মা ও মামনির ( ছেলের বউ)সাথে ঈদের আনন্দ
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২০ জুলাই, ২০১৫, ০১:৫১:৩৮ রাত
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম...আমার দেশী ও প্রবাসী প্রান প্রিয় নেটের সকল সন্মানিত ফ্রেন্ড লিস্টের ও ফলোয়ার্স সবাই কে জানাই আন্তরিক ভালবাসা মিশ্রিত
ঈদ মুবারক।
ঈদের আনন্দ গল্পে আমি প্রায় আমার দ্বীনি বোনদের বলি আমি ব্যাসেলার পরিবারের ম্যানেজার তাই তোমাদের মত কিছুই জানি না । কারন আমার পরিবারে উনারা বাবা ছেলে মিলিয়ে ৬ জন আর আমি বাবুছি ফিমেইল একজন । তাই আমার নিসঙ্গতা কাটাতে সাহেব পাশে পাশেই থাকেন।
আলহামদুলিল্লাহ।এই বার ঈদে আমার মা (বড় ছেলের বউ ) ও মামনি (মেঝে ছেলের বউ) মাঝে আল্লাহ আমাকে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার তাওফিক দান করেছেন।আলহামদুলিল্লাহ। হার্ডের একটা জায়গা প্রাবাসী ছেলেদের কথা মনে এসে অশ্রু বিসর্জন হচ্ছিল।কারন ঐ দুইটা ছেলেই আমার হাতের সেমাই খাওয়া ছাড়া তাদের ঈদ হয় না।মায়ের মনের সুখের নদীটা সমান্তরাল ভাবে চলতে জানে না।দুঃখের বক্রতা তার মাঝে থাকবেই । তাই মনের হয় মা এর কথা রাসুল সাঃ এত বার বলেছেন।
মা এর ভাগে আসলো আমার ছোট্ট কুটির টা গোছানোর ডেকোরেসান।আর মা মনি টার মাথায় নিলেন ভোজন রসিকদের খাবার রান্নার দায়িত্ব। মা কে হেলপ করল মায়ের প্রানপ্রিয় স্বামী। নাতী নাতনি দেখা শুনার দায়িত্ব মেঝে ছেলের ।তাই মা মনির হেলপ এর জন্য সাইড ম্যান হিসাবে কচ্ছপ গতির আমি নিজেই। মাশাল্লাহ মা ও মা মনি নিপুন দক্ষ শিল্পীর মত তাদের দায়িত্ব পালন করে ফেলল। তাদের প্রতিভা বিকশিত হওয়ায় মাধ্যমে আমার ভাঙ্গা মনে ও কুটির ঘরে ছড়িয়ে পড়ল পূর্নিমার চাদের আলো।
মামনিটা জানেন আমি আল্লাহর রঙ্গে মন সাজাতে আর মেহেদী রঙ্গে দেহ সাজাতে পছন্দ করি। ফজরের নামাজ পড়ে এসে মেহেদীর তুলি দিয়ে আমার দুই হাতে এঁকে দিল তার অন্তরের ভালবাসার আলপনা। বান্ধুবীর মত তাকে নিয়ে চলে গেলাম জাতীয় ইদগাহে নামাজে। নামাজ পড়ে আসার সময় বার বার মামনি কে বলছিলাম , মালিকের কর্মচারী হিসাবে পুরস্ককার কি পেলাম আর কি পেলাম না তা জানি না। তবে মালিকের পাঠানো মেহমান কে বিদায় জানায়ে বাসায় ফিরে খালি বাসায় যেতে খারাপ লাগছে।তাও আমাকে মা ডাকা আরেকটা ছেলের বাসায় গিয়ে আরেকটা আম্মু (ভাসুরের ছেলের বউ) কে দেখে এলাম।
বাসায় এসে দেখি আমার মা সেজে গুজে আমাকে ঈদ মোবারক জানাতে অধির আগ্রহে বসে আছে।আলহামদুলিল্লাহ ।আমার মা টা ভালবাসা অনেক সুন্দর করে প্রকাশ করতে জানে।তাই মা ও মামনি দের সাথে কিছুক্ষন আনন্দে আপ্লুত হয়ে সময় কাটালাম। রাসুল সাঃ মেয়েদের বেশি ভালবাসতেন।তাই ঈদের সেলামীটা মা ও মামনি কে দিলাম। ছেলেদের এই বারই প্রথম বাদ দিলাম। তারপর ছেলেদের বললাম , এইবার আমার মা ও মামনি কে নিয়ে তাদের প্রিয়জনদের সাথে ঈদের বাকি সময়টা কাটায়ে আসো। বৃষ্টি হওয়াতে একটু নিমরাজি ভাব প্রকাশ না করতে বলে দিলাম, তোমার বাবা মার তারা এতো ত্যাগ করল তোমরাও সেই দায়িত্ব পালন কর।সামনে ঈদে কে থাকে কে যায় এই আনন্দ টা প্রকাশ করে কিছু সময় উনাদের সাথে থাকতে দাও।আলহামদুলিল্লাহ ।তাই করল। আমার মেয়েদের মুখের আনন্দের হাসিতে আমার মনটা আনন্দ ভরে গেল ।
উপসংহারঃ
বুড়ো বুড়ি একে অন্য কে সালাম ও ঈদ মোবারক জানালাম । তার সাথে প্রস্তাব রাখলাম , আমার প্রানপ্রিয় দ্বীনি বোনদের সাথে দেখা করে ঈদ মোবারক জানাব। ও আল্লাহ ।এই বার কি জানি ভালবাসা উতরায়ে উঠল উনিও আমার সাথে সব বাসায় যাবেন। আপারা কি ভাববেন বলে , উনার প্রস্তাব নামঞ্জুর করলাম । নামাজ পড়ে ভাবলাম , আমার বোনদের তো খুব ইচ্ছা তাদের স্বামীরাও দ্বীনের পথিক হোক। তা হলে তো আজই উনার সাথে ভাইদের পরিচয় হবে ।ইনশাল্লাহ ।আল্লাহ একদিন এই ঈদ মোবারককেই হেদায়াতের জন্য কবুল করবেন । সত্যি , ভাইরা উনাকে পেয়ে খুব খুশি হলো।আর আপারা উনাকে আনাতে আরো বেশি আনন্দিত হলো।আনন্দ শেষ । আলহামদুলিল্লাহ।
তখন মনে হল,জাতীয় ঈদগাহে প্রেসিডেন্ট থেকে আরম্ভ করে ফকির পর্যন্ত সবাই এক হয়ে গেলাম আল্লাহর কাছে সেজদায় দিয়ে ।সেই ভাবে সারা জীবন আমরা আমাদের মনের সকল হিংসা বিদ্বেষ শত্রুতামি পাপপংকিলতা ও সকল মতবাদ ধুয়ে মুছে আমরা সবাই আল্লাহর বিধান পালনকারী হয়ে আপন ভাই ভাই হয়ে যাই।
আল্লাহ আল্লাহ আমাদের মাঝে এই ঈদের আনন্দ দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কবুল করুন ।
বিষয়: বিবিধ
২৬৭৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ.....
চমৎকার দুয়ায় আমিন ইয়া রাব্বাল আলামীন!
ঈদের প্রকৃত শিক্ষা আমাদের সমাজে বাস্তবায়িত হোক-এই প্রত্যাশায় জাযাকুমুল্লাহ!
মন্তব্য করতে লগইন করুন