সংসারের সুখ- শান্তি ও নির্ভর করে ২জনের উপর।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:০০:৫৪ দুপুর
সংসারে কার ভুমিকা বেশি? স্বামীর/বাবার নাকি স্ত্রীর/মার ?
চতুর্থ--পর্ব
আমার প্রাবাসী ছেলের কথা, মা প্লিজ তুমি কোরান হাদিস নিয়ে লিখ। এমন কিছু নিয়ে লেখ যেন মানুষ ইসলামের সঠিক শিক্ষা পায় ।তুমি মা, কি যে স্বামী স্ত্রী নিয়ে লিখা শুরু করলে বুঝিনা।"
তখন ছেলেকে বললাম , সমাজের একক ইউনিট হল পরিবার ।আর বাংলাদেশে প্রায় পরিবারে নদীর পাড় ভাঙ্গন ের মত ইউরোপীয় আর ভারতীয় সভ্যতা আর সংস্কৃতির যে তীব্র ঢেউ এসে বাচ্ছাদের সহ সংসার গুলো ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাচ্ছে।যার উত্তাল তরঙ্গে জলোচ্ছাসে ভেসে যাচ্ছে ছোট বড় দেশি প্রবাসীর পরিবার গুলো। আগে যেসব পরিবারে স্বামী স্ত্রীর আনন্দের হাতেরতালিতে মুখরিত ছিল।এখন সেখানে বিউগল সুরে বেজে আসছে তালাক আর তালাকনামার খসখসানিতে কানে তালা লেগে যায়।স্বামী স্ত্রী কেউ কাউকে হাতে মারে যেমন তেমন মুখে মারে শত রকম।রাত কারো কাটে গাছতলায় কারো কাটে পাঁচ তলায়।
সংসারের সুখ- শান্তি ও নির্ভর করে ২জনের উপর।
জীবন মানেই যুদ্ভ ।জীবন যুদ্ধ মানে ভালবাসার হার জিতের যুদ্ধ।এই যুদ্ধে কেউ মরেও না আবার কেউ বেঁচে আছে তাও স্বীকার করে না।কারন আশানুরুপ ফলাফল কেউই পায় না।কারন আশা থাকে আকাশচূম্বি।সেই খালিস্থান পুরন করার জন্য হাজার কিলোমিটার বেগে ছূটতে থাকে দেহ গাড়ি টা।তাই সুরা তাকাসুরে আল্লাহ বলেন ,"বেশী বেশী এবং একে অপরের থেকে বেশী দুনিয়ার স্বার্থ লাভ করার মোহ তোমাদের গাফলতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।এমনকি (এই চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে) তোমরা কবর পর্যন্ত পৌঁছে যাও।"
আল্লার রাব্বুলআলামী পুরুষকে দায়িত্ব পালন করার মতো দুটি যোগ্যতা দান করেছেনঃ-
১/ তাকে নারীর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে।২/ পুরুষ নারীর জন্য নিজের ধন-সম্পদ ব্যয় করে। স্ত্রীদের ওপর পুরুষদের একটা বিশেষ মর্যাদা রয়েছে ( সূরা বাকারাঃ২২৮)।
পুরুষ হচ্ছে নারীর অভিভাবক, কর্তা, পরিচালক ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি।পুরুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হয়েছে , পুরুষ নারীর চাইতে অধিক শক্তিশালী। তুলনামূলকভাবে পুরুষদের মেধা বুদ্ধি প্রজ্ঞা বেশী।সে নারীর তুলনায় অধিক সাহসী। তার কথার জোর অনেক বেশী। শারিরীক শক্তির পাশাপাশি মানসিক শক্তির দিক দিয়েও দ্বিগুন বেশী।জীবন ধারনের জন্য অর্থ উপার্জনে পুরুষ নারীর চেয়ে বেশী উপযোগী।
আদর্শ সমাজের জন্য আদর্শ পরিবার,আর আদর্শ পরিবারে গড়ার জন্য আদর্শ নর-নারীর আদর্শ মননের হওয়া প্রধান শর্ত।পুরুষ হল সংসার নামের বৃত্তের পরিধি আর নারী হল সেই সংসার বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু বা প্রান।সংসার নৌজানের পুরুষ হল কান্ডারী। নারীরা হল মাস্তুল/পাল। অনুকুল প্রতিকুল যে কোন অবস্থ্যায় একে অন্যের সম্পুরক। নারীরা রাষ্ট্রের সমাজের পরিবারের অহংকার ও অলংকার। নারীহীন সমাজের কোন মূল্য নেই। নারীরাই পরিবার, সমাজ ও দেশ গঠনে অগ্রণি ভূমিকা রাখতে পারে। নারীদের বাদ দিয়ে দেশ ও জাতির ভাগ্য পরিবর্তন যেমন সম্ভব নয়। নারীদেরকে সংসারমূখী করে গড়ে তোলার আগে তাদেরকে নৈতিক শিক্ষায় বলিয়ান করতে হবে। সাথে সাথে নারী পুরুষের মাঝে ইসলামী সচেতনা সৃষ্টি করতে পারলে সমাজের অশান্তি অনেকাংশে কমে যাবে। ইসলামের বিধান সমূহ মেনে চললে স্বামী স্ত্রী যেমন সম্মান বাড়বে তেমনি পারিবারিক নির্যাতনও কমে যাবে। নারী নির্যাতন বন্ধ করার জন্য ইসলামের বিধান প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই।
সংসারে কার ভুমিকা বেশি? স্বামীর/বাবার নাকি স্ত্রীর/মার ?
পারিবারিক বিজয় মানে সমাজের বিজয়। এ বিজয়ে পরিবারের সব চেয়ে বেশী আনন্দিত হয় নারীরা। সংসারে কার ভুমিকা বেশি? স্বামীর/বাবা নাকি স্ত্রীর/মা ।এখানে কারো চেয়ে কারো ভুমিকা কম নয়।তবে একটা সংসার টিকে থাকার জন্য স্ত্রীর সবরের গুন বেশি থাকে বলেই নেক্কার স্ত্রীকে পৃথিবীর চেষ্ট্য সম্পদ আর মায়ের পায়ের নীচে জান্নাত ৩বার বলা হয়েছে।একজন নারী খেয়ে না খেয়ে স্বামী সন্তানের দিকে চেয়ে সব যাতনা বেদনা সহ্য করে যান।
আমার স্বামী জাপানে রুজি করেছেন দুই হাতে আর আমি দেশে যৌথসংসার এর রান্নাবান্না সহ সবার মন বুঝে চলা, ছেলে দের লালন পালন পড়ালিখা ও নিজের ইজ্জত আবরু রক্ষা করে নিজের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা আলহামদুলিল্লাহ সব করেছি।হাড়কাপুনি পরিশ্রমেও অনেকের মুখে হাসি দেখিনি।বাবার বাড়ির কাউকে এমন কি মাকেও স্বামীর সংসারের সুখের খবর ছাড়া কষ্টে আছি তা বলিনি। কারন তাতে সমস্যার সমাধান হয় না আরোবাড়ে।তাছাড়া আমার স্বামীর সন্মান কমে যাবে আর তাঁরা ভাববে আমি ছোটই রয়ে গেছি।আমার সংসার করার মত যোগ্যতা হয় নাই।
স্বামী যখন ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্র তখন ৩ ছেলের বাবা মা আমরা। অভাবের সংসারে ভালবাসা জ্বানালা দিয়ে পালানো তো দূরে থাক হৃদয়মাঝা্রের বাহিরেও আসার সাহস পায়নি।প্রীতি ও প্রেমের পূণ্য বাঁধনে আমরা পরস্পরে জান্নাতী ভালবাসায় ভরপুর ছিল তখন আমাদের কুঁড়ে ঘরে।এমন বাহুবন্ধনে ভালবাসা ছিল ১০টাকার সংসার খরচে যেন জান্নাতী আনন্দ ছিল ।এখন ১০০০০টাকার বাজারের সেই ১০ টাকার বাজারের মজা নেই।বিপদে আপদে অভাব অনটনে অনেক সময় স্ত্রীর শক্ত মনোবল স্বামীর কোমরের আর মনের জোর বাড়ায়ে দেয়।আমার মা বলতেন বাবার বাড়িতে রাজকন্যা হলেও সন্মানে ভিখারীনি ।স্বামীর সংসারে অভাবে থাকলেও তোমার সন্মান রাজরানীর চেয়ে বেশি।তাই আমার কাছে মনে হত আমি সব সময় রাজকন্যা না হতে পারলেও রাজরানী হয়ে আছি ।আলহামদুলিল্লাহ
"স্ত্রী যদি উত্তম চরিত্রবতী
এবং মিষ্টিভাষিনী হয়,
তবে সুন্দর চেহারা ও বিশ্রী
চেহারার মধ্যে পার্থক্য করো না।
কারণ উত্তম ও মন আকর্ষনীয় স্ত্রী সুন্দর স্ত্রী চেয়ে উত্তম"।
----- শেখ সাদী ( রহঃ)
তাই ইসলাম বলে অবহেলিত নারীরা কখনো সমাজের উন্নয়ন বা নৈতিকতা সম্পন্ন সমাজ ও পরিবার গঠনে আমরা অগ্রণি ভুমিকা পালন করতে পারব না। একটি আদর্শ উন্নয়নশীল ও আধুনিক পরিবার গড়ার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এবং গনতান্ত্রিক মনোভাবের মাধ্যমে কাজ করে াল্লাহর সাহায্য চাওয়া উচিত।এতে ইনশাল্লাহ আমরা সফলতা লাভ করতে পারব।
আমার স্বামী আমার কাছে আমার সন্তান ও পৃথিবীর সকল প্রিয় থেকেও বেশি প্রিয়তম।
তৃতীয় পর্ব
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=423764494479351&set=a.111339602388510.1073741828.100005374124575&type=3&theater
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তো জান্নাতী মধুর সম্পর্ক ।(দ্বিতীয় পর্ব )
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=423140451208422&set=a.111339602388510.1073741828.100005374124575&type=3&theater
একজন আদর্শ স্বামীর গল্প
আমার জীবনের প্রথম লেখা আমার জীবন সাথীকে নিয়ে ......প্রথম পর্ব
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=422968957892238&set=a.111339602388510.1073741828.100005374124575&type=3&theater
বিষয়: বিবিধ
১৬৫১ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ভালো লেগেছে। জাযাকিল্লাহ খাইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন