এ কি অপূর্ব ! ভালবাসার বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ৩০ জানুয়ারি, ২০১৫, ১০:৫২:৫২ রাত
এ কি অপূর্ব ! ভালবাসার বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু ঃ
আমি কোথায় আছি কেমন আছি কি করছি কি খেয়েছি ঔষধ খেলাম কিনা সব কিছু জানার জন্য কিছুক্ষন পর পর ফোন দিতে থাকবেন ।
মাঝে মাঝে বিরক্ত হই ।আবার ভাবতে থাকি অনেক বোন দুঃখে মরে তাদের স্বামীরা কেন বাসার থেকে বের হলে আর বাসায় বউ বাচ্চা বেচে আছে নাকি মরে গেছে? আর আল্লাহ আমার জন্য তা নিয়ামত হিসাবে দান করেছেন । তাই আর কিছু বলি না ।প্রতি দিনের বিদায় চুমুটা ললাটে এমন ভাবে একে দেয় , মনে হয় ভাবি , এটাই বুঝি শেষ বিদায় বা শেষ দেখা হয়ত বন্ধু।পিছনে তাকিয়ে দেখি ছেলের বউ দাঁড়ানো ।তখন মুচকি হাসি টা দিয়ে মনে মনে বলিএ কি অপূর্ব! ভালবাসার বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু ।
ছেলের কলেজের শার্ট আনতে ছেলে বলে ছেলে যাবে । সে ছেলেকে যেতে দিবে না ।আমি বললাম ,"আমি গিয়ে নিয়ে আসি তোমরা বাবা ছেলে কেউই যেতে হবে না" । না আমাকেও একা ছাড়বে না ।সে একা যাক তা আমি চাই না । সে বলল , তা হলে চল আমরা দুই জনেই গিয়ে নিয়ে আসি । যাক তাই আল্লাহর উপর ভরসা করে চললাম ।
একজন স্ত্রী থেকে স্বামী বেশি মুত্তাকিন হলে স্ত্রীদের সব দিকেই লাভ ।
দুনিয়াতে জান্নাতী সুখ শান্তি আর শান্তির প্রবাহমান ভালবাসার ঝর্নাধারা । আখিরাতে আর জন্য আপনাকে দিবে আল্লাহর পথে চলার অফুরন্ত সুবিধা ।তা ছাড়া একদিকে যেমন পাওয়া যায় স্ত্রীর মর্যাদা ও গভীর ভালবাসা তেমনি আবার আখিরাতের চিন্তায় আপনাকে দিবে ইসলামের শিক্ষা । পরিশুদ্ধ করে দিবেন আপনার কুলোষিত জীবন । পরিপাটি করে রাখবে আপনার ভালবাসার হৃদয় উদ্যান । শতদলে বিকশিত করে সাজিয়ে দিবেন আপনার হিয়ার মাঝের ভালবাসার লাল গোলাপটা । যেই গোলাপের বৃন্ত থাকবে আপনার মনের গহীন কোঠ্ রে আর পাপড়ি গুলো ফুলকিত বদনে আলো ছড়াবে সারা পৃথিবী জুড়ে ।
মা বলল ,তুমি মনে রেখ ,আজ থেকে তোমার স্বামীর সন্মান তোমার হাতে ।
আমি ভেবে পাচ্ছি না কিভাবে ? পরে মা নিজের জীবনে কি কি ভাবে কত কিছু সবরের মাধ্যমে আমার বাবার সন্মান বাড়িয়েছেন তা আমাকে শুনালেন । আমাকেও তাই করতে বললেন । স্বামীর সন্মান বাড়াতে গিয়ে আমি দেখলাম সবার কাছে আমার মায়ের সন্মান গগনচুম্বী হয়ে গেল ।যা আজ সবার মুখে মুখে । তাই মা বলতেন ,ছেলে বিয়ে করাতে গেলে মেয়ের মা কেমন তা দেখবে।আর মেয়ে বিয়ে দিতে গেলে ছেলের বাবা কেমন তা দেখবে । এখন মনে হচ্ছে সত্যিই তাই ।
সফরে আজ আমার চিন্তা ছিল এমন ভাবে কথা গুরায়ে কোরানের হৃদয় ছুয়ে যাওয়া আয়াত গুলোর দিকে নিয়ে যাব যেই গুলো সে মুখস্ত পারে।কিন্তু আমি পারি না সেই এই সময় কাজে লাগায়ে মুখস্ত করব।আর তার অর্থ ব্যাখ্যা আলোচনা করব ।যেন তাতে দুই জনেরই ইমান বৃদ্ধি পায়।বেচে নিলাম এমন আয়াত গুলো যা ঈমানের কঠিন পরীক্ষা আসলেওআমরা যেন দু'জন দু'জনাকে মজবুত ঈমানের বাধনে ভালবাসা দিয়ে বেধে রাখতে পারি।হার্ড অল্পতেই পরাজিত না হয় বা তাগুতের দূর্বল শক্তির কাছে নত স্বীকার না করে।কাফেরদের মুকাবিলায় যেন আল্লাহর উপর ভরসা ও ধৈর্য্য রাখতে পারি।
আলহামদুলিল্লাহ ।আমার মুখস্থ্য হয়ে গেল সুরা বাকারার (১৫২-১৫৭)।আমার তখন আনন্দ আর প্রশান্তচিত্তে বার বার মনে হল ,আল্লাহ !আমি এই স্বামীর এই অমুল্যধন ভালবাসার ঋন কিভাবে শোধ করব।যাকে না পেলে আমার জীবন হয়ে যেত ষোল আনাই মিছে।আল্লাহ তুমি তোমার গোলামকে তোমার রহমতের চাদরে ডেকে রেখ।
এ কি শুনালে গো ,ওগো বন্ধুঃ
উনি আমাকে মুখস্থ্য করাতে করাতে ছাত্র অবস্থ্যায় এই আয়াত গুলো কিভাবে উনাকে উতজ্জীবিত করে কঠিন সময় আশির দশকে কিভাবে ময়দানে বলিষ্ঠ মুজাহিদের ভুমিকা পালন করে নেতৃত্ব দিয়ে জান মাল কোরবানী করা কর্মীদের ময়দানে কাজে লাগিয়েছিলেন তা আবার স্মরন করিয়ে দিলেন । অনেক জায়গায় ইমামতী করতে গিয়ে এই আয়াত গুলো তেলও্যাত করেন আর নামাজ শেষে এর অর্থ বলে অনেককে এই আন্দোলনের দাওয়াত প্রদান করেন ।অনেক কে সবরের উপদেশ দিয়ে শান্তনা দেন।
আমি সংক্ষেপে যা শিক্ষা পেলামঃ
১।আল্লাহ কে আমরা জীবন চলার পথে স্মরন করলে তিনিও আমাদের স্মরন করবেন।আর আল্লাহর থেকে পাওয়া অফুরন্ত নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকৃতি প্রদান করা।
২।আল্লাহর গোলাম হিসাবে আমাদের কে আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ গুন ধৈর্য্য শ্রেষ্ঠ ইবাদত নামাজের মাধ্যমে অর্জন করতে হবে ।নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়।
৩।ইকামতে দ্বীনের দায়িত্ব পালনে আল্লাহর রাস্তায় জানের কোরবানী যারা করে তাদের কে শাহাদাতের ্মর্যাদায় শহীদ হিসাবে অমৃত জীবন দান করা হয়।ামরাও শহীদি তামান্না নিয়ে এই পথে বাতিলের সাথে ঈমানী জযবা নিয়ে নির্ভয়ে লড়ে যেতে হবে।
৪।আল্লাহর প্রতিনিধিত্বের ও উম্মতে মুহাম্মদী হিসাবে কঠিন দায়িত্ব পালনের জন্য কত টুকু যোগ্যতা অর্জন করেছি তা যাছাই বাছাই করার জন্য আল্লাহ তালা মুমিন মুত্তাকিনদের বিভিন্ন ভাবে ঈমানের পরীক্ষা নিয়েছিলেন ।আমাদের্ জীবনেও এই ধরনের পরীক্ষা আসতে পারে।তার জন্য ঈমানী এলেমী আমলী মনোবল দৃঢ় ভাবে রাখতে হবে।
৫।আমরা সর্বদা স্মরন রাখতে হবে আমরা এসেছি আল্লাহর কাজের জন্য আর সেই কাজ শেষ হলে আল্লাহর ডাক আসলে আমরা আবার আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে।এই নশ্বর পৃথিবীতে পাবার কিছু মত মুল্যবান কিছুই নেই আবার হারাবার মত অমুল্যধন কিছুই নেই ।আসছি খালি হাতে ,যেতে হবে খালি হাতে ,কর্ম্ ফল পাবে আখিরাতে।
৬।এই বিশ্বাসের উপর যারা দৃঢ়পদে চলতে পারবে এবং জীবনের বন্ধুর পরিস্থিতিতে শক্তভাবে ধৈর্য্যধারন করে থাকতে পারবে ,আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের উপর অনাবিল শান্তি ও করুনা বর্ষিত হবে ।আর তারাই দুনিয়া ও আখিরাতে সুফল প্রাপ্ত হবেন ।
হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যেসব গোনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না ৷ হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে ৷হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ আমাদের নেই , তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না ৷আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো৷ তুমি আমাদের অভিভাবক ৷ কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো৷
বিষয়: বিবিধ
২০৩৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দ্বীনের পথে জীবন অতিবাহিত করতে পারলে পরম সুখ মিলে জিন্দেগীতে!
মিছে সুখের কল্পনায় যদিও আমরা তা ভূলে যাই!
ভাল লাগল উপস্হাপনা! জাযাকিল্লাহু খাইরান হে শ্রদ্ধেয়া!!!
তাই সবুজ ভাই কিছু না বললে কি আখিরাতে আল্লাহর কাছে বাচতে পারবেন?তাই আমার ভুল গুলো কিছু বলে পরিশুদ্ধ করে দিন।জাযাকাল্লাহু খাইর ফিদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাত ।আমিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন