বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট হোসে মুসিকা (সম্পদ বেশী হলে শান্তি কিংবা খ্যাতি আসে না)!

লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:৫৬:৩৮ রাত

বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট হোসে মুসিকা

(সম্পদ বেশী হলে শান্তি কিংবা খ্যাতি আসে না)!



উন্নয়নশীল আর দরিদ্র দেশগুলোর অধিকাংশ রাজনীতিবিদেরা যখন ব্যস্ত যার যার আখের গোছাতে, তখন এর ব্যতিক্রম কিছু মানুষও আছেন যারা হয়তো হতে পারেন অন্যরকম দৃষ্টান্ত। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট হোসে মুসিকা তেমনই একজন অনুকরণীয় রাজনীতিবিদ।

মুসিকাকে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট। তিনি অন্যান্য দেশের প্রেসিডেন্টদের মতো আলিশান কোনো প্রাসাদ বা ভবনে বসবাস করেন না। বরং জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে তৈরি একটি ফার্মের জীর্ণ বাড়িতেই তার বাস।

শুধু তাই নয়, তার জীবনযাপন দেখে অন্যান্য দেশের প্রেসিডেন্টরা হয়তো একটু বিস্মিতই হবেন। জীর্ণ ঘরের বাইরে রয়েছে তার কাপড় ধোয়া ও শুকানোর জায়গা। একটা আগাছাপূর্ণ দেয়ালের ভেতর থেকে সেখানে আসে কাপড় ধোয়ার পানি। আর নিরাপত্তার কথা ভাবছেন? তার নিরাপত্তার জন্য রয়েছে মাত্র দুজন গার্ড আর কয়েকটি কুকুর।

অবশ্য উরুগুয়ে সরকার তার প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তাবিহীন এত জীর্ণ অবস্থায় রাখবে এটি হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করবেন না। এমনও নয় যে, দেশটিতে সম্পদের অভাব রয়েছে। আসল বিষয় হলো, উরুগুয়ে সরকারও তার প্রেসিডেন্টের জন্য বিলাসবহুল বাসভবনের ব্যবস্থা রেখেছে। কিন্তু সেখানে না থেকে মুসিকা রাজধানী মন্তিভিদিওর অদূরে স্ত্রীর খামার বাড়িতে থাকেন। সেখানে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে চাষ করেন নানা জাতের ফুল।

একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েও মুসিকার এত কৃচ্ছতা সাধনের প্রধান কারণ হিসেবে জানা যায়, বেতনের ৯০ শতাংশই তিনি দান করে দেন বিভিন্ন দাতব্য কাজে, যা প্রায় ১২ হাজার ডলারের সমতুল্য।

নিজের এই অনাড়ম্বর জীবনযাপন নিয়ে মুসিকা বলেন, “আমি আমার জীবনের সবচেয়ে ভালোভাবে বাস করছি এখন। আমার যা আছে আমি তা-ই নিয়ে ভালো থাকতে পারি।”

২০১০ সালে উরুগুয়ের সব সরকারি কর্মকর্তার জন্য সম্পদের হিসাব দেয়া বাধ্যতামূলক করা হলে মুসিকাও তার ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব জমা দেন। এতে দেখা যায়, তার মোট সম্পদের আর্থিক মূ্ল্য মাত্র আঠারশ ডলার। অবশ্য তিনি চলতি বছর তার স্ত্রীর সম্পদের অর্ধেক অর্থাৎ খামার বাড়ি, কয়েকটি ট্রাক্টর এবং ঘর বাবদ হিসাব দিয়েছেন ২ লাখ ১৫ হাজার ডলারের হিসাব। যা উরুগুয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট দানিয়েল আসতোরির সম্পদের মাত্র দুই তৃতীয়াংশ।

২০০৯ সালে উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া মুসিকা ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত দেশটির গেরিলা সংগঠন তুপামারসের সংঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বামপন্থি এ সশস্ত্র সংগঠনটি কিউবা বিপ্লবের দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল। সংগঠনের সক্রিয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে গিয়ে মুসিকা ছয়বার গুলিবিদ্ধ ও ১৪ বছর জেলে খেটেছেন। জেলে কঠিন শর্ত আর নিয়মের বেড়াজালে বন্দি মুসিকা অবশেষে ১৯৮৫ সালে উরুগুয়েতে গণতন্ত্র ফিরে এলে মুক্তি পান।

নিজের সম্পর্কে মুসিকা বলেন, “আমাকে সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট বলা হয়। কিন্তু আমি নিজেকে দরিদ্র মনে করি না। আসলে দরিদ্র লোক হলো তারাই যারা শুধুমাত্র বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য কাজ করে। এবং সবসময়ই আরো চাই আরো চাই করতে থাকে। কারণ এটি সবার স্বাধীনতার ব্যপার। আপনার যদি অনেক চাহিদা না থাকে তাহলে সারা জীবন অনুগত দাসের মতো কাজ করার দরকার নেই। আর তখন আপনি আপনার জন্য আরো অনেক সময় পাবেন।”

আমার এই মন্তব্য পাগল অথবা মাথা খারাপ বয়স্ক লোকের বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এটিই সত্যিকার পছন্দ- বলেন প্রেসিডেন্ট হোসে মুসিকা।

কালেক্টেট

বিষয়: বিবিধ

১৩৯০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

184171
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০৩
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : এই প্রেসিডেন্ড কে স্যালুট জানাই
184172
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০৪
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : উনার কাহিনী সম্পূর্ণ পড়েছি ,আজ আবার নতুন কিছু জানলাম ভালো লাগলো
184174
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০৮
নিমু মাহবুব লিখেছেন : লেখাটি ভালো লেগেছে।
Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose Rose
184215
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:২২
184231
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৩৭
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : সুন্দর পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
184238
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৪৬
মুমতাহিনা তাজরি লিখেছেন : ভালো লাগলো।
184265
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৩৫
বড়মামা লিখেছেন : সুন্দর ভালো লগলো আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
184266
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৩৭
সজল আহমেদ লিখেছেন : আমাদের দেশ প্রধানদের উচিত্‍ তাকে অনুসরন করা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File