সীমার তুষের অনলে পোড়া জীবনের আত্নকাহিনী
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:০৮:১৮ রাত
আলহামদুলিল্লাহ ।ঠান্ডায় সাহেব আজ দুপুরেই হাজির।মতলব বুঝেছি চেহারা দেখেই ।না নফস কে আরাম দেওয়া যাবে না। আজ সবাই আরামে আসে কল্বলের নীচে ,আর আমাকে এই সুযোগেই ব্যাস্ত বোনদের কে গিয়ে ধরতে হবে ।আমরা বোনেরা সুখে কম্বলের পশমের গরমে আরাম আয়েশে জীবন কাটাচ্ছি।আপনারা কি ভেবেছেন আপনার মত আরেক বোন স্বামী ওতার পরিবারের নিষ্টুর নির্যাতনের যাতাকলে স্বীকার হয়ে কি দুর্বিসহ কালাতিপাত করছে ।আপনি কি একটুও তাদের কথা ভাবার সময় পাচ্ছেন না? কেন আমরা ক্ষুদ্রাতি খুদ্র পৃথিবীর রঙ্গধনুর সাত এর মাঝে হারিয়ে গিয়ে নীলাভ কষ্টের করুন চাহনীর সীমাদের কথা ভুলে যাচ্ছি ।ইসলামের দাওয়াতী কাজের মুল্যায়ন অনেক বেশি ।কারন তাতে তৃন মুল পর্যন্ত অনেক কিছু দেখার ও শিখার সুযোগ পাওয়া যায়।আলহামদুলিল্লাহ
সীমার সীমাহীন অনলে পোড়া জীবনের আত্নকাহিনী ঃ
আল্লাহর রহমতে অসুস্থ্য রুগীর সেবা আদর যত্ন পেলে যদি সুস্থ্য হয়ে যেতে হয়। তা হলে ইসলামের চিন্তা না করা বিবেক অসুস্থ্য রা ইসলামের জন্য কোরান সুন্নাহর সঠিক পরিচর্যা পেলে সুস্থ্য হবে ইনশাল্লাহ ।এই চিন্তা করেই আল্লাহর উপর ভরসা করে মঞ্জিলা আপার বাসায় গেলাম । বেশ কয়েক মাস থেকে শুধু রিপোট আসছে মঞ্জিলা আপার বাসার প্রোগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে । কারন আপার সংসারে নানান ঝামেলা আর বিপদ তাই তিনি এখন আর বসবে না। আপাদের কেই বলি আপা আপনারা উনার সাথে দেখা সাক্ষাত করে কি সমস্যা বা কোন বিপদ কিনা তা জানেন ।
বাসায় গিয়েই মঞ্জিলা আপার চেহারা দেখে মনটা কেপে উঠল একি হাল ।সালাম দিতেই আপা কেপে উঠে বললেন পারভীন আপা আপনি এই ঠান্ডায় ?পারভীন আপা আমায় অনেক ঝামেলার মাঝে তাই আপনার বার বার অসুস্থ্যতার খবর পেয়েও দেখে আসতে পারি নাই।আমি উনার স্বাস্থের এই করুন অবস্থা কেন তা জানতে চাইলাম। তখন সব বললেন ।আর লজ্জাবতী লতার মত উকড়ে কুকড়ে বসে থাকা মহিলাটি কে ? তা জানতে চাইলাম।কারন উনাকে আর দেখিনি।আপা তখন মনের ব্যাথায় আর কষ্টে বলল এরে নিয়া আমি কি যে ঝামেলায় আছি।শুনেন আপা,
ওর নাম সীমা
আমার ৪র্থ বোন।আমরা৬বোন ১ভাই,ভাইটা মারা গেছে ।বাকী বোনেরা সবাই সুখে আছি।আলহামদুলিল্লাহ।এই বোনটা এম এ পাশ করার পর বিয়ে দেই ফুফাত ভাইর কাছে । ফুফু আর ফুফাত ভাই তার দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে সুখেই আঁচে মনে করতাম।কিন্তু বোন কাউকে কিছু বলত না।মানুষিক ভাবে তারা সীমাকে সুস্থ্য থাকতে দেয়নি।মানুষ যখন দানব হয়ে যায় তখন তারা হাতে না মেরে মুখে মেরে রক্ত গোলাপের পাপড়ির মত নরম হৃদয় কে চিতল পিঠার জালির মর জালিম্রা বানায়ে ফেলে ।মেয়েদের হাজার ব্যাথায় বুক ফাটে তো মুখ ফুটে না ।তাই সীমা ব্রেইন স্ট্রোক করে ফেলে ।
তিন মাস হসপিটালে দাক্তারদের সুস্থ্য করার বহু প্রচেষ্টা সীমার দুখের এটমবোম বাস্ট হওইয়া ক্ষোটীড় চেয়ে বেশি ক্ষতি পুরন করতে ব্যর্থ হয়। বোনেরা সবাই পালা ক্রমে হসপিটালে থেকে অচল হাত পা ও বোবা মুখের অচেতন সীমার সেবা যত্ন করে।স্বামী খরচ ও সীমার কোন ভার নিতে অপারগ তা জানিয়ে দেন এবং হসপিটাল থেকে সীমা কে আর তার সংসারে ফিরে যেতে দেন নি ।নদী এই কুল ভেঙ্গে আবার আরেক কুল গড়ে এই টা নদীর খেলা কিন্তু সীমার জীবন নিয়ে যারা খেলা করেছেন তারা সব কুল এক সাথে ভেঙ্গে দিয়েছে ।কারন সীমার ছেলেদের হঠাত মায়ের ভালবাসা থেকে বঞ্চিত করাতে এক ছেলে মানুষীক প্রতিবন্ধি হয়ে যায়।
এখন বাচ্ছাদের মত সীমা আধোবোল কথা বলে।কিন্তু অচল হাত পা স্বচল করে স্বামীর কাছে যাবার জন্য প্রানপন চেষ্টা করছে হাটি হাটি পা পা করছে লাঠিতে ভর দিয়ে।মাথা কিছুটা কাজ করলেও বাথ রুম টয়লেট নিজে সারতে পারে না।মঞ্জিলা আপা ঠিকই ভাল স্বামী পাওয়াতে এত টুকু প্রায় ২ বছর থেকে করার সুযোগ পেয়েছে ।েখন আপার চিন্তা , সীমা স্বামী সন্তানের কাছে যাবার জন্য পিঞ্জিরার পাখি বনে শান্তির স্বস্তির ঠিকানাইয় যাবার জন্য খাচার সব ছিদ্র দিয়ে মাথা ডুকাইয়ে বাহিরে পালাবার জন্য প্রানপন চেষ্টা করে আর চেচামেচি করে বুকের ব্যাথা প্রকাশ করে।সীমা তার স্বামী সন্তান এর জন্য প্রায় পাগলের মত চিৎকার আর চলে যাবার জন্য পথ খুজছে।
কেউ তার মনের এই ব্যাথা বুঝে নাই।আমি বুঝেছি কারন আমি একই রুগী আমি বার বার হইয়েছি । পরম দয়ালু আল্লাহ দয়া করে আমাকে আবার স্বচল করে দিয়েছেন। আপা সীমাকে বলেন , তোর মত এই আপা একই রকম হয়েছিল কিন্তু উনার স্বামী ও সন্তানেরা উনাকে বের করে দেন নাই বরং আরো সেবা যত্ন করে সুথ্য করেছেন ।তখন সীমা জোর গলায় বলে সে ভাল হবে আর তার স্বামী আবার তাকে তার সাজানো সংসারে নিয়ে যাবে ।আমাকে দেখে ও আমার কথায় আলহামদুলিল্লাহ সে অনেক মানুষিক স্বস্তি পেয়েছে ।আলহামদুলিল্লাহ ।তাই আমার ফোন নাম্বার রেখেছে।তার মন খারাপ লাগলে ফোন দিলে আমি যেন চলে আসি তার বাসায়।
আমি আল্লাহর কাছে এসেই শুকরানার নামাজ পড়েছি ।আল্লাহ কত রহমানুর রাহিম ।আজ আমি সীমার জায়গায় হলে আমার কি হত তা ভাবলেই আমি আর বেশি দূর আগাতে পারি না।আজ কি শুরু হল ।পৃথিবী থেকে কি দয়া মায়া আল্লাহ তুলে নিয়ে নিচ্ছেন নাকি।আল্লাহকে ভয় আমাদের অন্তর থেকে উঠে যাচ্ছে কেননা যে তাকে ভয় করে, সে কখনো এত নিষ্টুর হতে পারে না ।পৃথিবীর সব চাইতে নিষ্ঠুর সেই মানুষ, যে তার প্রয়োজনে কাওকে ব্যবহার করে আর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে তাকে দূরে সরিয়ে দেয়। আসলে হঠাৎ করে পাওয়া সুখ আর হঠাৎকরে আসা ভালোবাসা এই দুটো জিনিসের মধ্যে অনেক মিল, কারন দুটো জিনিসই বেশির ভাগ সময় ক্ষণস্থায়ী হয়।যেমনই হঠাৎ করে আসে তেমনি হঠাৎ করে জীবন থেকে হারিয়ে যায়,মাঝে শুধু রেখে কিছু না ভুলতে পারার মত স্বৃতি...।
হায়রে পুরুষ মানুষ (সবাই না) দুধ দেওয়া গাভীর লাথী খেয়েও আবার তেল লাগায়ে টেনে দুধ ান ।কিন্তু একদিন একজনের হাসি মাখা মুখ না দেখলে বা ভারাক্রান্ত হৃদয়ের একটু গম্ভীর গলার দুইটি কথা শুনলে,বা বৌ অসুস্থ্য হয়ে রান্না না করতে পারলে লেজ গুটায়ে বৌ সরায়ে দাও। সত্যি তেল্লার মাথায় সবায় তেল দেয় আর আতেল্লার মাথায় লাঠির আঘাত করতে আমরা দেরী করি না।আজ একই কাহিনী সীমার স্বামীর হলে সীমা খেয়ে না খেয়ে এই স্বামী সন্তান সংসার সব সামলায়ে রাত জেগে পুরুষের পাশে বসে বসে ঝিমাতো কিন্তু নিচিন্তায় ঘুমাতো পারত না।সভ্যতার চুড়ান্ত শীর্ষে উঠেও আজ আমাদের সমাজের এই হাল ।এই অবক্ষয় কি ইসলামের সঠিক জ্ঞান ছাড়া রোধ করা সম্বব নয়। তাই বোনেরা সমাজের উচু উচু ধামে গুনে ধরেছে । কোরান সুন্নাহর আলোকে এর আদল পরিবর্তন না করলে এই রকম সীমাদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাবে ।
আল্লাহ আমি সব সময় তোমার কাঁচে বলি তুমি আমাকে সহ সকল মা বোনের জন্য আমাদের স্বামী সন্তানদের অন্তরে আমাদের জন্য ভালবাসা দয়া মায়া ও রহমতের বন্যা বইয়ে ,দাও।
কোন নারী কে স্বামী সন্তান নিয়ে অগ্নী পরীক্ষা করবেন না। আর যদি করেন তা হলে আমাদের ধর্য শক্তি বাড়িয়ে দিন ।সীমা কে সুস্থ্যতা দান করে তার স্বামী সন্তানের কাঁচে ফিরে যাবার তাওফিক দান করুন ।আপনারাও সীমা সহ সকল অসুথ্য দের সুস্থ্যতস্র জন্য দোয়া চাইবেন আল্লাহর নিকট ।
বিষয়: বিবিধ
৩৮০৪ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Click this link
আল্লাহতায়লা আমাদের সকল পরিক্ষা থেকে মুক্তি দিন।
Click this link
Click this link
Click this link
আপনি লিখায় উল্লেখ করলেন, অসুস্থতার সময় আপনার স্বামী সন্তান আপনাকে বাহিরে বের করে দেন নি, বরং সেবা করে আগলে রেখেছিলেন। তাহলে সব পুরুষ সীমার স্বামীর মত হয়না, আপনার স্বামির মতও হয় এটা ভুলে গেলে যে চলবেনা।
কিছু নারী যেমন স্বামীর অসুখ বিসুখে ঘুমাতে পারেনা তেমনি অসংখ্য নারী স্বামী খেল ই খেলনা তার খবর রাখেনা রাখার প্রয়োজন ও মনে করে না।
তবে আপনার সুরেই বলব, সবাই এমন হয়না।
অনেক সুন্দর লিখার জন্যও অশেষ ধন্যোবাদ।
Click this link
আপনি মুসলমান হলে ৩টি বিষয়ের উপর বিশ্বাস আনতেই হবে
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন