যেভাবে শহীদ হলেন ইখওয়ান প্রতিষ্ঠাতা হাসানুল বান্না।

লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৯ জুলাই, ২০১৩, ০৯:৩৭:২৬ রাত

সেদিন ছিলো ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ ,

ইখওয়ানের প্রচুর নেতাকর্মিরা জেলে ।



সরকারি বাহিনীর ফেরআউনি তান্ডবে অনেক আত্মগোপনে । ইখওয়ানপ্রধান হাসানুল বান্না মুক্ত , তাকে সরকার গ্রেফতার করছে না , আবার অভিযোগ থেকে মুক্তি দিচ্ছে না । তাই উল্লেখিত তারিখে হাসানুল বান্না আপন শ্বশুড় আব্দুল করীম মনসুরকে সাথে নিয়ে কায়রো শহরে একটি গাড়িতে উঠলেন । গাড়ি চলছে , তিনি লক্ষ করলেন সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল আরোহী তাকে অনুসরন করছে । তিনি এতে সতর্ক হয়ে উঠলেন ... কিন্তু এরিমধ্যে এই আততায়ীরা এসে তাকে গুলি করে , গুলিটা তার শ্বশুড়ের গায়ে মারাত্মকভাবে লাগে , পরবর্তীতে আরেকটা গুলি তার নিজের গায়ে লাগে , ওটা প্রথমটার মতো তেমন মারাত্মক নয় । এ অবস্থায় তাদেরকে হাসপাতালে যাওয়া হয় । তার শ্বশুড় সুস্থ হয়ে ওঠেন , কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারেরনির্দেশে তার চিকিৎসা গ্রহণ করে নাই , তাই তিন ঘণ্টায় প্রচুর

রক্তক্ষরণে তিনি শাহাদত বরণ করেন । এভাবে বিনা চিকিৎসায় শহীদ হলেন কোটি কোটি অন্তরে বিপ্লবের প্রদীপপ্রজ্বলনকারী সেই চেতনার বারুদ । এরপর পুলিশের কড়া প্রহরায় তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয় ।তখন তার সব ভাইয়েরা কারাগারে । তাই নব্বইউর্ধব পিতা একাই তাকে গোসল দেন । পুলিশ কাউকে কাছে ভীড়তে দেয় নি , গোসলের পর তার পিতা পুলিশকে জানাযার জন্যে কিছু পুরুষলোককে আনার কথা বলেন , কিন্তু নির্দয় পুলিশ সে অনুমতিও দেয়নি । তাই তিনি ঘরের

নারীদেরকে সাথে নিয়ে এই বৃদ্ধ বয়েসে ছেলের লাশ কাধে করে পাড়ার মসজিদে যেখানে হাসানুল বান্না নামায পড়াতেন সেখানে নিয়ে যান । তারপর একাই জানাযার নামায আদায় করেন । অন্যদিকে পুলিশ কাউকেই কাছে ভীড়তে দিচ্ছে না । যে কাছে আসতে চায় সাথে সাথে তাকে গ্রেফতার করে , এরপর এক খৃষ্টান ব্যক্তির সহায়তায় তার বৃদ্ধ পিতা তাকে দাফন দেন । এভাবেই সমাহিত হলেন শতাব্দীর এক শ্রেষ্ঠ মহানায়ক !!!

পরবর্তী অবস্থা আরো করুণ ।

পুলিশ পুরো এলাকায় কড়া নজরদারি শুরুকরে , যাতে কেউ কালো পোষাক পরে শোক প্রকাশ করতে না পারে , মসজিদে মসজিদে শুরু হয় তল্লাশি যাতে কেউ ফরজ আদায়ের পর নফল পড়ে তার জন্যে দুআ করতে না পারে ...

এখন আসি আসল কথায় , আজ ফ্যাসিবাদি সরকার বাংলাদেশে ইসলামি বিপ্লব দমাতে যেসব জুলুম-নির্যাতনের পথ অবলম্বন করেছে । তাই বলে কি এদেশের ইসলামি বিপ্লব নিঃশেষ হয়ে যাবে ?

দেখুন না , প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসের শহীদ হাসানুল বান্নার সাথে কী নিষ্ঠুর আচরণই না করল , তাই বলে কি মিসর থেকে ইসলাম বিদায় নিয়ে নিল , নাসেরের পর আসল আনোয়ার সাদাত , তারপর হোসনি মোবারক ... তারপর কে আসল মিসরের শাসক হয়ে ?

হাসানুল বান্না মিসরের প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যমান ... নাসের , সাদাত , মোবারকের নাম কি আজ কেউ নিতে চায় ... আজকের অপসারিত প্রেসিডেন্ট মুরসি হলেন সেই হাসানুল বান্নার মানসপুত্র ...অতএব সিসির বর্তমান কার্যকলাপে হতাশ হওয়ার কিছুআছে বলে আমি মনে করি না ।



বিষয়: বিবিধ

৪০২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File