অনন্যার জীবন গল্প থেকে অন্যান্যরা শিক্ষা নাও
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৮ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:৩০:৪৭ রাত
অনন্যার জীবন গল্প থেকে অন্যান্যরা শিক্ষা নাও
আজ আপনাদের সাথে অনন্যার জীবনের গল্প শেয়ার করবোঃ
মেয়েটির নাম অনন্যা ।সে অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়াবস্থ্যায় তানজিল নামের এক ছেলের সাথে তাঁর প্রেম হয় ।তঁখন ছেলেটি MBA Complete করে বেকার।মেয়ের বাবা তানজিলকে মোটেও পছন্দ করতেন না ।তাই তাদের সম্পর্কটা বাসায় কেউই মেনে নিতে রাজি হয়নি।কারন সবাই নাকি বলে ছেলে ভালো নয়।সবাই অনন্যাকে অনেক বুঝাতো এই সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলার জন্য।কিন্তু কে শুনে কার কথা, প্রেমে এতই অন্ধ ছিল যে,সে সবার অজান্তে ছেলের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করত।
হঠাৎ একদিন হুট করে অনন্যার বিয়ে ঠিক করে ফেললো বাসা থেকে।তাকে কিছু না জানিয়েই নিয়ে যাওয়া হল তাঁর নানুর বাড়িতে।সেখানে যেয়ে বিয়ে বাড়ি সাজানো হচ্ছে ।তাঁর আম্মুকে জিজ্ঞেস করলে বুঝতে পারে তাঁর বিয়ে।ওই মুহূর্তে অনন্যার আর কোন রাস্তা খোলা ছিল না পালানোর মত।তাই বাধ্য হয়ে মামাতো ভাই সিয়াম কে বিয়ে করল।সিয়াম অনন্যাকে ছোট বেলা থেকেই খুব পছন্দ করতো!বাসর রাতে খুব কান্না শুরু করল অনন্যা। তার স্বামী তাকে জিজ্ঞেস করলো সে কেন কান্না করছে? সে তাকে সব খুলে বলল তানজিলের ব্যাপারে।তাকে এটাও বলল যে, কোন দিন তাকে আমি ভালবাসতে পারবো না।তাই তাকে ভালবাসা বা তার সাথে সংসার করা তাঁর ধারা সম্ভব না।সব শুনে সিয়াম বললো, যত দিন না ুনন্যা তাকে মন থেকে মেনে নিতে না পারবে ততদিন সে তাঁর কাছে কোন স্বামীর অধিকার ফলাবে না!
বিয়ের ২২ দিন পর অনন্যা তানজিলের কাছে পালিয়ে চলে যা্য,তানজিলই মেয়ে টিকে বলেছিল, তুমি আমার কাছে চলে আসো।আমরা আবার নতুন করে সংসার শুরু করবো!ওদিক দিয়ে সবাই আমাকে খোজা শুরু করলো।তাঁরা ঢাকা থেকে চলে গেল সিলেটে গিয়ে বিয়ে করে নিল।সেখানে তাঞ্জিলের বন্ধুর বাসায় যেয়ে উঠল। তাঁরা একটা বাসা ভাড়া করে সেখানে আরম্ভ করল নতুন সংসার।১ মাস পর অনন্যা প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিল।৩ মাস পর অনন্যার মা তাকে ফোন দিয়ে জানালো,তার বাবা বলেছে বাসায় যেতে,তার মানে সবাই তাদের মেনে নিয়েছে, ক্ষমা করে দিয়েছে।
বিয়ের ১ বছর যেতে না যেতেই তানজিল অনন্যার সাথে খুব দুর-ব্যাবহার করছে,মাঝে মাঝে রাতে বাসায় Drinks করে ফিরে,ঝগড়ার সময় গায়েও হাত তোলা শুরু করলো।একদিন রাতে তানজিলের দুইটা বন্ধুকে বাসায় নিয়ে আসলো । অনন্যাকে বললো, ওরা সবাই আজ রাতে এখানেই থাকবে আর Drinks করবে ,সে যেন ওদের ভালো করে আপ্যায়ন করে , ওরা যা বলে তাই তাই যেন করে।ওদের মনের সব ইচ্ছে যেন পূরণ করে।ওরা যদি সন্তুষ্ট না হয় তাহলে মেয়েটির খবর আছে।মেয়েটির কাছে ব্যাপারটা মোটেও সুবিধা মনে হয়নি।
রাত ১ টার সময় তানজিল ওর দুই বন্ধুকে অনন্যার Bed রুমে পাঠিয়ে দিলো আর ও শুয়ে রইল ড্রইং রুমে।তারা এসে তাকে জোর করে যা যা করা দরকার তার সবকিছুই করলো।সে তানজিলকে অনেক ডাকল, কিন্তু ও কোন সাড়াই দিলো না।কারন এগুলো ইচ্ছে করে করলো সব! জেধ করাতে আবার ওর মাথা গরম হয়ে গেলো…রেগে যেয়ে ও মেয়েটির বাম কানে এমন জোরে একটা চড় মারলো যে, সাথে সাথে গমগম করে রক্ত বার হতে লাগলো আর সে অজ্ঞান হয়ে গেল…
Treatment এর পর একটু সুস্থ হল এবং সেখানে জানতে পারল সে তিন মাসের প্রেগন্যান্ট,।বাসায় ফিরে অনব্যাকে প্রেসার দিলো বাচ্চা নষ্ট করে ফেলার জন্য।সে কিছুতেই রাজি হল না…প্রথম সন্তান কেউ কি পারে এভাবে নষ্ট করতে ?সে তো মা !!!এক পর্যায়ে খুব ঝগড়া আরম্ভ হয়ে গেল…ও এতই অমানুষে পরিনত হল যে,মেয়েটির পেটে লাথি মেরে ও Baby টাকে শেষ করে দিল।
কুত্তার লেজে নাকি ঘি মাখলেও সোজা হয় না ।তানজিল আবার Drinks করা শুরু করলো
বাসায় ফিরে অনেক রাত করে, সে কিছু বললেই গায়ে হাত তুলে।একদিন তুমুল ঝগড়ার সময় ও স্ত্রীকে লোহার একটা রড দিয়ে মাথায় বাড়ি দিলো, সাথে সাথে মাথা ফেটে রক্তপাত শুরু হলো
ওই অবস্থায় ও তাকে রেখে পালিয়ে গেলো।বাসা থেকে চলে যেয়ে মেয়ের বাবার বাসায় ফোন দিয়ে বললো ,মেয়েটি সিঁড়ি থেকে পরে যেয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছে"।আবার হসপিটাল আবার অনন্যা অন্তঃসত্বা। এই দিকে থানায় মামলা করল অনন্যার বাবা ।এর ১২ দিন পর তানজিলকে পুলিশ গ্রেফতার করলো Attempt To Murder মামলায় ওকে থানায় বন্দী করা হলো।পুলিশ তার থেকে জবান নেয়ার জন্য আসলো,তার কথার উপরই Depend করছে এখন তানজিলের ভবিষ্যৎ।সেখানেও সে পারল না ওর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে কারন ও যতই অন্যায় করুক, ও তো মেয়েটির ভালবাসার স্বামী।তাই জামিনে মুক্তি পেয়ে গেলো তানজিল।আবারো ক্ষমা চাওয়ার জন্য আসলোাে ।
এইবার অন্য অনন্যাকে পেল তানজিল। যে তাকে তালাকনামা.দিয়ে মুক্ত করে দিল ।কিন্তু তানজিল মুক্ত হয়ে হয়ত স্বাধীন হয়ে আবার আরেক মেয়ের কপাল ভাঙ্গবে একই ভাবে।কিন্তু অনন্যার কি হল
অনন্যার জীবন গল্প থেকে অন্যান্যরা শিক্ষা নাও
১।অনন্যা সিদ্ধান্ত নিল, এটা কোন জীবন নয় ,ওকে এখন ক্ষমা করে আবার ওর কাছে ফিরে গেলে
ও এমনই করবে না তার কোন গ্যারান্টি নেই।তার চেয়ে একা থাকা অনেক ভালো।কিন্তু তাঁর গর্ভের সন্তানের কি হবে? আর কেউ কি হবে তাঁর অভিভাবক।তার পরিচয় কি হবে?
২।বাবা মায়ের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে যে ভুল করে ভুলের মাশুল দিতে হয় সব সন্তানকে। তাতে সন্তানও সুখি হয় না আর বাবা মাও সুখে থাকে না । বাবা মা যা, বলেন সন্তানের ভালোর জন্যি বলেন। কিন্তু সন্তাওরা তা আবেগের তাড়িত হয়ে বুঝে না। মা বাবার মনে কষ্ট দিয়ে কেউ জান্নাতি সুখ দুনিয়াতেও পায় না আখিরাতেও পায় না।কারন তারা কখনো সন্তানের খারাপ চান না।
৩। বাঘের ক্ষুদা থেকে বাঘিনী সন্তান রক্ষা করতে পারে ।কিন্তু অনন্যা মা হয়েও হিংস্রনরপশু থেকে তাঁর সন্তান রক্ষা করতে পারে নাই। কারন ইসলামের জ্ঞান না থাকলে মানুষ পশুর চেয়েও অধম হয়ে যায়।
৪।ইয়ে করে বিয়ে বসলে নিজের জান মান ইজ্জত আবরু সবকিছু শয়তানের হাতে চলে যায়।তাই নিজে স্ত্রীকে কে দৈহিক ভোগ করার পরে আবার সেই স্ত্রীকে বন্ধু দিয়ে ভোগ করাতেও কুন্ঠাবোধ হয় না । যা পশু পাখিও করে না ।
৫। নিজে মরা থেকে বেচে গেলেও কথায় আছে পাপে বাপেরে ছাড়ে না।বিয়ের আগের প্রেম হারাম। পর্দার লঙ্গন,অশ্লীলতার জন্ম,যার ফলাফলে বহু জীবন অংকুরেই হত্যা করে ডাস্টবিন নর্দমায় ফেলে।
৬।মাঝে থেকে অন্য আরেকটা ছেলেকে বিয়ে করে ঠকাল।যে আমাকে কোন কিছুর বিনময় ছাড়াই ভালবাসতো।তার নিষ্পাপ মনের অভিশাপ থেকে অনন্যার বিবেক তাকে রক্ষা করবে কোনদিন।
৭।সিয়াম তো আর বিয়ে করেও নাই আর জীবনে করবেও না। তা হলে আরেকটা জীবন কি দুঃখের সাগরে ভেসে ভেসে এক সময় ডুবে যাবে আর অস্তগামী সূর্যের মত আধার নেমে আসবে সেই পরিবারে।
৮।আল্লাহর উপর ভরসা না করে মানুষকে খুব বেশি বিশ্বাস/ভরসা করল,অন্যকে কষ্ট দিলে, কোরানের আদেশ না মানলে,আর বাবা মায়ের কথা না শুনলে আল্লাহ তাদের উপর নারাজ হয়।তাদের উপর থেকে আল্লাহর রহমত উঠে যায়। তখন তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাত দুই টাই অশান্তি বয়ে আনে। ইসলামে আছে সকল কালের মানবতার মুক্তির সমাধান।
অনন্যা এখন অন্যরকম একটি জীবন চায়ঃ
সবাই একটু পরামর্শ দিন।
অনন্যা এখন বুঝতে পারছে না তার এখন কি করা উচিত?
সে কি তানজিলের Baby নিয়ে ওর কাছে আবার যাবে ?
নাকি সিয়ামের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবার ফিরে যাবে ?
আর নাকি Baby নিয়ে জীবনের বাকি সময় একাই পাড় করে দিবে ?
কি করলে সে আর তাঁর বাচ্চা দুই জনই ভালো থাকবে ?
দুই জনই এখন তাঁর ডিভোর্স করা স্বামী?
আল্লাহ একটা উত্তম পথ দেখাও এই নিষ্পাপ শিশুর উছিলায় এই মাকে ।আর কোন মেয়েকে এই রকম বিপদগামী করো না। সব স্বামীর মাঝে স্ত্রীর জন্য খাস রহমত দাও।
বিষয়: বিবিধ
২২২৪ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১। বাবার সংসারে চিরকাল থাকতে পারবে না। তারাও বোঝা মনে করবে।
২। ১ম স্বামীর কাছে যাওয়ার কোন মানেই নাই। সে কেন তাকে গ্রহণ করবে? চিরকাল ওই স্বামীর মনে কষ্ট থাকবে। অনন্যা একটা বাসী খাবার।
৩। ২য় স্বামীর ঘরে গেলে সে তার আগের কার্যকলাপই করতে থাকবে।
তাই অনন্যার উচিত এমন একজনকে বিয়ে করা যার পূর্বের স্ত্রী সন্তান ছিল, কোন কারণে বর্তমানে স্ত্রী নাই বা সন্তান আছে।
(যেমন: ইলিয়াস কাঞ্চন ও দিতি)
অনন্যার প্রথম কর্তব্য আল্লাহতায়ালার কাছে আত্মসমর্পণ করা!
এর পরে নিজের ও সন্তানের জন্য উত্তম ফায়সালার আবেদন করা!
আল্লাহতায়ালা সূরা তালাক্ব-এ বিস্তারিত নির্দেশনা দিয়েছেন!!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকিল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন