দ্বীনের সকল মুজাহিদ আর মুজাহিদার ভালবাসা একটাই।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৮ নভেম্বর, ২০১৫, ১০:০৯:১৪ রাত
ইসলামী আন্দোলনের মুজাহিদরা সৃষ্টির সব কিছুতে স্রষ্টার ভালবাসা খুজতে চেষ্টা করেন।বেশীর ভাগ সময় পুরুস্কার হিসাবে অশ্রুটাই আর রক্তের স্রোতধারা।প্রভু চান না উনারা দুনিয়ার সামান্য এই ভালবাসার ভিখারী হয়ে একদূর্বলতার দিকে চুম্বক আকর্ষনের মত জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি মেরুতে অবস্থ্যান করেন।
তা্তেও থেমে যাননা, শিশির ভেজা দূর্বা ঘাসের মত কোমল হৃদয় নিয়ে প্রভুর প্রতি ভীতি আর প্রীতি মিশিয়ে ইসলামকে ভালবাসেন।এর উত্তম প্রতিদান দুনিয়াতে নয় ,পাবে আখিরাতে।য়ার তখনি প্রভুর প্রেমে জান্নাতি সুখ সাগরে এমন ভাবে হাবুডুবু খেতে থাকেন নিজের অজান্তেই নিজের মনটা হাসতে/কান্দতে থাকে।আমার বিশ্বাস কোন ভালবাসায় যদি দুনিয়াবি স্বার্থ জড়িত না থাকে তা হলে তা মিথ্যা হয় না ।তাই হতাশ/ নিরাশ না হয়ে দুনয়নে অনেক লোনা জল ঝরায়ে বেদনার মেঘে ভেসে ভেসে প্রভুকে পাবার আশায় চলেন স্বপ্নের জান্নাতে।সকল মুজাহিদ আর মুজাহিদার ভালবাসা একটাই।আলহামদুলিল্লাহ।
জীবনে মরনে আমরা শুধুই তোমায় ভালবেসে যাবঃ
যে ভালবাসায় কোন ক্ষয় নেই আছে শুধুই বিজয়।
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাই তাদের রবের কাছে ‘সিদ্দীক’ ও ‘শহীদ’ বলে গণ্য৷ তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও ‘নূর’ রয়েছে৷”সুরা হাদীদ ১৯
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য করবে সে তাদের সহযোগী হবে,যাদেরকে আল্লাহ পুরস্কৃত করেছেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে ৷ মানুষ যাদের সংগ লাভ করতে পারে তাদের মধ্যে এরা কতই না চমৎকার সংগী"৷
সুরা নিসা ৬৯
হযরত আবু হুরাইয়া রাঃ বর্নিত একটি বড় হাদিসের শেষ অংশ ,রাসুল সাঃ বলেন,সেই আল্লাহ্র শপথ যার হাতে আমার জীবন, আমার মন তো চায় আল্লাহ্র পথে আমি শহিদ হই ,আবার জীবিত হই,আবার শহিদ হই,আবার জীবিত হই এবং আবার শহিদ হই।(সহিহুল বুখারী ,মুসলিম)
আমাদের তামান্না (ভালবাসা) শহীদ/শাহাদাতে তামান্না।এই নামের আসল অর্থ হচ্ছে চুড়ান্ত সাক্ষী।আল্লাহ বান্দা ও মুসলিম হিসাবে নিজের জীবনের সমগ্র কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ঈমানের সত্যতার সাক্ষ প্রদান করতে হবে এবং আল্লাহর পথে লড়াই করে প্রাণ উৎসর্গ করতেও দ্বিধাবোধ করা যাবে না।কারন যে জিনিসের ওপর ঈমান এনেছি তাকে যথার্থই সাচ্চা দিলে সত্য মনে করতে হবে এবং তা পাবার জন্য নিজের প্রাণ অকাতরে বিলিয়ে দিতে হবে। সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তি হয়ে নিজের চিন্তাধারা, আকীদা-বিশ্বাস, ইচ্ছা,সংকল্প, কথা ও কর্মের মাধ্যমে সত্য-সরল পথে প্রতিষ্ঠিত থেকে এবং এই সংগে নিজের জীবনে সৎ ও সুনীতি অবলম্বন করা।আল্লাহ আপনি কবুল করুন।
হযরত সাহল বিন হোনায়ফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি খাঁটি অন্তরে আল্লাহর কাছে শাহাদাতের মৃত্যু চাইবে, আল্লাহ্ তা'আলা তাকে শহীদদের মর্যাদায় পৌঁছে দিবেন, যদিও সে নিজ বিছানায় মারা যায়।
{সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-১৯০৯}
তোমাদের নিকট শাহাদাৎ কি ?ঃ
জাবের ইবনে আতীক - রাদিআল্লাহু আনহু - বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমাদের নিকট শাহাদাৎ কি ? তারা বলল : আল্লাহর রাস্তায় মারা যাওয়া। তিনি বললেন : আল্লাহর রাস্তায় মারা যাওয়া ছাড়াও সাত প্রকার শাহাদাৎ রয়েছে : প্লেগ বা মহামারিতে মৃত ব্যক্তি শহীদ; পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি শহীদ; ফুসফুসে রোগাক্রান্ত মৃত ব্যক্তি শহীদ; পেটের রোগে মৃত ব্যক্তি শহীদ; আগুনে পুড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ; ধ্বংস স্তুপের নিচে চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ; আর যে নারী পেটে বাচ্চা নিয়ে মারা যায় সেও শহীদ । আহমদ : (২৩৮০৪), আবূ দাউদ : (৩১১১), নাসায়ী : (১৮৪৬), সহিহ আবূ দাউদে আল-বানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন
এই ভালবাসার অনুপ্রেরনা পাবেন যেথায়ঃ
১ সত্য সন্ধানী নারীরাঃ
যারা আল্লাহ্র কোরানের পথে অকুতভয় সৈনিক হিসাবে নিজেদের হৃদয়ের কাবায় তিল তিল করে জমানো ঈমানকে বার বার শানিত ও তেজোদীপ্ত আলো ছড়িয়ে ছিলেন বহু নারীর মনের অন্ধকার মন্দিরে।তাদের এই চলার পথ মোখমলের নরম গালিচায় ফুলের পাপড়ি ছিটানো ছিল না বরং তা ছিল উত্তপ্ত প্রজ্জলিত অঙ্গার বিছান দূর্গম বন্ধুর মরুপথ।যুগে যুগে জালিমদের যত জাহিলী ষড়যন্ত্র এসেছিল কোন ষড়যন্ত্রই তাদের অন্তরের ঈমানের বারুত এর অনু পরমানু গুলোকে স্তমিত করতে পারে নাই।ঈমানের পরীক্ষা মনে করে শয়তানদের সব বাধা বিপত্তি এমন কি মৃত্যুকেও হাসি মুখে জান্নাতের মুল্যবান রত্নের মালা হিসাবে বরন করে নিয়েছেন।তাদের বিবি হাওয়া, মরিয়াম, আছিয়া ,হজরত খাদিজা,ফাতেমা, আয়েশা, আরও উত্তরসুরীদের আমিনা কুতুব,হামিদা ,জয়নাব গাজ্জালী, ডাঃআফিফা সিদ্দিকী
২ ইসলামের প্রথম শহিদ হজরত সুমাইয়া রাঃ
হজরত সুমাইয়া ছিলেন প্রখ্যাত শহিদ সাহাবী আম্মার ইবনে ইয়াসির রা মা এবং মক্কার আবু হুজাইফার দাসী।ইসলামের দাওয়াতের প্রথম দিকেই স্বামী ইয়াসির রাঃ ও সন্তান সহ ইসলাম গ্রহন করার সাথে সাথে আবুজেহেলদের অন্যায় অত্যাচারও নিষ্ঠুরতার পাহাড় মাথায় নিয়ে নেন।তিনি নানা প্রকার অত্যাচার ও শাস্তি ভোগ করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলেন এমন সময় পশুত্বের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া পাষান্ড আবু জেহেল সুমাইয়া রা দিকে একটি বর্শা ছুড়ে মারলে তা অনার লজ্জাস্থানে বিদ্ধে উনি শাহাদাত বরন করেন।
৩ সাহাবাদের শাহাদাতের জযবাঃ
আসহাবে রাসুলের জীবনকথা পড়লে অনেক সাহাদের ঈমানের কষ্টি পাথরে যাচাই করা জীবনি ।মেধা শক্তি আমল প্রজ্ঞআ এমন কি শহিদে্র কাতারেও পুরুষরাই এগিয়ে আছেন।সেই শহিদ হজরত মুসআব রাঃ হামজা ,ওমর,উসমান ,আলী থেকে আজ পর্যন্ত নোমান ,সাব্বির ,বেলাল , শিপন ,আব্দুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামান দের কাতার অনেক দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে।
৪ ঈমানের সর্বচ্ছো কোরবানী ঃ
“বলো, আমার নামায, আমার ইবাদাতের সমস্ত অনুষ্ঠান, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছু আল্লাহ রব্বুল আলামীনের জন্য নিবেদিত ” সুরা আনয়াম -১৬২
এই অমৃতবানী পান করার পর মনে হয়,আমার জীবন ও মৃত্যু সব আল্লাহ্র জন্য । আমিই তো আমার শক্তি, মেধা,ভালবাসা ,দুনিয়াবী ভোগ বিলাস কিছুই আমার জন্য নয়।আমি আত্নসমর্পনকারী এক আসামী । আমার মন শরীর ইচ্ছা কামনা ভাসনা এমন কি চোখের পলক সব কিছুর উপর ডান্ডাভেড়ি পরানো। তাই জন্ম নেওয়ার সাথে সাথে আমার উপর মৃত্যুর গ্রেফতারী পরয়ানা জারী হয়ে আছে।এই ক্ষনস্থায়ী জীবণে আহামরি পাবার কিছুই নেই আবার আফসুস করার মত হারাবার ভয় নেই ।
আখিরাতে এর সুফল আর কুফল সুদূর প্রসারীঃ
১ আল্লাহ্র সাথে ক্রয় বিক্রয় ঃ
“আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন৷ তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং (কাফেরদের )মারে ও (নিজেরা)মরে”৷ সুরা তাওবা ১১১
২ অমরত্ব লাভ করা যায়ঃ
“যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে করো না৷ তারা আসলে জীবিত ৷ নিজেদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকা লাভ করছে৷”সুরা আলে ইমরান ১৬৯
৩ সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়ঃ
হযরত আবুদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স রা বর্নিত ,রাসুল সা বলেছেন ,আল্লাহ তালা শহিদের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন শুধু মাত্র ঋন ব্যতীত ।(মুসলিম )
৪
হজরত আবু দারদারাঃ বর্নিত , রাসুল সা বলেছেন ,শহিদ তার বংশের ৭০ জনের জন্য সাফায়াত করবে।আবু দাউদ
৫
কুফল ঃহজরত আবু হুরাইয়া রা বর্নিত , রাসুল সা বলেছেন, যে ব্যক্তি মরে গেল অথচ সে জিহাদ করেনি বা তার মনে জিহাদের জন্য কোন চিন্তা ,সংক্লল্প বা ইচ্ছা দেখা যায় নি তবে সে মুনাফিকের ন্যায় মারা গেল"। মুসলিম ,আবু দাউদ ।
হযরত সাহল ইবনে হানীফ রা বর্নিত। রাসুল সা বলেছেন ,যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে আল্লাহ্র নিকট শাহাদাতের প্রার্থনা করে ,আল্লাহ তাকে সাহাদাতের মর্যাদা দান করবেন,যদি সে ঘরে বিছানায়ও মৃত্যু বরন করে।(মুসলিম শরিফ )
‘হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট জান্নাত কামনা করি ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ চাই।’
(আবু দাউদ শরীফ)
বিষয়: বিবিধ
২৩৩৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
(আবু দাউদ শরীফ)
মন্তব্য করতে লগইন করুন