প্রতিটি সন্তানের জন্য তার মা ধৈর্য্যের পিরামিড
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৯ মার্চ, ২০১৫, ০৭:৪৫:৩৯ সকাল
৪ মাস গর্ভে থাকা থেকে মায়ের একলামসিয়া । রক্ত শুন্যতা ও হাইপেসার থেকে এই টা শুরু হয়েছে। এই নিয়েই যাচ্ছে দিন । ৬ মাস পুন্য হল কিন্তু বাবুটা তেমন নড়ছে না তাই ডাক্তার দেখাতে গেলো । ডাক্তার দেখেই মাকে বললে দিল,"বাচ্ছার আশা বাদ দিয়েই আপনাকে ৩০ মিনিটের মধ্যে সিজার করতে হবে।পেসার ২০০/১২০ , তার সাথে সমস্ত শরীলে পানি এসে ফুলে একলামসিয়া ও এজমা সব মিলিয়ে আপনার অবস্থ্যা দিকে তাকায়ে এই সিন্ধান্ত নিতে হল ।
৭ই মার্চ এশার নামাজ পড়ে আল্লাহ কে মা কেন্দে সন্তানের হায়াত চায় ।কারন মা হবার বয়সের আনন্দের সন্তান।নার্স এসে হাজির অপারেসান রুমে নিচ্ছেন আর বলছেন ,গাছ বাচলে অনেক ফল দিবে । বাবার নয়নের জলে মায়ের ভালবাসাকে ভাসিয়ে দিল অকুল সাগরে । আল্লাহ কি করবেন তা তিনিই পরিকল্পনা করে রেখেছেন ।
রাখে আল্লাহ মারে কে ?মারে আল্লাহ রাখে কে ?
নার্স এনে কোলে দিলেন ছোট বিড়াল ছানার মত ১কে জি ৩০০ গ্রাম এর একটা বাবু। যে বাবুটা তাকায় না , হা করে খাবার জন্য ঠিক ভাবে কান্দে না । অপুষ্টি বাবুটা কে আল্লাহ ঠিকই বাচালেন ।ডাক্তারের কথা মিথ্যা প্রমান করলেন।মায়ের অবস্থ্যা আশংকা জনক থেকে সুস্থ্যতা দান করেন। আল্লাহ যার কল্যান ও হায়াত দান করেন কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না।আর তিনি যা অকল্যান চান কেউই তার কোন কল্যান এনে দিতে পারে না ।
মা ভেবেছে জন্ম নিয়েছে বিড়ালের বাচ্ছা, এখন দেখে সিংহের মত তর্জন গর্জন।
৩৬ ঘন্টা পরে জ্ঞান ফিরে আসে । বুকের পাশে এনে দেয় একটা ভালবাসা জমানো কাপড়ের ছোট একটা পুটলী।কোন মানব শিশু আছে মনে হয় নাই। ভেবেছি আমার গর্ভে কি কোন মানব শিশু জন্ম নিয়েছে?আলহামদুলিল্লাহ ।তিলে তিলে শ্রম আর ধৈর্য্যধারন করে লালন পালন করার মাধ্যমে আমার আব্বুটাকে আল্লাহ বড় করে দিলেন।
সবাই বলেছে অপুষ্ট বাচ্ছা ,মেধা হয় কিনা বলা যাচ্ছে না।আমি আল্লাহর উপর ওদের সবার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি।আল্লাহ আমাকে দেওয়া আমানত আমি উনার দেওয়া বিধানে চালাতে প্রানপন চেষ্টা চালাচ্ছি।তাই ইসলামের আসর ,ইসলামিক সাংস্কৃতি অনুষ্টানে ওদের আমি ঠিক মতই হাজির করতাম। ফাহাদ নামের অর্থ ওর জন্মের আগেই শুনেছি । সিংহের ন্যায় ত্যাজদীপ্ত । আলহামদুলিল্লাহ। সে সত্যিই সেই রকম। ৩য় শ্রেনীতেই সে সাইমুম এর সব সিরিজ ,নসীম হিজাজী ,নঈম সিদ্দিকী এই সব বই তার কয়েক বার রিভিশান দেওয়া হয়ে যায়। ছোট বেলায় শিবিরের শপথ নিতে আল্লাহ সাহায্য করে। পারিবারিক বৈঠকে তার মতামতের বা প্রস্তাব বা পরিকল্পনা তৈরীতে সে তার যুক্তির স্বপক্ষে অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত সব বুঝায়ে বলে দিবে। অন্যায়ের বিপক্ষে তার ঠিকই সিংহ এর মত তর্জন গর্জন শুরু হয়ে যায়।ন্যায় এর কাজে বাধা দিলে তার মাথা গরম হয়ে যায়।
ফাহাদের উপস্থিত বুদ্ধি শুনুনঃ
১ম প্রশ্ন ও উত্তর
আমি বুঝালাম ,ফাহাদ এইচ এস সি তে প্রাইভেট পড়ার জন্য বুয়েটের স্যার না নিয়ে ঢা,ইউ, সায়েন্সের স্যার দিলে তোমার আব্বুর খরচ কম হবে ।কি বলো ফাহাদ আব্বু?
ফাহাদের উত্তরঃআম্মু আমি নিয়ত রেখেছি বুয়েটে পড়ব।একজন বুয়েটের স্যার জানে কিভাবে কলেজ লাইফটা পড়া লিখা করলে বূয়েটে সান্স পাওয়া যাবে।কিন্তু ঢা,বি স্যারের সেই টেকনিক জানা নেই ।জানা থাকলে তিনি নিজেই সান্স পেতেন।তাই আম্মু একটু ভাল কিছু পেতে টাকা একটু বেশি লাগবেই। ছেলে বুয়েটে সান্স পেলে আব্বু প্রথম বেশি খুশি হবে।
২য় প্রশ্নঃ
ফাহাদ এই বয়সে মোবাইল নিও না।কারন আমি খারাপ হবার ভয়ে তোমার ৩ ভাইকেও অনার্স ২য় বর্ষে উঠার আগে দেই নাই। তাই তুমিও এখন না ।ঠিক আছে?
ফাহাদের উত্তরঃ
আম্মু ,ভাইয়ারা ৩জন তোমার টিন এইজের আর আমরা ইয়াং এইজের।টিন এইজের মেয়েরা বোকা থাকে তাই ভাইয়ারা বোকা ছিল তাই তোমার কথা মেনে নিয়েছে।
আর বিজ্ঞানের যখন উন্নতির শিখরে তখন তুমি ঢা ,বি ছাত্রী আর আমরা সেই সময় জন্ম নেওয়া । আমাদের চিন্তাতা বুদ্ধি ভাইদের থেকে ভিন্ন হবেই ।তাই আম্মু ভাইয়াদের মত আমাদের চালানোর চিন্তা করা কি তোমার ঠিক হবে?
আম্মু , আজ আমার জন্ম দিন।
কেক কাটা ,শুভ জন্ম দিন বলা ,আনন্দে নাচানাচি করা্,বেলুন ফোটা নো , মোমবাতি জ্বালানো আর ফুদিয়ে নিভাইয়ে হাতেতালি দেওয়া আর মজার মজার খাবার খাওয়া ।
আমি এই সব ইসলাম বিরোধী কাজ করি না।তাই আমার মনেও থাকে না।তাই আমার বাসায় তেমন কিছুই হয় নাই বরং আমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই তিনি যেন তাদের কে ইসলামের মুজাহিদ হিসাবে কবুল করে নেন ।ইসলামের মুত্তাকিন ইমাম ও সদগায়ে জারিয়া হিসাবে আল্লাহ তাদের আমার জন্য দান করুন। আমি দুনিয়ার কোন সম্পদ কে উত্তম মনে করি না।তাইঙ্গামার স্বামী সন্তান আমার কাছে হিরা মনি মুক্তার চেয়েও মুল্যবান আল্লাহর দেওয়া নেওয়া মত।আর এই নিয়ামতের হিসাব নেওয়ার সময় আমি কি বদকারের মা না নেক্কার এর মা হিসাবে বিবেচিত হব তার ভয়ে আমার আত্তার পানি শুকায়ে যায়।সন্তান আমার জন্য কি করেছে তা আমার ভাবনার বিষ্য নয় আমি মা হিসাবে তাদের জন্য কি করতে পারলাম তাই আমার চিন্তার বিষয়।আমি ইসলামের কিছুই জানি না । তাই ইসলাম জানা ছেলেদের কে তাদের মাস্টার হিসাবে রাখি ।তারা যেন দুনিয়ার জ্ঞানের সাথে আখিরাতের জ্ঞানের শিক্ষাও দেয় । আল্লাহ আমার সহ সকল সন্তানদের উনার হেদায়াতের পথে চলে মুত্তাকিন হিসাবে দ্বীন কায়েমের পথে হেফাজতে রাখুন । সদগায়ে জারিয়া হিসাবে কবুল করুন । আমিন ।ইয়া রাহমানুর রাহিম।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন