পবিত্র কোরআনের আলোকে মানুষের করনীয় ও বর্জনীয় মাহে রামাদান - প্রথম তারাবীহ

লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১১ জুলাই, ২০১৩, ০৫:১২:৩৬ বিকাল

পবিত্র কোরআনের আলোকে মানুষের করনীয় ও বর্জনীয়ঃ

১ম পর্ব (করনীয় বিষয় গুলো)

মাহে রামাদান - প্রথম তারাবীহ

সুরা আল ফাতিহা থেকে সুরা আল বাকারাহ ২০৩ আয়াত পর্যন্ত

বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই ।

পরম করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করলাম ।



করনীয় বিষয় গুলোঃ

১] প্রশংসা করতে হবে একমাত্র আল্লাহর ।ইবাদত করতে হবে একমাত্র আল্লাহর। আর সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে একমাত্র আল্লাহর কাছে। (সুরা আল ফাতিহাঃ১-৪ )

২।কোরান থেকে হেদায়াত পেতে হলে মুত্তাকিনদের জন্য দেওয়া গুনগুলো অর্জন করতে হবে।তা হলঃ * অদৃশ্যে বিশ্বাস করতে হবে* নামায কায়েম করতে হবে * যে রিযিক আল্লাহ আমাদের কে দিয়েছেন তা থেকে খরচ করতে হবে * বর্তমান ও পূর্বের সকল কিতাবের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে* আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। তা হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সরল সত্য পথের ওপর আমরা প্রতিষ্ঠিত এবং কল্যান লাভ করতে পারব।

(সুরা আল বাকারাঃ২-৫)

৩।দাসত্ব করতে হবে সেই মহান প্রতিপালকের যিনি মানুষের সৃষ্টি করেছেন।ঈমান্দার ও সৎকর্মশীলদের জান্নাতের সুসংবাদ দিতে হবে।সুরা আল বাকারাঃ২১-২৫

৪।নিজের ভুল-ত্রুটি বা গোনাহের জন্য আদম আঃ এর ন্যায় আল্লাহর নিকট তওবা করতে হবে।আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান (হিদায়াত)মেনে চললে ভয় ও দুরচিন্তার কারন হবে না।

(সুরা আল বাকারাঃ৩৭-৩৮)

৫।যাকাত দিতে হবে এবং জামাতের সাথে নামায কায়েম করতে হবে । আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে ধৈর্য্য ও নামাজের মাধ্যমে।(সুরা আল বাকারাহঃ ৪৩,৪৫)

৬।শেষ বিচারের দিনে আল্লাহর কাছে হিসাব দেওয়ার ব্যাপারে ভয়ে থাকা উচিত।সেই ভয়াবহ দিনে কেউ কারো কাজে আসবে না।(সুরা আল বাকারাঃ৪৮,১২৩)

৭।আল্লাহ ছাড়া আর কারোর ইবাদাত করা যাবে না, মা-বাপ , আত্মীয়-পরিজন, ইয়াতিম ও মিসকিনদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে, লোকদেরকে ভালো কথা বলতে হবে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা যাবে না।. (সুরা আল বাকারাঃ৮৩)

৮। নামায কায়েম করতে হবে ও যাকাত প্রদান করতে হবে।(সুরা আল বাকারাঃ৮৩,১১০)

৯।নিজেকে আল্লাহর কাছে সম্পুর্ন রূপে সমর্পন করতে হবে।তা হলে আল্লাহর কাছে পুরুস্কার পাওয়া যাবে এবং ভয় বা মর্মবেদনার অবকাশ থাকবে না।(সুরা আল বাকারাঃ১১২)

১০।জীবন পরিচালনার পথ মাত্র একটিই, যা আল্লাহ বাতলে দিয়েছেন।তাই সেই পথে না চললে আল্লাহর পাকড়া থেকে কোন বন্ধু বা সাহায্য কারী থাকবে না।তাই আল্লাহর কিতাব কে যথাযথ ভাবে অধ্যায়ন করে সেই অনুসারে আমল্করে জীবনে বাস্তবায়ন করতে।(সুরা আল বাকারাঃ১২০-১২১)

১১।কাবা ঘরকে নিরাপত্তার প্রতীক মনে করে পবিত্র রাখতে হবে।(সুরা আল বাকারাঃ১১২)

১২।আল্লাহর রঙ্গে রঙ্গিন হতে হবে। মানে আল্লাহ যেই ভাবে চান সেই ভাবে জীবন যাপন করতে হবে।সত্য গোপনকারী জালেম হিসাবে চিহ্নিত হবে।(সুরা আল বাকারাঃ১৩৮,১৪০)

১৩।ভাল কাজের প্রতিযোগীতা করতে হবে। ( বাকারাঃ১৪৮)

১৪।আল্লাহকে স্মরন করতে হবে।আল্লাহকে স্মরন করলে আল্লাহ বান্দা কে স্মরন করবেন।আল্লাহর নিয়ামতের শোকর বা কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে। ভয় করতে হবে ,মানুষকে নয় ( বাকারাঃ১৫০,১৫২)

১৫। হে ঈমানদারগণ ! সবর ও নামাযের দ্বারা সাহায্য গ্রহণ করতে হবে ।আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন(বাকারাঃ১৫৩)

১৬।বিপদ মুসিবত ও ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে আল্লাহ মুমিন্দের পরীক্ষা নেন ।তখন ধৈর্য ধারন করতে হবে আর সেই সময় বলতে হবে “আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে “ তা হলে আল্লাহ আমাদের ওপর বিপুল অনুগ্রহ বর্ষিত করবেন, তাঁর রহমত ামাদেরকে ছায়াদান করবে এবং সত্যানুসারী হিসাবে বিবেচনা করবেন।

১৭।জ্ঞানীদের কে আল্লাহর সৃষ্টি রহস্য নিয়ে গবেষনা করতে হবে ।যেমন আকাশ পৃথিবীর সৃষ্টি ,রাত দিনের আবর্তন, বৃষ্টি ইত্যাদি।

১৮।আল্লাহর নির্ধারিত হালাল বস্তু খেতে হবে।(বাকারাঃ১৬৮)

১৯। সৎকাজ কি আর মুত্তাকিন কারা ?

সৎকাজ হচ্ছে এই যে, মানুষ আল্লাহ, কিয়ামতের দিন, ফেরেশতা আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাব ও নবীদেরকে মনে প্রাণে মেনে নেবে এবং আল্লাহর প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের প্রাণপ্রিয় ধন-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন, এতীম, মিসকীন,মুসাফির , সাহায্য প্রার্থী ও ক্রীতদাসদের মুক্ত করার জন্য ব্যয় করবে ৷ আর নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দান করবে ৷ যারা অংগীকার করে তা পূর্ণ করবে এবং বিপদে-অনটনে ও হক –বাতিলের সংগ্রামে সবর করবে তারাই সৎ ও সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই মুত্তাকী ৷ (বাকারাঃ১৭৭)

২০।মুমিন মুসল্মানদের রমযান এর রোযা পালন করার মাধ্যমে তাওকয়ার গুনাবলী অর্জন করতে হবে।রোজার মধ্যে আমাদের করনীয়(বাকারাঃ১৮৩-১৮৫,১৮৭)

২১।যারা মুমিন্দের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।এবং আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য ও ফিতনা নির্মুলের সংগ্রাম করতে হবে।আল্লাহকে ভয় করতে হবে। আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতে হবে সাধ্যমত এবং অপরের প্রতি ইহসান করতে হবে। (বাকারাঃ১৯০-১৯৫)

২২।যথা সময়ে হজ্জ ও ওমরা করতে হবে ।হজ্জ শেষ হলে আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরন করতে হবে। (বাকারাঃ১৯৬-২০৩)

২য় পর্বে ইনশাল্লাহ বর্জনীয় টা তুলে ধরব

আল্লাহ আমাদের ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে আমাদের কে কোরানের আলোকে জীবন তা পালন করার তাওফিক দান করুন

বিষয়: বিবিধ

১৭৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File