ঈমানের দাবী জ্ঞানার্জন করে হৃদয়ের অন্ধকার দূর করো। শেষ পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৯ মার্চ, ২০১৪, ০৭:৩৬:২১ সন্ধ্যা
ঈমানের দাবী জ্ঞানার্জন করে হৃদয়ের অন্ধকার দূর করো।
শেষ পর্ব
আমরা কেন জ্ঞানার্জন করব ?
শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে জ্ঞানী ও শিক্ষিত ব্যক্তি হওয়ার জন্য। শিক্ষা কি ?-যে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে পশু সুলভ আচরণ থেকে নিজেকে মনুষত্ব সুলভ আচরনে নিজেকে বিকশিত করা য়ায় তাই শিক্ষা । কোন ব্যক্তির মধ্যে যে আচার আচরন এর মাধ্যমে সভ্যতা , ভাল মন্দ বিচার করার শক্তি ,ন্যায় অন্যায় বা সত্য্ মিথ্যা যাচাই করার মত মানবিক বল প্রকাশ পায় তিনিই জ্জানী বা শিক্ষিত ব্যক্তি ।
“অবশ্যই আমি মানুষকে পয়দা করেছি সর্বোত্তম কাঠাময়।তারপর তার(অকৃজ্ঞতার কারনে ) আমি তাকে সর্বনিন্ম স্তরে নিক্ষেপ করব”।(সুরা আততীন ৪-৫)।
“জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান”-আল হাদিস।
প্রশ্ন করতে পারেন আমি প্রথমেই পশু সুলভ আচরন বললাম কেন ?ধরেন একটা গরু সকালে মাঠে যায় ,সারাদিন খায় ,যাবর কাটে ,মলমুত্র ত্যাগ করে । এটাই তার প্রতিদিনের কাজ ।আর যদি মানুষও খাওয়া ,ঘুম আর ত্যাগ করা এই জৈবিক চক্রের মধ্যে আবদ্ধ্ব থাকে তাহলে মানুষ আর গরুর মধ্যে প্রার্থক্য কোথায় ?বরং কুশিক্ষিত মানুষকে লোভ –লালসা স্বার্থবাদিতা ,কামান্দ্বতা , নেশাখোরী ,নীচতা ,ক্রোধ ইত্যাদি বদ অভ্যাস গুলো পেয়ে বসে ।পশু তার মালিককে খুশি করার জন্য মালিকের আদেশ নিষেধ মেনে চলার মত জ্ঞান রাখে ।কিন্তু মানুষ নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য তার মালিকের আদেশ নিষেধ প্রতি খেয়াল না করে নৈতিক মানবিক দিক দিয়ে পশুর চেয়েও অধম হয়ে যায় । কারন “আমাদের সমাজে শিক্ষিত মানুসের অভাব নেই কিন্তু শিক্ষিত বিবেকের অনেক অভাব” ।
আল্লাহর বানী,”আপনি বলুন ্যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে?বুদ্ধিমান লোকেরাই তো নসিহত কবুল করে থাকে” ।সুরা জুমার ৯
“বল অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে ?আলো ও অন্ধকার কি এক ও অভিন্ন হতে পারে”। সুরা রায়াদ -১৬
হযরত আনাস রাঃ হতে বর্ণিত,নবী করিম সাঃবলেছেন ,”প্রতিটি মুসলিম নরনারীর উপর জ্ঞান অর্জন করা ফরয”।(ইবনে মাজাহ )
হযরত আনাস রাঃ হতে বর্ণিত, নবী করিম সাঃ বলেছেন, “যে ব্যক্তি এলেম অন্বেষনে বের হয় ,সে প্রত্যাবর্তন না করা পযন্ত আল্লাহর পথেই থাকে” ।(তিরমিযি )
“ধন সম্পদ তুমি নিজে পাহারা দিয়ে রাখতে হয় ,আর জ্ঞান তোমাকে পাহারা দিয়ে রাখে”।– হযরত আলী রাঃ
“ইসলামের জ্ঞান ছাড়া সে যত বড় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত পন্ডিত হোক না কেন সে মূর্খ পন্ডিত”। –ডঃ মোহাম্মাদ শহিদুল্লাহ ।
উপরের আলোচনা থেকে বুঝা যায় । শিক্ষা যে কোন একটা জাতির মেরুদন্ড ।শিক্ষা ছাড়া জাতি বিকলাঙ্গ বা মেরুদন্ড হীন কেচোর শয়তানের বা অন্যান্য জাতির পদদলিত হতে থাকে।সুশিক্ষা ব্যতীত সমাজের অন্যায় ,অবিচার , শোষন ,জুলুম ইত্যাদি অপরাধ কচুরি ফেনার মত বিস্তার লাভ করে । আর সেই সুশিক্ষার জন্য আমাদের বার বার কোরান পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ তালার তার খাটি বান্দা হিসাবে এ কিতাব কে নির্ভূল ,নির্ভেজাল ও পথ নির্দেশনার পথের মুত্তাকিন দের মত পথিক হতে হবে ।কোরান এর সিরাতাল মুস্তাকিমের পথে চলে হুদাল্লিন মুত্তাকিন হয়ে সালেহিনদের কাতারে দাঁড়াতে হবে ।কারন প্রকৃত শিক্ষা ছাড়া প্রকৃত শিক্ষিত মানুষ হওয়া যায় না। তাই কোরআনের নাযিল করার প্রথম শব্দ হল “ইকর” মানে পড় ।
ইসলামী জ্ঞানের অর্জনের সুফল কি?
“জ্ঞান অর্জন শ্রেষ্ঠ ইবাদত”-আল হাদিস।
“বিদ্বান ব্যক্তিরা নবীদের ওয়ারিস”-আল হাদিস।
“জ্ঞানী লোকের ঘুম মূর্খের ইবাদত চেয়েও শ্রেয়”-আল হাদিস।
১ । জীবনটা হল একা একা বড় রকমের রণক্ষেত্র। তাই জীবন যুদ্ধে ঘাত-প্রতিঘাত,বাধা-বিপত্তি,সংঘাত আর প্রতিকূলতার মাঝে ময়দানে ঠিকে থাকার জন্য ইসলামী জ্ঞানের অর্জনের খুব প্রয়োজন।
২। বন্ধুত্ত্ব বিবেচনা করার সময় আমাদের জ্ঞানের মাপকাঠি ব্যবহার করতে হবে । কারন মূর্খ বন্ধুর চেয়ে জ্ঞানী শত্রু অনেক ভাল ।মূর্খ বন্ধু ভাল করতে গিয়েও অজ্ঞতা বশতঃ আপনার ক্ষতি করে বসবে আর জ্ঞানী শত্রু ক্ষতি করতে গেলেও জ্ঞান দিয়ে ভেবে চিন্তে নেয়।
৩।চশমা যেমন চোখের অস্বচ্ছতা দূর করে পৃথিবীটা সুন্দর ভাবে দেখতে আমাদের আলোর স্বচ্ছতা দান করে।দুনিয়াতে শান্তি ও আখেরাতের মুক্তির জন্য আমাদের হৃদয়ের চোখে কোরান সুন্নাহর গ্লাস বসান চশমা পরে নিব জীবনের প্রয়োজনে। কারন জ্ঞানের আলো ছাড়া জীবনের পথ চলার স্বচ্ছতা আসে না।
৪। জ্ঞান আমাদের জীবনের সফলতা ও ব্যর্থতার চুড়ান্ত পিরামিড। জ্ঞান পরম বন্ধু হয়ে আমাদেরকে মর্যাদা ,কল্যান ও সাফল্যের দিকে আহ্ববান করবে ।ভাল পরম বন্ধু হয়ে বাধা বিপত্তি ও বিপদ আপদ এর সময় আমাদের জন্য ঝাপিয়ে পড়বে।
৫।জ্ঞান হবে দেহ ইঞ্জিনের শক্তির উৎস। গাড়ির এত গুলো পার্স চালাতে যেমন ইঞ্জিনের শক্তির জন্য তেল গ্যাস প্রয়োজন হয় তেমনি আমাদের এই শরীলটাকে সঠিক পথে চালানোর জন্য কোরান সুন্নাহর জ্ঞান ইঞ্জিন নামের আত্না বা মনুষত্ব টাকে দিতে হবে।না হলে চরিত্রহীনতা ,অনিয়ম , অনাচার ,ও ধ্বংসযজ্ঞের মত অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটায়ে বসবে ।
৬।হাদিসে পেয়েছি দুনিয়াটা আখেরাতের শষ্যক্ষেত্র ।একজন মুসলমান দক্ষ কৃ্ষক এর মত শষ্য উৎপাদনে যত জ্ঞানী হবেন ততই তিনি আবাদি অনাবাদি সকল জমিনের মত হৃদয়ে তিনি ইসলামের বীজ বপন করে আখেরাতের জন্য আমলের গোলাটা ধানের গোলার মত ভরায়ে ফেলতে পারবেন ।
৭।একজন আদর্শ বাবা মা হওয়ার জন্য জ্ঞানের বিকল্প কোন পথ নেই। নেপলিয়ান বলেছেন “আমাকে একজন আদর্শ মা দাও আমি দেব একটা আদর্শ জাতি”।ইসলামে মা এর সন্মানের কথা এমনেই ৩ বার বলেন নাই ।আজকে কাচা মাটির মত বাচ্ছার হৃদয়ে যা এঁকে দিবেন তা শ্বেত পাথরে খোদাই করা লেখার মত রয়ে যাবে তাদের হৃদয়ে।বলা বাহুল্য , ছেলেদের সব সময় মেয়েদের সাথে পর্দার ব্যাপারে বুঝাতে বুঝাতে মেঝে ছেলে বিয়ের দিন প্রোগ্রাম শেষে ওর বউ এর পাশে আমার ননদ জা রা বসাতে নিলে আমাকে না দেখে আমার অনুমতি ছাড়া কিভাবে একটা মেয়ের পাশে বসবে, যে ছেলে মেয়ের দিকে তাকাতেও গুনাহ মনে করত তাই সে আম্মা বলে জোর গলায় ডাক দিয়ে উঠে ।সবাই জোর করে বসায় ,তা নিয়ে এখনও হাসে ।
৮।একটু ভাবলে দেখা যায় একটা ট্রাসমিটার মানেষের জ্ঞান দিয়ে বানানর পরও সে শত শত ঘরের অন্ধকার দূর করে সেখানে শত শত বাতি জ্বালায় ।আর মানুষ যত কোরান হাদিসের জ্ঞান অর্জন করবে ততই ট্রাসমিটার এর মত হাজার অন্ধকার মনে আলো জ্বালাতে পারবে ।সেই আলো আলোকিত করবে আমাদের দুনিয়া ও আখেরাত ।
আমি এতক্ষন যে জ্ঞান এর কথা বলেছি তা হল কোরান সুন্নাহর জ্ঞান। কারন বাকি সব জ্ঞান কল্যানের চেয়ে অকল্যান বয়ে আনে ।সভ্য মানুষ বানানর চেয়ে অসভ্য বানায় বেশি ।আমি তা বলব না যে দুনিয়াবি জ্ঞান প্রয়োজন নেই ।দাড়িপাল্লার দুই দিকেই ভারসাম্য সমান থাকতে হয় ।কোরান সুন্নাহর জ্ঞানএর সাথে অন্য জ্ঞানের বাধা নেই ।আলহামদুলিল্লাহ ,দুনিয়ার শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে আজকে আপনাদের সামনে আমি আমার মনের কথা গুল বলতে পারতাম না ।যেমন পারছে না অশিক্ষিত রা।
ইয়া আল্লাহ আমাদের কবরে আমাদের একাকিত্বের সময় তুমি আমাদের কোরানের আলো দিয়ে প্রশান্তি দান করো।ইয়া আল্লাহ কোরানকে তুমি আমাদের জন্য ইমাম ,নূর পথ প্রদর্শক ও সুপারিশ কারী বানিইয়ে দেন । আর বার বার অপারেশান ও ২য় বারের মত ব্রেইন স্টোক করাইয় আমার জ্ঞান থেকে ইসলামের যা হারিয়ে গেছে বা আমার লিখায় যা আমার অজানা সত্ত্বে ভূল হয়ে গেছে তার জন্য আমাকে তোমার রহমান নামের গুনে ক্ষমা করে দাও ।হে মালিক এই কিতাবের জ্ঞানকে আমাদের পরকালের মুক্তির জন্য দলিল বানিয়ে দাও।আমিন
পড়ার অনুরোধ রইল
প্রথম পর্ব
ঈমানের দাবী জ্ঞানার্জন করে হৃদয়ের অন্ধকার দূর করো।
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/2662/sottolikhon/40975#.UymebuTZm1s
বিষয়: বিবিধ
২১৩৬ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাই
|| জবাব নেই || খুব
সুন্দর বিশ্লেষন
ভালো লাগলো আপনাকে
ধন্যবাদ
আলহামদুলিল্লাহ । আমার কোন যোগ্যতা নেই । আল্লাহ আমাকে দিয়ে কি যা লিখান । তাই আমি আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। আপনাদের বিন্দু পরিমান কাজে আসলে আল্লাহ তা কবুল করে আমাকে য়াপনাকে আখিরাতে এর পুরুস্কার দান করুন।ামিন ।
প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জ্ঞান (ইসলামের) অর্জন করা ফরজ। কিন্তু তার পরেও অনেকে আছে কোরআন ও হাদীস পড়তে ডিসকারেজ করে।
যেমন: কোরআন পড়তে ১২-১৫ ভাষায় পারদর্শী হতে হবে?
অথবা
বাংলা অনুবাদ পড়ে কি বোঝা যায়?
অথবা
কোরআন হাদিসের আমরা কি বুঝি?
অথবা
আপনি কোরআনে হাদিসের কি জানেন?
অথবা
কোথথেকে মুফতি মুহাদ্দিস হয়ে আসলেন?অথবা
বড় মুহাদ্দিস হয়ে গেছে অথবা রাখ তো কোরআন হাদিস?
অথবা
জেনারেল লাইনে পড়ে এখন কোরআন হাদিসের কি বোঝেন?
অথবা
আরো অনেক কিছু.....??????
আমার মতে এরা আর এক জাহেল।
আল্লাহ আমাদের জ্ঞানকে বৃদ্ধি করুন আমিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন