আমেরিকার আবিষ্কারক কলম্বাস নয় আবু রাইহান আল বেরুনি
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২৬ জুন, ২০১৪, ০১:৩৮:৫০ দুপুর
আমেরিকার আবিষ্কারক কলম্বাস নন, আবিষ্কারক একজন মুসলিম মনীষী। মার্কিন ইতিহাসবিদ এস. ফ্রেডরিক স্টার তার ‘হিস্ট্রি টুডে’ নামক নিবন্ধে এমন দাবি করেছেন। সারা পৃথিবীবাসী এতোদিন স্প্যানিশ নাবিক কলম্বাসকেই আমেরিকার আবিষ্কারক হিসেবে জেনে এসেছেন। তবে, ফ্রেডরিক আমাদের জানাচ্ছেন, আমেরিকার আবিষ্কারক হলেন মধ্যযুগের মুসলিম ভূগোলবিদ আবু রাইহান আল-বেরুনী। নিবন্ধটিতে দাবি করা হয়েছে, কলম্বাসের ৫০০ বছর আগেই আমেরিকা আবিস্কার করেছিলেন এই মুসলিম মনীষী। নিবন্ধ বলছে, মুসলিম মনীষী আবিস্কার করলেও পাদপ্রদীপের আলোয় আসে কলম্বাসের নাম।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, ১৪৯৮ সালের অনেক আগেই আমেরিকা আবিস্কার করেন আবু রাইহান। নিবন্ধ অনুসারে ৯৭৩ সালে আজকের মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানে জন্ম আবু রাইহানের। ওই ইতিহাস লেখকের মতে, আবু রাইহানই এশিয়া-ইউরোপসহ পৃথিবীর অজানা ভূমি আবিস্কারের প্রথম পথ প্রদর্শক। আবু রাইহান স্বশরীরে আমেরিকা গেছেন কি না সেটা স্পষ্ট করেননি নিবন্ধকার। তবে আমেরিকা যে আমেরিকার জায়গায় ছিল সেটার বাস্তবসম্মত ধারণা দেন এই মুসলিম ভূগোলবিদ। ১১ শতকে অজানা দেশ আবিস্কারে নামা আবু রাইহান তার চোখ শুধু আমেরিকাতেই বেধে রাখেননি। ভূগোল বিশারদ এই মনীষী চোখ রেখেছিলেন পশ্চিম ইউরোপ থেকে শুরু করে পুরো আফ্রিকা, পূর্ব-এশিয়াসহ পৃথিবীর এক-পঞ্চমাংশের দিকে। মধ্যপাচ্য, উত্তর-পশ্চিম ও ভারতসহ অনেক দেশের ভাষা জানতেন রাইহান। দক্ষ ছিলেন গণিত, জোতির্বিদ্যা, খনি বিদ্যা, ভূগোল, মানচিত্রাঙ্কন বিদ্যা, জ্যামিতি ও ত্রি-কোনোমিতিতে। আর এসব ব্যাপারে তিনি বিখ্যাত মুসলিম মনীষী আহম্মেদ আল-ফারহানির মতোই দক্ষ ছিলেন বলে ওই নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রীক মনীষী ক্লডিয়াস টলেমি ও পিথাগোরাসের মতোই ভূগোল বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন আবু রাইহান। টলেমি ও পিথাগোরাসের মতো রাইহানও ধারণা দিয়েছিলেন যে, পৃথিবী চারদিকে ঘুরে। আবু রাইহানের শিক্ষক আল-ফারহানিও পৃথিবী চারদিকে ঘুরা তত্ত্বের কথা বলেছিলেন। অবাক করা ব্যাপার হলো, যে ভিত্তির কথা উল্লেখ করে কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারে তার নিজের মতের কথা বলেছিলেন, সেটা আল-ফারহানি ও আবু রাইহানের তত্ত্বের সঙ্গে প্রায় পুরোপুরি মিলে যায়।
নিবন্ধকার লিখেছেন, কলম্বাস এটা হয়তো নোট করতে ভুলে গিয়েছিলেন যে, ভ্রমণের ক্ষেত্রে আল-ফারহানি রোমান মাইলসের পরিবর্তে আরব মাইলস ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি কলম্বাস কখনোই আমেরিকা আবিস্কারের কথা চিন্তাও করেননি। জাহাজে উঠার পর প্রথমে কলম্বাস চিন্তা করেছিলেন, তিনি হয়তো এশিয়া কিংবা ইউরোপে গিয়ে উঠবেন। নিজের শিক্ষকের মতো আবু রাইহান পৃথিবীর ঘূর্ণনের ব্যাপারে যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন তার আধুনিক তত্ত্বের সঙ্গে প্রায় সম্পূর্ণ মিলে যায়।
নিজ কক্ষে চলার পথে সূর্য ও পৃথিবীর যে সম্পর্ক সে ব্যাপারে রাইহানের তত্ত্ব পুরোপুরি ঠিক। পৃথিবী ঘূর্ণনের এই তত্ত্ব যখন দেন তখন আবু রাইহানের বয়স ৭০ বছর। শারীরিক কারণেই হয়তো তাকে স্বশরীরে আমেরিকায় নিতে পারেননি। কিন্তু মাপ-ঝোপের সবকিছুই করেছেন তিনি। তবে আরও অনেক তত্ত্ব বাকি আছে বলেও মনে করতেন রাইহান। তবে এসব কথা বলা মানে এই নয় যে, আমেরিকা এখনও আবিস্কার হয়নি। তবে সেখানে আরও দলিল রয়েছে যে,স্ক্যানডিনেভিয়া থেকে নরম্যান আমেরিকা আবিষ্কারের জন্য আইসল্যান্ড ও গ্রীনল্যান্ড অতিক্রম করে কানাডা পর্যন্ত গিয়েছিলেন সেখানে দশম শতাব্দী থেকেই আমেরিকার পূর্বসুরীরা বসবাস করতেন।
ফ্রেডরিক তার নিবন্ধে দাবি করেছেন, আবু রাইহান আল-বেরুনীই পৃথিবীর প্রথম ব্যক্তি যিনি, ‘নতুন পৃথিবী’ (নিউ ওয়ার্ল্ড) শব্দটার ধারণা দিয়েছেন। এস. ফ্রেডরিক স্টার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তিনি একজন ইউরেশিয়া (ইউরোপ ও এশিয়া) বিশেষজ্ঞ। এছাড়া ‘সেন্ট্রাল এশিয়া ককেশাস ইনিস্টিটিউট’র প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। এ পর্যন্ত ২০টি বেশি বই লেখা ও সম্পাদনা করেছেন। আর নিবন্ধ লিখেছেন ২০০’র বেশি।
সূত্র : ওয়ার্ল্ড বুলেটিন
http://www.weeklysonarbangla.net/news_details.php?newsid=14260#sthash.MDQnefx4.dpuf
বিষয়: বিবিধ
২০৮৫ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Click this link
মুসলমানদের প্রাপ্তি শুন্য। তো, কি আর করবেন? ইহুদী-খ্রীষ্টান'রা কি বলেছেন সেটা আক্রে ধরে থাকাই আপনার মত হতভাগা মুমিনের দুনিয়া আখিরাতে প্রাপ্তি @ সত্য লিখন।
১৪৯৮ সালে কলম্বাস যখন আমেরিকায় যান তখন সেখানে রেড ইন্ডিয়ানরা ছিল । তার মানে আমেরিকাতে কলম্বাসই প্রথম পা রাখেন নি , তার আগে থেকেই এখানে জনবসতি শুরু হয়েছে।
কলম্বাস যে আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন তা তিনি প্রথমে বুঝে উঠতে পারেন নি । মনে করেছিলেন এটা ভারত উপমহাদেশেরই পশ্চিমাংশ - তাই এর নাম দেওয়া হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ।
পরে আমেরিগো ভেসপুচি ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিলেন - উনিও সম্ভবত ছিলেন কলম্বাসের মতই একজন নাবিক ।
আমেরিকার নাম আমেরিগো ভেসপুচির নামের সাথে মিল রেখে দেওয়া হলেও এর আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া হয় কলম্বাসকেই । যদিও প্রথমে উনি বুঝে উঠেন নি যে নতুন আরেকটি মহাদেশ আবিষ্কার করেছেন , পরে ভেসপুচি সেটা আবার আবিষ্কার করলেও প্রথমে যেহেতু কলম্বাসই গিয়েছিলেন তাই এর কৃতিত্ব কলম্বাসকেই দেওয়া হয় ।
এটার সূত্র ধরে যদি দাবী করা হয় , না বুঝতে পারলেও কলম্বাসকে আমেরিকা আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া যদি যেতে পারে , তাহলে তার অনেক আগেই যারা এখানে এসেছেন তারা কি আমেরিকা আবিষ্কার করেন নি ?
Click this link
তবে আশার কথা হচ্ছে-সত্যিগুলি মাঝে মাঝে উঁকি দেয়।
Click this link
Click this link
Click this link
ধন্যবাদ।
Click this link
Click this link
আমার কাছে এধরণের এপ্রোচ হাস্যকর লাগে। আমরা মুসলিমরা যে হীনমন্যতাবোধে ভোগা অলস জাতি, এটার ভালো একটা উদাহরণ এই লেখার টোন। আমরা আমাদের অর্জন-ঐতিহ্যের বৈধতা খুঁজি পাশ্চাত্যের কাছে।
কবে কোন কালে মুসলিমরা কি অর্জন করেছিল, কোথায় সাফল্য লাভ করেছিল সেগুলি চিবিয়ে চিবিয়ে ছোবড়া বানিয়ে আত্নতৃপ্তি লাভ করি।
এই লেখার পিছনে ইতিহাসের প্রতি কোন ভালোবাসা নেই, ইতিহাস জানার কোন আগ্রহ নেই, আছে শুধু খৃষ্টান কলম্বাস কে বাঁশ দিয়ে মুসলিম আলবিরুনীর আবিষ্কারের কৃতিত্বের ঢেকুর।
যাই হোক, মুল নিবন্ধটা এখানে
Click this link
Click this link
Click this link
Click this link
এর সুযোগ নিয়েেই পশ্চিমারা আমাদের গৌরবের বিষয়গুলো আমাদের ভুলিয়ে দিচ্ছে
Click this link
Click this link
Click this link
Click this link
তথ্যবহুল পোস্ট। ধন্যবাদ।
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন