ামরা বন্ধুত্ব করব শুধু জান্নাতের যাবার বিনিময়ে
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৪ এপ্রিল, ২০১৫, ১২:৩২:৫২ রাত
মুসলিম অন্য মুসলিম ভাইর সাথে এই কারণে বন্ধুত্ব স্থাপন করে যে, সে আল্লাহকে ভালবাসে, আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলে। তার মাল-সম্পদ, মান-সম্মান, সৌন্দর্যতা ইত্যাদির কারণে নয়। এই প্রকার বন্ধুত্বের অফুরন্ত ফযীলত ও সুফল সম্পর্কিত কয়েকটি হাদীস নিম্মে দেখা যেতে পারেঃ
১- কিয়ামত দিবসে আরশের ছায়া তলে স্থানঃ
عن أبي هريرة ، قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم: ” إن الله يقول يومَ القيامة: أين المتحابّون بجلالي ، اليوم أظلهم قي ظلّي ، يوم لا ظل إلا ظلي “. رواه مسلم
অর্থঃ আবু হুরাইরা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআ’লা বলবেনঃ আমার মর্যদার (আনুগত্বের) কারণে পরস্পরে বন্ধুত্বকারীরা কোথায়? আজ আমি তাদের আমার ছায়াতলে ছায়া দিব, যেদিন আমার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া নেই।” (মুসলিম, অধ্যায়, বির ওয়াস্ সিলা, নং ২৫৬৬)
২- আল্লাহর ভালবাসা অর্জনঃ
আবূ হুরাইরা (রাযিঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেনঃ
‘‘এক ব্যক্তি নিজ গ্রামের বাইরে অন্য গ্রামে তার ভাইর সাথে সাক্ষাৎ করে, ফলে তার রাস্তায় আল্লাহ তায়ালা এক ফেরেশতাকে পাহারাদার হিসাবে নির্ধারণ করেন, অতঃপর যখন সে তার নিকটে পৌঁছে, তখন ফেরেশতাগণ বলেঃ কোথায় যাচ্ছ? সে উত্তরে বলেঃ এই গ্রামে এক ভায়ের কাছে যাচ্ছি। ফেরেশতা বলেঃ ওর প্রতি তোমার কোন অনুগ্রহ আছে কি, যা তুমি সম্পাদন করতে যাচ্ছ? সে বলেঃ না, কিন্তু আমি তাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসি। ফেরেশতা বলেঃ আমি তোমার নিকট আল্লাহর দূত, আল্লাহ তোমাকে ভাল বেসেছেন, যেমন তুমি তাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভাল বেসেছো।” (মুসলিম, অধ্যায়ঃ বির ওয়াস্ সিলাহ্, নং২৫৬৭)
৩- ফেরেশতাগণের এবং দুনিয়াবাসীর ভালবাসা লাভঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
‘‘ আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসে, তখন জিব্রীল (আঃ) কে ডেকে বলেনঃ আমি অমুককে ভালবাসি তাই তুমিও তাকে ভালবাসো। বর্ণনাকারী বলেনঃ তখন তাকে জিব্রীল (আঃ) ভালবাসেন অতঃপর আকাশে ডাক দিয়ে বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা অমুককে ভালবাসেন তাই তোমরাও তাকে ভালবাসো। অতঃপর আকাশবাসী তাকে ভালবাসে। বর্ণনাকারী বলেনঃ তারপর পৃথিবীতে তার গ্রহনযোগ্যতা দিয়ে দেয়া হয়। (ফলে লোকেরা তাকে ভালবাসে, পছন্দ করে)। আর আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে অপছন্দ করেন, তখন জিব্রীলকে ডাক দিয়ে বলেনঃ আমি অমুককে ঘৃণা করি, তাই তুমি তাকে ঘৃণা করো, তখন জিব্রীল (আঃ) তাকে ঘৃণা করে এবং আকাশবাসীকে সংবাদ দিয়ে বলেঃ আল্লাহ তায়ালা অমুককে অপছন্দ করে, তাই তোমরাও তাকে অপছন্দ করো। বর্ণনাকারী বলেনঃ তাই তারা সকলে তাকে অপছন্দ করে এবং যমীনেও সে অপছন্দনীয় হয়।” (মুসলিম, অধ্যায়, বির ওয়াস্ সিলাহ, নং ২৬৩৭)
৪- পূর্ণ ঈমানের পরিচয়ঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
“যে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে ভালবাসে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঘৃণা করে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করে কিংবা না করে, সে তার ঈমান পূর্ণ করে নিল।” ( আবূ দাউদ, সূত্র হাসান)
কেউ কাউকে ভালবাসলে তাকে তা জানিয়ে দেয়া প্রয়োজন:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
‘‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ কোন ভাইকে ভালবাসে, তাহলে সে যেন তাকে জানিয়ে দেয়।” (তিরমিযী, অধ্যায়, যুহুদ, নং২৫০২, আহমদ, আবু দাউদ)
তিরমিযীর ভাষ্যকার মুবারকপূরী বলেনঃ “এটা এ কারণে যে, যখন সে তাকে এ বিষয়ে জানাবে, তখন তার অন্তর নরম হবে এবং তার ভালবাসা অর্জন হবে, ফলস্বরূপ সে তাকে ভালবাসবে এবং মুমিনদের মাঝে মৈত্রী বন্ধন স্থাপিত হবে ও মতভেদ দূর হবে।” (তুহ্ফাতুল আহ্ ওয়াযী,৭/৬০)
পরিশেষে, মহান আল্লাহর নিকট দুআ করি তিনি যেন আমাদের সৎ হওয়ার এবং সৎ লোকদের সংস্পর্শে থাকার এবং আল্লাহর ওয়াস্তেই বন্ধুত্ব করার তাউফীক দেন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৪২০ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আজ কিন্তু ভুল করিনি লিখার ক্ষেত্রে আজ এক দিন হাদিস কে কুরআন বলে কি না ধমক খেয়েছিলাম।
অনেক অনেক শুকরিয়া।
আমরা তো একজন আরেক জনের ভালবাসার দর্পন ।আমি তো আমার অপরাধ দেখি না। আর তোমরা আমার খুব প্রিয় ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পৃথিবীর সব কিছু থেকে তোমাদের বেশি ভালবাসি ।আল্লাহ স্বাক্ষী, যার পিছনে নেই কোন কৃত্রিমতা তাই ইনশাল্লাহ উনার আরশের ছায়ায় দেখা হবে ।আমিন। জাযাকাল্লাহু খাইরান ।
অনুগ্রহ করে আপনার লেখার শিরোনামটা এডিট করে দিন!
আমরাতো এখন শুধু দুনিয়ার চিন্তায় বন্ধু বানাই।
জাযাকাল্লাহু খাইরান ফিদ দুনিয়া ওয়য়াল আখিরাত ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন