শুনো সন্তানেরা শুনো ! মা বাবা কে নিয়ে আল্লাহ ও রাসুলের সাঃ কিছু কথা
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২৪ মে, ২০১৪, ১১:৩৩:১১ সকাল
শুনো সন্তানেরা শুনো !
মা বাবা কে নিয়ে আল্লাহ ও রাসুলের সাঃ কিছু কথা
এই ক্ষনস্থায়ী পৃথিবীকে সুন্দর করে দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন আল্লাহর রহমতে আমাদের মা বাবা।সন্তান ছোট থাকতে যখন কেউ তার ভাষা বুঝে না তখন মা বুঝে যে সন্তান কি জন্য কান্দছে ।মা রাতের পর রাত গর্ভের সন্তানের ভারে যন্তনায় ঘুমাতে পারে নাই । আর জন্মের পরে সন্তানের কষ্ট হবে বা পেসাবে শুয়ে থাকে কিনা সেই ভয়ে ঘুমাতে পারে নাই ।নিজে সকল ঝড় ঝাপটা ও তাপদাহ সহ্য করেছেন তাও সন্তান কে কষ্ট দেন নাই।েকটা প্রিয় খাবার খুব ক্ষিদে পেটেও বলেন আমার পেট ভরা তোরা খেয়ে ফেল।অসুখে কাহিল হয়ে যান ও তাও সন্তানকে বলেন বাবা আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আছি ।আল্লাহ তোদেরকে ভাল রেখেছেন কিনা তা আগে বলো। বউ তাকায় স্বামীর হাতে কি নিয়ে এসেছে?আর মা তাকায় সন্তানের পেটের দিকে ।আমার বাবা না জানি কত ক্ষুদা নিয়ে ঘরে এসেছে ।আর সেই সন্তান যখন মা বাবার কথা না ভেবে শুধু নিজের স্বার্থের কথা ভেবে অকৃতজ্ঞ সন্তান হয়ে যান তখন আর কিছু করার থাকে না ।
গত কাল মেরাজের আলোচনা করার পর ৩ জন মা কোরানের আল্লাহর দেওয়া বানী ও রাসুলের বানী শুনে আমার গলা জড়ায়ে যখন কান্দছিলো তখন আমার কান্না ধরে রাখতে পারি নাই ।কত কষ্টের পরে এই মায়েরা সন্তানের ব্যাথায় পাহাড়ের বোবা কান্না ঝর্নার মত কান্দে। আর সেই কান্নার স্রোতে ভেসে সেই সন্তান কোন জান্নামের অতল সাগরে গিয়ে তলিয়ে যাচ্ছে ।তাই আমার ভয় লাগছিলো আল্লাহ সেই সন্তানের কি শাস্তি জানি দুনিয়া আর আখিরাতে দিবেন।আর আমি মা এর কপালেও জানি আল্লাহ কি রেখেছেন। আল্লাহ !যেন কোন মাকে সন্তান এর জন্য আর কান্দতে না হয় ।সন্তানের দিলে মাদের জন্য রহমত দান করুন।
পিতা মাতার সাথে আচরনের ধরন ও দোয়া করার পদ্ধতিঃ
"পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো৷ যদি তোমাদের কাছে তাদের কোনো একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে “উহ্” পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো
আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন৷
তোমাদের রব খুব ভালো করেই জানেন তোমাদের মনে কি আছে৷ যদি তোমরা সৎকর্মশীল হয়ে জীবন যাপন করো, তাহলে তিনি এমন লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল যারা নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে বন্দেগীর নীতি অবলম্বন করার দিক ফিরে আসে৷"
সুরা বনী ইসরাইল ২৩ - ২৪
"হে আমার রব, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে,যারা মু"মিন হিসেবে আমার ঘরে প্রবেশ করেছে তাদেরকে এবং সব মু"মিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করে দাও৷"সুরা নুহ ২৮
আল্লাহর পরেই মা বাবার স্থানঃ
"আর তোমরা সবাই আল্লাহর বন্দেগী করো৷ তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না৷ বাপ-মার সাথে ভালো ব্যবহার করো৷"
সুরা নিসা ৩৬
মায়ের গর্ভে রাখার কষ্টের কথা কোরানেঃ
" প্রকৃতপক্ষে আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার হক চিনে নেবার জন্য নিজেই তাকিদ করেছি৷ তার মা দুর্বলতা সহ্য করে তাকে নিজের গর্ভে ধারণ করে এবং দু’বছর লাগে তার দুধ ছাড়তে ৷ (এ জন্য আমি তাকে উপদেশ দিয়েছি) আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং নিজের পিতা-মাতার প্রতিও, আমার দিকেই তোমাকে ফিরে আসতে হবে৷" সুরা লোকমান ১৪
"আমি মানুষ কে এই মর্মে নির্দেশনা দিয়েছি যে, তারা যেন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে৷ তার মা কষ্ট করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছিলো এবং কষ্ট করেই তাকে প্রসব করেছিলো৷ তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান করাতে ত্রিশ মাস লেগেছে৷ এমন কি যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌঁছেছে এবং তারপর চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয়েছে তখন বলেছে : “হে আমার রব, তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে যেসব নিয়ামত দান করেছো আমাকে তার শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক দাও৷ আর এমন সৎ কাজ করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ করো৷আমার সন্তানদেরকে সৎ বানিয়ে আমাকে সুখ দাও৷ আমি তোমার কাছে তাওবা করছি৷ আমি নির্দেশের অনুগত (মুসলিম) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত৷" সুরা আহকাফ ১৫
পিতা মাতাই সন্তানের জান্নাত ও জাহান্নাম
হাদীস ঃ হজরত আবু উমামা রাঃ হতে বর্নিত।এক ব্যক্তি রাসুল সাঃ কে বলল , হে আল্লাহর রাসুল সাঃ সন্তানের উপর পিতা মাতার কি হক আছে? তিনি বললেন, তারা তো তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম”।
(ইবনে মাজাহ)
সব চেয়ে বেশি অধিকার পিতা মাতার ঃ
হাদীস ঃ হজরত আবু হুরাইয়ারা রাঃ হতে বর্নিত ।তিনি বলেন ,এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল ,হে আল্লাহর রাসুল সাঃ! আমার সর্বোত্তম ব্যবহারের হকদার কে? হুজুর সা বললেন ,তোমার মা।লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন অতঃপর কে ? হুজুর সা বললেন ,তোমার মা।লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন অতঃপর কে ? হুজুর সা আবার বললেন ,তোমার মা । লোকটি পুনরায় আবার জিজ্ঞাসা করলেন অতঃপর কে? এবার হুজুর সা বললেন , তোমার বাবা ।(বুখারী ও মুসলিম )
শিক্ষা ঃ
আল্লাহর রাসুল সাঃ কে মেরাজে নিয়ে আল্লাহ যে ১৪ টা আয়াত দিয়েছেন সেখানে , আল্লাহর পরে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশী হক ও অগ্রাধিকার হচ্ছে পিতামাতার ।
সন্তানকে পিতামাতার অনুগত, সেবা পরায়ণ ও মর্যাদাবোধ সম্পন্ন করতে হবে । সমাজের সামষ্টিক নৈতিক বৃত্তি এমন পর্যায়ের হতে হবে, যার ফলে সন্তানরা বাপমায়ের মুখাপেক্ষীহীন হয়ে পড়বে না, বরং আমরা নিজেদেরকে বাপমায়ের অনুগৃহীত মনে করবে এবং বুড়ো বয়সে তাদেরকে ঠিক তেমনিভাবে বাপমায়ের খিদমত করা শেখাবে যেমনিভাবে বাপমা শিশুকালে তাদের পরিচর্যা ও লালন পালন এবং মান - অভিমান বরদাশত করে এসেছে ।
এ আয়াতটিও নিছক একটি নৈতিক সুপারিশ নয় বরং এরি ভিত্তিতে পরবর্তী পর্যায়ে বাপমায়ের জন্য এমনসব শরয়ী অধিকার ও ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে যেগুলোর বিস্তারিত বিবরণ আমরা হাদীসে ও ফিকাহর কিতাবগুলোতে পাই । তাছাড়া ইসলামী সমাজের মানসিক ও নৈতিক প্রশিক্ষণ এবং তাদের অধিকারের রক্ষাণাবেক্ষণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ও আনুগত্য এবং তাদের অধিকারের রক্ষণাবেক্ষণকে একটি গুরত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে অন্তরভুক্ত করা হয়েছে ।
এ জিনিসগুলো চিরকালের জন্য এ নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছে যে, ইসলামী রাষ্ট্র নিজের আইন কানুন, ব্যবস্থাপনামূলক বিধান ও শিক্ষানীতির মাধ্যমে পরিবার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী ও সংরক্ষিত করার চেষ্টা করবে, দুর্বল করবে না ।
শুনো সন্তানেরা তোমরাও বাবা মা হবে এখন যা বাবা মা কে দিবে তোমার সন্তানও তমাকে চেয়ে বেষী ফীড়ীয়ে ডেবে টাঈ প্লিজ আর কোন মায়ের বা বাবার চোখের দুঃখের অশ্রু নয় আনন্দের অশ্রু যেন তোমাদের জন্য জান্নাতের ফুল হয়ে ফুটে উঠে। তা হলে আমার এই লিখা স্বার্থকতা লাভ করবে ।
আমার দাদু নুহামনি আর আমার দাদা সাইফ তাদের বাবার কোলে
হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন৷
"হে আমার রব, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে,যারা মু"মিন হিসেবে আমার ঘরে প্রবেশ করেছে তাদেরকে এবং সব মু"মিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করে দাও৷
আমিন সুম্মা আমিন ইয়া রাহমানুর রাহিম
—
বিষয়: বিবিধ
৪২৫০ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Click this link
Click this link
Click this link
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন