এক দুষ্ট ছেলের গল্প
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২৩ জুলাই, ২০১৪, ০৩:৩৭:৫৬ রাত
এক মায়ের দুষ্টের শিরমনি একটা ছেলে ছিল ।
মায়ের চোখের ঘুম মনের শান্তি সব কেড়ে নিলো সেই ছেলে । যখন শিশু তখনি সে সব তার মন মত হওয়া চাই। না হলে তুমুল কান্ড শুরু ।যৌথ সংসারে কাউকে সে শান্তি দিচ্ছে না । প্রতি ঘন্টায় তার জন্য নালিশ আসে ১০ বার। ২য় তলার প্রতিবেশির ছেলে কামরান ইমরান তাদের বাসায় পড়ছে পিছন দিয়ে লুকায়ে দুইটার পিঠে দুই টা গুড়ুম গুরুম দিয়ে চলে এসে খাটের অন্য ঘুমন্ত ভাইদের সাথে চোখ বন্ধ করে ঘুমাচ্ছে। কামরানের আম্মা বিচার নিয়ে এসেছে ।কিন্তু দুষ্ট্য ছেলে তো নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। পড়ার মাঝে দিয়ে পাশের বাসার টিনের চালে ইট মেরে এসে কত মনযোগ দিয়ে জোরে জোরে পড়ছে।মা স্কুলের নিবে তাই রেডি করায়ে টিফিন নেওয়ার ফাকে ৫ম তলার সাদিয়া টয়লেটে ডুকার সাথে বাহিরে দিয়ে লাগায়ে স্কুলে চলে গেছে মায়ের সাথে। গ্রামে বেড়াতে গেল চাচার বিয়েতে । সেখানে দুষ্ট ছেলে বায়না ধরেছে সে জহির কাক্কার সাথে বিয়ে করবে । মা মুরগীর ডানার নিচে থেকে তার বাচ্ছা নিয়ে মুরগীর দৌড়নি খায়।
স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হলো দুষ্ট ছেলে । মায়ের কানে স্কুলের স্যার মেডাম আয়া বয় গার্জিয়ান সবাই এক ডজন নালিশ নিয়ে তার মা আসার অপেক্ষায় থাকে ।কারো সাথে মারামারি , কারো টিফিন চুরি , কাউকে খেলার থেকে তাড়িয়ে দেওয়া । ব্লাক বোর্ডে শিক্ষকের নামে লিখা । ক্লাস ফাকি দিয়ে স্কুলের গাছে উঠে বসে থাকা।ক্যান্টিনের নুরু মামা আর আচার আলা মামার বিচারও মায়ের কানে আসে ।মা অসহ্য হয়ে স্কুল থেকে আনার পথেই ধুপধাপ দিয়ে দেয় ।স্যারদের কে দিয়ে শাসন করার জন্য মা স্যারকে বলে । সেই স্যারের সাথে ভদ্রতার শেষ নাই। ধর্মের হুজুরের বেতের বাড়ি পিঠে দেয় তাই শার্টের ভিতর দিয়ে পিঠে কয়েকটা খাতা বিছায়ে রাখে আগে থেকেই । যখন ক্লাসের অন্য সবাই মাইর খেয়ে কাদে তখন সে হাসে ।
নটর ডেম কলেজে ভর্তি হয় দুষ্ট ছেলে। সেখানেও আছে তার দুষ্টামী । বাসার স্যার কলেজের স্যার সবাইকে সে হাতে নিয়ে আসে । প্রিন্সিফল স্যার অভিভাবক ডেকে আনতে বলে। মাকে বলে মা ,আজ তোমাকে নটর ডেম কলেজ কত সুন্দর তা ঘুরায়ে ঘুরায়ে দেখাব ।এক সময় এক রুমে ডুকার আগে বলে মা "এই রুমে কেউ কিছু বললে তুমি চুপ করে থেকো । স্যার অনেক নালিশ দিয়ে শেষে বলেন আপনার বোনের ছেলের দিকে বাকি ৩ মাস খেয়াল রাখবেন ।ব্রেইন ভাল একটু দুষ্ট এই টুকুই ঠিক হয়ে যাবে।
ইসলামী আন্দোলনের ছেলেদের মা নিয়োগ করে দুষ্ট ছেলেটাকে মানুষ বানানোর জন্য । আল্লাহর কাছে দিন রাত নেই কান্দে আর কান্দে শুধু আল্লাহ ছেলের মাথায় সুবুদ্ধি যেন দেয় । ইসলামের জন্য যেন আল্লাহ তাকে কবুল করে নেন । আলহামদুলিল্লাহ সেই দুষ্ট ছেলেটা আল্লাহর সৈনিক হিসাবে ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর পল্টন ময়দানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লড়তে থাকে ।আহত হয়ে গাজী হয়ে ঘরে ফিরে। ইসলামের শহিদদের কে বার বার নিজের ভাইয়ের মত কোলে জ়োড়ায়ে নিয়ে শকুনদের মুখ থেকে নিয়ে যায় । নিজেই কোরান শিখে নিজের পছন্দের কোরানের হাফেজ ভাইদের কাছে। মায়ের পাগল ছেলে ৩ দিনের শিক্ষা শিবিরে গিয়ে ৩ রাতেই মায়ের জন্য জোরে জোরে কান্দে। তখন তো আর মোবাইলের যুগ ছিলো না ।তাই ৩ পর এসে মায়ের গলা ধরে আবার কান্দে। যেখানে যায় মায়ের জন্য হাতে কিছু থাকেই । কক্সবাজার গিয়ে ঝিনুকের মালা কানের ধুল চুলের ক্লিপ আরো কত কি।
দুষ্ট ছেলে প্রবাসে যায়। সব দুষ্টামী বাংলাদেশে রেখেই যায়। সেখানে আল্লাহ তাকে মসজিদের খাদেম করেন । আলহামদুলিল্লাহ মায়ের কোন দোয়া বিফল হয় না ।তাই আজ ফোন দিয়ে বলে "মা আমি না সারা রোজার মাস জামাতে নামাজ পড়েছি আর সারা রাত মসজিদে ইবাদতে কাটায়ে রমজান টা শেষ করতে যাচ্ছি। তুমি কি খুশি হয়েছো ?" আলহামদুলিল্লাহ ।আজ আমার এতো আনন্দ লাগছে যে , সে যদি পুরা পৃথিবীটা আমাকে এনে দিত আমি তা ঘৃনায় ফেলে দিয়ে তাকেই আগে কোলে ঝড়ায়ে নিতাম । কারন এর চেয়ে মুল্যবান আর আনন্দের সুখবর ছাড়া অন্য কিছু আছে বলে আমার কাছে মনে হয় নাই। আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়ার জীবন ইসলামের খাদেম হিসাবে কবুল করে নিক ।আখিরাতের জন্য আমাকে সদগায়ে জারিয়া হিসাবে তাদের কে দান করুন ।আল্লাহ আমাদের সবার স্বামী সন্তানকে নয়ন শিতল কারী মুত্তাকিনদের ঈমাম বানিয়ে দিক ।কোন মাকে যেন আল্লাহ কাল কিয়ামতের মাঠে বদকারের মা হিসাবে ডাক না দেন।আমিন
ছবিতে টুপি মাথায় আমার দুষ্ট ছেলেটা ।
ডান পাশের জন । দুই জন যা না করেছে সে একা সবার টা করে শেষ করেছে।
পিকনিকে দুষ্ট ছেলে দুষ্ট ঘোড়া কেও বশ করে নিয়েছে
প্রবাসেও সে দুই জনের কাধে হাত রেখে দলের নেতা হয়ে আছে ।
Parvin Sultana's photo.
বিষয়: বিবিধ
৪২৯৫ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Click this link
Click this link
"আপনার বোনের ছেলের দিকে বাকি ৩ মাস খেয়াল রাখবেন।"
আমার ছোট ছেলেটিও এরকম দুষ্টামি করে যাচ্ছে। দোয়া করবেন আমাদের জন্য। ওর মা খুবই টেনশনে আছে।
মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের ভয়াবহ ধ্বংস থেকে বাচার উপায়ঃ
Click this link
আমিন!
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন