আসুন আমাদের দাম্পত্ত জীবনটা মধুময় করতে চেষ্টা করি।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১২:৫৭:৫৭ রাত
জীবনের প্রথম সতর্ক সংকেতঃ
সপ্তম শ্রেনিতে উঠার পর একদিন আম্মা ভাতের প্লেটের পানি ফেলতে বলেন।আমি অলসতা করে জায়গা থেকে না উঠে সেখান থেকেই প্লেটের পানিতা ছুড়ে মারলে কাচের প্লেটটাও আমার হাতের থেকে পাখির মত উড়াল দিল।প্লেট হল দ্বীখন্ডিত আর আম্মার বোকা শুনে আমার কচি মন টা হল একাধিক খন্ডিত।বোকার উপসংহার দিলেন এই বলে “আজ শ্বশুড় বাড়ি হলে শ্বাশুড়ী হলে কি করত এটা ভেবে দেখিও”।ভাবনার জ্বাল ফেলে মনের জলাশয় থেকে খড়কুটা ছাড়া আর কিছুই পেলাম না। পরের দিন চাচাত বোন এর কাছে মনের সব দুঃখ বললাম ।তার কাছ থেকে ভাবস্প্রসারন করে যা পেলাম তা হল , আমাকে বিয়ের অনেক প্রস্তাব আসছে।তাই এখন থেকে আমাকে অনেক সাবধানে চলতে হবে ।আর মনের ইচ্ছা মত চলা যাবে না। মনকে লাগাম দিয়ে বেধে রাখতে হবে
বিয়ের কয়েক দিন আগ থেকে আম্মা বার বার একটা কথা বলতে লাগলেন “দেখ লাল শাড়ি পরায়ে দিচ্ছি স্বামীর বাড়ি দিব, সাদা শাড়ি ছাড়া যেন বাপের বাড়ি আসতে না দেখি “।একটা ১২ বছরের মেয়ে এর মানে বুঝার মত কত টুকু জ্ঞান রাখে । তা আজ ভাবতে হচ্ছে । এর মানে কি? কিছুই বুঝলাম না।কিন্তু কথাটা বার বার চিন চিন করে বুকে ব্যাথা দিচ্ছিল।তখন নিয়ম ছিল বিয়ে ঠিক হলে আর মেয়েরা ঘর থেকে বের হওয়া বা বান্ধবিদের সাথে হই হুল্লা করা মোট কথা স্বাধীন ভাবে চলতে পারবে না ।কারন মেয়ের হবু শ্বশুড় বাড়িতে যদি কোন বদনাম যায় ।তা হলে তো তীরে এসে তরী ডুবার মত সর্বনাশ ।তাও জানার কৌ্তুল বেশি থাকায় গোসলের সময় এক ভাবীর কাছে না পারতে জিজ্ঞাসা করে ফেললাম।ভাবি যা বুঝায়ে বললেন তাতে আমার আক্কেল গুড়ুম। কি কঠিন আদেশ! কবুতর পালতাম ।নতুন কবুতর টাকে বশ মানানর জন্য দুই পাখার কয়েকটি পালক বেধে দিতাম । এতে তার আগের মত উড়ার শক্তি থকে না ।উড়া ছাড়া সে সব কিছু করত।আমি ভাবলাম মেয়েদের জীবন টাও কি তেমন । আমাকেও সেই রকম করেই কি বশ মানানো হবে?
আল্লাহ বলেন ,
“আমি প্রত্যেক জিনিস জোড়ায় জোড়ায় বানিয়েছি”- হয়তো তোমরা এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে ।অতএব আল্লাহর দিকে ধাবিত হও৷ আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমার জন্য স্পষ্ট সাবধানকারী” । (সুরা জারিয়াত)
দাম্পত্ত জীবনেঃ
শুরু হল আমার সংগ্রামী এক জীবন। বিয়ের পরের দুনিয়ার সমস্ত মেয়েদের একটা চরম কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়।একদিকে স্বামীর কাছে সোহাগী স্ত্রী হিসাবে নিজের স্থান দখল করে নেওয়া। আবার একজন স্ত্রী হিসাবে নতুন পরিবেশে কঠিন দায়িত্বরে ভার বহন করার জন্য স্বামী স্ত্রীর মাঝে ভালবাসার আভ্যন্তরীন শক্তি মজবুত করা প্রয়োজন । কারন ভালোবাসার মানে সেরিপ্রাইজ আর কম্প্রমাইজ । এরফলে নারী ও পুরুষের মধ্যে এটি আকর্ষণের প্রাথমিক পর্ব শুরু হয়। এর জন্য চরম ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়।নিজের মধ্যে সবর, ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার শক্তির লালন করতে হবে। আর দ্বিতীয়ত নামায পড়ার মাধ্যমে নিজেকে শক্তিশালী করতে হবে।
“কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ রাখো, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ রাখবো আর আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং আমার নিয়ামত অস্বীকার করো না ৷হে ঈমানদারগণ ! সবর ও নামাযের দ্বারা সাহায্য গ্রহণ করো , আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন”। (সুরা বাকারা ১৫২-১৫৩)
.
এই সময় স্বামীর মন পাওয়ার জন্য নরম কাদা মাটির ন্যায় চুপচাপ থাকতে হয়।যত বড় পন্ডিত হউক না কেন যেন দেখে মনে হয় ভাজা মাছটাও ঊল্ট্যায়ে খেতে জানে না।বাংলাদেশে প্রকৃতির রূপ বদল হয় ৬ ঋতুতে ৬ বার ।আর আমার সব সময় মনে হয় মেয়ে দের জীবনের রূপ বদল হয় ৩ বয়সে ৩ বার ।একবার কন্যা হিসাবে মা বাবার সংসারে । দ্বীতিয় বার স্ত্রী হিসাবে স্বামীর সংসারে । তৃ্তীয় বার মা হিসাবে সন্তান লালন পালনের মাঝে । যত কষ্ট ও ব্যাথাই শরীর ও মনে থাকুক না কেন সব সময় হাস্যজ্জল চেহারাটাই সাহেবদের কাছে প্রিয়। কারন কেউই তার পোশাক মলিন থাকুক তা চায় না । তখন বাধ্য হয়ে হুতুম পেঁচার মত মুখটা না রেখে পূর্ণিমার চাদের ন্যায় নায়িকার বেশেই সামনে হাজির হতে হয়।
“তার তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাক” সুরা বাকারা
"তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই জাতি থেকে সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীগণকে, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করো এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন"সুরা রুম ২১
বলা বাহুল্য আমার আম্মা সব সময় আমাকে বুঝাতেন আর বলতেন “সারাদিন বাসায় কি কাজ করেছ আর কিভাবে চলেছ সেটা পুরুষ দেখবে না ।ঘরে ডুকেই তোমাকে কেমন চেহারার দেখায় তাই সে দেখবেন” ।তাই শরিল ও মন যেমনই থাকুম না কেন সকাল সকাল রান্না বান্না শেষ করে সাহেব বাসায় আসার আগে বাচ্ছাদের ও নিজের গোসল গা ধুয়ে হাস্যুজ্জ্বল চেহারাটা নিয়ে ইনশাআল্লাহ সামনে হাজির থাকতে চেষ্টা করতাম
আল্লাহ আমাদের কে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সাহায্যে পুরুষ ও নারীর পরস্পরের মধ্যে চাহিদা, তৃষ্ণা ও কাছে পাবার অস্থিরতাঁর সৃষ্টি করে দিয়েছেন, তাই উভয়ে মিলে একসাথে না থাকলে শান্তি ও সুখ লাভ করতে পারে না।রা উভয়ই পরস্পর থেকে ভিন্ন শারীরিক আকৃতি, মানসিক ও আত্মিক গুণাবলী এবং আবেগ- অনুভূতি ও উদ্যোগ নিয়ে জন্মলাভ করে।মেয়েরা অনবরত এমনি মেয়েলী বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মলাভ করতে থাকবে এবং ছেলেরা অনবরত এমন পুরুষত্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মলাভ করতে থাকবে যা পরস্পরকে যথার্থ জোড়ায় পরিণত করবে।
মোহর দেওয়া নেওয়ার ক্ষেত্রেঃ
উপকূলের জনগনের আকাশের রোদ আর কালো মেঘ দেখার মাঝে যখন শুনে আবহাওয়া দশ নং সতর্ক দিচ্ছে তখন মনের যে অবস্থা হয় একটা মেয়ের বাসর ঘরে তার চেয়ে খারাপ অবস্থা থাকে ।এই সময় আনন্দে একজন হাসি হাসি চেহারা আর মিষ্টি রস মলাইয়ের মত রস মাখানো কথা বলেন ,আমাকে মোহরনা মাফ করে দাও । আর ইসলাম না জানা ভাবীরা /দাদীরা চিড়িয়া খানায় খাচায় পশু ডুকানোর মত মেয়েটিকে টেনে হিচড়ে এনে খাটে বসায়ে দিয়ে জেতে বলে যান “মোহরানা মাফ করে দিস ।না মাফ করলে গুনাহ হবে ।আমরাও তোমার ভাইকে মাফ করে দিয়েছি”। ভীত সন্ত্রস্থ আর পন্ম ফুলের মত কছি মন তখন জান বাছানোর চিন্তায় শুধু তার মোহরানা না আর কিছু তখন মাফ চাইলে তাও করে দিবে । এতে স্ত্রী প্রেমে পাগল পারা পুরুষ খুশিতে আত্তহারা হয়ে যান । জিবনে আর তা দেওয়ার চিন্তাও মাথায় আনেন না ।
আল্লাহ বলেছেন,
“আর আনন্দের সাথে (ফরয মনে করে) স্ত্রীদের মোহরানা আদায় করে দাও ৷ তবে যদি তারা নিজেরাই নিজেদের ইচ্ছায় মোহরানার কিছু অংশ মাফ করে দেয়, তাহলে তোমরা সানন্দে তা খেতে পারো”৷ (সুরা নিসাঃ ৪)
হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও কাযী শুরাইহর ফায়সালা হচ্ছেঃ যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীকে সম্পূর্ণ মোহরানা বা তার অংশবিশেষ মাফ করে দেয় এবং তারপর আবার তা দাবী করে, তাহলে তা আদায়করার জন্য স্বামীকে বাধ্য করা হবে। কেননা তার দাবী করাই একথা প্রমাণ করে যে, সে নিজের ইচ্ছায় মোহরানার সমুদয় অর্থ বা তার অংশবিশেষ ছাড়তে রাজী নয়।
চৌকস রমনীঃ
স্বামীর বাড়ির আত্নীয় স্বজনদের জন্য হতে হবে আপনাকে চৌকস রমনী।কার মন কি চায় কি বলে বলে তা দার্শনিকের মত দেখা মাত্রই বলে ফেলতে হবে ।আর সেই অনুযায়ী চটপট কাজ করে ফেলতে হবে।আমার একটা ঘটনা এই মুহুর্তে মনে পড়ে গেল। বলা বাহুল্য তাও না বলে পারলাম না ।তা হলো –
আমার সাহেবের বড় বোনের অপারেশানের পর খুব জরুরী ভিত্তিতে দুই ব্যাগ রক্ত প্রয়োজন।অনেকে হাসপাতালে এসে হাজির হলেন।কিন্তু কারও রক্তের সাথে গ্রুপ মিলে নাই।শুধু আমার সাথে আর আমার দেবরের সাথে মিলেছে।লাগবেও দুই ব্যাগ।আমি অন্তঃস্বত্তা থাকায় সাহেবের তেমন ইচ্ছা ছিল না।কিন্তু সব গুলো চোখের নীরব চাহনি আমি বুঝতে পেরেছি তাদের চোখের ভাষা আমাকে কি বুঝাতে চায়।আমি রক্ত দেওয়ার কথা ঘোষনা দিলে সবার মুখে আমি একপালি চাঁদের হাসি দেখতে পেলাম। যদি তা না করতাম তা হলে আমার কাছেই আজও আমাকে একজন অপরাধী মনে হত।
সন্তান লালন পালনে মায়ের ভুমিকা অতুলীনিয়। কিন্তু সেখানেও দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।যেই মা গর্ভেধারন থেকে শুরু করে আদর্শ সন্তান রুপে মানূষ না হয়া পর্যন্ত ত্যাগের পর ত্যাগ শিকার করতে মোটেও দ্বিধাবোধ করেন না ।আল্লাহ যখন মায়ের দোয়া কবুল করে সু সন্তান হিসাবে সন্তান কে গড়ে তুলেন তখন বাবা খুশিতে আটখানা হয়ে বলে উঠেন ‘আমার সন্তান আমার মতই হয়েছে।দেখতে হবে না কার জন্মের সন্তান “।আর যখন দুর্ভাগ্যক্রমে সন্তান খারাপ বা বাবার মনের মত না হয় তখন বলে “তোমার দোষে বাচ্ছারা খারাপ হয়ে গেছে “।তাই কথায় আসে ,সুসন্তান বাবার গর্বের কারন আর কুসন্তান মায়ের যন্ত্রনার কারন।
অনেক সময় বাবারা সন্তানের সাথে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন না তখন একজন মাকে আরও বড় কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়।কারন তিনি স্ত্রী হিসাবে না পারেন স্বামীর বিপক্ষে অবস্থান নিতে , না পারেন কলিজার টুকরা সন্তানদের বিরুদ্বে অবস্থান নিতে।ছুরির দুই পাশে ধার হলে যেমন কোন পাশে যাওয়া যায় না ।তেমনি একজন মহিলা একদিকে একজন মা অন্য দিকে একজন স্ত্রী হিসাবে কোন দিকেই পক্ষ পালন করতে পারে না ।তাই খুব দক্ষতার সাথে দুই পক্ষের মুখামুখী সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য মাঝখানে সীসা ঢালা প্রাচীরের মত অবস্থান করতে হয়।
একটি মেয়ে বিয়ের পর তার বাবার বাড়ির লোকদেরও দায়িত্ত্ব পালন করতে হয়।তার চেয়ে বেশি দায়িত্ত পালন করতে হয় স্বামীর পক্ষের আত্নীয় স্বজনদের।স্বামীর সংসারের নীরব যাতনা সহ্য করেও হাসি মুখের চেহারা নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে যেতে হয়।কারন তা না হলে এতে শুধু নিজের স্বামী ওনিজের সংসারকে নয় নিজেকেও নিজের আপন জনের কাছে ছোট করা হয়।নিজের মনের তুষের আগুন অন্যকে বুঝতে না দেওয়াই ভাল।তা ছাড়া আমার এই ক্ষনিকের আগুন আমি কেন আমার মা বোন সহ অন্যান্য দের মাঝে জ্বালিয়ে দেব।এটা তো পানির বুদবুদের মত নিমিষেই শুন্যে বিলিন হয়ে যাবে।একটূ সহ্য না করলে লাভের অংকের চেয়ে ক্ষতির অংকটা বড় হয়ে দাঁড়াবে।
যে সকল মহিলারা ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে দুনিয়াতে শান্তি আখেরাতের মুক্তির জন্য দায়িত্ত্ব পালন করার সময়ও চরম অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়।কারন একদিকে স্বামী সন্তান নিয়ে সংসার সামলানো। তার সাথে আল্লাহর ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে কিছু সময়কে জমা করে দ্বীনের পথে ব্যয় করার জন্য ঘর থেকে বের হওয়া।আবার সংসারের যেন ক্ষতি না হয় সে দিকে মৃগয়া হরিণীর মত দৃষ্টি রাখা।কারন পূরুষ শাষিত সমাজে সংসারের উন্নতি দেখলে তারা বউয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।আর যদি তার বিপরীতটা দেখেন তখন বলেন বউ তো নয় ,এটা আমড়া গাছের ঢেকি।
“নিজের নিকটতম আত্নীয়-পরিজনদের ভয় দেখাওএবং মুমিনদের মধ্য থেকে যারা তোমার অনুসরন করে তাদের সাথে বিনম্র ব্যবহার করো”।(সুরা শুয়ারাঃ২১৪-২১৫)
“নিসন্দেহে নবী ঈমানদারদের কাছে তাদের নিজেদের তুলনায় অগ্রাধিকারী, আর নবীদের স্ত্রীগণ তাদের মা । কিন্তু আল্লাহর কিতাবের দৃষ্টিতে সাধারণ মু’মিন ও মুহাজিরদের তুলনায় আত্মীয়রা পরস্পরের বেশি হকদার৷ তবে নিজেদের বন্ধুবান্ধবদের সাথে কোন সদ্ব্যবহার (করতে চাইলে তা) তোমরা করতে পারো৷ আল্লাহর কিতাবে এ বিধান লেখা আছে” (সুরা আহযাবঃ ৬)
হযরত যুবাইর ইবনে মুতয়িম রাঃ বর্ণনা করেন ,তিনি নবী করিম সাঃ বলতে শুনেছেন, “আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না” (বুখারী , মুসলিম )
মেয়েদের জীবনটা সংগ্রামী এক অভিনেত্রীর জীবনঃ
আমার বড় বোনের মেয়ের বিয়ে।আমার হৃদয়ের বাদ্যযন্ত্রে করুন বিউগলের সুর মুহু মুহু করে বেজে উঠছে।আল্লাহ কে বলছি এই আনন্দের সানাই যেন বেদনার সানাই হয়ে বেজে না উঠে।মেয়ে বিদায়ের ঘন্টা খানেক আগে আমার বোন আমাকে এসে বলল “পারভিন ,তুমি এখানে বসে আছ ?মেয়ে কিভাবে স্বামীর সংসারে চলবে সেই ব্যাপারে একটু বুদ্বি দিয়ে দাও “।আমি খুব চিন্তায় পড়লাম।কিছুই মাথায় আসছে না।বিদায়ের সময় সালাম দিতে আসল তখন শুধু একটা কথা মুখফসকে বের হয়ে গেল “যদি একজন দক্ষ অভিনেত্রী হতে পার তা হলে স্বামীর সংসারে ঠিকে থাকতে পারবে “।
আমি যখন শুনি মেয়েরা স্বামী বা আত্নীয় স্বজনের অত্যাচারে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বা পরাজিত সৈনিকের মত জীবনের মায়া ত্যাগ করে আত্নহত্যা করেছে।তখন আমার দুঃখে বুক ফেটে কান্না আসে।মনে মনে ভাবি আর নিজের সাথে নিজেই বলি কি ছিল তার অপরাধ? ভিতর থেকে উত্তর আসে দক্ষ অভিনেত্রীর ভূমিকা পালন করতে গিয়ে সে ফেল করেছে।
তা হলে আমরা যারা সংসার জীবন শেষ করেছি বা এখনও করছি তারা আমরা সবাই কি দক্ষ অভিনেত্রী ? নাটকের মঞ্চে সিনেমায় যারা অভিনয় করেন তাদের চেয়ে যারা বিয়ের পর সংসার জীবনে বাস্তবের সাথে সংগ্রাম করে ঠিকে আছেন ,আমার মনে হয় সেই সব মেয়েরাই দক্ষ অভিনেত্রী ।
আল্লাহর কাছে কায়মনো বাক্যে সাহায্য চাইযে তিনি যেন আমাদেরকে আদর্শ স্ত্রী , মা , বোন ও উত্তম মহিলাদের মত আমল আখলাক ও ধৈর্য অর্জনের তাওফিক দান করুন । আমাদের জন্য স্বামীর সংসারের সবার ভিতরে রহমত সৃষ্টি করে দিন। আর যেন কোন মেয়ে কে জীবন যুদ্ধে হেরে জীবন দিতে না হয়
বিষয়: বিবিধ
৫৬৫১ বার পঠিত, ৫৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজাকাল্লাহ খাইর।
ইনশাল্লাহ পাবেন যদি আপনি সেই রকম পুরুষ হতে পারেন ।
অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই......
অনেক সুন্দর একটি লেখা পড়লাম এবং বাস্তবিক অর্থেই অভিভূত হয়েছি!
একজন মেয়ের ভিতরের অনুভুতিগুলো আপনি খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আর একজন পুরুষ হিসেবে আমার কি করণীয় ছিল বা কি করছি, আজ এই লেখা পরে অনেকটা আঁচ করছি।
এরকম আরো অনেক অনেক লেখার জন্য উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া ওয়াখিরাতের আল্লাহর সন্মানিতদের কাতারে শামিল হওয়ার তাওফিক দান করুন । কষ্ট করে পড়ার জন্য আল্লাহ আপনাকে দুনিয়াবী ও পরকালের সকল কল্যান দান করুন ।আমিন ।
মাশাআল্লাহ, লা কুআতা ইল্লাহবিল্লাহ। বারাকাল্লাহু লাক।
অনেক সুন্দর একটি লেখা পড়লাম খুবই ভাল লেগেছে ।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
"মনমরা হয়ো না, দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো৷" আলে ইমরান ১৩৯
,ব্লগে এসে কষ্ট করে পড়ার জন্য আল্লাহ আপনাকে দুনিয়াবী ও পরকালের সকল কল্যান দান করুন ।আমিন ।
না ভাই, স্বাধীন আছি, স্বাধীনই থাকতে চাই। এমনিতেই আমি নাকি বোকা মার্কা আর গোবেচারা টাইপের (আম্মু বলে), কি দরকার বোঝা মাথায় নিয়ে!!! যদি একান্তই কখনো ফরজ না হয়ে যায়, তাহলে "একলা চলোরে" 'জিন্দাবাদ।
,ব্লগে এসে কষ্ট করে পড়ার জন্য আল্লাহ আপনাকে দুনিয়াবী ও পরকালের সকল কল্যান দান করুন ।আমিন ।
,ব্লগে এসে কষ্ট করে পড়ার জন্য আল্লাহ আপনাকে দুনিয়াবী ও পরকালের সকল কল্যান দান করুন ।আমিন ।
আপনার আম্মার এই মন্তব্যটি খুবই প্রনিধান যোগ্য:
বলা বাহুল্য আমার আম্মা সব সময় আমাকে বুঝাতেন আর বলতেন “সারাদিন বাসায় কি কাজ করেছ আর কিভাবে চলেছ সেটা পুরুষ দেখবে না ।ঘরে ডুকেই তোমাকে কেমন চেহারার দেখায় তাই সে দেখবেন”। তাই শরীর ও মন যেমনই থাকুম না কেন সকাল সকাল রান্না বান্না শেষ করে সাহেব বাসায় আসার আগে বাচ্ছাদের ও নিজের গোসল গা ধুয়ে হাস্যুজ্জ্বল চেহারাটা নিয়ে ইনশাআল্লাহ সামনে হাজির থাকতে চেষ্টা করতাম।
আল্লাহ আপনাকে এবং আপনাদের সবাইকে রহম করুন।
আমার একটি পোষ্ট আছে, সময় হলে ঘুরে আসবেন। জান্নাতের নারী, হুর ও গেলমান! এগারটি প্রশ্নের খোলা উত্তর
আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া ওয়াখিরাতের আল্লাহর সন্মানিতদের কাতারে শামিল হওয়ার তাওফিক দান করুন । কষ্ট করে পড়ার জন্য আল্লাহ আপনাকে দুনিয়াবী ও পরকালের সকল কল্যান দান করুন ।আমিন ।
আলহামদুলিল্লাহ্ লিখাটাও পড়ে শেষ করছি। অনেক সুন্দর এবং সাজানো গোছালো লেখা। অ-ন্নে-ক ভালো লাগলো যাজাকিল্লাহু খাইর।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন