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা-ভাবনা করে।" সুরা রুম ২১
আল্লাহ মানুষ সৃষ্টির পরিকল্পনা নিলেন ,ফেরেস্তাদের বাঁধা সত্তেও তিনি আদম আঃ কে সৃষ্টি করে জান্নাতের সর্বউচ্চ মর্যাদায় রাখলেন। কিন্তু আদম আঃ সেই অনাবিল সুখের মাঝেও একজন জীবন সঙ্গীর অভাব অনুভব করলেন।তাই আল্লাহ একজন অপরজনের পরিপুরক একজন জান্নাতী নারী সহোদর দিয়ে দিলেন। মহা বিজ্ঞানী স্রষ্টা আল্লাহ তাঁর পরিপূর্ণ জ্ঞান ও শক্তির মাধ্যমে শুরু থেকেই পুরুষ ও নারীর একটি সর্বাধিক উপযোগী ডিজাইন তৈরি করেন এবং এ ডিজাইন অনুযায়ী অসংখ্য পুরুষ ও অসংখ্য নারীর তাদের পৃথক ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য সহকারে সারা দুনিয়ায় প্রেরন করেন।স্রষ্টা নিজের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সাহায্যে পুরুষ ও নারীর জন্য এমন পরস্পরের চাহিদা, তৃষ্ণা ও অস্থিরতার অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছেন যার ফলে আমরা উভয়ে মিলে একসাথে না থাকলে শান্তি ও সুখ লাভ করতে পারব না। একটু দূরে থাকলে মনে হয় হৃদয়টা সাহারা মরুভুমি। পাশে থাকলে তা হয়ে যায় এক নিমিষেই মরুউদ্যান। আর সেই উদ্যানকে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা করে সাজানোর জন্য স্বামী স্ত্রী দুই জনের কোরআন হাদিস এর আলোকে ঈমানী এলেমী ও আমোলী যোগ্যতা থাকা একান্ত কতর্ব্য।
আল্লাহ বলেন,"যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করো এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।"
ভালোবাসা বলতে এখানে কামশক্তি ভালোবাসার (sexual love) কথা বলা হয়েছে। নারী ও পুরুষের মধ্যে এটি আকর্ষণের প্রাথমিক উদ্যোক্তায় পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ আমাদেরকে পরস্পরের সাথে সংলগ্ন করে রাখেন। আর ‘রহমত’ তথা দয়া মানে হচ্ছে এমন একটি আত্মিক সম্পর্ক, যা স্বামী-স্ত্রীর জীবনে পর্যায়ক্রমে বিকাশ লাভ করে। এর বদৌলতে ামরা দু’জনে দু’জনার কল্যাণকাঙ্ক্ষী, দু’জনের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং উভয়ের সুখে দুঃখে শরীক হয়ে যায়। এমনকি এমন এক সময় আসে যখন কামসিক্ত ভালোবাসা পিছনে পড়ে থাকে এবং বার্ধক্যে এ জীবনসাথী যৌবনকালের চাইতে অনেক বেশি অগ্রসর হয়ে পরস্পরের জন্য দয়া, স্নেহ ও মমতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে থাকে। মাঝে মাঝে মনে হয় পুরান চাল এর ভাতে বাড়ে ।সেই রকম যেমন যোবন থেকে ব্যার্থক্যে মায়া মমতা বেশি ।
মানুষের মধ্যে শুরুতেই যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল তাকে সাহায্য করার জন্য স্রষ্টা মানুষের মধ্যে এ দু’টি ইতিবাচক শক্তি সৃষ্টি করে দেন। এ অস্থিরতা তো শুধুমাত্র শান্তির প্রত্যাশী এবং এর সন্ধানে সে নারী ও পুরুষকে পরস্পরের দিকে নিয়ে যায়। এরপর এ দু’টি শক্তি অগ্রসর হয়ে আমাদের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের এমন একটি সম্পর্ক জুড়ে দেয় যা দু’টি পৃথক পরিবেশে লালিত আগন্তুকদেরকে একসাথে মিলিয়ে গভীরভাবে সংযুক্ত করে দেয়। এ সংযোগের ফলে সারা জীবনে আমরা মাঝ দরিয়ায় নিজেদের নৌকা একসাথে এক পাল তোলে চালাতে থাকি। একথা সুস্পষ্ট, কোটি কোটি মানুষ তাদের জীবনে এই যে ভালোবাসা ও দয়ার অভিজ্ঞতা লাভ করছে এগুলো কোন নিরেট বস্তু নয়। এগুলোকে ওজন ও পরিমাপ করা যেতে পারে না। মানুষের শারীরিক গঠনে যেসব উপাদানের সমাবেশ ঘটানো হয়েছে তাদের মধ্যে কোথাও এদের উৎস চিহ্নিত করা যেতে পারে না। কোন ল্যাবরেটরীতেও এদের জন্ম ও বিকাশ সাধনের কারণসমূহ অনুসন্ধান করা যেতে পারে না। এছাড়া এর আর কোন ব্যাখ্যাই করা যেতে পারে না যে, একজন প্রাজ্ঞ স্রষ্টা স্বেচ্ছাকৃতভাবে একটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে পূর্ণ সামঞ্জস্য সহকারে মানুষের মধ্যে তা সংস্থাপন করে দিয়েছেন।
আমি বাবা মায়ের সেই ছোট্ট মেয়ে নইঃ
" আর যারা মু’মিন পুরুষ ও মহিলাদেরকে কোন অপরাধ ছাড়াই কষ্ট দেয় তারা একটি বড় অপবাদ ও সুস্পষ্ট গোনাহর বোঝা নিজেদের ঘাড়ে চাপিয়ে নিয়েছে।" সুরা আহযাব ৫৮
শিশু কিশোরী যুবতী মহিলা বৃদ্ধা এই সিড়ি গুলো পার করার সময় একজন নারী বিভিন্ন সিঁড়ি অতিক্রম করে থাকে । রংধনুর রঙের মত নানান রুপে রঙে সেজে সেই নারী কখন কন্যা /জায়া /জননী/দাদী/নানী সব রূপে হয়ে যায় অপরূপা । কন্যা হয়ে সে বাবা মায়ের রাজকন্যা ,সেই কন্যা বাবা ভাই মায়ের চক্ষু শীতলকারীনি ও হৃদয় ঠান্ডাকারিনী হয়ে যায়।
হাদিসে রাসুল সাঃ বলেছেন,আল্লাহ যে ব্যাক্তিকে কন্যা সন্তান প্রদানের মাধ্যমে পরীক্ষা করে থাকেন,তিনি যদি তাদের সাথে সুন্দর আচরন,তাদের কে সঠিক ভাবে লালন পালন করে,তবে তাঁরা জাহান্নাম থেকে বাচার জন্য পর্দা স্বরূপ হয়ে যাবে।"বুখারী হা/১৩২৯,মুসলিম হা/৪৭৬৩
সৎ রমনী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদঃ
যুবতী হয়ে সে হয় কোন রাজকুমারের হৃদয় প্রাসাদের রাজরানী।রাজা করে দুনিয়া শাসন আর সেই রাজাকে প্রশান্তির অমৃতসুধা পান করার রানী। দুনিয়া জুড়ে দেখেছ যত কিছু কল্যানকর অর্ধেক তাঁর করেছ নর আর বাকী অর্ধেক বুদ্ধি দিয়ে প্রজ্ঞা দিয়ে করায়েছে নারী। এই নারী একজন পুরুষের জন্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং উত্তম পুরুষ হিসাবে জান্নাতের সার্টিপিকেট প্রদানকারীনি।
রাসুল সাঃ বলেছেন , যে নিজ পরিবারের ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে নিহিত হন,সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।" তিরমিযি হা/১৩৪১,নাসাঈ হা/৪০২৭
সৎ রমনী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
আবুদুল্লাহ বিন আমর রা বর্নিত রাসুল সাঃ বলেছেন,"পৃথিবী হচ্ছে ভোগের বস্তু ।আর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে নেক রমনী"।মুসলিম হা/২৬৬৮
একজন স্বামী স্ত্রী উভয় উভয় কে সন্মান প্রদান করবে। দরদী মনের পরিচয় বহন করবেন। তাতেই পরিবার প্রতিবেশি সমাজ রাষ্ট্রে শান্তির বন্যা বয়ে যাবে।কারন একটি দেশের শান্তি অশান্তির উৎস এই পরিবারের স্বামী স্ত্রীর বন্ধন। এই বন্ধনের উপর দুনিয়া ও আখিরাতের জান্নাত জাহান্নাম নির্ভর করে ।
একজন নারী যখন মা হন।তখন আল্লাহর সমস্ত হক পালনের সাথে সাথে সেই মায়ের সাথে সদ্ধব্যবহার করা ওয়াজিব হয়ে যায়। আল্লাহর সাথে শিরক করা যেমন হারাম তেমনি মায়ের সাথে নাফরমানী ও অসাদ্বাচরন করাও হারাম। মর্যাদার দিক থেকে কে বেশী মর্যাদার অধিকারী মা। এখানে রাসুল সাঃ ৩ বার মায়ের নাম আর একবার বাবার নাম নিলেন।
বুখারী হা/৫৫১৪ মুসলিম হা/৪৬২১
নারী যখন দাদী /নানী হন তখন তিনি খেদমত,সদ্বব্যবহার্,সন্মানিতা ও সর্বশ্রদ্ধ্যেয়া হয়ে অধিক মর্যাদাবান হয়ে যান । সন্তান নাতি নাতনী আত্নীয় স্বজন সবার উচিত এই বৃদ্ধার আদেশ মতামতের অগ্রাধিকার সকল কর্তব্য পালন করা।
ইসলাম নারীদের মুক্তি দিয়েছে মুক্তিঃ
আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগে নারীদের জীবন্ত কবর দেওয়া হত।হিন্দু সমাজে পুরুষ মারা গেলে সেই পুরুষের সাথে জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হত। আর ইসলাম নারীকে সব ক্ষেত্রে অধিকার দিয়েছে। শিক্ষা অর্জনে , সম্পদ উপার্জনে , সম্পদের মালিকানা পাবে বাবা/ভাই /স্বামী/সন্তান থেকে,বেচাকেনা /ব্যাবসা বানিজ্য করতে পারবে, বিবাহের প্রস্তাবদানকারী পুরুষ এর প্রস্তাবকে গ্রহন বা প্রত্যাখ্যান করার অধিকারও নারীর রয়েছে। ইসলামী সমাজে একজন নারীর মর্যাদা সর্বাধিক বেশি প্রদান করে থাকে।
বিষয়: বিবিধ
১৯৪৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ বলেন,"যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করো এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।"
প্রতেকটা লাইনই বাধিয়ে রাখার মত। জাজাকাল্লাহ অত্যন্ত সুন্দরভাবে নারী পুরুষের বন্ধন উপস্থাপন করেছেন। আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন
মন্তব্য করতে লগইন করুন