প্রান প্রিয় বন্ধু আপনার কল্যানের জন্য ৩ঢালা পুরস্কার নিয়ে দরজার কলিংবেল টিপছে।সুস্বাগতম বলেন।
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৯ জুন, ২০১৪, ১২:৪১:১৩ রাত
প্রান প্রিয় বন্ধু আপনার কল্যানের জন্য ৩ঢালা পুরস্কার নিয়ে দরজার কলিংবেল টিপছে।সুস্বাগতম বলেন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতু।
প্রান প্রিয় বন্ধু কল্যানের জন্য ৩ঢালা পুরস্কার নিয়ে দরজার কলিংবেল টিপছে।তাকে সুস্বাগতম বলে হৃদয়ের ঘরে ডুকতে দিন ।রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের ঢালা নিয়ে আমলের মাহে রামাদানুল মুবারক মাস সমাগত হয়ে আসছে। সুস্বাগতম ।এই মাস হল মানব জাতির নৈতিক প্রশিক্ষন ও আত্নশুদ্ধি ও আত্নগঠনের মাস।আল্লাহর কোরান কে ব্যক্তি, পরিবার , সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিষ্টার জন্য সংগ্রাম জোরদার করার মাস।
তাই এই মাসে আমরা আত্নসচেনতা , আত্নোপলদ্ধি, নফসের পরিশুদ্ধি, উত্তম চরিত্র গঠন ও নিজের জীবনের মান উন্নয়ন সাধন সহ যথার্থ আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে এই মাস এর মর্যাদা রক্ষা করতে ইনশাল্লাহ চেষ্টা করব।সঠিক নিয়মে কোরান হাদীস অধ্যায়ন, নামাজ রোজা ও তারাবীহ সহ সালাতুজ তাহাজ্জদ পালন এর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে চেষ্টা করব ।
“হে ঈমানদাগণ! তোমাদের ওপর রোযা ফরয করে দেয়া হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অনুসারীদের ওপর ফরয করা হয়েছিল ৷ এ থেকে আশা করা যায়, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণাবলী সৃষ্টি হয়ে যাবে ৷” সুরা বাকারা ১৮৩
তাকওয়া মানে আল্লাহভীতি। যা আমাদের হুদাল্লিন মুত্তাকিন করে মানউন্নয়ন করে মুহসিনিন হতে সাহায্য করেবে। আর এই মানোন্নয়নের জন্য যা করা দরকার তা হলঃঃ
ইসলামের নামে প্রচলিত ভন্ডামি, শিরক, বিদআত এবং কুফর না করে কুরআন (কিতাবুল্লাহ) এবং হাদীস (সুন্নাতু রাসুলুল্লাহ)- এর আলোকে আল্লাহর ইবাদত করা। আমরা দৈনন্দিন জীবনের কিছু শিরক এবং কুফর, যা আমরা ইবাদত, ইসলামের অন্তর্ভূক্ত এবং সওয়াবের বিষয় বলে বিবেচনা করি।এ সকল আমল শুধু আমাদেরকে সম্পূর্ণ গোমরাহির দিকেই নিয়ে যাচ্ছে না বরং জাহান্নামের ভয়াবহতম লেলিহান আগুনে আমাদের চির জীবনের আবাসস্থল তৈরি করছে।
গভীর মনোযোগ সহকারে সালাত আদায় করাঃ পুরুষদের ভাইদের জন্য ফরজ সালাত জামায়াতের সাথে আদায় করা ওয়াজীব। গভীর মনোযোগ সহকারে আদায় করা মানে নামাজের পঠিত আয়াত সমুহ উত্তম ভাবে উচ্চারন ও অর্থ এর প্রতি খেয়াল রেখে বুঝে বুঝে তেলয়াত করা।
অন্তরের উপোলদ্ধি সহ কোরআন হাদীস অধ্যায়ন করাঃ আমরা আল্লাহর দেওয়া কোরান এর মাধ্যমে আমাদের অন্তরের কালিমা দূর করতে হবে।আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজীদকে কেন এই মাসে অবতীর্ণ করেছেন? তা জানতে হবে। এটি এজন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে, যেন তার উপর আমল করে জ়ীবন যাপন করা হয়।
“তোমাদের রবের তরফ হতে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাকে অনুসরণ কর।সুরাআ’রাফঃ৩
“কুরআন তিলাওয়াত করতে থাক, আর তার উপর আমল করতে থাক, তার দ্বারা অর্থ উপার্জন করো না, বেশি বেশি আয়ের লোভও করো না।” (আহম্মেদ সহীহ্)
“আমি এ কুরআনকে উপদেশ লাভের সহজ উৎস বানিয়ে দিয়েছি৷এমতাবস্থায় উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?” সুরা কামার১৭
কুরআন একখানা সহজ গ্রন্থ। এ গ্রন্থ বুঝার জন্য দুনিয়াবী কোন বড় বড় ডিগ্রীদারী জ্ঞানের প্রয়োজন নেই। উপদেশ ও শিক্ষা গ্রহণের জন্য এটি একটি উৎস হচ্ছে ঃ
বিদ্রোহী মানব জাতিসমূহের ওপর নাযিল হওয়া দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এ থেকে কল্যাণ লাভ করা ও আযাব দেখার বা ভোগ করার আগেই নিজেদেরকে সংশোধন করে নেওয়া। আরেকটি উৎস হলো এ কুরআন যা যুক্তি প্রমাণ ও ওয়াজ নসীহতের মাধ্যমে আমাদেরকে সরল সহজ পথ দেখিয়ে দিচ্ছে।
আমাদের জন্য এটা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর মেহেরবানী যে, তিনি তাঁর নবীর মাধ্যমে এ কিতাব পাঠিয়ে আমাদের সাবধান করে দিচ্ছেন যে আমরা যে পথে চলছি তা আমাদের চূড়ান্ত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।আমাদের কল্যাণ কোন পথে তাও এই কিতাবে বলে দেয়া হয়েছে যেন আমরা ধ্বংসের গহবরে পতিত হওয়ার আগেই আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করে নিতে পারি ।তারপর আমরা তা না মেনে নিলে জাহান্নামের গর্তের মধ্যে পতিত হতে হবে ।তাই কোরআন বুঝে বুঝে জানতে হবে আর আমলের মাধ্যমে মানতে হবে ।
নির্ভর যোগ্য হাদীস গ্রন্থ্য থেকে হাদিস জানতে হবে।আখিরাত ,নামাজ ,রোজা , চরিত্র গঠন সংক্রান্ত হাদীস গুলো বেশী বেশী এই মাসে পড়তে হবে। তার সাথে সাথে এই বিষ্য গুলো নিয়ে লিখা ইসলামী সাহিত্য গুলো পড়তে হবে।
একজন দায়ী’ ইলাল্লাহর দায়িত্ব পালন করতে হবেঃ
“আল্লাহই তার রসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দীন সহকারে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সকল প্রকার দীনের ওপর বিজয়ী করেন, মুশরিকরা একে যতই অপছন্দ করুক না কেন৷”(সুরা তাওবা-৩৩) যুগে যুগে যত নবী রাসুল আল্লাহ পাঠিয়েছেন আর ওনারা সবাই দ্বীন কায়েমের দায়িত্ব পালন করেছেন । বিশ্বের একমাত্র আল্লাহ পক্ষ থেকে বিশ্বের সকল মানব জাতির প্রতি সর্বশেষ নবী সাঃ এর মাধ্যমে একমাত্র নির্ভুল একমাত্র নির্ভুল হিদায়ত ও আইন বিধান প্রেরন করেন। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসাবে তিনি সেই হিদায়ত ও আইন অনুসারে কাজ করে ব্যক্তি ,পরিবার ,সমাজ ও রাষ্ট্রে তার বাস্তব নমুনা রেখে যান।যার ফলে মুসল্মানরা আইয়্যামে জাহিলিয়াতের পরিবর্তে সোনালী সমাজ উপহার পান।
তাই আল্লাহর একজন খাটি দাস ও রাসুল সা এর উম্মত হিসাবে আমার আপনার উপর কিছু দায়িত্ব এসে যায়।তা হলঃ
একজন মুমিন হিসাবে নিজের মান উন্নত করার সাথে সাথে নিজের পরিবার কে অভিজ্ঞ ড্রাইবারের মত ট্রেনিং এর মাস হিসাবে ইসলামের আলোকে পরিচালনা করে জান্নাতের দিকে নিতে হবে। এ মাস আল্লাহর রহমত বরকতের মাস হিসাবে দ্বীনের দা’য়ীদের জন্য দাওয়াত এর কাজ করার জন্য উপযুক্ত উর্বর হৃদয় গুলো ইসলামের অনুকুলে থাকে ।তাই ঈমানের দাবীদার সকল মুমিন মুত্তাকিন ভাই বোন দের উচিত এই সময় আত্নীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি, সহকর্মী ও বন্ধু বান্ধব সহ সবার মাঝে দীনের দাওয়াত দেওয়া উচিত।তাদের কে সাথে নিয়ে মানবতার সেবায় আত্ননিয়োগ করা উচিত । এই সব কাজের মুল নিয়ত থাকবে যে এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীণ সাফল্য অর্জন করা যাবে ।
"আর হে নবী! আমার বান্দা যদি তোমার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তাহলে তাদেরকে বলে দাও , আমি তাদের কাছেই আছি ৷ যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাক শুনি এবং জবাব দেই, কাজেই তাদের আমার আহবানে সাড়া দেয়া এবং আমার ওপর ঈমান আনা উচিত একথা তুমি তাদের শুনিয়ে দাও, হয়তো সত্য-সরল পথের সন্ধান পাবে ৷ "
সুরা বাকারা -১৮৬
উপরের আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে , আল্লাহ প্রত্যেক বান্দার অতি নিকটেই অবস্থান করছেন। যখনই আমরা কিছু চাই বা আল্লাহর কাছে আর্জি পেশ করতে পারি । এমনকি মনে মনে আল্লাহর কাছে আল্লাহর যা কিছু আবেদন করি তাও আল্লাহ শুনতে পান এবং সে সম্পর্কে নিজের সিদ্ধান্তও ঘোষণা করে দেন ।
আমাদের নিজেদের অজ্ঞতা ও মূর্খতার কারণে যে সমস্ত অলীক, কাল্পনিক ও অক্ষম সত্তাদেরকে আমরা উপাস্য ও প্রভু গণ্য করছি ।তাদের কাছে আমাদের নিজেদের দৌড়িয়ে যেতে হয় এবং তারপরও তারা আমাদের কোন আবেদন নিবেদন শুনতে পায় না। আমাদের আবেদনের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতাও তাদের নেই। অন্যদিকে আল্লাহ এই বিশাল বিস্তৃত বিশ্ব-জাহানের একচ্ছত্র অধিপতি। সমস্ত সার্বভৌম ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব আল্লাহর হাতে কেন্দ্রীভূত। আমাদের এতো কাছে আল্লাহ অবস্থান করেন যে, কোন প্রকার মাধ্যমে ও সুপারিশ ছাড়াই আমরা নিজেরাই সরাসরি সর্বত্র ও সবসময় আল্লাহর কাছে নিজেদের আবেদন নিবেদন পেশ করতে পারি।
কাজেই মুর্খতার বেড়াজাল ছিঁড়ে আল্লাহ আমাদের কোরাআনের যে আহবান জানাচ্ছেন সে আহবানে সাড়া দাওয়া এবং আল্লাহ ও আল্লাহর নির্দেশ আদর্শকে আঁকড়ে ধরা উচিত ।তাই আমাদের উচিত আল্লাহর দিকে ফিরে আসা , আল্লাহর ওপর নির্ভর করা , আল্লাহর বন্দেগী ও আনুগত্য করা আর রাসুল সাঃ এর অনুসরন করার মাধ্যমে ইসলামের ধ্রুব সত্য জানা। তা হলে শয়তানের ভ্রান্তভেড়াজাল থেকে আমাদের হৃদয়ের চোখ খোলা রাখা যাবে আর সঠিক ও নির্ভুল কর্মনীতি অবলম্বন করার মাধ্যমে নিজেদের কল্যাণ সাধন হবে ।
হে আল্লাহ! আমাদের ৩০ টি রোজা রাখার শক্তি দাও । হালাল রুজি দ্বারা ইফতার ও সেহরি করার তাওফিক দান করুন । হে রহমানুর রাহিম !আমাদের রোজা পুরা করার নেক হায়াত দাও আর রোজা শেষ হওয়ার আগেই আমাদের গুনা খাতা মাফ করে দাও ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৩২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন