স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তো জান্নাতী মধুর সম্পর্ক ।(দ্বিতীয় পর্ব )

লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৩ নভেম্বর, ২০১৫, ১০:৫৪:৫৯ রাত



শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু .

আর একটা মেয়ে তো বিয়ের মেহেদী দিয়ে হাত সাজায় , আর গহনা আর লাল বেনারোশাড়ী দিয়ে নিজেকে সাজায় , তার সাথে সাথে জীবন নামের মহা সাগর পারাপার হবার খেয়া নৌকা টা সাজায় হৃদয়ের বাগানের ভালবাসার লাল গোলাপ গুলো দিয়ে । আর বাসর ঘরে গোমটা পরা নব বধু অপেক্ষায় থাকে কখন তার মন মাঝি এসে সেই জীবন তরীর দায়িত্ব বুঝে নিবে ।

ভালবাসার সেতু বন্ধন হিসেবে আসে কোল ঝুড়ে চাদের মত ফুটফুটে সন্তান । কত স্বপ্ন আর আশা ভরসা গিরে রাখে সেই মা বাবা কে । কিন্তু একটা মেয়ে একজন পুরুষের সাহায্য সহযোগীতা ছাড়া তার স্বামীর সংসারের অনেক কিছুতে নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে না । কারন এর উপর কোন মেয়ের পূর্ব অভিজ্ঞতা বা ডক্টরেট ডিগ্রী করা থাকে না । কেউই পানিতে নামা ছাড়া সাতার কাটা শিখতে পারে না । নামার পর কোন সুমিং শিক্ষক একটু দেখায়ে দিলে দুষিত পানি আর বেশি খেতে হয় না ।

অনেক সময় আমরা মেয়েরা স্বামীদের ভালবাসা পাবার জন্য নিজেদেরকে উজ়াড় করে দিতে বা হাজার বার মরতেও রাজি । কিন্তু ভালবাসা মানে হল সেক্রিফাইজ আর কম্প্রোমাইজ ।সেই ভালবাসার জন্য অনেক কিছু নয় একটু খানী সেক্রিফাইজ করে একটু শান্তির জন্য ধৈর্য ধরতে রাজি হই না । এমন কি নিজের কামনা বাসনা আর শখের জন্য স্বামীর আর ব্যয় বা তার সুবিধা অসুবিধার কতা মাথায় আনতে নারাজ হয়ে যাই । তিনি কিভাবে তা আনছেন বা হালাল হারাম এর কোন খেয়াল করি না । নিজের ও নিজের আত্নীয় স্বজনদের দিকে বেশি খেয়াল করে বেচারা পুরুষ এর উপর অমানুবিক জুলুম করে ফেলি।স্বামীর পক্ষের আত্নীয় দের কে পাত্তাই দেইনা বা দিলেও দায় সারা ভাবে । যা সত্যি বেমানান।আর এই দুই চোখা নীতি থেকে মনোমালিন্যের সুত্রপাত শুরু হয়।

তালি দিতে যেমন দুই হাত লাগে তেমনি কম্প্রোমাইজ করতে দুই জনেরই কিছু ছাড়তে হয়।একটা বহুতল ভবন নির্মানের সময় কিছু ইট এর ত্যাগ বা ভাঙ্গতে হয় বলেই বাসভবন টার এত সুন্দর কর্ণার গুলো বানানো যায়। আমাদেরকেও একটা জান্নাতী পরিবেশের জন্য আমার মনে হয় মেয়েদের ত্যাগ করার মন টা বেশি উদার থাকা উচিত । সন্দেহপ্রবন মন কারো থাকা উচিত নয় । বলা বাহুল্য আমার ভালবাসার উপর আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো বলে আমি ভাবতাম যে, আমার স্বামী যখন বিদেশে ছিল তখন সে আমারই আছে ইনশাআল্লাহ আমারই থাকবে। আজ সে একজন আইনপেশার লোক যেখানে প্রায় অর্ধেক বেপর্দার মেয়ে । আমার তাতে কি আসে যায় । আমার ভালবাসার উপর আমার দৃঢ় বিশ্বাস ইনশাল্লাহ সে হাজার ব্যস্ততার মাঝেও সে আমার কথাই ভাবছে ।ছেলের বউ কে দেখান, “দেখ শারমিন ,তোমার মামনির এই ছবি টা ৩০ বছর থেকে আমার মানিব্যাগে থাকে।ব্যাগ পাল্টাই কিন্তু ছবি পাল্টাইনা ।কারন ব্যস্ত আর ক্লান্ত সময় এই ছবি টা আমাকে প্রেরনা দেয় । আলহামদুলিল্লাহ ।আজ বলছেন, তার চেম্বার টা এত সুন্দর করে সাজালো আর আমি ছাড়া অনেকের দেখা হয়েছে। কিন্তু আমার যে একটাই শখ, সে জান্নাতুল ফেরদাউসে ইনশাল্লাহ যে চেম্বার পাবে আমি সেখানে তার পাশের আসনে যদি একটু ঠাই পাই ।আমার খুব কষ্ট লাগে যখন দেখি বা শুনি মেয়েরা তাদের স্বামীর গায়ে কেরোসিন ডেলে পুড়িয়ে মারে বা স্বামীর উপর রাগ করে সন্তান সহ আত্নহত্যা করেন।তখন খুব ভাবি যে, সবুজ বাংলার বুকের লালশাড়ি পরা সদা সাদা বধুয়ারা আজ এত ক্ষিপ্ত হল কেন?

রাসুল সাঃ বলেছেন,”যে মহিলা পাচ ওয়াক্ত নামায নিয়মিত আদায় করবে, রমজানের রোজা রাখবে, নিজের ইজ্জত আবরুর হেফাজত করবে এবং স্বামীর অনুগত থাকবে । বেহেশতের যে কোন দরজার দিয়ে প্রবেশ করার অধিকার তার থাকবে। (মিশকাত)

আমি বলবো না এখানে মেয়েদের সব দোষ আবার আমি এটাও বল না শুধু ছেলেদের দোষ।

আমাদের শ্রদ্ধেয় পুরুষ ভাইদের মাঝেও অনেকে আছেন স্ত্রীকে সন্মান বা তার মন বলতে যে একটা হাড় বিহিন মাংসপিণ্ড আছে তা মানতে চান না। মনে হয় তারা কাজের মহিলাদের থেকেও খারাপ। তবে যারা আল্লাহকে ভয় করেন তাদের কথা ভিন্ন। সুন্দরী স্ত্রীকে প্রথমে পর্দার বেপারে তাগিদ না দিয়ে বরং বন্ধুদের সামনে নিয়ে দেখাতে বেশি আনন্দ পান। তারাই পরে স্ত্রীদের সন্দেহ করা শুরু করে। আর সব কিছুতে এর জ্বাল উঠাতে দেরি করেন না। আত্নীয় স্বজনের সামনেও স্ত্রীর মরা বা জীবিত মা বাবা তুলে গালি দিতে দেরি করেন না। যা সহ্য করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আর ছোট বড় ঝামেলা গুলো দুই জন কেই মন থেকে মুছে একে অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত।আর এতেই আসলে স্বামী স্ত্রীর মনোমালিন্য মিঠে যায়। দুই জনের একজনেও যদি ভাবেন যে আমরা সামান্য এই কয় দিনের জন্য একসাথে আছি।আমার স্বামী কি ফেরাউন এর চেয়ে বেশি খারাপ? যে খারাপ স্বামী কে নিয়ে বিবি আছিয়া সংসার করেছেন। য়ামার স্ত্রী কি অনেক বেশি বেয়াড়া যে নূহ আঃ এর চেয়ে বড় বেয়াড়া স্ত্রী নিয়ে সংসার করেছেন । তা হলে আর মনে কিছুই থাকে না ।

ভাল আর মন্দ কখনই সমান হতে পারে না; তুমি ভাল (কাজ) দ্বারা মন্দ (কাজ) প্রতিহত করো, তাহলেই (তুমি দেখতে পাবে) তোমার এবং যার সাথে তোমার শত্রুতা ছিল, তার মাঝে এমন (অবস্থা সৃষ্টি) হয়ে যাবে, যেন সে (তোমার) অন্তরঙ্গ বন্ধু।’

(সুরা হা-মীম-আস সাজদাঃ ৩৪)

আমরা ভাল কাজ দিয়ে মন্দ কাজ গুলো ধুয়ে ফেলি।

দেখা যায় দাম্পত্য জীবনে দুই জনে বহু বছর থেকে একসাথে আছেন কিন্তু কেউ কাউকে বুঝতে বা বুঝাতে একটুও সময় দেন না ।দুই জন দু’জনার কত আপন কিন্তু কেউই কাউকে তা বুঝতে দেন না। তাই আসুন আমরাই আমাদের উকিল হয়ে সমস্যা গুলোর কিছু বিষয় চিন্তা করে মিটিয়ে ফেলি

১) আল্লাহর ভয়ে সব চাওয়া পাওয়ার ঊর্ধ্বে স্বামী স্ত্রী ভালবাসার মুল্যায়ন করুনঃ

তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের কৃষিক্ষেত৷তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের কৃষিক্ষেতে যাও ৷বাকারা-২২৩

স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা কম থাকলে একজনের প্রতি আরেকজনের ভালবাসা ও শ্রদ্ধা কমে যায়।য়ামার আব্বা আম্মা একজন আরেকজন কে আপনি আপনি বলে ডাকতেন।এখন দেখি আমার মেঝে ছেলে আর তার স্ত্রী তারাও দেখি দুইজন দুই জন কে আপনি করে কথা বলেন। একটু লজ্জিত হয়ে সাহেব কে বললাম আমরাও কি তুমি ছেড়ে আপনি তে যাবো কিনা ?উনি পরিস্কার ভাবে জানালেন “তোমার ছেলেরা আপনি হাজার বার বলেও আমার মত সুখ পাবে কিনা তাই ভাব?”আলহামদুলিল্লাহ। সত্যিই আপনার স্ত্রীর প্রতি আপনার ভালবাসা প্রকাশ করুন। তিনি ঠিক সেটাই চান।তার ভুলত্রুটি, দোষ থাকা সত্ত্বেও তাকে ভালবাসুন।ইন শা আল্লাহ, তিনিও আপনাকে আপনার ভুলত্রুটি ও দোষ থাকা সত্ত্বেও শ্রদ্ধা করবেন।য়ামরা কেউই ভুলের উর্ধে নয়।

২) কেউ কারো কাজ কে অবমুল্যায়ন না করা ভালঃ

“নারীদের জন্যও ঠিক তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন পুরুষদের অধিকার আছে তাদের ওপর ৷ তবে পুরুষদের তাদের ওপর একটি মর্যাদা আছে ৷ আর সবার ওপরে আছেন আল্লাহ সর্বাধিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী , বিচক্ষণ ও জ্ঞানী “৷ বাকারা -২২৮

আমরা মেয়েরা আল্লাহর ১২মাসের ৩৬৫ দিন প্রতিটি দিন একই রকম কাজ। এই একঘেয়েমিতে ভীষণ ক্লান্ত। আমরা সন্তান প্রতিপালন, সংসার সামলাইয়ে আবার সাহেবের প্রয়োজন মেটাতে ও মন রক্ষা করতে হয়। বিনা বেতনে নন স্টোপ চলতে থাকে ডিউটি। সাধারণ মুসলিমা স্ত্রী বলে তাতে আমাদের কোন আপুত্তি নাই।আর কর্মরত নারীদের কথা ভুলে গেলে হবে না। অনেক নারীকে সারাদিন চাকরি করে এসেও সংসার সামলাতে হয়।তারপরও পান থেকে চুন খসে পড়লে যখন শুনতে হয় সারা দিন বাসায় থেকে কি কর? তখন খুব কষ্ট পায় বুকে আপনার স্ত্রী।

আমার ছেলেরা ও ভাইয়েরা, আমার, করজোড়ে আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনার স্ত্রী কে সেই অনুভূতিটি উপহার দিন যে – তিনি আপনার এক বিশেষ বন্ধু/সঙ্গী । তাকে একটু একঘেয়েমি থেকে ছুটি দিন।তাকে মাঝে মাঝে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যান। অথবা তার জন্য তার প্রিয় কিছু উপহার কিনে আনুন। আমার জন্য যখন লুকায়ে দুটো চকলেট আনেন অনেক মনটা ভরে যায়। কিছু একটা অন্তত প্রায়ই করুন, তার একঘেয়েমির বন্দিদশা ভেঙ্গে দূর করে দিন।

বোনদের বলছি, একজন পুরুষ সারাদিন পরিশ্রম করে পরিবারের জন্য আয় করেন ।্তাই মেয়েদের উচিত সব দুঃখ বা কষ্টের অভিযোগ গুলো একটু ভুলে থেকে হাসি মাখা মুখে সালাম দিয়ে হৃদয়ের উষ্ণ ভালোবাসা প্রকাশ করা।স্বামীস্ত্রীর সম্প্ররক খুব মধুর করতে স্ত্রীকেই বেশি হিকমত অবলম্বন করতে হয়।

৩)মুল্যবান কিছু নয় শুধু মুখ প্রশংসিত হলেই চলে ঃ

তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক ৷বাকারা ১৮৭

ভালকাজ এর জন্য পুরুস্কার সাথে সাথে দেওয়া যায়। শধু হাসি মুখে একটু প্রসংশা করে। একজন স্ত্রী আপনার ময়লা কাপড় পরিস্কার থেকে খাবার তৈরি সবসময় তা করে চলছেন। তিনি জীবনের অন্যান্য শখ আহাল্লাদ সহ অনেক কিছুর চেয়ে বেশী গুরুত্ব দেন আপনার পছন্দের।সন্তান প্রতিপাল, কাজে অথবা স্কুলে যাওয়া, আত্মীয় স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা্সহ অনেক কাজ করে একজন ভাল মুসলিমাহ হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করেন।একটু প্রশংসার মাধ্যমে দুই জন দুই জন কে বুঝাতে পারেন পরিশ্রমের গুরত্ব বোঝেন একটি ছোট্ট ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে শুরু করলেও মন্দ হবে না।

যে দিন বেশি কাজ করে ফেলি ।বাসায় ডুকতেই ডাকতে ডাকতে সামনে গিয়ে হাসি মুখে সালামটা দিলেই চেহারা দেখেই বলেদিবেন, আমি চাই আমার বঊ সুস্থ্যতা ,দরকার হলে আলুর ভর্তা খাব।

৪) ভালবাসার সম্পর্ক প্রচণ্ড ঈর্ষাকাতর তাই অন্যের সাথে তুলনা না করাই ভালঃ

আপনার স্ত্রীর সামনে অন্য কোন নারীকে নিয়ে কোন কথা বলার সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকুন। কক্ষনো আপনার স্ত্রীকে অন্য কোন নারীর সাথে তুলনা করবেন না। কক্ষনো তাকে কোন নায়িকার সাথে তুলনা করবেন না। কখনই তাকে আপনার মা অথবা বোনের সাথে তুলনা করবেন না।ভুলেও তার সাথে আপনার আগের স্ত্রী বা অন্য বন্ধুর স্ত্রীর সাথে তুলনা করবেন না। দাড়িপাল্লার ভারসাম্য বজায় রাখুন।

স্বামীর সাথে অন্য পুরুষের তুলনা না করাই ভাল । তিনি এটা জানতে এবং বিশ্বাস করতে চান যে তাকে ঘিরেই আপনার জগত। কাজেই তাকে সেরকমটিই অনুভব করুন।

৫) একটা ভাল মুসলিম সমাজের ইউনিট গড়ার জন্য স্বামীস্ত্রীর পরস্পর সহযোগিতা প্রয়োজনঃ

পুরুষের তার পরিবারে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। আর সেটাই আজকাল অনেক মুসলিম পুরুষের সঠিক জ্ঞানের অভাবে সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছেন।একজন স্ত্রী চান একজন আদর্শ দায়িত্বশীল স্বামী। যিনি কখন হবেন ওমর রাঃ মত বজ্রকঠোর ,আবার কখন হবেন উসমান রাঃ মত দয়ালু আবার কখন হবেন আবুবকর রাঃ মত দানশীল । অর্থাৎ রাসুল সা আর্দশে আদর্শিত সুপুরুষ ।আর একজন ভাল মুসলিমাহ হওয়ার পথে স্ত্রীকে নেতৃত্ব দেওয়ার চেয়ে ভাল আর কি হতে পারে? তবে মনে রাখবেন, এই নেতৃত্ব দেওয়াকে শাসন করার সাথে যেন গুলিয়ে না ফেলেন। এই নেতৃত্বের অর্থ সঠিক পথের নির্দেশনা দেওয়া ও সে পথ অনুসরণে যাবতীয় সহযোগিতা করা।যার আলোকে আপনার সন্তানরা তাদের পরিবার কে চালাবে ও নিজে চলবে।আপনি নিজেই যদি উত্তম আদর্শের অনুসারী না হন তাহলে কি করে আরেকজনকে শেখাবেন যে কিভাবে ভাল হতে হয়? কাজেই আপনাকে আগে আপনার নিজের ঈমান মজবুত করতে হবে। আগে নিজেকে শুধরাতে হবে, তারপর আপনার স্ত্রীকেও ভদ্রতা, মর্যাদা, এবং হিকমতের সাথে বুঝাতে হবে।

আমি ১২ বছরের কিশোরী বধু ছিলাম ।ইসলাম কি তা শিখিয়েছেন আমার স্বামী।উদাহরণ স্বরূপ, ামি ঠিক মতো পর্দা করতাম না ।প্রথমে আমার জন্য এমন পোশাক পরিচ্ছদ কিনে আনেন যাতে আমি ঠিক মতো পর্দা করতে পারি। তারপর তা পরলে ামার প্রশংসা করেতেন। আামাকে তিনি একজন সম্ভ্রান্ত নারী রূপে দেখতে ভালবাসতেন, এবং এমন পোষাকে দেখতে চান যে পোশাক আল্লাহ্‌ কে সন্তুষ্ট করা যাবে। তিনি আমার ছোট মনের কথা গুলো বন্ধুর মত বুঝতেন।

বঙ্গভবনে একবার দাওয়াত খেতে যাওয়ার পর একজন ভাবীর সাথে গল্প করতে থাকলে তিনি আমাকে হারিয়ে ফেলেন ।আর উনার বন্ধু দের অনেক কে জিজ্ঞাসা করেন , ভাই আপনারা আমার ছোট্ট বউ টাকে কেউ দেখেছেন কি?এখন ভাইরা তা নিয়ে হাসেন ?

৬) ক্রমাগত অভিযোগ কেউ ভালবাসেন না তাই কেউ কাউকে বাধ্য করবেন নাঃ

সবাই এটা মনে করেন যে নারীরা তাদের স্বামীদের সাথে খুঁতখুঁত করতে পছন্দ করেন। কিন্তু সেটা পুরোপুরি সত্য নয়। হ্যা, কিছু মানুষ (নারী এবং পুরুষ) এমন আছেন যাদেরকে কিছুতেই সন্তুষ্ট করা যায় না। আপনি যা-ই করুন না কেন, তারা সেটাতে দোষ ধরবেনই।

আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন-

“আমাকে জাহান্নাম দেখান হয়। (আমি দেখি), তার অধিবাসীদের অধিকাংশই স্ত্রীলোক; (কারণ) তারা কুফরী করে। জিজ্ঞাসা করা হল, ‘তারা কি আল্লাহ্‌র সাথে কুফরি করে?’ তিনি বললেন, ‘তারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং ইহসান অস্বীকার করে। তুমি যদি দীর্ঘকাল তাদের কারও প্রতি ইহসান করতে থাক, এরপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখলেই বলে, ‘আমি কখনও তোমার কাছ থেকে ভাল ব্যবহার পাইনি।’ [সহীহ বুখারীঃ ২৮; ইফা]

কাজেই, বোনদেরকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিৎ যে, তাদের স্বামীরা তাদের জন্য যা করেন, তা যেন তারা তুচ্ছজ্ঞান না করে বা অকৃতজ্ঞতা না করেন।

একজন দ্বীনি বোনের বাসায় প্রোগ্রাম ছিল ,বাসায় গিয়ে দেখি আপা খুব সেজে আসেন ।আমি ভেবেছি ভাই বাসায় তাই সেজেছেন। আপা কে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বললেন, আপনার ভাইর কি আর আমার সুন্দর দেখার সময় আছে? দোষ ধরে তো কুল পান না।আমি বুঝালাম যে, ভাইয়া আপনাকে অনেক ভালবাসেন কিন্তু শুধু উপস্থাপনা করে বুঝাতে ভালবাসা পারছেন না।সবার উপস্থাপনার জ্ঞান কি এক রকম থাকে? এতে আপা কি খুশি হলেন আর তাই মেনে নিলেন ?

৭)দুই জনেই মনে প্রানে আল্লাহর কাছে জান্নাতি একটি স্থায়ী ও সুখী সম্পর্ক চানঃ

স্বামীস্ত্রী বিয়ে করেন। কারণ তারা একটি সুখী সংসার জীবন চান; ধর্মীও দায়িত্ব ও কর্তব্যের পর এটাই একজন মুসলিমাহ নারীর প্রধান চাওয়া- একটি সুখী, স্থায়ী, মুসলিম পরিবার গড়ে তোলা। মজার ব্যাপার হল, আগে বলা হত সংসার সুখি হয় রমনীর গুনে আর এখন আমার মনে হয় তা ভুল ছিল ।বাস্তবে সংসার সুখি হয় পুরুষের গুনে । কারন এটা দেওয়া আপনার জন্য খুবই সহজ কাজ। বোধহীন মানুষের মতো আচরণ করবেন না। কখনও তালাক বা আরেকটি বিয়ের ভয় দেখাবেন না। হ্যাঁ, আপনার তা করার অধিকার আছে। কিন্তু এই বিষয়গুলোকে নিয়ে ভীতি প্রদর্শন করা আপনাদের সাংসারিক জীবনের জন্য অনুপযোগী এবং ক্ষতিকারক। এরকম ভীতি দেখিয়ে কখনও কল্যাণ আশা করতে পারেন না। কারণ এধরনের ভীতি কখনই তার মনে আপনার জন্য শ্রদ্ধা বা ভালবাসা বাড়িয়ে দেবে না, বরং উল্টোটাই হবে।

একদিন ছেলের বঊ আর আমরা স্বামী স্ত্রী একসাথে খাচ্ছি।ছেলের বঊ খাবার মাঝে বললেন,মামনিকে এতো সুন্দর করে কে মাথা আছড়ায়ে দিয়েছে।কারন তখন আমার ব্রেইন স্ট্রোকে বাম পাশ প্যারালাইস্ট।আমি বলার আগেই সাহেব বললেন, আমি সকালে চেম্বারে যাবার আগে গোসল করায়ে মাথা আছড়ায়ে ঘুম পাড়ায়ে রেখে গেছি"।ছেলের বৌ বললেন , বাবা আপনি মামনিকে খুব ভালবাসেন? সাথে পেন্টের পকেট থেকে ম্যানি ব্যাগ বের করে আমার একটা ছবি দেখায়ে বললেন , জানো ৩৫ বছর থেকে ওর ছবি আমার সাথে সাথে থাকে।ম্যানিব্যাগ পাল্টাই কিন্তু ছবি আর ভালবাসা পাল্টাই নাই ।কারন এই ছবি আমার মনের প্রেরনা ,কাজের মাঝে ক্লান্তি দূর করে সাহস দেয়।তাই তো ওকে ঔষধ আর খাবার তোমরা কে কখন দাও। সেই দিকে অপেক্ষা না করে আমি নিজেই চলে আসি।আল্লাহ সব চেয়ে মুল্যবান জান্নাতুল ফেরদাউস এর সুখ এবং অধিবাসি আমার স্বামীকে করে আমাকে ভালবাসার উত্তম পুরুস্কার উনাকে দান করুন "

আল্লাহ্‌র উপর ভরসা রাখুন। শয়তানের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকুন। স্বামীস্ত্রীর কোমল বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করুন। অন্য সবকিছুর চেয়ে, স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদে সবচেয়ে বেশী আনন্দিত হয় শয়তান। দুই জনের দুই টা সার্টিফিকেট একজনের টা আরেক জনের কাছে ।তাই বেশি বেশি করে ক্ষমা ও সালামের প্রচলুন করুন।সন্দেহ, লোভ লালসা ও হিংসা বিদ্বেষ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখুন।সন্তানের চেয়েও অধিক মুল্যবান কোন অলংকার এর সেট হচ্ছে আমার স্বামী।এর চেয়ে দামী কিছু এই পৃথিবীতে আছে বলে আমি কোন দিন মনে করি নাই । কারন দুনিয়ার জান্নাতি সুখ স্বামী স্ত্রীর মধুর সম্পর্কের মাঝে আছে, যা আর কোথায়ও নেই ।

স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তো জান্নাতী মধুর সম্পর্ক ।এর মাঝে তো ঘৃনা , অবহেলা , লোভ লালসা, চাওয়া পাওয়ার অংকের হিসাব নিকাশ থাকতে পারে না।

রাসুল সাঃ বলেছেন ,”যে মহিলা স্বামীর সন্তুষ্টি রেখে মৃত্যু বরন করেন, সে অনায়াসে বেহেশ্তে প্রবেশ করবে”।(তিরমিযি)

আল্লাহ আমাদের স্বামী সন্তান কে আমাদের নয়ন জুড়ানো আর মুত্তাকিন্ দের ইমাম বানিয়ে দিক ।আল্লাহ বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের সকল মুসলিম পরিবারে দুনিয়া ও আখিরাতের জান্নাতি সুখ দান করুন ।

আমিন। সুম্মা আমিন ইয়া রাহমানুর রাহিম ।

একজন আদর্শ স্বামীর গল্প

আমার জীবনের প্রথম লেখা আমার জীবন সাথীকে নিয়ে ......প্রথম পর্ব

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=422968957892238&set=a.111339602388510.1073741828.100005374124575&type=3&theater

বিষয়: বিবিধ

৪৩৭১ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

348373
০৩ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২০
ছালসাবিল লিখেছেন : Sad It Wasn't Me! Sad
০৩ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৫৩
289186
সত্যলিখন লিখেছেন : আসসালামুয়ালাইকুম ।কি হয়েছে আপনার ?
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৮:১৯
289216
ছালসাবিল লিখেছেন : ওয়া আলাইকুম আসসালাম আপপপপি Worried কিচুনা Worried পড়ে বোলবো Crying Crying
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:০৭
289227
সত্যলিখন লিখেছেন :
০৪ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৫৪
289242
ছালসাবিল লিখেছেন : Love Struck আপপপপি Love Struck দুআটি পোড়েছি Love Struck Love Struck Smug
০৪ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:০০
289243
সত্যলিখন লিখেছেন : আপনার জন্য আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য জান্নাতী অনাবিল সুখ শান্তি চাই ।আমিন ।ইয়া রাহমানুর রাহিম ।
348465
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
অক্টোপাশ লিখেছেন : ভালো লাগলো
০৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৪৪
289261
সত্যলিখন লিখেছেন : আপনার জন্য আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য জান্নাতী অনাবিল সুখ শান্তি চাই ।আমিন ।ইয়া রাহমানুর রাহিম ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File