সন্তানের ভাল ফলাফল পাওয়া অভিভাবকবৃন্দ একটু ভেবে দেখেছেন কি !

লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৯ মে, ২০১৪, ০১:২২:১২ রাত

সন্তানের ভাল ফলাফল পাওয়া অভিভাবকবৃন্দ একটু ভেবে দেখেছেন কি ! ,



আমরা সব অভিভাবক চাই আমাদের সন্তান ভাল করুক । রোল নং ১ থাকুক । ভাল ফলাফল করুক ।

ফলাফল ভাল হলে কি করা উচিত তকজন আর হুশ থাকে না । তখন খুশিতে নিজের রব কেও ভুলে যাই ।

রেজান্ট পাওয়ার পর যেই সব বাবা মা বা অন্য যারা আনন্দে খুশিতে আত্ত হারা হয়ে দিক বেদিক ছুটা ছুটি করছেন। আপনি একজন সন্তানের অভিভাবক হিসাবে আপনার সন্তানের সফলতা দেখে আপনি খুশি হবেন তা স্বাভাবিক । কিন্তু সেই খুশিটা একটা সীমা রেখার মাঝে থাকা উচিত নয়কি? আপনি খুশিতে চড়া দাম দিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করে মিষ্টি বিতরনের নামে যে অপচয় টা করছেন তা কি ঠিক হচ্ছে বলে আপনি মনে করছেন।?

"তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তি খাটাবার অধিকারী" সুরা বাকারা ২৮৪

আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন তা হলে এই বিশ্বাস আমাদের থাকা উচিত যে আল্লাহর হুকুম ছাড়া কোন কল্যান/ সফলতা আপনার জীবনে বা আপনার সন্তানের জীবনে অন্য কার দ্বারা আনা সম্ভব নয় । কারন আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি সর্বময় ও একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী।এটি আল্লাহর অবাধ ক্ষমতারই একটি বর্ণনা ।

তা হলে আপনি আমি ঐ নুয়ে পড়া ফল ধরা গাছটির মত আল্লাহর কাছে নত হয়ে যাই। কারন আপনি কি জানেন আপনি আমি যখন সন্তানের সফলতায় আনন্দ করছি তখন সেই সব মা বুকের তুষের আগুন বুকে চাপা দিয়ে আল্লাহর কাছে কান্দছে। পুলিশ ব্যাব বিজিপি নামের হায়নারা অনেক মায়ের এস এস সি / দাখিল ।সমমানের নিরোপরাধ পরীক্ষারথী সন্তানদের জেলে আটক করে অত্যাচারে রেখেছে বা ফেরারী আসামী হয়ে ঘরে আসতেও পারছে না , পঙ্গুকরে হাসপাতালে ফেলে রেখেছে , এমন অনেক মা আছেন আজো কাউকে বলতে পারছে না তার সন্তান যে গুম খুন হয়ে এই দুনিয়ার কোথাও নেই ।

তাদের কথা কি আপনি আমি একটুও ভেবে দেখেছি । তাই আসুন আমরা মিষ্টি বিতরনে সময় নষ্ট না করে আল্লাহর কাছে আরো বেশী কোরজ়োড় হয়ে উনার দেওয়া পথে নিজেকে পরিচালিত করি।

অপচয়কারী শয়তানের ভাই ঃ

"বাজে খরচ করো না৷ যারা বাজে খরচ করে তারা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার রবের প্রতি অকৃতজ্ঞ৷যদি তাদের থেকে (অর্থাৎ অভাবী, আত্মীয়-স্বজন, মিসকীন ও মুসাফির) তোমাকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হয় এজন্য যে, এখনো তুমি প্রত্যাশিত রহমতের সন্ধান করে ফিরছো, তাহলে তাদেরকে নরম জবাব দাও৷নিজের হাত গলায় বেঁধে রেখো না এবং তাকে একেবারে খোলাও ছেড়ে দিয়ো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও অক্ষম হয়ে যাবে৷তোমার রব যার জন্য চান রিযিক প্রশস্ত করে দেন আবার যার জন্য চান সংকীর্ণ করে দেন৷ তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন এবং তাদেরকে দেখছেন৷"

সুরা বনী ঈসরাইল ঃ২৭ -৩০

আপনি কি জানেন আরবী এখন রজব মাস । এই মাসেই আল্লাহ রাহমানুর রাহিম উনার প্রিয় হাবীব রাসুল সাঃ কে উনার সান্নিধ্যে নিয়ে সুরা বনী ঈসরাইল ২৩ - ৩৭ আয়াত পর্যন্ত যে ১৪ টা মূলনীতি দিয়েছিলেন ।যেন তার উপর ভিত্তি করে একটা সুন্দর সমাজ কাঠামো সুন্দর ভাবে দাড়া করানো যায় । যার সুদূর প্রসারি মাইলফলক ফলাফল হল মদীনা সনদ। আর মেরাজের শিক্ষা যদি আমাদের মাঝে কোণ প্রভাব না পড়ে তা হলে আমরা মেরাজের বিশ্বাসী/সিদ্দিকী উপাদি কিভাবে অর্জন করতে পারব।আমি নিজে পরিবার প্রতিবেশি সবাইকে তার উত্তম শিক্ষা লাভ করে একটা ইসলামী সমাজ আমাদের গড়তে হবে।

আজ আমরা যারা মেরিজ ডে , জন্মদিন , কোন শুভ সংবাদে মিষ্টি বিতরন যা কিছুই করি না কেন সবই বিধর্মীদের কালচার । এই সব অপচয় করে আমাদের স্বামী সন্তানদের আমরা আরো অন্যায়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছি।এটা তারা আমাদের পরেও চালিয়ে যাবে।আপনার সন্তানের সফলতার জন্য ব্যয় করা এই টাকা দিয়ে কত অসহায় মেধাবী সন্তানের কলেজে ভর্তির পড়ার খরচ চালাতে পারতেন।আপনার সন্তানের মত কত মেধাবী চিকিতসাধীন সন্তানের চিকিতসা করাতে পারতেন।আপনার সম্পদে আপনার আত্নীয়ের হক আছে সেই আসহায় আত্নীয়দের খবর নিতে পারতেন। আপনার টাকায়্ ইসলামের অনেক কল্যান কাজ করতে পারতেন।

অহ্ংকার পতনের মুলঃ

“যমীনে দম্ভভরে চলো না৷ তুমি না যমীনকে চিরে ফেলতে পারবে, না পাহাড়ের উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে৷”

সুরা বনী ঈসরাইলঃ৩৭

এই আয়াত আল্লাহর রাসুল সাঃ কে মেরাজে দেওয়া ১৪ টি মুলনীতির শেষনীতি।

এর মানে হচ্ছে, আমরা সফলতা বা ক্ষমতাগর্বী ও অহংকারীদের মতো আচরণ না করতে ভলা হয়েছে । এ নির্দেশটি আমাদের সবার ব্যক্তিগত কর্মপদ্ধতি ও জাতীয় আচরণ উভয়ের ওপর সমান ভাবে প্রযোজ্য । এ নির্দেশের বদৌলতেই এ ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে মদীনা তাইয়েবায় যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় তার শাসকবৃন্দ, গভর্নর ও সিপাহসালারদের জীবনে ক্ষমতাগর্ব ও অহংকারের ছিঁটেফোটাও ছিল না । এমনকি যুদ্ধরত অবস্থায়ও কখনো তাদের মুখ থেকে দম্ভ ও অহংকারের কোন কথাই বের হতো না । তাদের ওঠা বসা, চাল চলন, পোশাক- পরিচ্ছদ, ঘর- বাড়ি, সওয়ারী ও সাধারণ আচার - আচরণের নম্রতা ও কোমলতা সহ আলাহ সন্তুষ্টির ছাপ স্পষ্ট দেখা যেতো ।

তাই আজও আমরা দুনিয়াবীস্বামী সন্তান বা ধন দৌলতের সফলতা বা আখিরাতের নেকয়ামল কোন কিছু নিয়ে অহংকার করা ঠিক নয়।কারন এই সন্তানের বিপদ আপদ বা এই পরীক্ষার সময় আমরা আল্লাহর কাছে হৃদয় নরম করে হাত তুলে সাহায্য চেয়ে বলেছিলাম “হে আল্লাহ! আমার সন্তানের জন্য সব সময় সব কিছু করতে পারলেও আজ পরীক্ষার হলে তুমি যদি তার স্মরন শক্তি বাড়ায়ে সব মনে করে সুস্থ্য ভাবে লেখার তাওফিক না দাও তা হলে সে কৃতকার্য লাভ করা মোটেও সম্ভব না।তাই তুমি সুস্থ্য ভাবে সুন্দর করে পরীক্ষার হলে আর বাহিরে পরীক্ষা শেষ না হয়া পর্যন্ত তাকে তোমার হেফাজতে রেখো”। আমিন আল্লাহ তা কবুল করলেন । তাই এখন যা কিছু সফলতা পেয়েছি সব ফলাফলের কার্যনিরবাহি কর্মকর্তা আল্লাহ রাহমানুর রাহিম ।

তা ভুলে এখন ব্রং আমরা খুশির জোয়ারে ভাসতে থাকলে আল্লাহর সীমালংঘ্ন করার শাস্তি সৌরূপ শয়তান আমাদেরকে নিয়ে জাহান্নামের অতল গহব্রে ফেলে দিবে।আনন্দে বেহুশ হয়ে জীবনের অনেক বড় ক্ষতিতেও পড়ে যেতে পারি।তাই আমরা অভিভাবক হিসাবে নিজেদের জীবনে ঘটা বা দেখা অভিজ্ঞতা থেকে তাদের সাবধান করে দেওয়া উচিত। তাতে সন্তানদের্ আজ না হোক কাল হলেও তার অভিভাবকের কথা স্মরন করে সেই ভুল করা থেকে আল্লাহর হেদায়াতের মাধ্যমে ফিরে আসবে।

“যখন আল্লাহর সাহায্য এসে যায় এবং বিজয় লাভ হয়”।সুরা নসর১

“তখন তুমি তোমার রবের হামদ সহকারে তাঁর তাসবীহ পড়ো এবং তাঁর কাছে মাগফিরাত চাও৷অবশ্যি তিনি বড়ই তাওবা কবুলকারী৷”সুরা নসর ৩

হে আমাদের রব! আমাদের সবর দান করো, আমাদের অবিচলিত রাখ এবং এই কাফের দলের ওপর আমাদের বিজয় দান করো৷ বাকারা ২৫০

বিষয়: বিবিধ

২৫২১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

223275
১৯ মে ২০১৪ সকাল ০৯:০৪
হতভাগা লিখেছেন : এত ভয় দেখান কেন রে ভাই !

আমাদের দেশে তো আনন্দের ঘটনা খুব একটা বেশী আসে না , তাই একটু আনন্দ পেলে মাতামাতি বেশীই হয়ে যায় । কি আর করার পোলাপান তো ! এই বয়স তো কোন বাঁধা মানতে চায় না ! টিন এজার বলে কথা ।

এই ছবিটা নেন , খুব হিট হইছে । সেরা স্কুলের সেরাদের আনন্দ উচ্ছাস ।




223321
১৯ মে ২০১৪ দুপুর ১২:০৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
আনন্দের নামে যে মাত্রা ছাড়া আচরন এর স্বাধিনতা এই শিক্ষার্থিরা পাচ্ছে সেটা তাদের পরবর্তি জিবনেও খারাপ প্রভাব বিস্তার করবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File